কামরুল হাসান

খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ বেল বাজল। একবার-দুবার নয়, বেজেই চলেছে। মেয়েকে বললাম, দেখ তো মা, এত রাতে কে এল? মেয়ে বলল, মনে হয় পুলিশ।
কটা হবে তখন?
রাত ১১-১২টা বা তার বেশি। আমরা এই সময়ে ঘুমোতে যাই।
তারপর?
মেয়ে দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে চার-পাঁচজন ঘরে ঢুকে পড়ল। আমার বাড়িতে প্রায়ই পুলিশ আসে। মনে করলাম, এবারও এল। সবাই সাদা পোশাকে। কারও হাতে কোনো অস্ত্র নেই।
কী পরিচয় দিল?
সবাই নিজেদের পুলিশ বলেই পরিচয় দিল। তল্লাশি-টল্লাশি না করে বলল, আমাদের সঙ্গে চলেন।
প্রশ্ন করলেন না, কোথায় যাবেন?
করলাম, তারা বলল কোনো কথা হবে না। যা বলছি শোনেন, যেতে হবে। যে কাপড়ে ছিলাম বের হলাম। বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি গলির মোড়ে একটি মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে, তাতে আরও কয়েকজন বসে। আমাকে সেই গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে থাকল। কিছুক্ষণ পর গাড়িটা থামল একটা উঁচু ভবনের পেছনে। দেখি একটু দূরে আরেকটি গাড়ি দাঁড়িয়ে। বলল, ওই গাড়িতে গিয়ে বসেন। সেটা ছিল প্রাইভেট কার। গাড়ির সামনে একজন বসা। পেছনের সিট খালি। আমি গিয়ে সেই গাড়িতে বসতেই গাড়িটা চলতে শুরু করল, পেছনে সেই মাইক্রোবাস। দুটি গাড়ি এসে থামল একটি বস্তির সামনে। আমাকে বলল বস্তির ভেতরে যেতে হবে।
গেলেন? আপনার ভয় করেনি?
এতক্ষণ কিছু মনে হয়নি। কিন্তু এত রাতে অন্ধকার বস্তি দেখে খুব ভয় হলো। কি-না-কি হয় বুঝতে পারছি না। কিন্তু যুবকেরা আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করছে। তারা আমাকে বস্তির একটি ঘরে নিয়ে গেল। সেখানে চাদর দিয়ে একটি মৃতদেহ ঢাকা। একজন চাদর তুলে বলল, দেখেন তো চিনতে পারেন কি না? মুখটা দেখেই চিনলাম। আরও নিশ্চিত হতে বললাম, ডান হাতটা দেখান। তারা ডান হাত দেখাল।
ডান হাতে কী ছিল?
ডান হাতের ওপরে একটি নীলাভ জন্মদাগ ছিল। সেটা দেখেই বুঝলাম এটা আমার ছেলের লাশ। আমি ডুকরে কেঁদে উঠে বললাম, এটা আমার ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর। লাশ শনাক্তের পর ওরা আমাকে আর দাঁড়াতে দিল না। আবার সেই গাড়িতে তুলে বাড়ির গেটে নামিয়ে দিয়ে গেল। আর বলে গেল, সবাই আমার ছেলের দলের লোক। এ নিয়ে আমি যেন কোনো বাড়াবাড়ি না করি, থানা-পুলিশ না করি।
এ ঘটনা কবেকার?
২০০৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর, সেদিন সোমবার ছিল। এরপর আমি কিছু জানি না, শুনেছি লাশ সেখানেই দাফন করা হয়েছে।
কীভাবে আপনার ছেলে মারা গেল, কিছু জানতে পেরেছিলেন?
পেয়ারা বেগম বললেন, জাহাঙ্গীরের সবকিছু দেখভাল করত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নিটেল। তাকে বলত দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। সে একদিন রাতে এসে বলল, র্যাবের ধাওয়া খেয়ে মোহাম্মদপুরের একটি বাড়িতে তারা আশ্রয় নিয়েছিল। জাহাঙ্গীরের বউ সোনিয়া তখন গর্ভবতী। সেই অবস্থায় টেলিফোনে সোনিয়ার সঙ্গে ঝগড়া হয় জাহাঙ্গীরের। জাহাঙ্গীর খুব উত্তেজিত ছিল। ঝগড়াঝাঁটির একপর্যায়ে নিজের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। ফোনের অন্য প্রান্তে তখন সোনিয়া ছিল। তাকে কোনো হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। সেই বাড়িতেই মরে পড়ে ছিল। রাতে দলের লোকেরা তাকে দাফন করতে বস্তিতে নিয়ে যায়।
সোনিয়ার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কী হয়েছিল সেদিন?
জানব কী করে? কিছুদিন পর মিরপুরে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিটেল মারা যায়। তার কয়েক দিন পর সোনিয়া আক্তারকে ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু ধরে নিয়ে যায়। সোনিয়া জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেনি। জাহাঙ্গীরের একটি ছেলে আছে, সেই নাতির জন্য খুব মন খারাপ হয়। বলতে বলতে চোখ মুছলেন তিনি।
যে নারীর সঙ্গে আমার এই দীর্ঘ কথোপকথন, তাঁর নাম পেয়ারা বেগম। ষাট ছুঁইছুঁই এই নারী মিরপুরের সেনাপল্লী স্কুলের শিক্ষক। যে মৃতদেহের বর্ণনা তিনি দিচ্ছিলেন, সেটা তাঁরই সন্তান রাজধানী কাঁপানো শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর।
পেয়ারা বেগমের সঙ্গে আমার এই কথোপকথন ২০০৫-এর ফেব্রুয়ারিতে, তাঁর ইব্রাহিমপুরের বাড়িতে বসে। পেয়ারা বেগম সন্ত্রাসী সন্তানের মৃত্যুর কথা অনেক দিন চেপে রেখেছিলেন। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি র্যাবের কাছে প্রথম এ ঘটনা স্বীকার করেন।
র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক প্রয়াত আনোয়ার ইকবাল আমাকে ডেকে নিয়ে সেই ঘটনা জানিয়েছিলেন। এবার সেই গল্পটা বলি।
ওয়ান-ইলেভেন সময়ের পরিচিত নাম ব্রিগেডিয়ার চৌধুরী ফজলুল বারী। তিনি তখন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক। আনোয়ারুল ইকবাল আমাকে বললেন, কয়েক দিন আগে বারীর কাছে এসেছিলেন ওই সময়ের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরের মা পেয়ারা বেগম, তাঁর ভাই ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর ফেরদৌস ও আলমগীরের স্ত্রী। তাঁরা দাবি করেছেন, কালা জাহাঙ্গীর মারা গেছেন। মা নিজে সন্তানের লাশও দেখেছেন। তিনি আমাকে বললেন, র্যাব বিষয়টি পুরোপুরি আস্থায় নেয়নি। এটা কালা জাহাঙ্গীরকে আড়াল করার কৌশলও হতে পারে। আমি যেন ঘটনাটা যাচাই করে দেখি। আমি এরপর ফজলুল বারীর কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে কালা জাহাঙ্গীরের মায়ের খোঁজে নেমে পড়ি।
পেয়ারা বেগম তখনো সেনাপল্লী স্কুলের শিক্ষক। আমি যখন স্কুলে এলাম, তখন টিফিনের বিরতি চলছে। প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে পেয়ারা বেগমের নাম বলতে তিনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালো করে দেখে নিয়ে জানতে চাইলেন–আমি পুলিশ না গোয়েন্দা। সাংবাদিক পরিচয় দিতেই বসতে বললেন। এরপর ডেকে দিলেন পেয়ারা বেগমকে।
পেয়ারা বেগম খুবই স্বাভাবিক, যা বলি তারই উত্তর দেন। কথায় কথায় তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন তাঁদের ইব্রাহিমপুরের বাড়িতে। তিনি রিকশায় আর আমি পেছনে মোটরসাইকেলে। একটি চারতলা বাড়ির দোতলায় নিয়ে তুললেন। বেল বাজাতে এক তরুণী এসে গেট খুলে দিল। তাঁকে দেখিয়ে বললেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ও রুমা, সবার ছোট। রুমা সালাম দিয়ে সরে গেলেন। একটু পরে তিনি আরেক ছেলেকে ডেকে পাঠালেন। তিনি এসে জানান, তিনি জাহাঙ্গীরের বড় ভাই ক্যাপ্টেন আলমগীর ফেরদৌস। ক্যাপ্টেন আলমগীর তখন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে কাঠের ব্যবসা করছেন। মা-ছেলে মিলে পুরো ঘটনার বিবরণ দিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনে হলো কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যুতে পরিবারটি বেঁচে গেছে। পেয়ারা বেগম বললেন, মিথ্যে অভিযোগে তাঁর বড় ছেলের চাকরি গেছে। সে নাকি জাহাঙ্গীরের জানাজায় অংশ নিয়েছিল।
শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর ফেরদৌস ওরফে কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিয়ে তখন নানা গুজব। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল, কালা জাহাঙ্গীরকে আড়াল করার জন্য এসব রটানো হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করেছিলেন তিনি বিদেশে চলে গেছেন। ওই সময় কালা জাহাঙ্গীরের মাথায় এক ডজন খুনের মামলা আর গোটা বিশেক জিডি। পুরান ঢাকার শহীদ কমিশনারের আশ্রয়ে থেকে তখন একের পর এক খুন করে যাচ্ছিলেন। সে সময় পোস্তগোলার কমিশনার শাহাদত ছিলেন শহীদ কমিশনারের প্রতিপক্ষ।
কালা জাহাঙ্গীরের হাত থেকে বাঁচতে তিনি আসিফ নামে আরেক সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেননি। আদালত চত্বরে মুরগি মিলনকে খুন করার পর উত্তরার রাস্তায় গাড়ির ভেতরে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। কারওয়ান বাজারের সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ। ইব্রাহিমপুরে বেড়ে ওঠা কালা জাহাঙ্গীরকে পুলিশ কখনো ধরতে পারেনি। ছোটবেলার একটি মাত্র ছবি ছাড়া পুলিশের কাছে তাঁর কোনো ছবি ছিল না। সাধারণ কোনো মানুষও তাঁকে চিনত না। তাঁর সব কর্মকাণ্ড ছিল অ্যাকশন সিনেমার গল্পের মতো ভয়ংকর।
কালা জাহাঙ্গীরের বাড়ি থেকে বের হয়ে ফোন দিলাম ঢাকা রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি ফররুখ আহমেদকে। সিআইডিতে থাকার সুবাদে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করতেন। ফররুখ আহমেদ বললেন, তাঁর একাধিক সোর্স জানিয়েছে, কেরানীগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা ব্রিজের আশপাশে প্রতিপক্ষের গুলিতে কালা জাহাঙ্গীর আহত হয়েছিলেন। দলের লোকজন তাঁর চিকিৎসার জন্য গুলশানের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পুলিশ সে খবর পেয়ে ক্লিনিকে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁকে সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর তাঁর আর কোনো খোঁজ পায়নি সিআইডি।
কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিয়ে আমি একটি নিউজ করি (৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৫, প্রথম আলো)। এরপর শুরু হয় বিতর্ক। পেয়ারা বেগমের বক্তব্য ধরে মিসরের ফারাও রাজা ‘তুতানখামেন’-এর কবর আবিষ্কারের মতো করে কালা জাহাঙ্গীরের কবর খুঁজতে নেমে পড়ি আমরা। আমার সঙ্গে বিডিনিউজের সাংবাদিক লিটন হায়দার। আমাদের ভাগ্য ভালো, তুতানখামেনের মতো সেই কবরে কোনো অভিশাপ ছিল না। সে কারণে সহজে পেয়ে যাই। একদিন আমি আর লিটন হায়দার যাই মহাখালীর সাততলা বস্তির পেছনে। সেখানকার লোকেরা আমাদের জানান, একদিন গভীর রাতে জনাবিশেক অস্ত্রধারী যুবক এসে একটি লাশ দাফন করে চলে যায়। তাদের অস্ত্র দেখে ভয় পেয়ে যান তাঁরা। সে কারণে তাঁরা কাউকে বিষয়টি বলেননি। কালা জাহাঙ্গীরের মায়ের বর্ণনার সঙ্গে তাঁদের বিবরণ মিলে যায়।
এরপর থেমে যায় কালা জাহাঙ্গীরের নামে সব ধরনের তৎপরতা। কালা জাহাঙ্গীরকে ধরতে ওই সময় সরকার এক লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পুলিশ তখন তাঁকে ধরেনি। ইব্রাহিমপুরের মশিউর রহমান কচির ভাই আজাদকে খুনের পর কালা জাহাঙ্গীর নিজে জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করে বলেছিলেন, পুলিশ আমাকে ধরলে পাবে পুরস্কারের এক লাখ টাকা, আর না ধরলে প্রতি মাসে পাবে সেই টাকা–তাহলে ধরবে কেন? সত্যিই, শেষ পর্যন্ত অধরা থেকে গিয়েছিলেন ভয়ংকর খুনি কালা জাহাঙ্গীর।
আরও পড়ুন

খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ বেল বাজল। একবার-দুবার নয়, বেজেই চলেছে। মেয়েকে বললাম, দেখ তো মা, এত রাতে কে এল? মেয়ে বলল, মনে হয় পুলিশ।
কটা হবে তখন?
রাত ১১-১২টা বা তার বেশি। আমরা এই সময়ে ঘুমোতে যাই।
তারপর?
মেয়ে দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে চার-পাঁচজন ঘরে ঢুকে পড়ল। আমার বাড়িতে প্রায়ই পুলিশ আসে। মনে করলাম, এবারও এল। সবাই সাদা পোশাকে। কারও হাতে কোনো অস্ত্র নেই।
কী পরিচয় দিল?
সবাই নিজেদের পুলিশ বলেই পরিচয় দিল। তল্লাশি-টল্লাশি না করে বলল, আমাদের সঙ্গে চলেন।
প্রশ্ন করলেন না, কোথায় যাবেন?
করলাম, তারা বলল কোনো কথা হবে না। যা বলছি শোনেন, যেতে হবে। যে কাপড়ে ছিলাম বের হলাম। বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি গলির মোড়ে একটি মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে, তাতে আরও কয়েকজন বসে। আমাকে সেই গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে থাকল। কিছুক্ষণ পর গাড়িটা থামল একটা উঁচু ভবনের পেছনে। দেখি একটু দূরে আরেকটি গাড়ি দাঁড়িয়ে। বলল, ওই গাড়িতে গিয়ে বসেন। সেটা ছিল প্রাইভেট কার। গাড়ির সামনে একজন বসা। পেছনের সিট খালি। আমি গিয়ে সেই গাড়িতে বসতেই গাড়িটা চলতে শুরু করল, পেছনে সেই মাইক্রোবাস। দুটি গাড়ি এসে থামল একটি বস্তির সামনে। আমাকে বলল বস্তির ভেতরে যেতে হবে।
গেলেন? আপনার ভয় করেনি?
এতক্ষণ কিছু মনে হয়নি। কিন্তু এত রাতে অন্ধকার বস্তি দেখে খুব ভয় হলো। কি-না-কি হয় বুঝতে পারছি না। কিন্তু যুবকেরা আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করছে। তারা আমাকে বস্তির একটি ঘরে নিয়ে গেল। সেখানে চাদর দিয়ে একটি মৃতদেহ ঢাকা। একজন চাদর তুলে বলল, দেখেন তো চিনতে পারেন কি না? মুখটা দেখেই চিনলাম। আরও নিশ্চিত হতে বললাম, ডান হাতটা দেখান। তারা ডান হাত দেখাল।
ডান হাতে কী ছিল?
ডান হাতের ওপরে একটি নীলাভ জন্মদাগ ছিল। সেটা দেখেই বুঝলাম এটা আমার ছেলের লাশ। আমি ডুকরে কেঁদে উঠে বললাম, এটা আমার ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর। লাশ শনাক্তের পর ওরা আমাকে আর দাঁড়াতে দিল না। আবার সেই গাড়িতে তুলে বাড়ির গেটে নামিয়ে দিয়ে গেল। আর বলে গেল, সবাই আমার ছেলের দলের লোক। এ নিয়ে আমি যেন কোনো বাড়াবাড়ি না করি, থানা-পুলিশ না করি।
এ ঘটনা কবেকার?
২০০৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর, সেদিন সোমবার ছিল। এরপর আমি কিছু জানি না, শুনেছি লাশ সেখানেই দাফন করা হয়েছে।
কীভাবে আপনার ছেলে মারা গেল, কিছু জানতে পেরেছিলেন?
পেয়ারা বেগম বললেন, জাহাঙ্গীরের সবকিছু দেখভাল করত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নিটেল। তাকে বলত দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। সে একদিন রাতে এসে বলল, র্যাবের ধাওয়া খেয়ে মোহাম্মদপুরের একটি বাড়িতে তারা আশ্রয় নিয়েছিল। জাহাঙ্গীরের বউ সোনিয়া তখন গর্ভবতী। সেই অবস্থায় টেলিফোনে সোনিয়ার সঙ্গে ঝগড়া হয় জাহাঙ্গীরের। জাহাঙ্গীর খুব উত্তেজিত ছিল। ঝগড়াঝাঁটির একপর্যায়ে নিজের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। ফোনের অন্য প্রান্তে তখন সোনিয়া ছিল। তাকে কোনো হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। সেই বাড়িতেই মরে পড়ে ছিল। রাতে দলের লোকেরা তাকে দাফন করতে বস্তিতে নিয়ে যায়।
সোনিয়ার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কী হয়েছিল সেদিন?
জানব কী করে? কিছুদিন পর মিরপুরে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিটেল মারা যায়। তার কয়েক দিন পর সোনিয়া আক্তারকে ডিবির এসি আখতারুজ্জামান রুনু ধরে নিয়ে যায়। সোনিয়া জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেনি। জাহাঙ্গীরের একটি ছেলে আছে, সেই নাতির জন্য খুব মন খারাপ হয়। বলতে বলতে চোখ মুছলেন তিনি।
যে নারীর সঙ্গে আমার এই দীর্ঘ কথোপকথন, তাঁর নাম পেয়ারা বেগম। ষাট ছুঁইছুঁই এই নারী মিরপুরের সেনাপল্লী স্কুলের শিক্ষক। যে মৃতদেহের বর্ণনা তিনি দিচ্ছিলেন, সেটা তাঁরই সন্তান রাজধানী কাঁপানো শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর।
পেয়ারা বেগমের সঙ্গে আমার এই কথোপকথন ২০০৫-এর ফেব্রুয়ারিতে, তাঁর ইব্রাহিমপুরের বাড়িতে বসে। পেয়ারা বেগম সন্ত্রাসী সন্তানের মৃত্যুর কথা অনেক দিন চেপে রেখেছিলেন। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি র্যাবের কাছে প্রথম এ ঘটনা স্বীকার করেন।
র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক প্রয়াত আনোয়ার ইকবাল আমাকে ডেকে নিয়ে সেই ঘটনা জানিয়েছিলেন। এবার সেই গল্পটা বলি।
ওয়ান-ইলেভেন সময়ের পরিচিত নাম ব্রিগেডিয়ার চৌধুরী ফজলুল বারী। তিনি তখন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক। আনোয়ারুল ইকবাল আমাকে বললেন, কয়েক দিন আগে বারীর কাছে এসেছিলেন ওই সময়ের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরের মা পেয়ারা বেগম, তাঁর ভাই ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর ফেরদৌস ও আলমগীরের স্ত্রী। তাঁরা দাবি করেছেন, কালা জাহাঙ্গীর মারা গেছেন। মা নিজে সন্তানের লাশও দেখেছেন। তিনি আমাকে বললেন, র্যাব বিষয়টি পুরোপুরি আস্থায় নেয়নি। এটা কালা জাহাঙ্গীরকে আড়াল করার কৌশলও হতে পারে। আমি যেন ঘটনাটা যাচাই করে দেখি। আমি এরপর ফজলুল বারীর কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে কালা জাহাঙ্গীরের মায়ের খোঁজে নেমে পড়ি।
পেয়ারা বেগম তখনো সেনাপল্লী স্কুলের শিক্ষক। আমি যখন স্কুলে এলাম, তখন টিফিনের বিরতি চলছে। প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে পেয়ারা বেগমের নাম বলতে তিনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালো করে দেখে নিয়ে জানতে চাইলেন–আমি পুলিশ না গোয়েন্দা। সাংবাদিক পরিচয় দিতেই বসতে বললেন। এরপর ডেকে দিলেন পেয়ারা বেগমকে।
পেয়ারা বেগম খুবই স্বাভাবিক, যা বলি তারই উত্তর দেন। কথায় কথায় তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন তাঁদের ইব্রাহিমপুরের বাড়িতে। তিনি রিকশায় আর আমি পেছনে মোটরসাইকেলে। একটি চারতলা বাড়ির দোতলায় নিয়ে তুললেন। বেল বাজাতে এক তরুণী এসে গেট খুলে দিল। তাঁকে দেখিয়ে বললেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ও রুমা, সবার ছোট। রুমা সালাম দিয়ে সরে গেলেন। একটু পরে তিনি আরেক ছেলেকে ডেকে পাঠালেন। তিনি এসে জানান, তিনি জাহাঙ্গীরের বড় ভাই ক্যাপ্টেন আলমগীর ফেরদৌস। ক্যাপ্টেন আলমগীর তখন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে কাঠের ব্যবসা করছেন। মা-ছেলে মিলে পুরো ঘটনার বিবরণ দিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনে হলো কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যুতে পরিবারটি বেঁচে গেছে। পেয়ারা বেগম বললেন, মিথ্যে অভিযোগে তাঁর বড় ছেলের চাকরি গেছে। সে নাকি জাহাঙ্গীরের জানাজায় অংশ নিয়েছিল।
শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর ফেরদৌস ওরফে কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিয়ে তখন নানা গুজব। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল, কালা জাহাঙ্গীরকে আড়াল করার জন্য এসব রটানো হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করেছিলেন তিনি বিদেশে চলে গেছেন। ওই সময় কালা জাহাঙ্গীরের মাথায় এক ডজন খুনের মামলা আর গোটা বিশেক জিডি। পুরান ঢাকার শহীদ কমিশনারের আশ্রয়ে থেকে তখন একের পর এক খুন করে যাচ্ছিলেন। সে সময় পোস্তগোলার কমিশনার শাহাদত ছিলেন শহীদ কমিশনারের প্রতিপক্ষ।
কালা জাহাঙ্গীরের হাত থেকে বাঁচতে তিনি আসিফ নামে আরেক সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেননি। আদালত চত্বরে মুরগি মিলনকে খুন করার পর উত্তরার রাস্তায় গাড়ির ভেতরে গুলি করে শাহাদতকে খুন করেন কালা জাহাঙ্গীর। কারওয়ান বাজারের সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ। ইব্রাহিমপুরে বেড়ে ওঠা কালা জাহাঙ্গীরকে পুলিশ কখনো ধরতে পারেনি। ছোটবেলার একটি মাত্র ছবি ছাড়া পুলিশের কাছে তাঁর কোনো ছবি ছিল না। সাধারণ কোনো মানুষও তাঁকে চিনত না। তাঁর সব কর্মকাণ্ড ছিল অ্যাকশন সিনেমার গল্পের মতো ভয়ংকর।
কালা জাহাঙ্গীরের বাড়ি থেকে বের হয়ে ফোন দিলাম ঢাকা রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি ফররুখ আহমেদকে। সিআইডিতে থাকার সুবাদে কালা জাহাঙ্গীরের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করতেন। ফররুখ আহমেদ বললেন, তাঁর একাধিক সোর্স জানিয়েছে, কেরানীগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা ব্রিজের আশপাশে প্রতিপক্ষের গুলিতে কালা জাহাঙ্গীর আহত হয়েছিলেন। দলের লোকজন তাঁর চিকিৎসার জন্য গুলশানের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পুলিশ সে খবর পেয়ে ক্লিনিকে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁকে সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর তাঁর আর কোনো খোঁজ পায়নি সিআইডি।
কালা জাহাঙ্গীরের মৃত্যু নিয়ে আমি একটি নিউজ করি (৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৫, প্রথম আলো)। এরপর শুরু হয় বিতর্ক। পেয়ারা বেগমের বক্তব্য ধরে মিসরের ফারাও রাজা ‘তুতানখামেন’-এর কবর আবিষ্কারের মতো করে কালা জাহাঙ্গীরের কবর খুঁজতে নেমে পড়ি আমরা। আমার সঙ্গে বিডিনিউজের সাংবাদিক লিটন হায়দার। আমাদের ভাগ্য ভালো, তুতানখামেনের মতো সেই কবরে কোনো অভিশাপ ছিল না। সে কারণে সহজে পেয়ে যাই। একদিন আমি আর লিটন হায়দার যাই মহাখালীর সাততলা বস্তির পেছনে। সেখানকার লোকেরা আমাদের জানান, একদিন গভীর রাতে জনাবিশেক অস্ত্রধারী যুবক এসে একটি লাশ দাফন করে চলে যায়। তাদের অস্ত্র দেখে ভয় পেয়ে যান তাঁরা। সে কারণে তাঁরা কাউকে বিষয়টি বলেননি। কালা জাহাঙ্গীরের মায়ের বর্ণনার সঙ্গে তাঁদের বিবরণ মিলে যায়।
এরপর থেমে যায় কালা জাহাঙ্গীরের নামে সব ধরনের তৎপরতা। কালা জাহাঙ্গীরকে ধরতে ওই সময় সরকার এক লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পুলিশ তখন তাঁকে ধরেনি। ইব্রাহিমপুরের মশিউর রহমান কচির ভাই আজাদকে খুনের পর কালা জাহাঙ্গীর নিজে জনকণ্ঠ অফিসে ফোন করে সেই খুনের কথা স্বীকার করে বলেছিলেন, পুলিশ আমাকে ধরলে পাবে পুরস্কারের এক লাখ টাকা, আর না ধরলে প্রতি মাসে পাবে সেই টাকা–তাহলে ধরবে কেন? সত্যিই, শেষ পর্যন্ত অধরা থেকে গিয়েছিলেন ভয়ংকর খুনি কালা জাহাঙ্গীর।
আরও পড়ুন

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ বেল বাজল। একবার-দুবার নয়, বেজেই চলেছে। মেয়েকে বললাম, দেখ তো মা, এত রাতে কে এল? মেয়ে বলল, মনে হয় পুলিশ। কটা হবে তখন?
১০ জুলাই ২০২১
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ বেল বাজল। একবার-দুবার নয়, বেজেই চলেছে। মেয়েকে বললাম, দেখ তো মা, এত রাতে কে এল? মেয়ে বলল, মনে হয় পুলিশ। কটা হবে তখন?
১০ জুলাই ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ বেল বাজল। একবার-দুবার নয়, বেজেই চলেছে। মেয়েকে বললাম, দেখ তো মা, এত রাতে কে এল? মেয়ে বলল, মনে হয় পুলিশ। কটা হবে তখন?
১০ জুলাই ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাব, হঠাৎ বেল বাজল। একবার-দুবার নয়, বেজেই চলেছে। মেয়েকে বললাম, দেখ তো মা, এত রাতে কে এল? মেয়ে বলল, মনে হয় পুলিশ। কটা হবে তখন?
১০ জুলাই ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে