Ajker Patrika

চার দশকের সশস্ত্র সংগ্রামের সমাপ্তি টানল পিকেকে, সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ মে ২০২৫, ১৭: ২২
কারাবন্দী কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ করছে কুর্দি জনতা। ছবি: সংগৃহীত
কারাবন্দী কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের ছবি নিয়ে বিক্ষোভ করছে কুর্দি জনতা। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে বিলুপ্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আলোচিত সশস্ত্র গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। আজ সোমবার গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ফিরাত নিউজ এজেন্সির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।

গোষ্ঠীটির বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে অবসান ঘটতে যাচ্ছে তুরস্ক-পিকেকের প্রায় চার দশকের সংঘাতের। গতকাল রোববার স্বেচ্ছায় আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি।

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে এক সম্মেলন আয়োজন করে দলটি। এরপর গোষ্ঠীটি জানায়, তারা বেশ কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা খুব শিগগির সবাইকে জানানো হবে। এ সময় কারাবন্দী নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের এক বিবৃতিও পাঠ করা হয়, যেখানে পিকেকের বর্তমান-ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিজের মতামত ও প্রস্তাব তুলে ধরেন ওজালান।

আজ প্রকাশিত বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, তাদের সশস্ত্র লড়াই কুর্দিদের অধিকার আদায়ের লড়াই। যারা কুর্দিদের অধিকার খর্ব করছিল, তাদের বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে পিকেকে। কিন্তু এখন তারা মনে করে, তাদের সেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব শেষ হয়েছে। এই কারণে সংগঠনের ১২তম কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয়েছে—পিকেকের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে ফেলা হবে এবং সশস্ত্র লড়াই বন্ধ করা হবে।

বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, পিকেকে নামের যে সশস্ত্র কার্যক্রম চলছিল, তা আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল একে পার্টির একজন মুখপাত্র আল-জাজিরাকে বলেছেন, যদি এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়, পিকেকের সব শাখা ও অবকাঠামো যদি একেবারে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়, তাহলে তুরস্কের ভবিষ্যৎ ও রাজনীতির জন্য এটি হবে একটি বড় বাঁকবদল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘোষণার পর তুরস্ক ও পিকেকের দীর্ঘদিনের সংঘাত শেষ হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে, যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল সিরিয়া ও ইরাকেও। এর আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কারাগার থেকে এক চিঠিতে গোষ্ঠীটিকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান ওজালান।

১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করে পিকেকে। সেই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। গত কয়েক বছরে তুরস্কে পিকেকের হামলা অনেকটাই কমে এসেছিল। কারণ, তুর্কি সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পেছাতে পেছাতে পাহাড়ি সীমান্ত পেরিয়ে ইরাকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিল কুর্দিরা।

সবশেষ শান্তি উদ্যোগটি শুরু হয় গত বছরের অক্টোবরে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জোটসঙ্গী দেভলেত বাহচেলির প্রস্তাব থেকে। ডানপন্থী এই রাজনীতিক বলেন, যদি পিকেকে সহিংসতা পরিত্যাগ করে এবং সংগঠন ভেঙে দেয়, তাহলে কারাবন্দী নেতা ওজালান প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন। ৭৫ বছর বয়সী ওজালান রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ১৯৯৯ সাল থেকে ইস্তাম্বুলের কাছে ইমরালি দ্বীপে বন্দী আছেন। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ওজালানকে মুক্তি দিতে আঙ্কারার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পিকেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

কারাগারে ১০৫ মন্ত্রী-এমপি

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ও পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত