Ajker Patrika

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আসন ভাগে দর-কষাকষি

  • বিএনপির কাছে শতাধিক আসন চায় সমমনা দলগুলো
  • মিত্রদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চেয়েছে বিএনপি
  • ১০০ আসন ছাড়ার পরিকল্পনায় জামায়াত
  • এনসিপিকে চায় বিএনপি ও জামায়াত
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ১৭
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘোষিত সময় অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর চার-সাড়ে চার মাস। ভোটে জিতে সরকার কীভাবে গড়া যায়, সেই হিসাব আর কৌশল ঠিক করছে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে দলগুলোর মধ্যে বড় ধরনের এপাশ-ওপাশ বা জোট গঠনের ইঙ্গিত এখনো মেলেনি। কিন্তু সমমনাদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির কথা প্রকাশ্যে বলছেন নেতারা। কোন দল কত আসন ছাড়বে আর সেটা কোন দলকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে চলছে জোর দর-কষাকষি।

রমজান শুরুর আগে আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই হিসাবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষ দিকে তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। তার আগে প্রার্থী যাচাই-বাছাই ও নির্ধারণে ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলো।

বিএনপির কাছে শতাধিক আসন চায় সমমনা দলগুলো

নির্বাচন সামনে রেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্যতম বড় দল বিএনপি, চলছে প্রার্থী বাছাই। সব ঠিক থাকলে চলতি মাসেই আসনভিত্তিক একক প্রার্থী ঘোষণা দিতে চায় দলটি। একই সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে চায় বিএনপি। এ জন্য তাদের সঙ্গে জোট অথবা আসন ছাড়েরও পরিকল্পনা আছে দলটির।

বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলোর সূত্র বলছে, বিএনপির কাছে মিত্র দলগুলো শতাধিক আসন দাবি করেছে। তবে মিত্রদলগুলোর কাছ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চেয়েছে বিএনপি। বেশ কয়েকটি দল ও জোট এরই মধ্যে তালিকা দিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে আরও কয়েকটি দল তালিকা দেবে। আর মিত্র কয়েকটি দলের একাধিক নেতা তালিকা নিয়ে আবার লন্ডনেও গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলতে। কেউ আবার আগেই সবুজসংকেত পেয়ে মাঠে কাজ শুরু করেছেন।

জানা গেছে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ লন্ডনে গেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এলডিপির কেন্দ্রীয় এক নেতা জানান, আগামী নির্বাচনে বিএনপির কাছে অন্তত ১৫টি আসন চাইবে তারা।

এ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির কাছে অর্ধশত আসন চায় বলে জানা গেছে। তারা ইতিমধ্যে তাদের এই চাওয়া বিএনপিকে জানিয়েছে। গতকাল শনিবার এ নিয়ে দুই পক্ষের বৈঠকও হয়।

আর অন্তত ২০ আসন চেয়েছে ১২ দলীয় জোট। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট চেয়েছে ৯টি আসন। অন্য সমমনা দলগুলোরও আসন নিয়ে এমন চাওয়া রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গত শুক্রবার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জোটের কাছে সেই আসনগুলো চাইব বা শেয়ার করব, যে আসনগুলো জিতিয়ে নিয়ে আসতে পারব বলে আশা রাখি। জোটের সঙ্গে সেই বিষয় নিয়ে আমাদের আলোচনা হচ্ছে।’

১০০ আসনে ছাড় দিতে প্রস্তুত জামায়াত

নির্বাচনে কমপক্ষে ২০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় জামায়াতে ইসলামী। যদিও এর মধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। এলাকায় জনসংযোগে নেমেছেন সেই প্রার্থীরা। এর মধ্যে নির্বাচনী জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে দলটি। এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও সমমনাদের জন্য সর্বোচ্চ ১০০টি আসনে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছেন দলের নীতিনির্ধারকেরা।

গত শুক্রবার খুলনায় এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমিরে জামায়াত (শফিকুর রহমান) আমাকে একটা ধারণা দিয়েছেন। এমনও হতে পারে, সমঝোতা করতে করতে শেষ পর্যন্ত ১০০ আসনও আমাদের ছেড়ে দিতে হতে পারে।’

তবে আসন সমঝোতা নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান জামায়াতের সমমনা দল ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একজন একটা বিক্ষিপ্ত কথা বলে পরিবেশটা নষ্ট করেছেন। সেটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, দলের কথা নয়। সব দল বসব এবং সারা দেশে জরিপ হবে, কোন দলের কোন প্রার্থী কোন আসনে ভালো, তা দেখা হবে।’

এনসিপিকে নিয়ে টানাটানি

নির্বাচনী জোটের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও আরও কয়েকটি দলের প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা চলছে। এনসিপির কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দুটি দলই এনসিপিকে জোটসঙ্গী হিসেবে চায়। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে জামায়াত ও বিএনপির পৃথক দুটি বৈঠক হয়েছে। শুরুতে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে এবং এরপর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে বৈঠক করেন নাহিদ। এসব বৈঠকে জোটের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হলেও চূড়ান্ত কোনো সমঝোতা হয়নি বা সিদ্ধান্ত আসেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা সমঝোতা বা জোট করব পরিস্থিতি অনুযায়ী। কার দিকে গেলে পাল্লা ভারী হবে, সেটা আমরা বিবেচনা করব না। বিএনপি-জামায়াত দুই পক্ষই আমাদের জোটে টানতে চায়।’

এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে নানা প্রশ্ন। জুলাই সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না বলে বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন একাধিক নেতা। নির্বাচনে গেলে কাদের সঙ্গে জোট হবে, তা নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা।

তবে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত হয়ে গেলে এনসিপি নির্বাচনে যাবে বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। জোটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘৩০০ আসনে আমরা প্রার্থী দিই বা না দিই, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সক্ষমতা তৈরি করতে চাই। এরপর কারও সঙ্গে যদি জোট বা সমঝোতা হয়, তাহলে সেভাবে ছাড় দিতে হবে।’

এনসিপির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক আলোচনা তো সব দলের সঙ্গেই হয়। এনসিপির সঙ্গেও হয়। তবে আসনভিত্তিক কোনো আলোচনা তাদের সঙ্গে হয়নি।

বৃহত্তর বলয় গড়তে তৎপর বামরাও

দীর্ঘদিন ধরে বামপন্থীদের বৃহত্তর ঐক্য তৈরিতে তৎপর রয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বেশ কিছু বামপন্থী দল। তারই ধারাবাহিকতায় ছয়টি রাজনৈতিক দলের জোট বাম গণতান্ত্রিক জোট, সাতটি বাম দলের ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চাসহ বাংলাদেশ জাসদ, ঐক্য ন্যাপসহ বিভিন্ন বামপন্থী দল ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চলছে। এসব দলের নেতারা জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব দলসহ অন্যান্য জোটে থাকা বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে বামপন্থীদের বৃহত্তর জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে। তবে এসব বিষয়ে আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের বামপন্থীদের একটি বড় ঐক্য তৈরির প্রচেষ্টা আমাদের দীর্ঘদিন ধরেই আছে। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ঐক্য বা জোটের আলোচনা এখনো কারও সঙ্গে হয়নি। আমরা শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর সঙ্গেও বৃহত্তর ঐক্যের আলোচনা করছি।

জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সন্দেহ-সংশয়

জোট ও সমঝোতার আলোচনা থেকে বাদ পড়ছে না নানাভাবে চাপে থাকা জাতীয় পার্টিও। বিগত তিন জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বর্তমানে একাধিক ধারায় বিভক্ত। সম্মেলন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত জুলাই মাসে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, তৎকালীন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ কয়েক নেতাকে বহিষ্কার করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। জি এম কাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন সম্মেলন করে বহিষ্কৃত নেতারা। তাতে চেয়ারম্যান হন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। নির্বাহী চেয়ারম্যান হন মুজিবুল হক চুন্নু। নতুন এ কমিটি দলীয় প্রতীক লাঙ্গল দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে।

নির্বাচনী জোট নিয়ে জাপার দুই অংশের নেতারা তৎপর বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক মাঠে চাউর হয়েছে জামায়াত-এনসিপি নির্বাচন না করলে জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের আসনে বসাতে তৎপর একটি পক্ষ। এরই মধ্যে নির্বাচনী জোট করার ঘোষণা দিয়েছেন জাপার (একাংশ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

দলটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী জোট হয়। আমাদের এখানেও এবার জোট ছাড়া নির্বাচন হবে না। আমাদেরও জোট করতে হবে। এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা না হলেও একপর্যায়ে নিতে হবে।’

জাতীয় পার্টির আরেক অংশের চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের তো কার্যক্রম করতেই দিচ্ছে না। মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এখন আমরা নিজেদের গোছাতে চেষ্টা করছি। নির্বাচনী জোটের বিষয়ে কারও সঙ্গে কথা হয়নি।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত