Ajker Patrika

চাঁদাবাজি নিয়ে নৌ উপদেষ্টার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইলেন চসিক মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদাবাজি নিয়ে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের কর্ণফুলী হলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ওই বিষয়ে কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সম্প্রতি নৌ পরিবহন উপদেষ্টার চট্টগ্রাম বন্দরে এক অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে চসিক মেয়র বলেন, ‘কালকে একটা বক্তব্যের কোথায় যেন শুনেছি, বন্দরের অনেক স্টেকহোল্ডার এখানে আছেন, আমাদের নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেছেন যে, প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। আমার মনে হয়, এটা ভেরি ইম্পরট্যান্ট ইস্যু। উনাকে কিন্তু জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল অথবা জিজ্ঞেস করা উচিত, কারা সেখানে চাঁদাবাজি করছে। কারণ, আমি, আমার নিজের যে হোল্ডিং ট্যাক্স, সিটি করপোরেশনের, আমরা ন্যায্য পাওনাদার বন্দর থেকে, ২০০ থেকে আড়াই শ কোটি টাকা, আমি পাই না।’

মেয়র বলেন, ‘তাহলে দেখুন, কেউ, তারা যদি দুই কোটি টাকার চাঁদাবাজি করে, তাহলে মাসে হচ্ছে ৬০ কোটি টাকা, বছরে ৭২০ কোটি টাকা। যেখানে আমি আমার ২০০ কোটি টাকা ন্যায্য হোল্ডিং ট্যাক্স পাচ্ছি না, যে হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আমি আমার ১০০টার ওপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০০টার ওপর মাদ্রাসা, যেখানে আমার ভর্তুকি দিতে হয় মাসে ৬ কোটি টাকা, বছরে ৭২ কোটি টাকা; সেখানে আমাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

‘যেখানে আমার রাস্তাঘাটগুলোর সংস্কার করতে হচ্ছে। আমার রাস্তার ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টন। বন্দরের গাড়ি আসে ৩০ থেকে ৪০ টন। আমার রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বন্দরের কারণে। কাজেই, এটা তো আমার ন্যায্য অধিকার, সে জায়গায় আমি পাচ্ছি না অথচ চাঁদাবাজি করছে। তাহলে এই জিনিসগুলো আমার মনে হয় ভেরি ইম্পরট্যান্ট ইস্যু। এগুলো রেইজ করা উচিত—কারা সেটা করছে।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আর উনি প্রথমত, এটা নিউজপেপারে অথবা কোথায় আমি দেখলাম যে, সব মেয়ররা এগুলা করছে। আমি তো আসলে কখনো কোনো কথাও বলি না কারও সাথে। সাথে সাথে আমি উনারে টেলিফোন করলাম, আমি বললাম, আপনি, এই যে বক্তব্যটা এসেছে, কোনো এক জায়গায়, সব মেয়ররা এগুলা করছে, আমি বললাম, আপনি আমার ব্যাপারে যদি কোনো কিছু থাকে, তাহলে সেটা প্রমাণ দিতে হবে, না হয় আমি কালকে প্রেস কনফারেন্স করছি এবং যতক্ষণ না আপনি দিতে না পারেন, ততক্ষণ আমি আপনাকে চট্টগ্রাম শহরে ঢুকতে দেব না। তখন উনি বললেন, ‘‘সরি, আমি ওইভাবে বলি নাই, আমি বলেছি, আগের মেয়র করেছে’’।’

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি বলেছি, আগের মেয়র করে থাকলে আপনাকে অবশ্যই এটা রিজয়েন্ডার দিতে হবে এবং আপনাকে ওই যে অনলাইনে অথবা যে বলেছে, আপনার বক্তব্য আবার উপস্থাপন করতে হবে এবং আলটিমেটলি উনি সেখানে এটা বলেছেন, উনি আমাকে পাঠিয়েছেন। উনি আমাকে বলেছেন, ওই আগের মেয়র কথাটা আস্তে করে সেটা কেটে ওইসব ঢালাওভাবে দিছে। এই হচ্ছে অবস্থা। সাংবাদিক ভাই আছে। আমি কিছুক্ষণ আগে প্রেসক্লাবে এই কথা বলেছি। সাংবাদিকদের যখন কোনো কথা বলেন, পুরো বক্তব্যটা দেওয়া উচিত। তবে যে কথাটা আমি কনসানট্রেট করতে চাই, তা হচ্ছে, দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার চাঁদাবাজি। আমার মনে হয়, ভেরি ইম্পরট্যান্ট ইস্যু।’

চাঁদাবাজির টাকার কথা তুলে ধরে মেয়র বলেন, ‘আমাদের টাকাগুলো, যদি উনার কথা সত্য হয়ে থাকে, তাহলে এই টাকা তো জনগণের টাকা, এই টাকা দিয়ে আমি আরও রাস্তাঘাট করতে পারতাম, আমি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় খরচ করতে পারতাম, আমি আরও ব্রিজ, কালভার্ট করতে পারতাম। তাহলে এই টাকা চাঁদাবাজি হবে কেন? আর যদি না হয়ে থাকে, তাহলে সেটাও তাঁকে বলতে হবে, উনি ঢালাওভাবে বলেছেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব জাহিদুল করিম কচি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা মিশমা, সাংবাদিক ওসমান গণি মুনসুর প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গলার পোড়া দাগেই শনাক্ত হন গৃহকর্মী আয়েশা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪১
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার । ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার । ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যার পর গৃহকর্মী আয়েশাকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের ভাষায়, আয়েশার চুরির অভ্যাস নতুন নয়, গত জুলাইয়েও কাছের আরেকটি বাসায় আট হাজার টাকা চুরি করায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছিল। সেই পুরোনো অভিযোগই শেষ পর্যন্ত হত্যার রহস্য উন্মোচনের সূত্র হয়ে দাঁড়ায়।

মোহাম্মদপুরের বাবর রোড এলাকায় নতুন একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেছিলেন আয়েশা। মাত্র চার দিন পরই সেখানে নৃশংসভাবে খুন হন গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)।

শুরু থেকেই আয়েশাকে সন্দেহ করা হলেও তাঁর পরিচয় ও ঠিকানা নিয়ে পুলিশ ছিল অন্ধকারে। কাজে যাতায়াতের সময় মুখ ঢেকে রাখায় সিসিটিভিতেও দেখা যায়নি তাঁর স্পষ্ট চেহারা; কেবল গলার এক পাশে পোড়া দাগ—এই সামান্য সূত্রেই এগোয় তদন্ত।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানায় অতিরিক্ত কমিশনার এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম।

মো. নজরুল ইসলাম জানান, আগের একটি জিডির নথি ঘেঁটে পুলিশ জানতে পারে, জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় এমন এক গৃহকর্মী থাকেন, যার গলায় পোড়া দাগ রয়েছে। সেখান থেকেই পাওয়া যায় একটি পুরোনো মোবাইল নম্বর, যার সূত্রে সামনে আসে জামাল সিকদার রাব্বি নামের একজন যুবক। ফোনের মাধ্যমে রাব্বির দেওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখা যায়—তাঁর স্ত্রীই আয়েশা, যিনি গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং জেনেভা ক্যাম্পে ভাড়া বাসায় থাকেন। এই সূত্র ধরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নিশ্চিত হয় পুলিশের সন্দেহ।

পুলিশ জানায়, আয়েশা ও তাঁর স্বামী রাব্বির সম্ভাব্য অবস্থান ধরে হেমায়েতপুর, দুমকি হয়ে শেষ পর্যন্ত ঝালকাঠির নলছিটিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় খোয়া যাওয়া ল্যাপটপও।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তারা।

পুলিশের ভাষ্য, বাসায় কাজ শুরুর দ্বিতীয় দিন তিনি দুই হাজার টাকা চুরি করেন। এ নিয়ে গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তর্ক-বিতর্ক হয়; পুলিশের কাছে দেওয়ার হুমকিও পান আয়েশা। চতুর্থ দিন কাজে যাওয়ার সময় তিনি সঙ্গে করে নেন একটি সুইচগিয়ার চাকু। আবারও ঝগড়া বাঁধতেই ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে লায়লা আফরোজকে ছুরিকাঘাত করেন আয়েশা; মেয়ে নাফিসা এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করা হয়।

ঘটনার পর নিজের রক্তাক্ত পোশাক বদলে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান আয়েশা। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে সাভারের দিকে পালিয়ে যান। পথে সিঙ্গাইর ব্রিজ থেকে ফেলে দেন রক্তমাখা কাপড় ও চুরি করা মোবাইল ফোন সেট।

তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, ঘটনার সময় নাফিসা ঘুমাচ্ছিল। ধস্তাধস্তির শব্দে জেগে গিয়ে সিকিউরিটিকে জানাতে ইন্টারকম ধরতেই তাকে আগে আক্রমণ করেন আয়েশা।

পুলিশের ধারণা, কেবল দুই হাজার টাকার বিষয় নয়; আগে থেকেই আয়েশার ছিল চুরির পরিকল্পনা, আর ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই ঘটিয়ে ফেলেন জোড়া খুন।

পুলিশ বলছে, আয়েশার স্বামী রাব্বিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে। গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র, ছবি এবং বিশ্বাসযোগ্য দু’একজনের যোগাযোগ নম্বর সংরক্ষণে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ৩ গর্ত, শাস্তি চান সাজিদের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসাতে খনন করা হয়েছিল এসব গভীর গর্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসাতে খনন করা হয়েছিল এসব গভীর গর্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কছির উদ্দিন সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসাতে পরপর তিনটি স্থান খনন করেছিলেন। কিন্তু কোথাও পানি না পেয়ে নলকূপ বসাতে পারেননি। পরিত্যক্ত অবস্থায় গর্তগুলো ফেলে রেখেছিলেন। এর একটিতে পড়ে গেছে ২ বছরের শিশু সাজিদ। ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ফায়ার সার্ভিস তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।

কছিরের জমির পাশেই সাজিদের বাবা রাকিবুল ইসলামের বাড়ি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, সাজিদের মা রুনা খাতুনকে নিয়ে বসে আছেন তাঁর মা শেফালী বেগম। শেফালী বেগম সাজিদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বললেন, ‘সবাই আমাদের ছোট বাচ্চাটার জন্য দোয়া করেন, যাতে তাকে আমরা ফেরত পাই।’

সাজিদের মা রুনা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘৩ জায়গা খুঁড়েছিল। ২ বছর ধরে বন্ধ না করে গর্তগুলো এভাবে ফেলে রেখেছিল। কেন ফেলে রেখেছিল? আমি কছিরের শাস্তি চাই, তার বিচার চাই।’ রুনা জানান, ঘটনার পর কছির একবার দেখতে এসেছিলেন। তারপর আর আসেননি। তিনি পালিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কছিরের দেখা হয়নি। আমরা তাকে পাইনি।’ তাঁকে আটক করা হবে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। আমরা এটা দেখছি।’

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার দুপুর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৪২ ফুট পর্যন্ত খনন করেও সাজিদের সন্ধান পাননি। বরেন্দ্র এলাকায় সাধারণত ১০০ থেকে ১৮০ ফুট পর্যন্ত এমন বোরিং করা হয় পানির সন্ধানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কে পড়ে ছিল যুবকের মাথা থেঁতলানো লাশ

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অজ্ঞাত গাড়িচাপায় আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার পুটিয়া ইউটার্ন-সংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মামুন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চর কৃষ্ণপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। তিনি সড়কটি দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, মহাসড়কের দক্ষিণমুখী লেনে মোটরসাইকেলটি স্বাভাবিক গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি দ্রুতগতির গাড়ি পেছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা দিলে বাইকচালক রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। দুর্ঘটনার পর প্রায় আধা ঘণ্টা মরদেহটি রাস্তায় পড়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে পথচারীরা ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি উদ্ধার করি। মোটরসাইকেলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অজ্ঞাত গাড়িটি বাইকচালকের মাথার ওপর দিয়ে উঠেই যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।’

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি নিহত বাইকচালক রাস্তার ওপর পড়ে আছে। তাঁর মাথার ওপর দিয়ে অজ্ঞাত গাড়ি উঠে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে। তাঁর কাছে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ষণের মামলায় ক্রিকেটার তোফায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ধর্ষণের অভিযোগে ক্রিকেটার তোফায়েল আহমেদ রায়হানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামিউল ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত রায়হান বাংলাদেশ ‘এ’ দলের খেলোয়াড়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী তরুণীকে তোফায়েল একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন বলে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আর এ কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

গত ১ আগস্ট এক তরুণী বাদী হয়ে গুলশান থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আসামি তোফায়েল আহমেদ রায়হানের সঙ্গে বাদীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর থেকে তারা ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথা বলতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হলে আসামি তোফায়েল ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। প্রথমে তরুণী রাজি ছিলেন না। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি করান তোফায়েল। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি বাদীকে স্ত্রী পরিচয়ে গুলশানের একটি হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। পরে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। এরপর থেকে ওই তরুণী বিয়ের কথা বললে রায়হান বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনাটি মামলার ছয় মাস আগে হয়েছে বিধায় কোনো আলামত জব্দ করা সম্ভব হয়নি। মামলার বাদী নিজেও কোনো আলামত উপস্থাপন করতে পারেননি। হোটেলে রক্ষিত রেজিস্ট্রার বুকের গেস্ট বুকিং সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন স্লিপ, তরুণী ও আসামির পাসপোর্ট কপি জব্দ করা হয়। ডিএনএ রিপোর্টে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সার্বিক তদন্তে প্রথম দিনের ঘটনা, হোটেল বুকিং কপি, ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনায় আসামি তোফায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

উল্লেখ্য, মামলার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর আসামি তোফায়েলকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে এই জামিন শেষ হওয়ার আগেই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত