Ajker Patrika

১০০ গজ দূরেই ক্যাম্প, তবু সোহাগকে বাঁচাতে কেন এল না কেউ—যা বললেন আনসারপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৪৫
মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) ৩ নম্বর গেটের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার সময় ১০০ গজ দূরে আনসার ক্যাম্পের অবস্থান থাকলেও বাহিনীর কারও তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে না আসা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও রাজনৈতিক পরিসরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকারের ব্যর্থতার কথা বলা হচ্ছে।

আজ রোববারও জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে থেকে ১০০ গজের মধ্যে আনসার ক্যাম্প ছিল; আনসারদের হাতে অস্ত্রও ছিল। কিন্তু কেউ তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। অর্থাৎ বর্তমান সরকার পুলিশ প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। সরকারের সঙ্গে প্রশাসনের সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না।

তবে এ ঘটনায় আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা দায় ছিল না বলে মনে করেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ঘটনার দিন আনসার সদস্যরা হাসপাতালের নির্ধারিত রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন। রোস্টার অনুযায়ী হাসপাতালের গেটের বাইরে স্বপ্রণোদিত হয়ে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল না।

আজ বিকেলে খিলগাঁও সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের পরিধি ও রোস্টার তুলে ধরে মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ জানান, সোহাগ হত্যার ঘটনা হাসপাতালের তিন নম্বর গেটে। সেদিন সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৩ নম্বর গেটে রোস্টার অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন একজন আনসার সদস্য। এরপর সেখানে আনসার সদস্যের উপস্থিতি ছিল না। হাসপাতালে মোট নিয়োজিত আনসার সদস্যের সংখ্যা ৮০ জন। তাঁদের মধ্যে রোস্টার অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ২৪ স্পটে দায়িত্ব পালন করেন ২৫ জন আনসার সদস্য।

আনসার ডিজি বলেন, হাসপাতালের কোথায় ও কীভাবে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন—সেটা নির্ধারণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথা ডিরেক্টর ও ডিডি (প্রশাসন)। সোহাগ হত্যার ঘটনা বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে। তখন ঘটনাস্থল ৩ নম্বর গেটে দায়িত্ব পালন অবস্থায় কোনো আনসার সদস্যকে রাখেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুতরাং সোহাগ হত্যার ঘটনায় আনসার সদস্যদের অবহেলা বা ব্যত্যয় দেখার কোনো সুযোগ নেই।

৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন এলাকায় এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ী স্থানীয় একদল সন্ত্রাসীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাঁর শরীরের ওপর ভারী পাথর ফেলে তাঁকে হত্যা করা হয়।

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, ঘটনার সময় শত শত লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ ভিডিও করছিলেন, কেউ কিন্তু নিকটস্থ আনসার ক্যাম্পে খবর দেননি, কল করেননি। কেউ ক্যাম্পে গিয়ে ঘটনা সম্পর্কে বলেননি। শুধু তা-ই নয়, হাসপাতালের আনসারের প্লাটুন কমান্ডারকেও জানাননি। যখন প্লাটুন কমান্ডার খবর পেয়েছেন, তখন তিনি ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন, তখন ভুক্তভোগীর বুকের ওপরে উন্মত্ততা চলছিল। তখন তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন, বলা হয়, গেটের বাইরে এ রকম একটা ঘটনা ঘটছে। এরপরই ভিকটিমকে টেনে গেটের ভেতরে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হাসপাতালের বাইরের ঘটনা বলে আনসারকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

আবদুল মোতালেব আরও বলেন, আনসারের দায়িত্ব দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় সাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু ৩ নম্বর গেট এলাকায় তখন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা ছিল না। তখন রোস্টার অনুযায়ী, আনসার সদস্যদের ডিউটিও ছিল না। তাহলে আনসার সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলা কোথায়? কেউ তো খবর দেননি। যতক্ষণে প্লাটুন কমান্ডার খবর পেয়েছেন, ততক্ষণে ‘টু লেট’, ঘটনা শেষ! তা ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোনো ব্যবস্থা নিতে বলেনি।

আনসার বাহিনীর প্রধান বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় দেশের প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের মতো বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৬১ লাখ সদস্য গভীরভাবে শোকাহত। আমরা নিহত ব্যক্তির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তবে এ ঘটনার পর আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনে অপেশাদারত্বের অভিযোগ তোলার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, আনসার সদস্যরা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, তার রেসপন্সিবিলিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা না দিলে আনসার সদস্যরা স্বপ্রণোদিতভাবে যাওয়ার সুযোগ নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ডিরেশনই ছিল, গেটের বাইরের ঘটনায় আনসার সদস্যদের যাওয়ার সুযোগ নেই।

আনসার সদস্যদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, হাসপাতালের ডিরেক্টরের নির্দেশনাই মানবে আনসার। হাসপাতালের ভেতরে যদি ঘটত, তাহলে সেলফ ডিফেন্স হিসেবে আনসার সদস্যরা নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবেন। কারণ, আনসারের কাজই কর্তব্যরত এরিয়ায় সিভিলিয়ানদের নিরাপত্তা দেওয়া। তারা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) যেভাবে নির্দেশনা দেয়, সেভাবেই দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে রোস্টার, কর্তব্যরত এরিয়ার বাইরে আনসার সদস্যদের যাওয়ার সুযোগ ছিল না।

আনসার বাহিনীর প্রধান বলেন, ‘আমরা নানা সময় পরিদর্শন করি, নিরাপত্তা ইস্যুজ দেখি, পরামর্শ দিই। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কথা বলি। আমরা যদি কোথাও নিরাপত্তা ইস্যুজ দেখি, তখন জানাই। দায়িত্ব পালনে সমস্যা হলে আমরা আনসার ডিপ্লয়মেন্ট প্রত্যাহারও করি। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেটা পারি না। যদি সেটা পারতাম, তাহলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করে নিতাম।’

সোহাগ হত্যার ঘটনায় বিশেষ কিছু দিক

আনসার বাহিনীর প্রধান বলেন, এখানে উল্লেখ্য যে, আনসার বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়—

১. স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে আনসার সদস্যদের দায়িত্ব ও দায়িত্বের স্থান নির্ধারণ, রোস্টার তৈরি ও তদারকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, বিশেষত একজন উপপরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তার ওপর ন্যস্ত। আনসার সদস্যরা হাসপাতালের নির্ধারিত রোস্টার অনুযায়ী কাজ করেন।

২. আনসার সদস্যদের দায়িত্ব পালনের জন্য অনুমোদিত শটগান থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিরস্ত্র অবস্থায় ডিউটি করতে নির্দেশ দেয়, যা যেকোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

৩. সোহাগ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রোস্টার অনুযায়ী বেলা ২টার পর ৩ নম্বর গেটে কোনো আনসার সদস্যের ডিউটি ছিল না। বিষয়টি আগেও একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তারা রোস্টার সংশোধনে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এ সময় গেটে আনসার সদস্য অনুপস্থিত থাকায় হত্যাকাণ্ডে তাঁদের ওপর দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পরে ঘটনাত্তোর তথ্য প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে পরিচালককে অবহিত করা হলেও গেটের বাইরে ঘটনা হিসেবে তিনি তা আমলে নেননি।

৪. তিন নম্বর গেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না, যা নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়িয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

৫. হত্যাকাণ্ড সংঘটিত স্থানটি আনসার ব্যারাকের যাতায়াতের গেট থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে এবং ব্যারাকের অবস্থানগত কারণে সেখান থেকে ঘটনা দেখতে পারা অসম্ভব। উল্লেখ্য, ওই একটিমাত্র গেট ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা থেকে ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় না। ঘটনাস্থলটি ব্যারাকের পেছনের দিকের অংশ হওয়ায় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা ঘটনাটি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারেননি। এ ছাড়া শত শত মানুষের সামনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের শেষ ভাগে গেটের বাইরে হওয়ায় কোনো প্রকার সাহায্যের খবরও তাৎক্ষণিকভাবে কাউকেই জানাননি। তাই অঙ্গীভূত আনসারদের ভূমিকা রাখার সুযোগই হয়নি।

মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেন, ‘এমন প্রেক্ষাপটে, যেখানে আনসার সদস্যদের ব্যারাক থেকে কেউ তাদের খবর দেয়নি বা তাদের সামনে ঘটনা ঘটেনি, সেখানে দায়িত্বে অবহেলার প্রশ্নই ওঠে না। একটি পেশাদার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ ও অপপ্রচার দুঃখজনক ও গভীরভাবে হতাশাজনক।’

আরও খবর পড়ুন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত