Ajker Patrika

চাঁদাবাজি নিয়ে নৌ উপদেষ্টার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইলেন চসিক মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদাবাজি নিয়ে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের কর্ণফুলী হলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ওই বিষয়ে কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সম্প্রতি নৌ পরিবহন উপদেষ্টার চট্টগ্রাম বন্দরে এক অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে চসিক মেয়র বলেন, ‘কালকে একটা বক্তব্যের কোথায় যেন শুনেছি, বন্দরের অনেক স্টেকহোল্ডার এখানে আছেন, আমাদের নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেছেন যে, প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। আমার মনে হয়, এটা ভেরি ইম্পরট্যান্ট ইস্যু। উনাকে কিন্তু জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল অথবা জিজ্ঞেস করা উচিত, কারা সেখানে চাঁদাবাজি করছে। কারণ, আমি, আমার নিজের যে হোল্ডিং ট্যাক্স, সিটি করপোরেশনের, আমরা ন্যায্য পাওনাদার বন্দর থেকে, ২০০ থেকে আড়াই শ কোটি টাকা, আমি পাই না।’

মেয়র বলেন, ‘তাহলে দেখুন, কেউ, তারা যদি দুই কোটি টাকার চাঁদাবাজি করে, তাহলে মাসে হচ্ছে ৬০ কোটি টাকা, বছরে ৭২০ কোটি টাকা। যেখানে আমি আমার ২০০ কোটি টাকা ন্যায্য হোল্ডিং ট্যাক্স পাচ্ছি না, যে হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আমি আমার ১০০টার ওপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০০টার ওপর মাদ্রাসা, যেখানে আমার ভর্তুকি দিতে হয় মাসে ৬ কোটি টাকা, বছরে ৭২ কোটি টাকা; সেখানে আমাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

‘যেখানে আমার রাস্তাঘাটগুলোর সংস্কার করতে হচ্ছে। আমার রাস্তার ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টন। বন্দরের গাড়ি আসে ৩০ থেকে ৪০ টন। আমার রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বন্দরের কারণে। কাজেই, এটা তো আমার ন্যায্য অধিকার, সে জায়গায় আমি পাচ্ছি না অথচ চাঁদাবাজি করছে। তাহলে এই জিনিসগুলো আমার মনে হয় ভেরি ইম্পরট্যান্ট ইস্যু। এগুলো রেইজ করা উচিত—কারা সেটা করছে।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আর উনি প্রথমত, এটা নিউজপেপারে অথবা কোথায় আমি দেখলাম যে, সব মেয়ররা এগুলা করছে। আমি তো আসলে কখনো কোনো কথাও বলি না কারও সাথে। সাথে সাথে আমি উনারে টেলিফোন করলাম, আমি বললাম, আপনি, এই যে বক্তব্যটা এসেছে, কোনো এক জায়গায়, সব মেয়ররা এগুলা করছে, আমি বললাম, আপনি আমার ব্যাপারে যদি কোনো কিছু থাকে, তাহলে সেটা প্রমাণ দিতে হবে, না হয় আমি কালকে প্রেস কনফারেন্স করছি এবং যতক্ষণ না আপনি দিতে না পারেন, ততক্ষণ আমি আপনাকে চট্টগ্রাম শহরে ঢুকতে দেব না। তখন উনি বললেন, ‘‘সরি, আমি ওইভাবে বলি নাই, আমি বলেছি, আগের মেয়র করেছে’’।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি বলেছি, আগের মেয়র করে থাকলে আপনাকে অবশ্যই এটা রিজয়েন্ডার দিতে হবে এবং আপনাকে ওই যে অনলাইনে অথবা যে বলেছে, আপনার বক্তব্য আবার উপস্থাপন করতে হবে এবং আলটিমেটলি উনি সেখানে এটা বলেছেন, উনি আমাকে পাঠিয়েছেন। উনি আমাকে বলেছেন, ওই আগের মেয়র কথাটা আস্তে করে সেটা কেটে ওইসব ঢালাওভাবে দিছে। এই হচ্ছে অবস্থা। সাংবাদিক ভাই আছে। আমি কিছুক্ষণ আগে প্রেসক্লাবে এই কথা বলেছি। সাংবাদিকদের যখন কোনো কথা বলেন, পুরো বক্তব্যটা দেওয়া উচিত। তবে যে কথাটা আমি কনসানট্রেট করতে চাই, তা হচ্ছে, দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার চাঁদাবাজি। আমার মনে হয়, ভেরি ইম্পরট্যান্ট ইস্যু।’

চাঁদাবাজির টাকার কথা তুলে ধরে মেয়র বলেন, ‘আমাদের টাকাগুলো, যদি উনার কথা সত্য হয়ে থাকে, তাহলে এই টাকা তো জনগণের টাকা, এই টাকা দিয়ে আমি আরও রাস্তাঘাট করতে পারতাম, আমি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় খরচ করতে পারতাম, আমি আরও ব্রিজ, কালভার্ট করতে পারতাম। তাহলে এই টাকা চাঁদাবাজি হবে কেন? আর যদি না হয়ে থাকে, তাহলে সেটাও তাঁকে বলতে হবে, উনি ঢালাওভাবে বলেছেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা মিশমা, সাংবাদিক ওসমান গণি মুনসুর প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...