কামরুল হাসান

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৫ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৫ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৫ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৫ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে