Ajker Patrika

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যা: বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাসগুলো

  • দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ।
  • বিক্ষোভ থেকে মিটফোর্ডের ব্যবসায়ীসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করা হয়।
  • দেশব্যাপী চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ।
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৪০
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো ফুঁসে উঠেছিল। পরে সেই বিক্ষোভে সাধারণ মানুষও শামিল হয়। পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। এবার পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় আবারও ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে পুরো দেশ। জড়িতদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। সমাবেশ থেকে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদও জানানো হয়েছে।

রাজধানীতে বিক্ষোভ

রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় মশাল মিছিল বের করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী নেতা- কর্মীরা ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’; ‘আমার সোনার বাংলায়, চাঁদাবাজের ঠাঁই নাই’; ‘যে হাত চাঁদা তোলে, সেই হাত ভেঙে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ রকমের অবনতি ঘটেছে। মনে হয়, এখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বদলে কোনো সংস্কৃতি উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করছেন। কোথাও অপরাধ ঘটলে দুই দিন পরও আমরা তার ভিডিও দেখছি, অথচ গণমাধ্যমে তা দেখা যাচ্ছে না।’

তিনি দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সারা দেশে শুদ্ধি অভিযান চালানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। আমরা বলি, যদি আপনারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। ছাত্র-জনতা আর অপেক্ষা করবে না।’

এর আগে দুপুরে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এবং ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথক কর্মসূচি পালন করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চাঁদাবাজির কারণে মিটফোর্ড এলাকায় যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পাথর দিয়ে পিটিয়ে মানুষ মেরেছে। দল দায় না নিয়ে কেবল বহিষ্কারে সীমাবদ্ধ থেকেছে। এটি পরিকল্পিত দলীয় হত্যাকাণ্ড।’ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারেক রহমানকে বলব, দেশে ফিরে এসে নিজের দলকে সামলান, পরিবর্তনের রাজনীতি করুন।’

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। একই সময়ে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সাকিব বলেন, ‘বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে তৈরি হওয়া সহাবস্থানের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা এই সহিংসতার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

ঢাকার বাইরে যত বিক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কঠোর সমালোচনা করে দলটিকে সতর্ক করেন। গতকাল দুপুরে শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।

ফরিদপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ ছাত্র-জনতা। গতকাল মিছিল শেষে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে হুঁশিয়ারি জানান।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিকেলে নগরীর শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে প্ল্যাটফর্ম ময়মনসিংহের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মিছিল শেষে সমাবেশ করেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী চলমান খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

টাঙ্গাইলেও বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এদিকে মধুপুরে শিল্প ও বণিক সমিতি এবং শান্তিকামী জনতার ব্যানারে পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা গত শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা। তুলে ধরেন পাঁচ দফা দাবি। গতকাল দুপুরে ‘মাগুরা জেলার সকল ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে শহরের ভায়না মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নওগাঁ শহরে সংগ্রামী ছাত্র-জনতা ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তানজিম বিন বারীর নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে সকালে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমরা জুলুম, খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলন করেছি। যারা আওয়ামী লীগের মতো আবার চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ করছে, তাদেরও একই পরিণতি হবে।’

এদিকে নিহত ব্যবসায়ী সোহাগের নিজ জেলা বরগুনায় গতকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি থেকে খুনিদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বরগুনা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম। বরগুনা প্রেসক্লাব সভাপতি সোহেল হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মিজানুর রহমান কাসেমী, জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী নাজমা বেগম, জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল, বরগুনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সালেহ, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের জেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা প্রমুখ।

এদিকে তৌহিদি জনতার আয়োজনে বরিশালের মুলাদীতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি এফ এম মাইনুল ইসলাম, উপজেলা খেলাফত মজলিশের সভাপতি হাফেজ মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ। ঝালকাঠিতে ছাত্র-জনতার উদ্যোগে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল। ভোলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরে মুক্তির সোপানে সমাবেশ হয়। রাজশাহীতে শুক্রবার রাতে এবং গতকাল পৃথক বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। শুক্রবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা ১১টার দিকে একদল শিক্ষার্থী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ ছাড়া দুপুরে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে মিছিল বের করা হয়।

নাটোরে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এদিকে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বিচারহীনতা এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কঠোর সমালোচনা করেন। এমনকি প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দেন। সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড জিল্লুর রহমান ভিটু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড তসলিম উর রহমান প্রমুখ।

‘যুবদলের এক গুণ, পাথর মেরে করে খুন’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কুড়িগ্রামের শিক্ষার্থীরা। পরে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ।

রংপুর দুপুরে সাধারণ বিপ্লবী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর আগের শুক্রবার রাতে রংপুর নগরীতে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মেডিকেল কলেজ ও কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের দিল্লি ও আগরতলা মিশন থেকে ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ত্রিপুরার আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের সামনে এ-সংক্রান্ত নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

দিল্লিতে বাংলাদেশ ভবনের সামনে হট্টগোল ও হুমকির অভিযোগ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য আর উত্তেজনার মধ্যে সাময়িকভাবে ভিসা কার্যক্রম বন্ধের এ খবর এল।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় দুটি পত্রিকা অফিস ও ছায়ানট ভবনে হামলা হয়। সেই রাতে চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে একদল মানুষ বিক্ষোভ দেখায়, সে সময় মিশনে ঢিলও ছোড়া হয়।

এরপর চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের (আইভ্যাক) কার্যক্রম গতকাল রোববার থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকার একটি কারখানার শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তাঁর লাশ গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর শনিবার রাতে দিল্লিতে ‘অখণ্ড হিন্দু রাষ্ট্রসেনা’ নামের এক সংগঠনের ২০-২৫ জন সদস্য বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা সেখানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার মো. ফয়সাল মাহমুদকে উদ্ধৃত করে গতকাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘বাংলা ও হিন্দি মিলিয়ে কিছু কথাবার্তা (তারা) বলছে—হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে হবে; হাইকমিশনারকে ধরো। পরে তারা মেইন গেটের সামনে এসে কিছুক্ষণ চিৎকার করে। তারা চিৎকার করে চলে গেছে—এতটুকুই আমি জানি।’

সেই খবরের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘এ ঘটনা নিয়ে আমরা বাংলাদেশি কিছু গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা লক্ষ করেছি। বাস্তবতা হলো, ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে ২০-২৫ জন যুবক জড়ো হয়েছিল। ওই যুবকেরা ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দিচ্ছিল এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছিল।’

মুখপাত্র স্পষ্ট করে বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা হাইকমিশনের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা করেনি বা কোনো নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করেনি।’

সেখানে মোতায়েন থাকা পুলিশ সদস্যরা কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। তিনি আরও জানান, এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ জনসমক্ষে পাওয়া যাচ্ছে।

বিবৃতিতে রণধীর জয়সওয়াল আরও উল্লেখ করেন, ‘ভারত বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে। আমাদের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে ভারতের গভীর উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। আমরা দীপু চন্দ্র দাসের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছি।’

রণধীর আরও বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ভারতের মাটিতে অবস্থিত সব বিদেশি মিশন ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘নয়াদিল্লি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।

তবে ভারতের ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, দিল্লিতে কূটনৈতিক এলাকার গভীরে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের সামনে ‘হিন্দু চরমপন্থী সংগঠনের বিক্ষোভকারীদের আসার সুযোগ করে দেওয়া’ হয়েছে।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় প্রেসনোটে যে কথা বলা হয়েছে, এটা আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করি এ জন্য যে, বিষয়টি যত সহজভাবে উত্থাপন করা হয়েছে, আসলে অত সহজ না।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের মিশন, বাংলাদেশের মিশন কূটনৈতিক এলাকার গভীরে অবস্থিত। এমন না যে এটা বাইরে কোনো জায়গায় অথবা কূটনৈতিক এলাকার শুরুতে, তা কিন্তু না। তারা বলছে, ২০-২৫ জনের একটা দল, হতে পারে। হয়তো একটু কমবেশি হতে পারে সংখ্যাটা। কিন্তু সেটা কথা না। একটা হিন্দু চরমপন্থী সংগঠনের ২৫ বা ৩০ জনের একটা দল এত দূর পর্যন্ত আসতে পারবে কেন, একটা স্যানিটাইজড এলাকার মধ্যে? তার মানে তাদের আসতে দেওয়া হয়েছে। যেভাবে হোক তারা এসেছে, আসতে পারার কথা না কিন্তু নরমালি।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘সেখানে তারা দাঁড়িয়ে যে শুধু ওই হিন্দু নাগরিকের হত্যার প্রতিবাদে স্লোগান দিয়ে চলে গেছে, তা না। তারা আরও অনেক কিছু বলেছে, সেটা আমরা জানি এবং আমাদের পত্রপত্রিকায় যে রিপোর্টটা আসছে, সেটাকে যে তারা বলতেছে যে ‘মিসলিডিং’, এটাও সত্য না। আমাদের পত্রপত্রিকায় মোটামুটি সঠিক রিপোর্টই এসেছে, যেটুকু আমরা তথ্য পেয়েছি। আমার কাছে প্রমাণ নেই যে তাকে (হাইকমিশনার) হত্যার হুমকি দিয়েছে, কিন্তু আমরা এটাও শুনেছি যে, তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেটা কেউ একজন কথা বলল, সেটার মধ্যে হতে পারে।’

কূটনৈতিক এলাকার এত ভেতরে বিক্ষোভকারীরা কীভাবে যেতে পারল, সেই প্রশ্ন তুলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সাধারণত কোনো প্রটেস্ট গ্রুপ যখন যায়, সেটা আগে থেকে ইনফর্ম করা হয় এবং পুলিশ তাদের একটু দূরে এক জায়গায় আটকে দেয়। কখনো যদি কোনো কাগজপত্র দেওয়ার থাকে, দুজন এসে দিয়ে যায়। এটা হলো নর্ম। সবখানে এটা হয়, আমাদের দেশেও হয়।’

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের যে আহ্বান ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সে বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘একজন বাংলাদেশি নাগরিক নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। এটার সঙ্গে মাইনরিটিজের নিরাপত্তাকে একসঙ্গে করে ফেলার কোনো মানে হয় না। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, যাঁকে হত্যা করা হয়েছে এবং অবিলম্বে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে অ্যাকশন নিয়েছে। ইতিমধ্যে আপনারা জানেন যে, বেশ কিছু অ্যারেস্ট করা হয়েছে। তো, এ ধরনের ঘটনা যে শুধু বাংলাদেশে ঘটে, তা নয়; এই অঞ্চলের সব দেশেই ঘটে এবং প্রতি দেশের দায়িত্ব হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া, বাংলাদেশ নিচ্ছে। অন্যদেরও উচিত সে রকম ব্যবস্থা নেওয়া। কাজেই, এটা গ্রহণযোগ্য না, যেভাবে এটাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ হাইকমিশন এলাকায় নিরাপত্তার নিয়মকানুন সঠিকভাবে ‘রক্ষা করা হয়নি’ মন্তব্য করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, নরমালি সিকিউরিটির যে নিয়মকানুন আছে, সেটা এখানে ঠিকমতো পালিত হয়নি। তারা বলছে যে, আমাদের সব মিশনের নিরাপত্তা দেখছে, আমরা সেটা নোট করেছি।’

কর্মরত কূটনীতিবিদদের নিরাপত্তার খাতিরে বাংলাদেশ মিশনকে সংকুচিত করার কথা সরকার ভাববে কি না, সেই প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি তেমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে আমরা সেটা করব। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা যেটা দেখছি, আমরা এখনো ভরসা রাখছি, ভারত যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেবে।’

বাংলাদেশ মিশনের নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি ছিল কি-না—এমন প্রশ্নে একসময় দিল্লি মিশনে কাজ করা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ব্যাপারটা কিন্তু শুধু যে তারা এখানে এসেছে, দুটো স্লোগান দিয়েছে, তা না। এর ভেতরে কিন্তু একটা পরিবার বাস করে; হাইকমিশনার ও তার পরিবার কিন্তু ওখানে বাস করে। তারা কিন্তু থ্রেটেনড ফিল করেছে এবং তারা কিন্তু আতঙ্কিত হয়েছে, কারণ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। দুজন গার্ড ছিল, তারা চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণে আদালতের নির্দেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণে আদালতের নির্দেশ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এ নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আদালতে হাদির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণের নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি (৩৩) ১২ ডিসেম্বর পল্টন থানাধীন বিজয়নগর এলাকায় দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে আহত হন। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজে, পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আবেদনে আরও বলা হয়, ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় লাশ দেশে আনা হয় এবং ২০ ডিসেম্বর লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাশাত জাবীন ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন।

মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে ডিএনএ নমুনা সিআইডির প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এ জন্য আদালতের নির্দেশ প্রয়োজন।

শুনানি শেষে আদালত নির্দেশ দেন। এ ছাড়া প্রোফাইলিং ও সংরক্ষণ কার্য সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের চিফ ডিএনএ অ্যানালিস্ট ফরেনসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

হাদিকে গুলি করার পর ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভোটারদের উৎসাহিত করতে জাতিসংঘের উদ্যোগে নতুন ওয়েবসাইট চালু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ, নারী, প্রান্তিক ভোটারসহ সব নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে জাতিসংঘের উদ্যোগে একটি নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ‘ফিউচার বাংলাদেশ ইউ ওয়ান্ট’ নামক এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কাজ করা হবে।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণতান্ত্রিক চর্চাকে আরও জোরদার এবং নাগরিক অংশগ্রহণকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। ওয়েবসাইটটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো—তরুণ প্রজন্মসহ সব বাংলাদেশিকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে উৎসাহিত করা। এই প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধনের মাধ্যমে নাগরিকেরা তাঁদের প্রত্যাশিত ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ সম্পর্কে সরাসরি মতামত প্রকাশ করতে পারবেন।

ওয়েবসাইটটি থেকে গণতন্ত্র, সুশাসন, দায়িত্বশীল নাগরিকত্ব ও নির্বাচনী অংশগ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ থাকবে।

নির্বাচন কমিশন ও জাতিসংঘ বিশ্বাস করে, একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র গড়ে তুলতে সচেতন নাগরিক অংশগ্রহণ অপরিহার্য। সে লক্ষ্যেই এই ওয়েবসাইটে নাগরিক দায়িত্ব, ভোটাধিকার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বার্তা অত্যন্ত সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই প্ল্যাটফর্ম সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক হিসেবে কাজ করবে। এটি দেশের সব স্তরের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত, যা ভবিষ্যতে ইতিবাচক সংলাপ ও দায়িত্ববোধ বিকাশে সহায়ক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় আনতে চলবে ১০টি বিশেষ ট্রেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪০
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহ থেকে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দলটির নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় আনার জন্য বিশেষ ট্রেন ও অতিরিক্ত কোচ বরাদ্দের আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চাহিদার ভিত্তিতে ১০টি রুটে বিশেষ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়মিত চলাচলকারী একাধিক ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হবে।

চাহিদার ভিত্তিতে বিশেষ ট্রেন চলবে নিম্নোক্ত রুটগুলোতে—কক্সবাজার–ঢাকা–কক্সবাজার, জামালপুর–ময়মনসিংহ–ঢাকা–জামালপুর, টাঙ্গাইল–ঢাকা–টাঙ্গাইল, ভৈরববাজার–নরসিংদী–ঢাকা–নরসিংদী–ভৈরববাজার, জয়দেবপুর–ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট–জয়দেবপুর (গাজীপুর), পঞ্চগড়–ঢাকা–পঞ্চগড়, খুলনা–ঢাকা–খুলনা, চাটমোহর–ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট–চাটমোহর, রাজশাহী–ঢাকা–রাজশাহী এবং যশোর–ঢাকা–যশোর।

বিশেষ ট্রেন পরিচালনার কারণে স্বল্প দূরত্বের তিনটি ট্রেনের চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে। ট্রেনগুলো হলো—রাজবাড়ী কমিউটার (রাজবাড়ী–পোড়াদহ), ঢালারচর এক্সপ্রেস (পাবনা–রাজশাহী) এবং রোহনপুর কমিউটার (রোহনপুর–রাজশাহী)। ২৫ ডিসেম্বর এসব ট্রেনের যাত্রা এক দিনের জন্য স্থগিত থাকবে।

এতে সংশ্লিষ্ট রুটের যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনা ও অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের আনুমানিক ৩৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হবে।

স্পেশাল ট্রেন ও অতিরিক্ত কোচে দলীয় নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন আচরণ বিধিমালা–২০২৫ কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত