বিভুরঞ্জন সরকার

১০ মার্চের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘তাঁর উত্থানে বিস্ময়, পতনে আনন্দ’ শিরোনামের খবরটি পড়তে গিয়ে নকুল চন্দ্র বিশ্বাসের একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল। গানটির প্রথম কয়েক লাইন এমন:
কষ্ট করে দিনে-রাইতে
কত টাকা করছ কামাই
এত টাকা ক্যামনে নিবা
কাফনের তো পকেট নাই।
হায় বাড়ি-গাড়ি আহামরি
সোনাদানা ভরি-ভরি
টিভি-ফ্রিজ-চেইন-ঘড়ি
নেতাগিরি-বাহাদুরি
উমেদারি-জমিদারি
পড়ে রইব
কিচ্ছা খতম হইব।
ফরিদপুরের একসময়ের মহাক্ষমতাধর খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের কিচ্ছা সম্ভবত খতম হওয়ার পথে। তাঁর গল্পটি অন্য আর দশটা উত্থানপর্বের গল্পের মতোই। তেমন কেউকেটা ছিলেন না, আকস্মিকভাবেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন ফরিদপুরের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। রাষ্ট্রক্ষমতায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের আনুকূল্য, অনুগ্রহ না পেলে আমাদের দেশে কারও পক্ষে ক্ষমতাধর হয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। বাবর সাহেবও ক্ষমতার আনুকূল্য পেয়ে মাত্র কয়েক বছরেই তড়তড়িয়ে ওপরে উঠেছেন। ভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে তিনি হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাঁর ভাইয়ের নাম খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী।
খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের হঠাৎ উত্থানে বিস্মিত হয়েছিলেন ফরিদপুরের মানুষ। সেই বাবরকে গ্রেপ্তারের পর সাধারণ মানুষ শহরে মিষ্টি খেয়ে মিছিল করেছে, তাঁর হাতকড়া পরা ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
২ হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি বাবর রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন। ৭ মার্চ রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে পরের দিন বিকেলে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। মোহতেশাম হোসেন বাবরের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো: চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়!
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধাভোগী হলেও বাবর ছিলেন একসময় বিএনপির সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আপন ভাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু ওই নির্বাচনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন জয়লাভ করে মন্ত্রী হওয়ার পর ধীরে ধীরে তিনি ভাইয়ের ক্ষমতাবলয়ে ঢুকে পড়েন। এমন অভিযোগ ফরিদপুর আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা করেছেন যে খন্দকার মোশাররফ নিজের প্রয়োজনে, অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য বাবরকে কাছে টেনে নেন। ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ বাবরের হাতে চলে যায়, তিনি হয়ে ওঠেন দলের সর্বেসর্বা। মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ফরিদপুর সদরের বিভিন্ন অফিস-আদালতে প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় কিছু লোক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, পাসপোর্ট অফিস, সড়ক বিভাগ, এলজিইডি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন। এসব টেন্ডার থেকে তিনি কমিশন নেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন-পীড়নের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী।
উচ্চাভিলাষী বাবরের মনোযোগ ছিল সব সময় অর্থ-বিত্তের দিকে। সুযোগ-সুবিধা লুটতেই তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মালয়েশিয়ায় একটি বাড়ি রয়েছে তাঁর, যেখানে তাঁর ছেলে থাকেন। ফরিদপুরের কৈজুরী ইউনিয়নের বাইপাস সড়কের পাশে আরেকটি বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। এ ছাড়া বিপুল ভূসম্পত্তির মালিক হন বাবর।
সব উত্থানেরই পতন আছে। বাবরেরও পতন হয়েছে। ফরিদপুরের মানুষ খুশি হয়েছে। তবে এ প্রশ্নও সামনে এসেছে যে বাবর কি দেশে একজন? ফরিদপুর ছাড়া অন্য জেলাগুলোতে কি এক বা একাধিক বাবর নেই? তাদের লাগাম টেনে ধরা হবে কবে?
এর আগে ২০১৯ সালের শেষ দিকে ক্যাসিনো-জুয়া-মদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় এমন একটি ধারণা দেওয়া হয়েছিল যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান আরও বিস্তৃত হবে এবং গুটিকয়েক ব্যক্তি নয়, দুর্নীতিবাজ রাঘববোয়ালরাও রেহাই পাবেন না। সে সময় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ যে কয়জন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তাঁরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সংগঠনের পদাধিকারী। তাঁদের আগের রাজনৈতিক পরিচয় যদি ভিন্নও থাকে, তাহলেও এটাই সত্য যে তাঁরা বর্তমান পরিচয়েই নানা ধরনের অনৈতিক ও অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে নগদ যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। কোটি কোটি টাকা বাসায় বা অফিসে রেখে তাঁরা একদিকে তাঁদের টাকার গরমের প্রকাশ ঘটিয়েছেন, অন্যদিকে দেশের ব্যাংকিং খাতকে ফোকলা করে দিয়েছেন। তাঁরা বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ১৯৭৪ সালে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেননি। কারণ, আওয়ামী লীগেরই কেউ কেউ তখন রিলিফ চুরিসহ নানা ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলে মাদকবিরোধী অভিযানের সময়ও ‘ইয়াবা বদি’ নামে পরিচিতি অর্জনকারী কক্সবাজারের দাপুটে সাবেক সাংসদের গায়ে টোকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। দুর্নীতি-অপকর্মের সঙ্গে কিছু নাম প্রতীকের মতো হয়ে যায়। এই প্রতীকগুলো ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে অন্যদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিলে সেটা মানুষের কাছে তেমন প্রশংসা পায় না। মানুষ দেখতে চায় সবচেয়ে আলোচিত খারাপ মানুষটি রেহাই পায় কি না! সবচেয়ে খারাপকে রেহাই দিয়ে মধ্য এবং নিম্নস্তরের অসংখ্যজনকে শাস্তির আওতায় আনলেও মানুষ খুশি হয় না। যেকোনো অভিযানের সফলতা নির্ভর করে জনতুষ্টির ওপর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় বলেছিলেন, ‘আমাদের দলের কে, কী, সেটা আমি দেখতে চাই না। আমার আত্মীয়-পরিজন আমি দেখতে চাই না। কে কত বেশি উচ্চবিত্ত, সেটা আমি দেখতে চাই না। অনিয়ম যেখানে আছে, দুর্নীতি যেখানে আছে বা আমাদের দেশকে ফাঁকি দিয়ে যারা কিছু করতে চাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি মানুষ আস্থা রাখতে চায় এই কারণে যে তিনি কথার খেলাপ করেন না। তিনি তাঁর অবস্থান থেকে সরে যান না। কৌশলগত কারণে সাময়িক কিছু নমনীয়তা দেখালেও শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে হলেও তিনি তাঁর অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তাঁর রাজনীতির লক্ষ্য পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। তিনি নিজে কিছু পাওয়ার জন্য নয়, দেশ এবং দেশের মানুষকে কিছু দেওয়ার জন্য রাজনীতি করেন। তিনি মৃত্যুকে বারবার কাছে থেকে দেখেছেন। তাই তিনি অকুতোভয়ে সামনে এগিয়ে যেতে দৃঢ়সংকল্প।
বঙ্গবন্ধু জানতেন, কারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বা করছে। কিন্তু তাঁর হৃদয় ছিল বিশাল, পিতার সহৃদয়তা নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতা না দেখিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছিলেন। চোরা যে ধর্মের কাহিনি শোনে না–এটাও বঙ্গবন্ধু জানতেন। তারপরও হয়তো বিশ্বাস করেছিলেন, যে বাঙালির জন্য তিনি স্বাধীন দেশ অর্জনে নেতৃত্ব দিলেন, সেই বাঙালি আর যা-ই হোক, পিতৃঘাতী হবে না। কিন্তু কিছু কুলাঙ্গার বাঙালি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। শেখ হাসিনা এই বেদনাময় ইতিহাসের নীরব সাক্ষী। তিনি তাঁর আশপাশে যাঁরা আছেন, তাঁদের চেনেন, জানেন। তাঁদের ঠিকুজি তাঁর হাতে থাকার কথা। তাই তিনি ঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেন। কারও অন্যায়, অন্যায্য দাবি বা আবদার তিনি রক্ষা করেন না। সেটা হোক দেশের ভেতরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিংবা দেশের বাইরের কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা রাষ্ট্র।
কিছু সময়ের জন্য লাগাম ছেড়ে দিলেও তিনি জানেন কখন আবার লাগাম টানতে হয়। তিনি আওয়ামী লীগ নামক দলটিকে পুনর্জীবন দিয়েছেন। এই দলের সবলতা-দুর্বলতাও তাঁর নখদর্পণে। বিপদে কারা সঙ্গে থাকে, কারা পালায়—সেটাও তাঁর অজানা নয়। তিনি নানা সময়ে তাঁর বিচক্ষণতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন।
দেশ একদিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সীমাহীন ধনবৈষম্য সামাজিক স্থিতি বিনষ্টের উপাদান তৈরি করছে। বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর অজ্ঞাত নয়। তিনি এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া লোকজনের কারণে সামাজিক বৈষম্য বাড়ে এবং সৎভাবে যাঁরা আয়-উপার্জন করেন, তাঁদের সন্তানেরা হতাশায় ভোগে। শিশুরা তো বুঝতে পারে না, তাই তারা মা-বাবার কাছে জানতে চায়, ওরা যদি দামি গাড়িতে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারে, আমরা কেন পারি না? এমন পরিস্থিতিতে একটি সমাজ এগোতে পারে না। এমন পরিস্থিতির অবসানের জন্যই সমাজের বৈষম্যের এ জায়গাটিতে আঘাত দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এটা করা হচ্ছে সামগ্রিক স্বার্থে।’
বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে যে দেশে কিছু মানুষের হাতে অনেক টাকা জমা হয়েছে। আবার অনেক মানুষের হাতে কোনো টাকাই নেই। টাকা নেই মানে তাদের সঞ্চয় নেই—না ব্যাংকে, না সিন্দুক বা ট্রাংকে। তারা কোনোরকমে বেঁচে আছে। আর অসহায়ভাবে দেখছে স্বল্পসংখ্যক মানুষের উৎকট ধনস্ফীতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাই বলেছিলেন, ‘অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থের বাহাদুরি, সে সম্পদের শো-অফ করা, আর যারা সৎপথে চলবে, তারা একেবারে মরে থাকবে—এটা তো হতে পারে না।...দেশের প্রত্যেক মানুষ উন্নত ও সুন্দর জীবনযাপন করবে। এই সুযোগে কিছুসংখ্যক মানুষ সমাজকে বিষাক্ত করবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে এই নির্দেশ (দুর্নীতিবিরোধী অভিযান) দিয়েছি।’
সমাজ থেকে বিষবৃক্ষ উৎপাটনের অভিযান বন্ধ হলে মানুষের অস্বস্তি বাড়ে, উদ্দেশ্যের সততা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। দুর্নীতিবাজদের অবস্থা ও অবস্থান বিবেচনা না করে মন্ত্রী, এমপি, দলের অন্য প্রভাবশালী নেতা এবং প্রশাসন ও শৃঙ্খলা বাহিনীর যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে জনশ্রুতি রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

১০ মার্চের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘তাঁর উত্থানে বিস্ময়, পতনে আনন্দ’ শিরোনামের খবরটি পড়তে গিয়ে নকুল চন্দ্র বিশ্বাসের একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল। গানটির প্রথম কয়েক লাইন এমন:
কষ্ট করে দিনে-রাইতে
কত টাকা করছ কামাই
এত টাকা ক্যামনে নিবা
কাফনের তো পকেট নাই।
হায় বাড়ি-গাড়ি আহামরি
সোনাদানা ভরি-ভরি
টিভি-ফ্রিজ-চেইন-ঘড়ি
নেতাগিরি-বাহাদুরি
উমেদারি-জমিদারি
পড়ে রইব
কিচ্ছা খতম হইব।
ফরিদপুরের একসময়ের মহাক্ষমতাধর খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের কিচ্ছা সম্ভবত খতম হওয়ার পথে। তাঁর গল্পটি অন্য আর দশটা উত্থানপর্বের গল্পের মতোই। তেমন কেউকেটা ছিলেন না, আকস্মিকভাবেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন ফরিদপুরের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। রাষ্ট্রক্ষমতায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের আনুকূল্য, অনুগ্রহ না পেলে আমাদের দেশে কারও পক্ষে ক্ষমতাধর হয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। বাবর সাহেবও ক্ষমতার আনুকূল্য পেয়ে মাত্র কয়েক বছরেই তড়তড়িয়ে ওপরে উঠেছেন। ভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে তিনি হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাঁর ভাইয়ের নাম খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী।
খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের হঠাৎ উত্থানে বিস্মিত হয়েছিলেন ফরিদপুরের মানুষ। সেই বাবরকে গ্রেপ্তারের পর সাধারণ মানুষ শহরে মিষ্টি খেয়ে মিছিল করেছে, তাঁর হাতকড়া পরা ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
২ হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি বাবর রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন। ৭ মার্চ রাতে ফরিদপুর জেলা পুলিশের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে পরের দিন বিকেলে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। মোহতেশাম হোসেন বাবরের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো: চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়!
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধাভোগী হলেও বাবর ছিলেন একসময় বিএনপির সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আপন ভাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু ওই নির্বাচনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন জয়লাভ করে মন্ত্রী হওয়ার পর ধীরে ধীরে তিনি ভাইয়ের ক্ষমতাবলয়ে ঢুকে পড়েন। এমন অভিযোগ ফরিদপুর আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা করেছেন যে খন্দকার মোশাররফ নিজের প্রয়োজনে, অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য বাবরকে কাছে টেনে নেন। ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ বাবরের হাতে চলে যায়, তিনি হয়ে ওঠেন দলের সর্বেসর্বা। মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ফরিদপুর সদরের বিভিন্ন অফিস-আদালতে প্রভাব বিস্তার করেন। তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় কিছু লোক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, পাসপোর্ট অফিস, সড়ক বিভাগ, এলজিইডি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন। এসব টেন্ডার থেকে তিনি কমিশন নেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন-পীড়নের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী।
উচ্চাভিলাষী বাবরের মনোযোগ ছিল সব সময় অর্থ-বিত্তের দিকে। সুযোগ-সুবিধা লুটতেই তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মালয়েশিয়ায় একটি বাড়ি রয়েছে তাঁর, যেখানে তাঁর ছেলে থাকেন। ফরিদপুরের কৈজুরী ইউনিয়নের বাইপাস সড়কের পাশে আরেকটি বাড়ি নির্মাণ করেন তিনি। এ ছাড়া বিপুল ভূসম্পত্তির মালিক হন বাবর।
সব উত্থানেরই পতন আছে। বাবরেরও পতন হয়েছে। ফরিদপুরের মানুষ খুশি হয়েছে। তবে এ প্রশ্নও সামনে এসেছে যে বাবর কি দেশে একজন? ফরিদপুর ছাড়া অন্য জেলাগুলোতে কি এক বা একাধিক বাবর নেই? তাদের লাগাম টেনে ধরা হবে কবে?
এর আগে ২০১৯ সালের শেষ দিকে ক্যাসিনো-জুয়া-মদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় এমন একটি ধারণা দেওয়া হয়েছিল যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান আরও বিস্তৃত হবে এবং গুটিকয়েক ব্যক্তি নয়, দুর্নীতিবাজ রাঘববোয়ালরাও রেহাই পাবেন না। সে সময় ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ যে কয়জন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তাঁরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সংগঠনের পদাধিকারী। তাঁদের আগের রাজনৈতিক পরিচয় যদি ভিন্নও থাকে, তাহলেও এটাই সত্য যে তাঁরা বর্তমান পরিচয়েই নানা ধরনের অনৈতিক ও অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে নগদ যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। কোটি কোটি টাকা বাসায় বা অফিসে রেখে তাঁরা একদিকে তাঁদের টাকার গরমের প্রকাশ ঘটিয়েছেন, অন্যদিকে দেশের ব্যাংকিং খাতকে ফোকলা করে দিয়েছেন। তাঁরা বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ১৯৭৪ সালে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেননি। কারণ, আওয়ামী লীগেরই কেউ কেউ তখন রিলিফ চুরিসহ নানা ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলে মাদকবিরোধী অভিযানের সময়ও ‘ইয়াবা বদি’ নামে পরিচিতি অর্জনকারী কক্সবাজারের দাপুটে সাবেক সাংসদের গায়ে টোকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। দুর্নীতি-অপকর্মের সঙ্গে কিছু নাম প্রতীকের মতো হয়ে যায়। এই প্রতীকগুলো ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে অন্যদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিলে সেটা মানুষের কাছে তেমন প্রশংসা পায় না। মানুষ দেখতে চায় সবচেয়ে আলোচিত খারাপ মানুষটি রেহাই পায় কি না! সবচেয়ে খারাপকে রেহাই দিয়ে মধ্য এবং নিম্নস্তরের অসংখ্যজনকে শাস্তির আওতায় আনলেও মানুষ খুশি হয় না। যেকোনো অভিযানের সফলতা নির্ভর করে জনতুষ্টির ওপর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় বলেছিলেন, ‘আমাদের দলের কে, কী, সেটা আমি দেখতে চাই না। আমার আত্মীয়-পরিজন আমি দেখতে চাই না। কে কত বেশি উচ্চবিত্ত, সেটা আমি দেখতে চাই না। অনিয়ম যেখানে আছে, দুর্নীতি যেখানে আছে বা আমাদের দেশকে ফাঁকি দিয়ে যারা কিছু করতে চাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতি মানুষ আস্থা রাখতে চায় এই কারণে যে তিনি কথার খেলাপ করেন না। তিনি তাঁর অবস্থান থেকে সরে যান না। কৌশলগত কারণে সাময়িক কিছু নমনীয়তা দেখালেও শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে হলেও তিনি তাঁর অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তাঁর রাজনীতির লক্ষ্য পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। তিনি নিজে কিছু পাওয়ার জন্য নয়, দেশ এবং দেশের মানুষকে কিছু দেওয়ার জন্য রাজনীতি করেন। তিনি মৃত্যুকে বারবার কাছে থেকে দেখেছেন। তাই তিনি অকুতোভয়ে সামনে এগিয়ে যেতে দৃঢ়সংকল্প।
বঙ্গবন্ধু জানতেন, কারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বা করছে। কিন্তু তাঁর হৃদয় ছিল বিশাল, পিতার সহৃদয়তা নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতা না দেখিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছিলেন। চোরা যে ধর্মের কাহিনি শোনে না–এটাও বঙ্গবন্ধু জানতেন। তারপরও হয়তো বিশ্বাস করেছিলেন, যে বাঙালির জন্য তিনি স্বাধীন দেশ অর্জনে নেতৃত্ব দিলেন, সেই বাঙালি আর যা-ই হোক, পিতৃঘাতী হবে না। কিন্তু কিছু কুলাঙ্গার বাঙালি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। শেখ হাসিনা এই বেদনাময় ইতিহাসের নীরব সাক্ষী। তিনি তাঁর আশপাশে যাঁরা আছেন, তাঁদের চেনেন, জানেন। তাঁদের ঠিকুজি তাঁর হাতে থাকার কথা। তাই তিনি ঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেন। কারও অন্যায়, অন্যায্য দাবি বা আবদার তিনি রক্ষা করেন না। সেটা হোক দেশের ভেতরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কিংবা দেশের বাইরের কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা রাষ্ট্র।
কিছু সময়ের জন্য লাগাম ছেড়ে দিলেও তিনি জানেন কখন আবার লাগাম টানতে হয়। তিনি আওয়ামী লীগ নামক দলটিকে পুনর্জীবন দিয়েছেন। এই দলের সবলতা-দুর্বলতাও তাঁর নখদর্পণে। বিপদে কারা সঙ্গে থাকে, কারা পালায়—সেটাও তাঁর অজানা নয়। তিনি নানা সময়ে তাঁর বিচক্ষণতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন।
দেশ একদিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সীমাহীন ধনবৈষম্য সামাজিক স্থিতি বিনষ্টের উপাদান তৈরি করছে। বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর অজ্ঞাত নয়। তিনি এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া লোকজনের কারণে সামাজিক বৈষম্য বাড়ে এবং সৎভাবে যাঁরা আয়-উপার্জন করেন, তাঁদের সন্তানেরা হতাশায় ভোগে। শিশুরা তো বুঝতে পারে না, তাই তারা মা-বাবার কাছে জানতে চায়, ওরা যদি দামি গাড়িতে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারে, আমরা কেন পারি না? এমন পরিস্থিতিতে একটি সমাজ এগোতে পারে না। এমন পরিস্থিতির অবসানের জন্যই সমাজের বৈষম্যের এ জায়গাটিতে আঘাত দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এটা করা হচ্ছে সামগ্রিক স্বার্থে।’
বিভিন্ন ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে যে দেশে কিছু মানুষের হাতে অনেক টাকা জমা হয়েছে। আবার অনেক মানুষের হাতে কোনো টাকাই নেই। টাকা নেই মানে তাদের সঞ্চয় নেই—না ব্যাংকে, না সিন্দুক বা ট্রাংকে। তারা কোনোরকমে বেঁচে আছে। আর অসহায়ভাবে দেখছে স্বল্পসংখ্যক মানুষের উৎকট ধনস্ফীতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাই বলেছিলেন, ‘অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থের বাহাদুরি, সে সম্পদের শো-অফ করা, আর যারা সৎপথে চলবে, তারা একেবারে মরে থাকবে—এটা তো হতে পারে না।...দেশের প্রত্যেক মানুষ উন্নত ও সুন্দর জীবনযাপন করবে। এই সুযোগে কিছুসংখ্যক মানুষ সমাজকে বিষাক্ত করবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে এই নির্দেশ (দুর্নীতিবিরোধী অভিযান) দিয়েছি।’
সমাজ থেকে বিষবৃক্ষ উৎপাটনের অভিযান বন্ধ হলে মানুষের অস্বস্তি বাড়ে, উদ্দেশ্যের সততা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। দুর্নীতিবাজদের অবস্থা ও অবস্থান বিবেচনা না করে মন্ত্রী, এমপি, দলের অন্য প্রভাবশালী নেতা এবং প্রশাসন ও শৃঙ্খলা বাহিনীর যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে জনশ্রুতি রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১০ মার্চের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘তাঁর উত্থানে বিস্ময়, পতনে আনন্দ’ শিরোনামের খবরটি পড়তে গিয়ে নকুল চন্দ্র বিশ্বাসের একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল। গানটির প্রথম কয়েক লাইন...
১৩ মার্চ ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১০ মার্চের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘তাঁর উত্থানে বিস্ময়, পতনে আনন্দ’ শিরোনামের খবরটি পড়তে গিয়ে নকুল চন্দ্র বিশ্বাসের একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল। গানটির প্রথম কয়েক লাইন...
১৩ মার্চ ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১০ মার্চের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘তাঁর উত্থানে বিস্ময়, পতনে আনন্দ’ শিরোনামের খবরটি পড়তে গিয়ে নকুল চন্দ্র বিশ্বাসের একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল। গানটির প্রথম কয়েক লাইন...
১৩ মার্চ ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১০ মার্চের আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘তাঁর উত্থানে বিস্ময়, পতনে আনন্দ’ শিরোনামের খবরটি পড়তে গিয়ে নকুল চন্দ্র বিশ্বাসের একটি জনপ্রিয় গানের কথা মনে পড়ল। গানটির প্রথম কয়েক লাইন...
১৩ মার্চ ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫