আবদুল আযীয কাসেমি

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। রমজানে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনার পর রাতের বেলায় চলত কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবি ও তাহাজ্জুদ। দীর্ঘ তারাবির পাশাপাশি তাঁরা তাহাজ্জুদও পড়তেন রাত জেগে।
এ কাজে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করত নবীজির সেই বিখ্যাত হাদিস, যেটি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় এর সঙ্গে রোজা রাখবে, তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজানে রাতের নামাজ আদায় করবে ইমান ও সওয়াবের আশায়, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) মুছে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
এ বিষয়ে আরও একটি চমৎকার হাদিস বর্ণনা করেছেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রোজা আবেদন করে বলবে, হে রব, আমি তাঁকে দিনের বেলা খানাপিনা ও যৌনচাহিদা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তাঁর পক্ষে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, ‘হে রব, আমি তাঁকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখে নামাজে ব্যস্ত রেখেছি। আপনি তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ (শুআবুল ইমান)
রমজানের প্রথম দুই দশক সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, এ সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) রাত জাগতেন। খুব অল্পসময়ই ঘুমাতেন; বাকি সময় ইবাদতে কাটাতেন। তবে রমজানের শেষ দশকে শুধু নিজেই রাত জাগতেন না, পরিবারকেও রাত জাগতে উৎসাহ দিতেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি পরিশ্রম করতেন, যা তিনি অন্যসময় করতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আয়েশা রা. থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন রমজানের শেষ দশকের আগমন হতো, তিনি কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরও জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সায়েব ইবনে ইয়াজিদ বলেন, হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশে হজরত উবাই ইবনে কাআব ও তামিমে দারি (রা.) আমাদের তারাবি পড়াতেন। তিনি এক এক রাকাতে দুশ আয়াতও তিলাওয়াত করতেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে লাঠির ওপর ভর দিতাম। নামাজ শেষ হতে হতে সুবহে সাদিকের সামান্য সময় বাকি থাকত। (বায়হাকি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুবকর বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, রমজানে তারাবির নামাজ থেকে যখন আমরা বাসায় ফিরতাম, তখন ভৃত্যরা সাহরির খাবার নিয়ে তাড়াহুড়ো করত সুবহে সাদিক উদিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে।’ (মুয়াত্তা মালিক)
ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা সায়েব বিন ইয়াজিদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম হজরত ওমর (রা)-এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তাঁরা দীর্ঘ দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। হজরত ওসমান বিন আফফানের যুগে এসে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে লাঠিতে ভর করতে হতো।’ (বায়হাকি)
সংক্রান্ত আরও বহু ঘটনা হাদিসগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এসে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে এসেছে। যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য আছে তাঁদের রাত জেগে ইবাদত করা উত্তম। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা যতটুকু সম্ভব রাত জেগে তারাবি, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াতে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।
লেখক: শিক্ষক

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। রমজানে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনার পর রাতের বেলায় চলত কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবি ও তাহাজ্জুদ। দীর্ঘ তারাবির পাশাপাশি তাঁরা তাহাজ্জুদও পড়তেন রাত জেগে।
এ কাজে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করত নবীজির সেই বিখ্যাত হাদিস, যেটি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় এর সঙ্গে রোজা রাখবে, তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজানে রাতের নামাজ আদায় করবে ইমান ও সওয়াবের আশায়, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) মুছে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
এ বিষয়ে আরও একটি চমৎকার হাদিস বর্ণনা করেছেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রোজা আবেদন করে বলবে, হে রব, আমি তাঁকে দিনের বেলা খানাপিনা ও যৌনচাহিদা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তাঁর পক্ষে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, ‘হে রব, আমি তাঁকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখে নামাজে ব্যস্ত রেখেছি। আপনি তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ (শুআবুল ইমান)
রমজানের প্রথম দুই দশক সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, এ সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) রাত জাগতেন। খুব অল্পসময়ই ঘুমাতেন; বাকি সময় ইবাদতে কাটাতেন। তবে রমজানের শেষ দশকে শুধু নিজেই রাত জাগতেন না, পরিবারকেও রাত জাগতে উৎসাহ দিতেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি পরিশ্রম করতেন, যা তিনি অন্যসময় করতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আয়েশা রা. থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন রমজানের শেষ দশকের আগমন হতো, তিনি কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরও জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সায়েব ইবনে ইয়াজিদ বলেন, হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশে হজরত উবাই ইবনে কাআব ও তামিমে দারি (রা.) আমাদের তারাবি পড়াতেন। তিনি এক এক রাকাতে দুশ আয়াতও তিলাওয়াত করতেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে লাঠির ওপর ভর দিতাম। নামাজ শেষ হতে হতে সুবহে সাদিকের সামান্য সময় বাকি থাকত। (বায়হাকি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুবকর বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, রমজানে তারাবির নামাজ থেকে যখন আমরা বাসায় ফিরতাম, তখন ভৃত্যরা সাহরির খাবার নিয়ে তাড়াহুড়ো করত সুবহে সাদিক উদিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে।’ (মুয়াত্তা মালিক)
ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা সায়েব বিন ইয়াজিদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম হজরত ওমর (রা)-এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তাঁরা দীর্ঘ দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। হজরত ওসমান বিন আফফানের যুগে এসে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে লাঠিতে ভর করতে হতো।’ (বায়হাকি)
সংক্রান্ত আরও বহু ঘটনা হাদিসগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এসে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে এসেছে। যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য আছে তাঁদের রাত জেগে ইবাদত করা উত্তম। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা যতটুকু সম্ভব রাত জেগে তারাবি, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াতে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।
লেখক: শিক্ষক
আবদুল আযীয কাসেমি

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। রমজানে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনার পর রাতের বেলায় চলত কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবি ও তাহাজ্জুদ। দীর্ঘ তারাবির পাশাপাশি তাঁরা তাহাজ্জুদও পড়তেন রাত জেগে।
এ কাজে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করত নবীজির সেই বিখ্যাত হাদিস, যেটি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় এর সঙ্গে রোজা রাখবে, তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজানে রাতের নামাজ আদায় করবে ইমান ও সওয়াবের আশায়, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) মুছে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
এ বিষয়ে আরও একটি চমৎকার হাদিস বর্ণনা করেছেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রোজা আবেদন করে বলবে, হে রব, আমি তাঁকে দিনের বেলা খানাপিনা ও যৌনচাহিদা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তাঁর পক্ষে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, ‘হে রব, আমি তাঁকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখে নামাজে ব্যস্ত রেখেছি। আপনি তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ (শুআবুল ইমান)
রমজানের প্রথম দুই দশক সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, এ সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) রাত জাগতেন। খুব অল্পসময়ই ঘুমাতেন; বাকি সময় ইবাদতে কাটাতেন। তবে রমজানের শেষ দশকে শুধু নিজেই রাত জাগতেন না, পরিবারকেও রাত জাগতে উৎসাহ দিতেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি পরিশ্রম করতেন, যা তিনি অন্যসময় করতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আয়েশা রা. থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন রমজানের শেষ দশকের আগমন হতো, তিনি কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরও জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সায়েব ইবনে ইয়াজিদ বলেন, হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশে হজরত উবাই ইবনে কাআব ও তামিমে দারি (রা.) আমাদের তারাবি পড়াতেন। তিনি এক এক রাকাতে দুশ আয়াতও তিলাওয়াত করতেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে লাঠির ওপর ভর দিতাম। নামাজ শেষ হতে হতে সুবহে সাদিকের সামান্য সময় বাকি থাকত। (বায়হাকি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুবকর বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, রমজানে তারাবির নামাজ থেকে যখন আমরা বাসায় ফিরতাম, তখন ভৃত্যরা সাহরির খাবার নিয়ে তাড়াহুড়ো করত সুবহে সাদিক উদিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে।’ (মুয়াত্তা মালিক)
ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা সায়েব বিন ইয়াজিদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম হজরত ওমর (রা)-এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তাঁরা দীর্ঘ দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। হজরত ওসমান বিন আফফানের যুগে এসে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে লাঠিতে ভর করতে হতো।’ (বায়হাকি)
সংক্রান্ত আরও বহু ঘটনা হাদিসগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এসে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে এসেছে। যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য আছে তাঁদের রাত জেগে ইবাদত করা উত্তম। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা যতটুকু সম্ভব রাত জেগে তারাবি, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াতে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।
লেখক: শিক্ষক

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। রমজানে দিনের বেলায় সিয়াম সাধনার পর রাতের বেলায় চলত কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবি ও তাহাজ্জুদ। দীর্ঘ তারাবির পাশাপাশি তাঁরা তাহাজ্জুদও পড়তেন রাত জেগে।
এ কাজে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করত নবীজির সেই বিখ্যাত হাদিস, যেটি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান ও সওয়াব লাভের আশায় এর সঙ্গে রোজা রাখবে, তাঁর অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি রমজানে রাতের নামাজ আদায় করবে ইমান ও সওয়াবের আশায়, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাতে ইমান ও সওয়াবের আশায় রাত জেগে ইবাদত করবে, তাঁরও অতীতের সব গুনাহ (সগিরা) মুছে দেওয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম)
এ বিষয়ে আরও একটি চমৎকার হাদিস বর্ণনা করেছেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘রোজা ও কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রোজা আবেদন করে বলবে, হে রব, আমি তাঁকে দিনের বেলা খানাপিনা ও যৌনচাহিদা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তাঁর পক্ষে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, ‘হে রব, আমি তাঁকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখে নামাজে ব্যস্ত রেখেছি। আপনি তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।’ (শুআবুল ইমান)
রমজানের প্রথম দুই দশক সম্পর্কে হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, এ সময়ে রাসুলুল্লাহ (সা) রাত জাগতেন। খুব অল্পসময়ই ঘুমাতেন; বাকি সময় ইবাদতে কাটাতেন। তবে রমজানের শেষ দশকে শুধু নিজেই রাত জাগতেন না, পরিবারকেও রাত জাগতে উৎসাহ দিতেন। এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা রা. বলেন, ‘নবী (সা.) রমজানের শেষ দশকে এত বেশি পরিশ্রম করতেন, যা তিনি অন্যসময় করতেন না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আয়েশা রা. থেকে আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন রমজানের শেষ দশকের আগমন হতো, তিনি কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদেরও জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সায়েব ইবনে ইয়াজিদ বলেন, হজরত ওমর (রা.)-এর নির্দেশে হজরত উবাই ইবনে কাআব ও তামিমে দারি (রা.) আমাদের তারাবি পড়াতেন। তিনি এক এক রাকাতে দুশ আয়াতও তিলাওয়াত করতেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে লাঠির ওপর ভর দিতাম। নামাজ শেষ হতে হতে সুবহে সাদিকের সামান্য সময় বাকি থাকত। (বায়হাকি)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবুবকর বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলতেন, রমজানে তারাবির নামাজ থেকে যখন আমরা বাসায় ফিরতাম, তখন ভৃত্যরা সাহরির খাবার নিয়ে তাড়াহুড়ো করত সুবহে সাদিক উদিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে।’ (মুয়াত্তা মালিক)
ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা সায়েব বিন ইয়াজিদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম হজরত ওমর (রা)-এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তাঁরা দীর্ঘ দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। হজরত ওসমান বিন আফফানের যুগে এসে প্রচণ্ড ক্লান্তিতে লাঠিতে ভর করতে হতো।’ (বায়হাকি)
সংক্রান্ত আরও বহু ঘটনা হাদিসগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এসে আমাদের শক্তি-সামর্থ্য কমে এসেছে। যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য আছে তাঁদের রাত জেগে ইবাদত করা উত্তম। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই, তাঁরা যতটুকু সম্ভব রাত জেগে তারাবি, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াতে কাটানোর চেষ্টা করা উচিত।
লেখক: শিক্ষক

জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
৩ ঘণ্টা আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৭ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৭ ঘণ্টা আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)
এই আয়াতটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জুমা শুধু ফরজ নামাজের জন্য নয়, বরং আত্মপর্যালোচনা এবং নেক আমল বৃদ্ধির এক মহান সময়। বিশেষ করে জমাদিউস সানি মাসের এই দ্বিতীয় জুমা মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের সুযোগ এনে দেয়।
অতএব, মাসের এই বরকতময় জুমাবারে নামাজ, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ও সদকা আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ তৈরি করে দেয়।
জুমার দিনে করণীয় আমলসমূহ
জুমার দিনটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মূল্যবান। এই দিনে বিশেষভাবে কিছু আমল করা উচিত। যেমন—
জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা আল্লাহর নৈকট্য লাভ, আত্মশুদ্ধি, নেক আমল বৃদ্ধি এবং সমাজে সদকা ও দান করার এক অনন্য সুযোগ। আল্লাহ আমাদের সকলের নেক আমল গ্রহণ করুন এবং জীবনকে শান্তিতে ভরিয়ে দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।’ (সুরা জুমা: ৯)
এই আয়াতটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জুমা শুধু ফরজ নামাজের জন্য নয়, বরং আত্মপর্যালোচনা এবং নেক আমল বৃদ্ধির এক মহান সময়। বিশেষ করে জমাদিউস সানি মাসের এই দ্বিতীয় জুমা মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের সুযোগ এনে দেয়।
অতএব, মাসের এই বরকতময় জুমাবারে নামাজ, দোয়া, কোরআন তিলাওয়াত ও সদকা আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ তৈরি করে দেয়।
জুমার দিনে করণীয় আমলসমূহ
জুমার দিনটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মূল্যবান। এই দিনে বিশেষভাবে কিছু আমল করা উচিত। যেমন—
জমাদিউস সানির দ্বিতীয় জুমা আল্লাহর নৈকট্য লাভ, আত্মশুদ্ধি, নেক আমল বৃদ্ধি এবং সমাজে সদকা ও দান করার এক অনন্য সুযোগ। আল্লাহ আমাদের সকলের নেক আমল গ্রহণ করুন এবং জীবনকে শান্তিতে ভরিয়ে দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন।
১২ মার্চ ২০২৪
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৭ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৭ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন। নবীজির মুখনিঃসৃত মূল্যবান নসিহত থেকে নিজেদের জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতেন।
ইবাদত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদ ছিল আলোকিত প্রজন্ম গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণস্থল। নবী করিম (সা.)-এর যুগে শিশুরা মসজিদে আসত, ঘুরে বেড়াত, ইবাদত শিখত এবং সাহাবিদের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করত। মসজিদ ছিল কচিকাঁচাদের ভালোবাসার জায়গা। কোনো ভয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবন্ধকতা ছিল না তাদের।
কিন্তু আজকের বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শিশুরা মসজিদে এলে অনেকেই তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন, সামান্য দুষ্টুমিতেই ধমক দেন, এমনকি কখনো তাড়িয়েও দেন। এতে করে অনেক অভিভাবকই নিজের সন্তানদের সহজে মসজিদে আনতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে মসজিদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দূরত্ব তৈরি হয়। অথচ ভবিষ্যতে এই প্রজন্মই উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই তাদের মসজিদমুখী করা এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
নবীজির যুগে শিশুদের মসজিদে গমন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে শিশুদের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। নবীজি (সা.)-এর চারপাশে সাহাবিদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাদেরও দেখা যেত। নবীজি (সা.) কখনো তাদের ধমক দিতেন না, তাড়িয়ে দিতেন না। তিনি শিশুদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতেন। তাদের প্রতি অসীম মমতা দেখাতেন। নামাজ চলাকালেও নবীজি (সা.) শিশুদের প্রতি বিশেষ কোমলতা প্রদর্শন করতেন। তাঁর নাতি হাসান বা হুসাইন (রা.) কখনো তাঁর পিঠে চড়ে বসত। তিনি তাড়াহুড়ো না করে বরং তাদের ভালোবাসার খাতিরে সিজদা দীর্ঘ করতেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সিজদায় গেলে হজরত হাসান কিংবা হোসাইন (রা.) তাঁর পিঠে চড়ে বসে। এ কারণে নবীজি (সা.) খুব দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকেন। নামাজ শেষে সাহাবিরা এর কারণ জানতে চাইলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমার এই নাতি আমাকে বাহন বানিয়ে নিয়েছিল, তাই তাকে নামিয়ে দিতে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাইনি, যতক্ষণ না সে স্বাভাবিকভাবে নেমে আসে।’ (সুনানে নাসায়ি: ১১৪১)। মেয়েশিশুরাও নবীজির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। তারাও মসজিদে আসত। হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা জাইনাবের মেয়ে উমামাকে কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়তেন। সিজদায় গেলে তাকে নামিয়ে দিতেন এবং দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১৭)
আমাদের দেশের বেদনাদায়ক বাস্তবতা
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে ‘নামাজের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখানোর লেভেল লাগিয়ে অনেকেই শিশুদের প্রতি রূঢ় আচরণকে বৈধ মনে করেন। তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। কোনো কোনো মসজিদ কমিটি ‘বাচ্চাদের মসজিদে আনা নিষিদ্ধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে রাখেন মসজিদের সামনে। এসব আচরণ শিশুদের কোমল হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। পরিণতিতে সে মসজিদকে ভয় পেতে শুরু করে। যে রাসুল (সা.) শিশুদের মাথায় মমতার পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাঁর উম্মতের কেউ কেউ আজ শিশুদের বকাঝকা করে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা বড় লজ্জার বিষয়।
শিশুদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি হোক নম্রতা
শিশুরা দেহ-মন উভয় দিক থেকে কোমল। তারা কঠোরতা সহ্য করতে পারে না। নবীজি (সা.) বাচ্চাদের প্রতি খুবই কোমল ছিলেন। আল্লাহ তাআলাও কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতা ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬০২৪)। অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯০)। আমাদেরও উচিত বাচ্চাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা। তাদের কিছু শেখাতে হলেও আদুরে গলায় শিশুসুলভ ভঙ্গিতে শেখানো। বাচ্চাদের জন্য এটি কঠোরতা থেকেও বেশি ফলপ্রসূ।
শিশুরা হোক মসজিদমুখী
শিশুদের মসজিদমুখী করতে হলে নম্রতা, কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে। তাদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মসজিদের আঙিনায় শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার হতে পারে। সেখানে তাদের উপযোগী রঙিন বই, কোরআন শেখার বিভিন্ন মজাদার উপকরণ থাকতে পারে। এতে তারা ধীরে ধীরে মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি ও ইমাম সাহেবগণ নানা ধরনের উৎসাহমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। হতে পারে শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক বিশেষ ক্লাস। যেখানে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে তাদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখানো হবে। যারা এতে নিয়মিত উপস্থিত হবে, তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কার্যক্রমও থাকতে পারে।
মসজিদে আসার পর শিশুদের একটু শব্দে কেউ যদি রেগে যায়, বিনয়ের সঙ্গে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন ‘নবীজির মসজিদেও তো শিশুদের বিচরণ ছিল। আমরা তাদের প্রতি কোমল হই। কঠোর আচরণ পরিত্যাগ করি।’ এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের পরিবেশ বদলে যাবে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা যদি চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো, সচ্চরিত্রবান, নামাজি ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন হোক—তাহলে তাদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। উৎসাহ, অভয়, ভালোবাসা দিয়ে ও নানা পরিকল্পনা করে তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে আলোকিত প্রজন্ম।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন। নবীজির মুখনিঃসৃত মূল্যবান নসিহত থেকে নিজেদের জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতেন।
ইবাদত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদ ছিল আলোকিত প্রজন্ম গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণস্থল। নবী করিম (সা.)-এর যুগে শিশুরা মসজিদে আসত, ঘুরে বেড়াত, ইবাদত শিখত এবং সাহাবিদের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করত। মসজিদ ছিল কচিকাঁচাদের ভালোবাসার জায়গা। কোনো ভয় বা নিষেধাজ্ঞার প্রতিবন্ধকতা ছিল না তাদের।
কিন্তু আজকের বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। শিশুরা মসজিদে এলে অনেকেই তাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন, সামান্য দুষ্টুমিতেই ধমক দেন, এমনকি কখনো তাড়িয়েও দেন। এতে করে অনেক অভিভাবকই নিজের সন্তানদের সহজে মসজিদে আনতে চান না। ফলে ধীরে ধীরে মসজিদের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দূরত্ব তৈরি হয়। অথচ ভবিষ্যতে এই প্রজন্মই উম্মতের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই তাদের মসজিদমুখী করা এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
নবীজির যুগে শিশুদের মসজিদে গমন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে শিশুদের স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল। নবীজি (সা.)-এর চারপাশে সাহাবিদের সঙ্গে ছোট বাচ্চাদেরও দেখা যেত। নবীজি (সা.) কখনো তাদের ধমক দিতেন না, তাড়িয়ে দিতেন না। তিনি শিশুদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতেন। তাদের প্রতি অসীম মমতা দেখাতেন। নামাজ চলাকালেও নবীজি (সা.) শিশুদের প্রতি বিশেষ কোমলতা প্রদর্শন করতেন। তাঁর নাতি হাসান বা হুসাইন (রা.) কখনো তাঁর পিঠে চড়ে বসত। তিনি তাড়াহুড়ো না করে বরং তাদের ভালোবাসার খাতিরে সিজদা দীর্ঘ করতেন।
একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সিজদায় গেলে হজরত হাসান কিংবা হোসাইন (রা.) তাঁর পিঠে চড়ে বসে। এ কারণে নবীজি (সা.) খুব দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকেন। নামাজ শেষে সাহাবিরা এর কারণ জানতে চাইলে নবীজি (সা.) বলেন, ‘আমার এই নাতি আমাকে বাহন বানিয়ে নিয়েছিল, তাই তাকে নামিয়ে দিতে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাইনি, যতক্ষণ না সে স্বাভাবিকভাবে নেমে আসে।’ (সুনানে নাসায়ি: ১১৪১)। মেয়েশিশুরাও নবীজির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতো না। তারাও মসজিদে আসত। হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) তাঁর কন্যা জাইনাবের মেয়ে উমামাকে কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়তেন। সিজদায় গেলে তাকে নামিয়ে দিতেন এবং দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১৭)
আমাদের দেশের বেদনাদায়ক বাস্তবতা
দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে ‘নামাজের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখানোর লেভেল লাগিয়ে অনেকেই শিশুদের প্রতি রূঢ় আচরণকে বৈধ মনে করেন। তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেন। কোনো কোনো মসজিদ কমিটি ‘বাচ্চাদের মসজিদে আনা নিষিদ্ধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙিয়ে রাখেন মসজিদের সামনে। এসব আচরণ শিশুদের কোমল হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। পরিণতিতে সে মসজিদকে ভয় পেতে শুরু করে। যে রাসুল (সা.) শিশুদের মাথায় মমতার পরশ বুলিয়ে দিতেন, তাঁর উম্মতের কেউ কেউ আজ শিশুদের বকাঝকা করে মসজিদ থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা বড় লজ্জার বিষয়।
শিশুদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি হোক নম্রতা
শিশুরা দেহ-মন উভয় দিক থেকে কোমল। তারা কঠোরতা সহ্য করতে পারে না। নবীজি (সা.) বাচ্চাদের প্রতি খুবই কোমল ছিলেন। আল্লাহ তাআলাও কোমলতা পছন্দ করেন। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কোমল আচরণকারী, তিনি সর্বক্ষেত্রে কোমলতা ভালোবাসেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬০২৪)। অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত, সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৯০)। আমাদেরও উচিত বাচ্চাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা। তাদের কিছু শেখাতে হলেও আদুরে গলায় শিশুসুলভ ভঙ্গিতে শেখানো। বাচ্চাদের জন্য এটি কঠোরতা থেকেও বেশি ফলপ্রসূ।
শিশুরা হোক মসজিদমুখী
শিশুদের মসজিদমুখী করতে হলে নম্রতা, কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে। তাদের জন্য শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মসজিদের আঙিনায় শিশুদের জন্য আলাদা কর্নার হতে পারে। সেখানে তাদের উপযোগী রঙিন বই, কোরআন শেখার বিভিন্ন মজাদার উপকরণ থাকতে পারে। এতে তারা ধীরে ধীরে মসজিদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। পাশাপাশি মসজিদ কমিটি ও ইমাম সাহেবগণ নানা ধরনের উৎসাহমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। হতে পারে শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক বিশেষ ক্লাস। যেখানে শিশুসুলভ ভঙ্গিতে তাদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখানো হবে। যারা এতে নিয়মিত উপস্থিত হবে, তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ কার্যক্রমও থাকতে পারে।
মসজিদে আসার পর শিশুদের একটু শব্দে কেউ যদি রেগে যায়, বিনয়ের সঙ্গে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন ‘নবীজির মসজিদেও তো শিশুদের বিচরণ ছিল। আমরা তাদের প্রতি কোমল হই। কঠোর আচরণ পরিত্যাগ করি।’ এভাবে ধীরে ধীরে সমাজের পরিবেশ বদলে যাবে।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা যদি চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো, সচ্চরিত্রবান, নামাজি ও ইসলামি মূল্যবোধসম্পন্ন হোক—তাহলে তাদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত করে দিতে হবে। উৎসাহ, অভয়, ভালোবাসা দিয়ে ও নানা পরিকল্পনা করে তাদের মসজিদমুখী করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে আলোকিত প্রজন্ম।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন।
১২ মার্চ ২০২৪
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৭ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৭ ঘণ্টা আগেহাবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে। ছয় ঋতুর মধ্যে অন্যতম হলো শীতকাল, যা বছরে একবার হিমশীতল পরশ নিয়ে আসে। আমরা সর্বদা এর আগমনের অপেক্ষায় থাকি। ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শীতের তীব্রতা কম হলেও উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে নেমে আসে অপ্রত্যাশিত শৈত্যপ্রবাহ।
১৮ কোটি মানুষের এই দেশে শীতকালকে ঘিরে জমে ওঠে নানা আয়োজন, প্রয়োজন ও আমোদ-প্রমোদ। প্রভাতে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েসের বিচিত্র স্বাদে ভরে ওঠে সবার মন। শীতকে কেন্দ্র করে শহরেও চলে নানা আয়োজন। আবার লেপ-কম্বল, সোয়েটার, শাল, মাফলারসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্রের দোকানে লেগে থাকে প্রচণ্ড ভিড়। এগুলোর চাহিদাও ব্যাপক, কারণ তীব্র শীতে উষ্ণতার প্রয়োজন সবার।
এই শীতের আমেজে যখন সাধারণ মানুষ লেপের নিচে সোয়েটার জড়িয়ে উষ্ণতা খোঁজে, ঠিক তখনই একদল মানুষ শুয়ে থাকে রাস্তার ধারে—ফুটপাতে। অনেকে বিভিন্ন অলিগলিতে জায়গা খোঁজে, আবার পাথর হৃদয়ের মানুষের তাড়নায় তাদের জায়গা হয় না সেখানেও। তারা আশ্রয় নেয় ডাস্টবিনের পাশে—দুর্গন্ধময় স্থানে। এদের জন্য শীতকাল যেন অভিশাপের এক ঋতু। গৃহহীন ও ভবঘুরেদের কাছে এই সময়টা অগ্নিকুণ্ডের চেয়ে ভয়ংকর। ছেঁড়া পাটি বা বস্তাই তাদের কোমল বিছানা! পাতলা গেঞ্জিই হয় তাদের সোয়েটার। ভাপা পিঠা বা খেজুরের রসের কথা তারা তো ভাবতেও পারে না। এভাবেই মানবেতর জীবন যাপন করে এই বঞ্চিত মানুষেরা।
দেশে পথমানবের সংখ্যা কয়েক লাখ। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও বেকারত্বের জাঁতাকলে পড়ে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। শহরে দালানকোঠায় বড় হয়ে ওঠা আমরা কি কখনো এদের কথা ভেবেছি? অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানহীন এই শিশুরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ নয়? আধুনিকতার এই যুগেও যদি তারা বৈষম্যের শিকার হয়, তবে তাদের বেঁচে থাকার সার্থকতা কোথায়?
এই যাযাবর শিশু-কিশোররা তীব্র শীতের মাঝে বস্ত্রহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়, কুড়ানো পলিথিন বিছিয়ে বালিশ ছাড়া ঘুমায়। এই পথশিশুরাও তো চায় সবার মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে। শীতের দিনে একটু উষ্ণতা তো তাদেরও প্রাপ্য। তাই প্রতিটি সচেতন নাগরিকের উচিত তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো এবং বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানো। এটি কেবল মানবিক দায়িত্বই নয়, সামাজিক ও নৈতিক কর্তব্যও বটে। এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে:
আর এই বঞ্চিতদের জন্য এসবের পাশাপাশি যদি শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তবে একদিন এই সমাজেও ফিরে আসবে পূর্ণ মানবতা। পথশিশুদের আহ্লাদে আলোকিত হয়ে উঠবে এই দেশ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি এক নতুন ইতিহাস হয়ে থাকবে।

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে। ছয় ঋতুর মধ্যে অন্যতম হলো শীতকাল, যা বছরে একবার হিমশীতল পরশ নিয়ে আসে। আমরা সর্বদা এর আগমনের অপেক্ষায় থাকি। ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শীতের তীব্রতা কম হলেও উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে নেমে আসে অপ্রত্যাশিত শৈত্যপ্রবাহ।
১৮ কোটি মানুষের এই দেশে শীতকালকে ঘিরে জমে ওঠে নানা আয়োজন, প্রয়োজন ও আমোদ-প্রমোদ। প্রভাতে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েসের বিচিত্র স্বাদে ভরে ওঠে সবার মন। শীতকে কেন্দ্র করে শহরেও চলে নানা আয়োজন। আবার লেপ-কম্বল, সোয়েটার, শাল, মাফলারসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্রের দোকানে লেগে থাকে প্রচণ্ড ভিড়। এগুলোর চাহিদাও ব্যাপক, কারণ তীব্র শীতে উষ্ণতার প্রয়োজন সবার।
এই শীতের আমেজে যখন সাধারণ মানুষ লেপের নিচে সোয়েটার জড়িয়ে উষ্ণতা খোঁজে, ঠিক তখনই একদল মানুষ শুয়ে থাকে রাস্তার ধারে—ফুটপাতে। অনেকে বিভিন্ন অলিগলিতে জায়গা খোঁজে, আবার পাথর হৃদয়ের মানুষের তাড়নায় তাদের জায়গা হয় না সেখানেও। তারা আশ্রয় নেয় ডাস্টবিনের পাশে—দুর্গন্ধময় স্থানে। এদের জন্য শীতকাল যেন অভিশাপের এক ঋতু। গৃহহীন ও ভবঘুরেদের কাছে এই সময়টা অগ্নিকুণ্ডের চেয়ে ভয়ংকর। ছেঁড়া পাটি বা বস্তাই তাদের কোমল বিছানা! পাতলা গেঞ্জিই হয় তাদের সোয়েটার। ভাপা পিঠা বা খেজুরের রসের কথা তারা তো ভাবতেও পারে না। এভাবেই মানবেতর জীবন যাপন করে এই বঞ্চিত মানুষেরা।
দেশে পথমানবের সংখ্যা কয়েক লাখ। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও বেকারত্বের জাঁতাকলে পড়ে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। শহরে দালানকোঠায় বড় হয়ে ওঠা আমরা কি কখনো এদের কথা ভেবেছি? অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানহীন এই শিশুরা কি আমাদের ভবিষ্যৎ নয়? আধুনিকতার এই যুগেও যদি তারা বৈষম্যের শিকার হয়, তবে তাদের বেঁচে থাকার সার্থকতা কোথায়?
এই যাযাবর শিশু-কিশোররা তীব্র শীতের মাঝে বস্ত্রহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়, কুড়ানো পলিথিন বিছিয়ে বালিশ ছাড়া ঘুমায়। এই পথশিশুরাও তো চায় সবার মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে। শীতের দিনে একটু উষ্ণতা তো তাদেরও প্রাপ্য। তাই প্রতিটি সচেতন নাগরিকের উচিত তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো এবং বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানো। এটি কেবল মানবিক দায়িত্বই নয়, সামাজিক ও নৈতিক কর্তব্যও বটে। এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে:
আর এই বঞ্চিতদের জন্য এসবের পাশাপাশি যদি শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তবে একদিন এই সমাজেও ফিরে আসবে পূর্ণ মানবতা। পথশিশুদের আহ্লাদে আলোকিত হয়ে উঠবে এই দেশ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি এক নতুন ইতিহাস হয়ে থাকবে।

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন।
১২ মার্চ ২০২৪
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
৩ ঘণ্টা আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৭ ঘণ্টা আগেগোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো।
৭ ঘণ্টা আগেআপনার জিজ্ঞাসা
মুফতি শাব্বির আহমদ
প্রশ্ন: ফরজ গোসলের সময় নারীদের খোঁপা খুলে সম্পূর্ণ চুল ধৌত করতে হবে নাকি খোঁপার ওপরে পানি ঢেলে দিলেই হবে? এ বিষয়ে ইসলামের বিধান জানালে উপকৃত হব।
সাদিয়া মৌ, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা অনেক নারীরই মনে আসে। পবিত্রতা অর্জনের জন্য ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম জানা একান্ত জরুরি।
ফরজ গোসলের মৌলিক বিধান
গোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো। চুল, পশমের নিচে সামান্য যে অংশটুকু ঢাকা থাকে, তাতেও পানি পৌঁছানো জরুরি।
নারীদের চুল ধোয়ার ক্ষেত্রে মূল নির্দেশনা
নারীদের চুলের ক্ষেত্রে বিধানটি নির্ভর করে চুল খোলা আছে নাকি শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা আছে তার ওপর। যদি চুল খোলা থাকে বা এমনভাবে সামান্য খোঁপা করা থাকে, যা খুলতে কোনো কষ্ট হয় না, তাহলে চুলের গোড়াসহ সম্পূর্ণ চুল ধৌত করা ফরজ। চুলের কোনো অংশ শুকনো থেকে গেলে গোসল শুদ্ধ হবে না।
তবে যদি চুলে শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা থাকে এবং তা খুলে গোসল করা কষ্টসাধ্য বা সময়ের ব্যাপার হয় (যেমন, ঘন, লম্বা চুল), তাহলে খোঁপা বা বেণি খুলে সব চুল ধৌত করা জরুরি নয়। এ ক্ষেত্রে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট হবে।
এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে সাহাবিয়া হজরত উম্মে সালামা (রা.)-এর একটি বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, ‘একদিন আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি খুব শক্তভাবে আমার চুলে বেণি বাঁধি। ফরজ গোসলের সময় কি বেণি খুলতে হবে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘না। তোমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট—মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দেবে এবং পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। তাহলেই তুমি পবিত্র হয়ে যাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩০)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে কষ্ট লাঘবের জন্য নারীদের ক্ষেত্রে বেণি বা খোঁপা না খুলে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট।
হানাফি ফিকহের সুপ্রসিদ্ধ ফতোয়াগ্রন্থ ‘আল-বাহরুর রায়িক’-এ এই বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—‘নারীদের খোঁপা বা বেণি খুলে চুল ভেজানো কষ্টকর হলে খোঁপা থাকা অবস্থায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। তবে চুলে খোঁপা না থাকলে পুরো চুল ধোয়া সর্বসম্মতিক্রমে ফরজ।’ (আল-বাহরুর রায়িক: ১ / ৫৪)
সারসংক্ষেপ হলো, যদি খোঁপা বা বেণি খোলা কষ্টকর হয়, তবে শুধু চুলের গোড়ায় ভালোভাবে পানি পৌঁছানো ফরজ। যদি খোঁপা বা বেণি খুলতে খুব বেশি সমস্যা না হয় বা তা সামান্য আলগা করে বাঁধা থাকে, তবে চুল খুলে পুরো চুল ভিজিয়ে ভালোভাবে গোসল করাই উত্তম ও মুস্তাহাব। এতে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না এবং ইসলামের পরিচ্ছন্নতার নির্দেশনার পূর্ণ অনুসরণ হয়। আর চুল যদি খোলা থাকে, তাহলে সম্পূর্ণ চুল ধোয়া আবশ্যক।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: ফরজ গোসলের সময় নারীদের খোঁপা খুলে সম্পূর্ণ চুল ধৌত করতে হবে নাকি খোঁপার ওপরে পানি ঢেলে দিলেই হবে? এ বিষয়ে ইসলামের বিধান জানালে উপকৃত হব।
সাদিয়া মৌ, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা অনেক নারীরই মনে আসে। পবিত্রতা অর্জনের জন্য ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম জানা একান্ত জরুরি।
ফরজ গোসলের মৌলিক বিধান
গোসল ফরজ হওয়ার পর পুরো শরীর পানি দিয়ে ধৌত করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যদি তোমরা অপবিত্র হও, তাহলে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করো।’ (সুরা মায়েদা: ৬)। ফরজ গোসলের তিনটি ফরজের মধ্যে অন্যতম হলো: শরীরের প্রতিটি বাহ্যিক অংশে পানি পৌঁছানো। চুল, পশমের নিচে সামান্য যে অংশটুকু ঢাকা থাকে, তাতেও পানি পৌঁছানো জরুরি।
নারীদের চুল ধোয়ার ক্ষেত্রে মূল নির্দেশনা
নারীদের চুলের ক্ষেত্রে বিধানটি নির্ভর করে চুল খোলা আছে নাকি শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা আছে তার ওপর। যদি চুল খোলা থাকে বা এমনভাবে সামান্য খোঁপা করা থাকে, যা খুলতে কোনো কষ্ট হয় না, তাহলে চুলের গোড়াসহ সম্পূর্ণ চুল ধৌত করা ফরজ। চুলের কোনো অংশ শুকনো থেকে গেলে গোসল শুদ্ধ হবে না।
তবে যদি চুলে শক্ত বেণি বা খোঁপা বাঁধা থাকে এবং তা খুলে গোসল করা কষ্টসাধ্য বা সময়ের ব্যাপার হয় (যেমন, ঘন, লম্বা চুল), তাহলে খোঁপা বা বেণি খুলে সব চুল ধৌত করা জরুরি নয়। এ ক্ষেত্রে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট হবে।
এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে সাহাবিয়া হজরত উম্মে সালামা (রা.)-এর একটি বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, ‘একদিন আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি খুব শক্তভাবে আমার চুলে বেণি বাঁধি। ফরজ গোসলের সময় কি বেণি খুলতে হবে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘না। তোমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট—মাথায় তিন আজলা পানি ঢেলে দেবে এবং পুরো শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। তাহলেই তুমি পবিত্র হয়ে যাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩০)
এই হাদিস প্রমাণ করে যে কষ্ট লাঘবের জন্য নারীদের ক্ষেত্রে বেণি বা খোঁপা না খুলে শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট।
হানাফি ফিকহের সুপ্রসিদ্ধ ফতোয়াগ্রন্থ ‘আল-বাহরুর রায়িক’-এ এই বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে—‘নারীদের খোঁপা বা বেণি খুলে চুল ভেজানো কষ্টকর হলে খোঁপা থাকা অবস্থায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। তবে চুলে খোঁপা না থাকলে পুরো চুল ধোয়া সর্বসম্মতিক্রমে ফরজ।’ (আল-বাহরুর রায়িক: ১ / ৫৪)
সারসংক্ষেপ হলো, যদি খোঁপা বা বেণি খোলা কষ্টকর হয়, তবে শুধু চুলের গোড়ায় ভালোভাবে পানি পৌঁছানো ফরজ। যদি খোঁপা বা বেণি খুলতে খুব বেশি সমস্যা না হয় বা তা সামান্য আলগা করে বাঁধা থাকে, তবে চুল খুলে পুরো চুল ভিজিয়ে ভালোভাবে গোসল করাই উত্তম ও মুস্তাহাব। এতে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না এবং ইসলামের পরিচ্ছন্নতার নির্দেশনার পূর্ণ অনুসরণ হয়। আর চুল যদি খোলা থাকে, তাহলে সম্পূর্ণ চুল ধোয়া আবশ্যক।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

রমজান ইবাদতের মাস। এই মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিগণ এ মাসকে দারুণভাবে বরণ করতেন। এ মাসের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের ভিন্নরকম আমেজ কাজ করত নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ—সবার মধ্যে। সবাই এ মাসে ইবাদতের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন।
১২ মার্চ ২০২৪
জুমাবার ইসলামে একটি অত্যন্ত বরকতময় দিন। এটি সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবেও গণ্য। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন—‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনের আজান দেওয়া হয়, তখন ব্যবসা থামিয়ে জুমার নামাজের জন্য হাজির হও এবং আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে তোমরা কল্যাণ লাভ করো।
৩ ঘণ্টা আগে
মসজিদ আল্লাহর ঘর—ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্রও। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মসজিদের মিম্বর থেকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মিম্বরে বসেই যুদ্ধের পরিকল্পনা সাজানো হতো, বিচারিক কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এখান থেকে। সে যুগে নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই নির্ভয়ে মসজিদে আসতেন।
৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ, যা ভারত ও মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত। এই দেশে পাহাড়-পর্বত ও ঘন জঙ্গল সীমিত, মরুভূমিহীন ভূখণ্ডে বিরাজ করে ষড়্ঋতুর মনোমুগ্ধকর আনাগোনা। ঋতুর এই পরিবর্তন প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও সভ্যতাকে নতুন রঙে রাঙিয়ে তোলে।
৭ ঘণ্টা আগে