Ajker Patrika

৭ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি

পানিবন্দী হাজারো পরিবার, মিলছে না ত্রাণ, দুর্ভোগ

  • পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকে কাঁচা ধান কেটে ঘরে তুলছে।
  • শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।
  • রাজশাহীর বাঘায় তলিয়েছে ফসলি জমি।
  • ভাঙন-আতঙ্কে গাইবান্ধার নদীর তীরের মানুষ।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ০১
পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। বাধ্য হয়ে অপরিপক্ব ধান কাটছেন এক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। বাধ্য হয়ে অপরিপক্ব ধান কাটছেন এক দম্পতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দফায় দফায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে ছয় জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কয়েকটি স্থানে ইতিমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে পানি। এতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসলের খেত। বাধ্য হয়ে অনেকে কাঁচা ধান কেটে ঘরে তুলছে। অনেকেই পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে নিরাপদ স্থানে। এর মধ্যে খবর পাওয়া গেছে, কোথাও কোথাও শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। মিলছে না ত্রাণও।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ এবং দক্ষিণ ওডিশা উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। মৌসুমি বায়ু ভারতের রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে ভারতের আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ বৃহস্পতিবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে।

পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে বাঘার ফসলি জমি

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে পদ্মার আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০০ পরিবার। বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বহু বাড়িঘর। ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষক এখন কাঁচা ধান গরুর খাবার হিসেবে কেটে নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, চকরাজাপুর ইউনিয়নের মাঠগুলোয় এখন শুধু পানি আর পানি। নিচ পলাশী ফতেপুর মাঠে সবচেয়ে বেশি ফসলহানি হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া এবং দিয়াড় কাদিরপুরের প্রায় ৬০০ বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়সহ প্রায় ৫০টি পরিবার নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার বলেন, প্রাথমিকভাবে ২২০টি পরিবারের পানিবন্দী হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

শুকনা খাবারের সংকট, মিলছে না ত্রাণও

চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১১ হাজার পরিবার অতিবৃষ্টি আর উজানের ঢলে বেশ কিছুদিন ধরেই পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধের সংকট। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তেমন কিছুই পাচ্ছে না বন্যাকবলিত এসব এলাকার বাসিন্দারা। তবে প্রশাসন বলছে, বরাদ্দ কম। তাই যতটা সম্ভব বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের কানছিড়া জ্যাটপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুলিয়া বেগম বলেন, ‘হামার বাড়িতে এক সপ্তাহ থেকে পানি ঢুকে গেছে। খাবারদাবার কিছুই নাই। পরের কাছে চেয়েচিন্তে খাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কেহু হামাকে খাবার দিতে আসেনি। হামাদের এখানকার কেহু খাবার পায়নি।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলায় ২৮ টন চাল ও ২৩০ পরিবারকে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চার পরিবারকে আট বান্ডিল টিন ও ২৪ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় শিবগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসলের। সরেজমিনে দেখা গেছে, আউশ ধান, আখ, হলুদ ও বিভিন্ন শাকসবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেই তলিয়ে যাওয়া ধান গবাদিপশুকে খাওয়ার জন্য কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

লালমনিরহাটে পানিবন্দী ২০ হাজার পরিবার

টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা দুই দিন বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহে চরম অবনতি ঘটেছে লালমনিরহাটের বন্যার পরিস্থিতি। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

গতকাল বেলা ৩টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৯ মিটার; যা বিপৎসীমার ৪ সেমি ওপরে।

ঘরে পানি, তলিয়ে গেছে ফসলের খেত

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তাবেষ্টিত চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক শ পরিবার। তলিয়ে গেছে আমন ধান ও সবজিখেত। উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, নোহালী, গজঘণ্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নে তিস্তা নদীর নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষজন।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলী গ্রামের কুমোবালা বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে বাড়িতে পানি ওঠে। পানি ওঠায় কষ্টে আছি। এর আগেও পানি উঠে দুদিন কষ্টে থাকলেও কোনো সহায়তা পাইনি।’

কুড়িগ্রামে বন্যার পদধ্বনি

কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। গতকাল বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে এমন তথ্য জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পাউবো।

ব্রহ্মপুত্রতীরবর্তী উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘পানি বাড়তেছে। নদের মাঝের কিছু নিচু চরে পানি ঢুকতেছে। তবে এখনো বাড়িঘরে পানি ওঠে নাই। এমন করি বাড়তে থাকলে বন্যা হইতে পারে।’

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, পানি বাড়ছে। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত

দফায় দফায় বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ৪০ মিলিমিটার। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরের মানুষগুলো ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে।

ফুলছড়ি উপজেলার গুপ্তমণি চরের বাসিন্দা ইমন মিয়া বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ছে। পানি বাড়লেই আমরা আতঙ্কে থাকি ভিটেমাটি হারানোর ভয়ে।’

দৌলতপুরে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি আরও ১০ সেমি বেড়েছে। এতে চিলমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের মোট ১৯টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামে আরও প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে।

এ পরিস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বন্যাকবলিত দুই ইউনিয়নের ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকায় আজকের পত্রিকা'র প্রতিনিধিরা]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮১ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী

  • জামায়াতে বিদ্রোহী প্রার্থী ময়মনসিংহের এক নেতা।
  • মনোনয়ন ফরম বিক্রি ৩,৪০৭টি, জমা ২,৫৮২টি।
  • রোববার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলবে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৮১ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল সোমবার। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে এদিন বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির আরও অনেক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৮১টি আসনে দলটির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

তবে শুধু বিএনপিতে নয়, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের দুই নেতা। আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী রোববার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তির তারিখ ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি এবং ভোট গ্রহণ ১২ ফেব্রুয়ারি।

নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৩,৪০৭ জন। তাঁদের মধ্যে গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি।

গত ৩ নভেম্বর প্রথম পর্যায়ে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। এক দিন পরই মাদারীপুর-১ আসনের ঘোষিত প্রার্থী কামাল জামাল মোল্লার নাম স্থগিত করা হয়। পরে ৪ ডিসেম্বর আরও ৩৬টি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে দলটি। পরবর্তী ২৮ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে। এর মধ্যে মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে ৮ জোট নেতার। এর বাইরে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন আরও ৫ নেতা।

আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা যায়, ময়মনসিংহে ১১টি আসনের ৯টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির ১৪ জন নেতা। ময়মনসিংহ-৪ ও ৫ বাদে বাকি সব আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতারা। ময়মনসিংহ-১ আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের আসনেই দলের আরও দুই নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নোয়াখালীর ৬টি আসনের মধ্যে তিনটিতেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বাইরে দলের অন্য নেতারাও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নোয়াখালী-২ আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানসহ ২ জন। নোয়াখালী-৫ আসনে দলের বাইরে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির নেতা প্রয়াত মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ। নোয়াখালী-৬ আসনেও বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলের তিন নেতা। দলের সমর্থন না পেয়েও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক এমপি ফজলুল আজিম ও তাঁর স্ত্রী এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানবীর উদ্দিন রাজিব। তিনটি আসনে বিদ্রোহীরা মাঠে থাকলে বিএনপির জন্য নেতিবাচক ফল আনতে পারে।

নওগাঁর ৬ আসনের মধ্যে ৫টিতেই বিএনপির প্রার্থী আছেন একাধিক। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬টি আসনেও আছেন বিএনপির একাধিক প্রার্থী। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে সমর্থন দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জোনায়েদ সাকিকে বিএনপির ছাড় দেওয়া আসনে বিএনপির এক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নাটোরের ৪টি আসনের মধ্যে ২টিতে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে চান। এর মধ্যে নাটোর-১ আসনে বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরকে ছাড় দিলেও সেখানে বিএনপির নেতা হাসান মাহমুদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মানিকগঞ্জের ৩ আসনেই বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি সংসদীয় আসনের একটিতে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। দিনাজপুরের ৬ আসনের মধ্যে দুটিতে বিএনপির দুজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন (দিনাজপুর-২ ও ৫)।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম, জামালপুর, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, বরিশাল, বাগেরহাট, ফরিদপুর, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, শেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, নাটোর ও রংপুর, নরসিংদী, পাবনাসহ বিভিন্ন জায়গায় এক এবং একাধিক আসনে বিএনপির কয়েকজন করে নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জামায়াতে ইসলামী

এদিকে দলীয় প্রার্থী থাকার পরেও ময়মনসিংহ-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর জসিম উদ্দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জামায়াতের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী হাসানুজ্জামান সজীব। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতা জহুরুল ইসলাম আজিজি।

১৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী বদল

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ আসনে পরিবর্তন করেছে বিএনপি। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে। ঢাকা-১২ আসনে সাইফুল আলম নীরবের পরিবর্তে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মো. মাসুদুজ্জামান ভোটে অনীহা প্রকাশ করার পর সেখানে বিএনপির সাবেক মহানগর সভাপতি আবুল কালামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রাউজান (চট্টগ্রাম-৬) আসনে ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবর্তে গোলাম আকবর খন্দকারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি আগে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুকের জন্য ফাঁকা রাখা হলেও অলি আহমদের দল জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেওয়ার পর সেখানে বিএনপি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিনকে প্রার্থী করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম-৪ আসনে কাজী সালাহউদ্দিনের পরিবর্তে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ থেকে সরিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান।

বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের ঋণখেলাপি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেখানে বিএনপির নেতা মীর শাহে আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তবে মান্না শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানের বদলে কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে প্রার্থী করা হয়। মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে এক্‌মি গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রবীণ নেতা মিজানুর রহমান সিনহার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ এবং মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে কামরুজ্জামান রতনের বদলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পেয়েছেন।

ঝিনাইদহ-১ আসনে সদ্য পদত্যাগ করা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে প্রার্থী করা হয়েছে। নড়াইল-২ আসনে বিএনপির প্রার্থীর পরিবর্তে জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

যশোর-১, যশোর-৫ ও যশোর-৬ আসনেও দলীয় ও জোটগত সমীকরণে নতুন প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামাল মোল্লার বদলে নাদিরা আক্তারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যশোর-৬ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গণঅধিকার পরিষদ থেকে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া রাশেদ খান। এদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী রেখেছে বিএনপি।

মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২ হাজার ৫৮২টি

ইসি জানিয়েছে, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছিল, জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি। খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি। ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪টি জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি মনোনয়নপত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মাসের চুক্তিতে স্বাস্থ্যের ডিজি ও সচিব নিয়োগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।

২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত