কামরুল হাসান

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন দরদি। তিনি ঠিক কী করতেন, তা তখনো জানি না, তবে প্রায়ই তাঁকে ডিবি অফিসে দেখতাম; বিশেষ করে এসি আকরাম হোসেনের (রুবেল হত্যা মামলার আসামি) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল চোখে পড়ার মতো। এসি আকরামের গাড়িতে তাঁকে ডিবি অফিসে ঢুকতে ও বেরোতে দেখা যেত। আকরামের কারণে অন্য কর্মকর্তারাও তাঁকে খুব সমীহ করতেন। আর সেই একই কারণে মোকাররম হোসেন দরদি কাউকে পাত্তা দিতেন না।
একদিন সকালে ডিবি অফিসে এক কর্মকর্তার রুমে বসে আছি, সেখানে ঢুকলেন মোকাররম হোসেন দরদি। সেই কর্মকর্তা তাঁকে খুব একটা পছন্দ করতেন না। আমি অনেকটা যেচেই মোকাররমের সঙ্গে পরিচিত হলাম। যাওয়ার সময় একটি ভিজিটিং কার্ড আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। দেখি, তিনি শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির এমডি। মোকাররম চলে যাওয়ার পর সেই কর্মকর্তা আমার হাতে অনেকগুলো ফটোকপি করা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, মোকাররম উত্তরার ছয় বিঘা জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে আছেন বলে কেউ কিছু বলতে পারছে না। আমি কাগজগুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
তিন-চার দিন পর গেলাম সেই জমি দেখতে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগোয়া উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের একটি খালি প্লট। এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরার দিকে যেতে মাসকট প্লাজার ঠিক আগে ডান দিকে ছয় বিঘার প্লট। সামনের সাইনবোর্ডে লেখা শাহজালাল সুপার মার্কেট। চারদিক টিন দিয়ে ঘেরা। তার ভেতরে ছোট ছোট দোকান বানানো হচ্ছে। টিনের শব্দে কান পাতা দায়। সব দোকানের আকার প্রায় একই রকম। অবস্থা দেখে মনে হলো, সাংবাদিক পরিচয়ে গেলে কাজ হবে না। তার চেয়ে দোকানের ক্রেতা সেজে কথা বললে মন্দ হয় না। একজনের কাছে গেলাম ক্রেতা সেজে। তিনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখালেন আর বললেন, এখানে ৫১৮টি টিনশেড দোকান হবে। এক মাসের মধ্যে সব হস্তান্তর করা হবে।
প্রতি দোকানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে, বুকিংয়ের জন্য এখনই দিতে হবে দেড় লাখ টাকা। তাঁর বক্তব্য হলো, দোকানের বরাদ্দ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে যা পাওয়ার পেয়ে গেলাম। আমার দরকার এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানা। লোকটাকে বললাম, ভাই, এত টাকা বিনিয়োগ করব, মালিক কারা জানতে হবে। তিনি আমাকে নিয়ে পাশের একটি ভবনের নিচতলায় গেলেন। সেখানে আরও কয়েকজন বসে ছিলেন। তাঁদের একজনকে ম্যানেজার বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সেই ম্যানেজার আমাকে নানা প্রশ্ন করার পর কিছু কাগজ দিলেন। দেখি সেই কাগজে শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির শেয়ারহোল্ডারদের নাম-পরিচয় আছে। প্রথম নামটি দীপু চৌধুরী, পিতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এরপরে আছেন মোকাররম হোসেন দরদি। আছে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির স্ত্রী ও পুত্রের নাম। ম্যানেজার আমাকে বললেন, এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকার দোকান বিক্রি হয়ে গেছে। আমি বললাম, ভাই, এটা নাকি সরকারি জমি। তিনি আমাকে ধমকের সুরে বললেন, কারা আছে দেখছেন না? কেউ কিছু করতে পারব?
যে জমিতে দোকানগুলো উঠছে, তার একটু দূরেই রাজউকের উত্তরা কার্যালয়, গেলাম সেখানে। এক কর্মকর্তা সব ধরনের সহযোগিতা করে বললেন, আপনারা লিখলে কাজ হবে। তথ্যপ্রমাণগুলো জোগাড়ের পর ফোন দিলাম দীপু চৌধুরীকে। বললেন, সব দেখাশোনা করছেন মোকাররম হোসেন দরদি, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। মোকাররম হোসেন দরদিকে ফোন দিতেই তিনি যা বললেন, তা আর না বলি। পরদিন ২০০০ সালের ৫ জুন প্রথম পাতায় ঢাউস করে ছাপা হলো, ‘গায়ের জোরে দখল করে নেওয়া উত্তরার ছ’ বিঘা জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল মার্কেট’। সেই খবর প্রকাশের পর সকাল থেকে শুরু হলো ‘মধুর’ অত্যাচার। পরিচিত দু-একজন ফোন করে বললেন, কাজটা ঠিক হয়নি।
সেদিন সকাল থেকে ভয়ে ভয়ে আছি। ফোনও ধরছি নম্বর দেখে দেখে। এর মধ্যে দুপুরের দিকে একজন ফোন করে বকাঝকা করলেন, ভয়ও দেখালেন। ভয় অবশ্য তেমন পাইনি, কিন্তু মনে হলো, আজ আর অন্য কোথাও যাওয়া ঠিক হবে না। মিন্টো রোডের জনসংযোগ শাখা থেকে বেরিয়ে সোজা চলে এলাম ইস্কাটনে, জনকণ্ঠ অফিসে। মোটরসাইকেল পার্ক করে নিউজরুমে উঠে দেখি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা নাসির আহমেদের তিনটি মিসড কল। ফিরতি কল করতেই বললেন, এক্ষুনি মন্ত্রণালয়ে চলে আসেন, মন্ত্রী আপনাকে খুঁজছেন। এবার সত্যিই একটু ভয় পেলাম।
জনকণ্ঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিট করতেন আহমেদ দীপু। আমি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশটুকু দেখতাম। আর অগ্রজ সাংবাদিক ওবায়দুল কবীর করতেন আওয়ামী লীগ বিট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে তাঁর অনেক ভাব। আমাকে মন্ত্রীর খোঁজ করার বিষয়টি তাঁকে জানাতেই বললেন, চলে যান, ভয় নেই। রাজনীতির জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের অসীম স্নেহ করতেন, কিন্তু ভুলত্রুটি পেলে ধোলাই দিতেও ছাড়তেন না। আমি যখন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালাম, দেখি তিনি দলবল নিয়ে গাড়িতে উঠছেন। আমাকে দেখে বললেন, ...ওই মিয়া, এত দেরি করলা, চলো। কোথায় যাব তা আর জিজ্ঞাসা না করেই মন্ত্রীর গাড়ির পেছনে ছুটতে শুরু করলাম।
সচিবালয় থেকে বেরিয়ে আমরা চলেছি ফার্মগেটের দিকে, এরপর এয়ারপোর্ট রোড ধরে বিমানবন্দরের দিকে। ধীরে ধীরে সাহস বাড়ছে। মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। আমার আর বুঝতে বাকি থাকল না যে খবর প্রকাশের কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তিনি তার শেষ দেখতে যাচ্ছেন। মন্ত্রীর বহর এসে থামল ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক লাগোয়া উত্তরার সেই প্লটের কাছে। আমি মনে করেছিলাম, মন্ত্রী আমাকে নিয়ে নিজে অবস্থা দেখতে এসেছেন। কিন্তু এখানে এসে দেখি এলাহি কাণ্ড। আগে থেকেই রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট এবং অনেক পুলিশ দাঁড়িয়ে। সঙ্গে তিনটা বুলডোজার। মন্ত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো ‘ধ্বংসযজ্ঞ’। তিন দিক থেকে তিনটি বুলডোজার চোখের পলকে গুঁড়িয়ে দিল পুরো মার্কেট। এক ঘণ্টার মধ্যে উন্মুক্ত মাঠ আবার আলো-বাতাসের মুখ দেখল।
উচ্ছেদ অভিযান শেষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ডেকে বললেন, ফলোআপটা ভালো কইরা কইরো। আমি বললাম, জি, আচ্ছা। ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মোটরসাইকেল টান দিলাম অফিসের উদ্দেশে।
এখনো উত্তরার দিকে গেলে সেই জমিটার দিকে তাকাই। জমিটা ফাঁকাই আছে। শুধু সিটি করপোরেশন আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য একটি দোতলা টিনের ঘর বানিয়েছে। সরকারি জমি দখল এখনো হয়, উচ্ছেদও হয়। কিন্তু সবই হয় লোকদেখানো। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখি, যথা পূর্বং তথা পরম্।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন দরদি। তিনি ঠিক কী করতেন, তা তখনো জানি না, তবে প্রায়ই তাঁকে ডিবি অফিসে দেখতাম; বিশেষ করে এসি আকরাম হোসেনের (রুবেল হত্যা মামলার আসামি) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল চোখে পড়ার মতো। এসি আকরামের গাড়িতে তাঁকে ডিবি অফিসে ঢুকতে ও বেরোতে দেখা যেত। আকরামের কারণে অন্য কর্মকর্তারাও তাঁকে খুব সমীহ করতেন। আর সেই একই কারণে মোকাররম হোসেন দরদি কাউকে পাত্তা দিতেন না।
একদিন সকালে ডিবি অফিসে এক কর্মকর্তার রুমে বসে আছি, সেখানে ঢুকলেন মোকাররম হোসেন দরদি। সেই কর্মকর্তা তাঁকে খুব একটা পছন্দ করতেন না। আমি অনেকটা যেচেই মোকাররমের সঙ্গে পরিচিত হলাম। যাওয়ার সময় একটি ভিজিটিং কার্ড আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। দেখি, তিনি শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির এমডি। মোকাররম চলে যাওয়ার পর সেই কর্মকর্তা আমার হাতে অনেকগুলো ফটোকপি করা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, মোকাররম উত্তরার ছয় বিঘা জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে আছেন বলে কেউ কিছু বলতে পারছে না। আমি কাগজগুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
তিন-চার দিন পর গেলাম সেই জমি দেখতে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগোয়া উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের একটি খালি প্লট। এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরার দিকে যেতে মাসকট প্লাজার ঠিক আগে ডান দিকে ছয় বিঘার প্লট। সামনের সাইনবোর্ডে লেখা শাহজালাল সুপার মার্কেট। চারদিক টিন দিয়ে ঘেরা। তার ভেতরে ছোট ছোট দোকান বানানো হচ্ছে। টিনের শব্দে কান পাতা দায়। সব দোকানের আকার প্রায় একই রকম। অবস্থা দেখে মনে হলো, সাংবাদিক পরিচয়ে গেলে কাজ হবে না। তার চেয়ে দোকানের ক্রেতা সেজে কথা বললে মন্দ হয় না। একজনের কাছে গেলাম ক্রেতা সেজে। তিনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখালেন আর বললেন, এখানে ৫১৮টি টিনশেড দোকান হবে। এক মাসের মধ্যে সব হস্তান্তর করা হবে।
প্রতি দোকানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে, বুকিংয়ের জন্য এখনই দিতে হবে দেড় লাখ টাকা। তাঁর বক্তব্য হলো, দোকানের বরাদ্দ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে যা পাওয়ার পেয়ে গেলাম। আমার দরকার এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানা। লোকটাকে বললাম, ভাই, এত টাকা বিনিয়োগ করব, মালিক কারা জানতে হবে। তিনি আমাকে নিয়ে পাশের একটি ভবনের নিচতলায় গেলেন। সেখানে আরও কয়েকজন বসে ছিলেন। তাঁদের একজনকে ম্যানেজার বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সেই ম্যানেজার আমাকে নানা প্রশ্ন করার পর কিছু কাগজ দিলেন। দেখি সেই কাগজে শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির শেয়ারহোল্ডারদের নাম-পরিচয় আছে। প্রথম নামটি দীপু চৌধুরী, পিতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এরপরে আছেন মোকাররম হোসেন দরদি। আছে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির স্ত্রী ও পুত্রের নাম। ম্যানেজার আমাকে বললেন, এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকার দোকান বিক্রি হয়ে গেছে। আমি বললাম, ভাই, এটা নাকি সরকারি জমি। তিনি আমাকে ধমকের সুরে বললেন, কারা আছে দেখছেন না? কেউ কিছু করতে পারব?
যে জমিতে দোকানগুলো উঠছে, তার একটু দূরেই রাজউকের উত্তরা কার্যালয়, গেলাম সেখানে। এক কর্মকর্তা সব ধরনের সহযোগিতা করে বললেন, আপনারা লিখলে কাজ হবে। তথ্যপ্রমাণগুলো জোগাড়ের পর ফোন দিলাম দীপু চৌধুরীকে। বললেন, সব দেখাশোনা করছেন মোকাররম হোসেন দরদি, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। মোকাররম হোসেন দরদিকে ফোন দিতেই তিনি যা বললেন, তা আর না বলি। পরদিন ২০০০ সালের ৫ জুন প্রথম পাতায় ঢাউস করে ছাপা হলো, ‘গায়ের জোরে দখল করে নেওয়া উত্তরার ছ’ বিঘা জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল মার্কেট’। সেই খবর প্রকাশের পর সকাল থেকে শুরু হলো ‘মধুর’ অত্যাচার। পরিচিত দু-একজন ফোন করে বললেন, কাজটা ঠিক হয়নি।
সেদিন সকাল থেকে ভয়ে ভয়ে আছি। ফোনও ধরছি নম্বর দেখে দেখে। এর মধ্যে দুপুরের দিকে একজন ফোন করে বকাঝকা করলেন, ভয়ও দেখালেন। ভয় অবশ্য তেমন পাইনি, কিন্তু মনে হলো, আজ আর অন্য কোথাও যাওয়া ঠিক হবে না। মিন্টো রোডের জনসংযোগ শাখা থেকে বেরিয়ে সোজা চলে এলাম ইস্কাটনে, জনকণ্ঠ অফিসে। মোটরসাইকেল পার্ক করে নিউজরুমে উঠে দেখি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা নাসির আহমেদের তিনটি মিসড কল। ফিরতি কল করতেই বললেন, এক্ষুনি মন্ত্রণালয়ে চলে আসেন, মন্ত্রী আপনাকে খুঁজছেন। এবার সত্যিই একটু ভয় পেলাম।
জনকণ্ঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিট করতেন আহমেদ দীপু। আমি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশটুকু দেখতাম। আর অগ্রজ সাংবাদিক ওবায়দুল কবীর করতেন আওয়ামী লীগ বিট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে তাঁর অনেক ভাব। আমাকে মন্ত্রীর খোঁজ করার বিষয়টি তাঁকে জানাতেই বললেন, চলে যান, ভয় নেই। রাজনীতির জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের অসীম স্নেহ করতেন, কিন্তু ভুলত্রুটি পেলে ধোলাই দিতেও ছাড়তেন না। আমি যখন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালাম, দেখি তিনি দলবল নিয়ে গাড়িতে উঠছেন। আমাকে দেখে বললেন, ...ওই মিয়া, এত দেরি করলা, চলো। কোথায় যাব তা আর জিজ্ঞাসা না করেই মন্ত্রীর গাড়ির পেছনে ছুটতে শুরু করলাম।
সচিবালয় থেকে বেরিয়ে আমরা চলেছি ফার্মগেটের দিকে, এরপর এয়ারপোর্ট রোড ধরে বিমানবন্দরের দিকে। ধীরে ধীরে সাহস বাড়ছে। মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। আমার আর বুঝতে বাকি থাকল না যে খবর প্রকাশের কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তিনি তার শেষ দেখতে যাচ্ছেন। মন্ত্রীর বহর এসে থামল ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক লাগোয়া উত্তরার সেই প্লটের কাছে। আমি মনে করেছিলাম, মন্ত্রী আমাকে নিয়ে নিজে অবস্থা দেখতে এসেছেন। কিন্তু এখানে এসে দেখি এলাহি কাণ্ড। আগে থেকেই রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট এবং অনেক পুলিশ দাঁড়িয়ে। সঙ্গে তিনটা বুলডোজার। মন্ত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো ‘ধ্বংসযজ্ঞ’। তিন দিক থেকে তিনটি বুলডোজার চোখের পলকে গুঁড়িয়ে দিল পুরো মার্কেট। এক ঘণ্টার মধ্যে উন্মুক্ত মাঠ আবার আলো-বাতাসের মুখ দেখল।
উচ্ছেদ অভিযান শেষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ডেকে বললেন, ফলোআপটা ভালো কইরা কইরো। আমি বললাম, জি, আচ্ছা। ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মোটরসাইকেল টান দিলাম অফিসের উদ্দেশে।
এখনো উত্তরার দিকে গেলে সেই জমিটার দিকে তাকাই। জমিটা ফাঁকাই আছে। শুধু সিটি করপোরেশন আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য একটি দোতলা টিনের ঘর বানিয়েছে। সরকারি জমি দখল এখনো হয়, উচ্ছেদও হয়। কিন্তু সবই হয় লোকদেখানো। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখি, যথা পূর্বং তথা পরম্।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন দরদি। তিনি ঠিক কী করতেন, তা তখনো জানি না, তবে প্রায়ই তাঁকে ডিবি অফিসে দেখতাম; বিশেষ করে এসি আকরাম হোসেনের (রুবেল হত্যা মামলার আসামি) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল চোখে পড়ার মতো। এসি আকরামের গাড়িতে তাঁকে ডিবি অফিসে ঢুকতে ও বেরোতে দেখা যেত। আকরামের কারণে অন্য কর্মকর্তারাও তাঁকে খুব সমীহ করতেন। আর সেই একই কারণে মোকাররম হোসেন দরদি কাউকে পাত্তা দিতেন না।
একদিন সকালে ডিবি অফিসে এক কর্মকর্তার রুমে বসে আছি, সেখানে ঢুকলেন মোকাররম হোসেন দরদি। সেই কর্মকর্তা তাঁকে খুব একটা পছন্দ করতেন না। আমি অনেকটা যেচেই মোকাররমের সঙ্গে পরিচিত হলাম। যাওয়ার সময় একটি ভিজিটিং কার্ড আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। দেখি, তিনি শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির এমডি। মোকাররম চলে যাওয়ার পর সেই কর্মকর্তা আমার হাতে অনেকগুলো ফটোকপি করা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, মোকাররম উত্তরার ছয় বিঘা জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে আছেন বলে কেউ কিছু বলতে পারছে না। আমি কাগজগুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
তিন-চার দিন পর গেলাম সেই জমি দেখতে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগোয়া উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের একটি খালি প্লট। এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরার দিকে যেতে মাসকট প্লাজার ঠিক আগে ডান দিকে ছয় বিঘার প্লট। সামনের সাইনবোর্ডে লেখা শাহজালাল সুপার মার্কেট। চারদিক টিন দিয়ে ঘেরা। তার ভেতরে ছোট ছোট দোকান বানানো হচ্ছে। টিনের শব্দে কান পাতা দায়। সব দোকানের আকার প্রায় একই রকম। অবস্থা দেখে মনে হলো, সাংবাদিক পরিচয়ে গেলে কাজ হবে না। তার চেয়ে দোকানের ক্রেতা সেজে কথা বললে মন্দ হয় না। একজনের কাছে গেলাম ক্রেতা সেজে। তিনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখালেন আর বললেন, এখানে ৫১৮টি টিনশেড দোকান হবে। এক মাসের মধ্যে সব হস্তান্তর করা হবে।
প্রতি দোকানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে, বুকিংয়ের জন্য এখনই দিতে হবে দেড় লাখ টাকা। তাঁর বক্তব্য হলো, দোকানের বরাদ্দ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে যা পাওয়ার পেয়ে গেলাম। আমার দরকার এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানা। লোকটাকে বললাম, ভাই, এত টাকা বিনিয়োগ করব, মালিক কারা জানতে হবে। তিনি আমাকে নিয়ে পাশের একটি ভবনের নিচতলায় গেলেন। সেখানে আরও কয়েকজন বসে ছিলেন। তাঁদের একজনকে ম্যানেজার বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সেই ম্যানেজার আমাকে নানা প্রশ্ন করার পর কিছু কাগজ দিলেন। দেখি সেই কাগজে শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির শেয়ারহোল্ডারদের নাম-পরিচয় আছে। প্রথম নামটি দীপু চৌধুরী, পিতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এরপরে আছেন মোকাররম হোসেন দরদি। আছে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির স্ত্রী ও পুত্রের নাম। ম্যানেজার আমাকে বললেন, এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকার দোকান বিক্রি হয়ে গেছে। আমি বললাম, ভাই, এটা নাকি সরকারি জমি। তিনি আমাকে ধমকের সুরে বললেন, কারা আছে দেখছেন না? কেউ কিছু করতে পারব?
যে জমিতে দোকানগুলো উঠছে, তার একটু দূরেই রাজউকের উত্তরা কার্যালয়, গেলাম সেখানে। এক কর্মকর্তা সব ধরনের সহযোগিতা করে বললেন, আপনারা লিখলে কাজ হবে। তথ্যপ্রমাণগুলো জোগাড়ের পর ফোন দিলাম দীপু চৌধুরীকে। বললেন, সব দেখাশোনা করছেন মোকাররম হোসেন দরদি, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। মোকাররম হোসেন দরদিকে ফোন দিতেই তিনি যা বললেন, তা আর না বলি। পরদিন ২০০০ সালের ৫ জুন প্রথম পাতায় ঢাউস করে ছাপা হলো, ‘গায়ের জোরে দখল করে নেওয়া উত্তরার ছ’ বিঘা জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল মার্কেট’। সেই খবর প্রকাশের পর সকাল থেকে শুরু হলো ‘মধুর’ অত্যাচার। পরিচিত দু-একজন ফোন করে বললেন, কাজটা ঠিক হয়নি।
সেদিন সকাল থেকে ভয়ে ভয়ে আছি। ফোনও ধরছি নম্বর দেখে দেখে। এর মধ্যে দুপুরের দিকে একজন ফোন করে বকাঝকা করলেন, ভয়ও দেখালেন। ভয় অবশ্য তেমন পাইনি, কিন্তু মনে হলো, আজ আর অন্য কোথাও যাওয়া ঠিক হবে না। মিন্টো রোডের জনসংযোগ শাখা থেকে বেরিয়ে সোজা চলে এলাম ইস্কাটনে, জনকণ্ঠ অফিসে। মোটরসাইকেল পার্ক করে নিউজরুমে উঠে দেখি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা নাসির আহমেদের তিনটি মিসড কল। ফিরতি কল করতেই বললেন, এক্ষুনি মন্ত্রণালয়ে চলে আসেন, মন্ত্রী আপনাকে খুঁজছেন। এবার সত্যিই একটু ভয় পেলাম।
জনকণ্ঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিট করতেন আহমেদ দীপু। আমি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশটুকু দেখতাম। আর অগ্রজ সাংবাদিক ওবায়দুল কবীর করতেন আওয়ামী লীগ বিট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে তাঁর অনেক ভাব। আমাকে মন্ত্রীর খোঁজ করার বিষয়টি তাঁকে জানাতেই বললেন, চলে যান, ভয় নেই। রাজনীতির জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের অসীম স্নেহ করতেন, কিন্তু ভুলত্রুটি পেলে ধোলাই দিতেও ছাড়তেন না। আমি যখন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালাম, দেখি তিনি দলবল নিয়ে গাড়িতে উঠছেন। আমাকে দেখে বললেন, ...ওই মিয়া, এত দেরি করলা, চলো। কোথায় যাব তা আর জিজ্ঞাসা না করেই মন্ত্রীর গাড়ির পেছনে ছুটতে শুরু করলাম।
সচিবালয় থেকে বেরিয়ে আমরা চলেছি ফার্মগেটের দিকে, এরপর এয়ারপোর্ট রোড ধরে বিমানবন্দরের দিকে। ধীরে ধীরে সাহস বাড়ছে। মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। আমার আর বুঝতে বাকি থাকল না যে খবর প্রকাশের কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তিনি তার শেষ দেখতে যাচ্ছেন। মন্ত্রীর বহর এসে থামল ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক লাগোয়া উত্তরার সেই প্লটের কাছে। আমি মনে করেছিলাম, মন্ত্রী আমাকে নিয়ে নিজে অবস্থা দেখতে এসেছেন। কিন্তু এখানে এসে দেখি এলাহি কাণ্ড। আগে থেকেই রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট এবং অনেক পুলিশ দাঁড়িয়ে। সঙ্গে তিনটা বুলডোজার। মন্ত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো ‘ধ্বংসযজ্ঞ’। তিন দিক থেকে তিনটি বুলডোজার চোখের পলকে গুঁড়িয়ে দিল পুরো মার্কেট। এক ঘণ্টার মধ্যে উন্মুক্ত মাঠ আবার আলো-বাতাসের মুখ দেখল।
উচ্ছেদ অভিযান শেষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ডেকে বললেন, ফলোআপটা ভালো কইরা কইরো। আমি বললাম, জি, আচ্ছা। ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মোটরসাইকেল টান দিলাম অফিসের উদ্দেশে।
এখনো উত্তরার দিকে গেলে সেই জমিটার দিকে তাকাই। জমিটা ফাঁকাই আছে। শুধু সিটি করপোরেশন আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য একটি দোতলা টিনের ঘর বানিয়েছে। সরকারি জমি দখল এখনো হয়, উচ্ছেদও হয়। কিন্তু সবই হয় লোকদেখানো। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখি, যথা পূর্বং তথা পরম্।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন দরদি। তিনি ঠিক কী করতেন, তা তখনো জানি না, তবে প্রায়ই তাঁকে ডিবি অফিসে দেখতাম; বিশেষ করে এসি আকরাম হোসেনের (রুবেল হত্যা মামলার আসামি) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল চোখে পড়ার মতো। এসি আকরামের গাড়িতে তাঁকে ডিবি অফিসে ঢুকতে ও বেরোতে দেখা যেত। আকরামের কারণে অন্য কর্মকর্তারাও তাঁকে খুব সমীহ করতেন। আর সেই একই কারণে মোকাররম হোসেন দরদি কাউকে পাত্তা দিতেন না।
একদিন সকালে ডিবি অফিসে এক কর্মকর্তার রুমে বসে আছি, সেখানে ঢুকলেন মোকাররম হোসেন দরদি। সেই কর্মকর্তা তাঁকে খুব একটা পছন্দ করতেন না। আমি অনেকটা যেচেই মোকাররমের সঙ্গে পরিচিত হলাম। যাওয়ার সময় একটি ভিজিটিং কার্ড আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। দেখি, তিনি শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির এমডি। মোকাররম চলে যাওয়ার পর সেই কর্মকর্তা আমার হাতে অনেকগুলো ফটোকপি করা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বললেন, মোকাররম উত্তরার ছয় বিঘা জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে আছেন বলে কেউ কিছু বলতে পারছে না। আমি কাগজগুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।
তিন-চার দিন পর গেলাম সেই জমি দেখতে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক লাগোয়া উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের একটি খালি প্লট। এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরার দিকে যেতে মাসকট প্লাজার ঠিক আগে ডান দিকে ছয় বিঘার প্লট। সামনের সাইনবোর্ডে লেখা শাহজালাল সুপার মার্কেট। চারদিক টিন দিয়ে ঘেরা। তার ভেতরে ছোট ছোট দোকান বানানো হচ্ছে। টিনের শব্দে কান পাতা দায়। সব দোকানের আকার প্রায় একই রকম। অবস্থা দেখে মনে হলো, সাংবাদিক পরিচয়ে গেলে কাজ হবে না। তার চেয়ে দোকানের ক্রেতা সেজে কথা বললে মন্দ হয় না। একজনের কাছে গেলাম ক্রেতা সেজে। তিনি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব দেখালেন আর বললেন, এখানে ৫১৮টি টিনশেড দোকান হবে। এক মাসের মধ্যে সব হস্তান্তর করা হবে।
প্রতি দোকানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে, বুকিংয়ের জন্য এখনই দিতে হবে দেড় লাখ টাকা। তাঁর বক্তব্য হলো, দোকানের বরাদ্দ প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে যা পাওয়ার পেয়ে গেলাম। আমার দরকার এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানা। লোকটাকে বললাম, ভাই, এত টাকা বিনিয়োগ করব, মালিক কারা জানতে হবে। তিনি আমাকে নিয়ে পাশের একটি ভবনের নিচতলায় গেলেন। সেখানে আরও কয়েকজন বসে ছিলেন। তাঁদের একজনকে ম্যানেজার বলে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সেই ম্যানেজার আমাকে নানা প্রশ্ন করার পর কিছু কাগজ দিলেন। দেখি সেই কাগজে শাহজালাল কো-অপারেটিভ সোসাইটির শেয়ারহোল্ডারদের নাম-পরিচয় আছে। প্রথম নামটি দীপু চৌধুরী, পিতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এরপরে আছেন মোকাররম হোসেন দরদি। আছে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির স্ত্রী ও পুত্রের নাম। ম্যানেজার আমাকে বললেন, এর মধ্যে ৩০ কোটি টাকার দোকান বিক্রি হয়ে গেছে। আমি বললাম, ভাই, এটা নাকি সরকারি জমি। তিনি আমাকে ধমকের সুরে বললেন, কারা আছে দেখছেন না? কেউ কিছু করতে পারব?
যে জমিতে দোকানগুলো উঠছে, তার একটু দূরেই রাজউকের উত্তরা কার্যালয়, গেলাম সেখানে। এক কর্মকর্তা সব ধরনের সহযোগিতা করে বললেন, আপনারা লিখলে কাজ হবে। তথ্যপ্রমাণগুলো জোগাড়ের পর ফোন দিলাম দীপু চৌধুরীকে। বললেন, সব দেখাশোনা করছেন মোকাররম হোসেন দরদি, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। মোকাররম হোসেন দরদিকে ফোন দিতেই তিনি যা বললেন, তা আর না বলি। পরদিন ২০০০ সালের ৫ জুন প্রথম পাতায় ঢাউস করে ছাপা হলো, ‘গায়ের জোরে দখল করে নেওয়া উত্তরার ছ’ বিঘা জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল মার্কেট’। সেই খবর প্রকাশের পর সকাল থেকে শুরু হলো ‘মধুর’ অত্যাচার। পরিচিত দু-একজন ফোন করে বললেন, কাজটা ঠিক হয়নি।
সেদিন সকাল থেকে ভয়ে ভয়ে আছি। ফোনও ধরছি নম্বর দেখে দেখে। এর মধ্যে দুপুরের দিকে একজন ফোন করে বকাঝকা করলেন, ভয়ও দেখালেন। ভয় অবশ্য তেমন পাইনি, কিন্তু মনে হলো, আজ আর অন্য কোথাও যাওয়া ঠিক হবে না। মিন্টো রোডের জনসংযোগ শাখা থেকে বেরিয়ে সোজা চলে এলাম ইস্কাটনে, জনকণ্ঠ অফিসে। মোটরসাইকেল পার্ক করে নিউজরুমে উঠে দেখি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা নাসির আহমেদের তিনটি মিসড কল। ফিরতি কল করতেই বললেন, এক্ষুনি মন্ত্রণালয়ে চলে আসেন, মন্ত্রী আপনাকে খুঁজছেন। এবার সত্যিই একটু ভয় পেলাম।
জনকণ্ঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিট করতেন আহমেদ দীপু। আমি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশটুকু দেখতাম। আর অগ্রজ সাংবাদিক ওবায়দুল কবীর করতেন আওয়ামী লীগ বিট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে তাঁর অনেক ভাব। আমাকে মন্ত্রীর খোঁজ করার বিষয়টি তাঁকে জানাতেই বললেন, চলে যান, ভয় নেই। রাজনীতির জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের অসীম স্নেহ করতেন, কিন্তু ভুলত্রুটি পেলে ধোলাই দিতেও ছাড়তেন না। আমি যখন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালাম, দেখি তিনি দলবল নিয়ে গাড়িতে উঠছেন। আমাকে দেখে বললেন, ...ওই মিয়া, এত দেরি করলা, চলো। কোথায় যাব তা আর জিজ্ঞাসা না করেই মন্ত্রীর গাড়ির পেছনে ছুটতে শুরু করলাম।
সচিবালয় থেকে বেরিয়ে আমরা চলেছি ফার্মগেটের দিকে, এরপর এয়ারপোর্ট রোড ধরে বিমানবন্দরের দিকে। ধীরে ধীরে সাহস বাড়ছে। মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। আমার আর বুঝতে বাকি থাকল না যে খবর প্রকাশের কারণে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তিনি তার শেষ দেখতে যাচ্ছেন। মন্ত্রীর বহর এসে থামল ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক লাগোয়া উত্তরার সেই প্লটের কাছে। আমি মনে করেছিলাম, মন্ত্রী আমাকে নিয়ে নিজে অবস্থা দেখতে এসেছেন। কিন্তু এখানে এসে দেখি এলাহি কাণ্ড। আগে থেকেই রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট এবং অনেক পুলিশ দাঁড়িয়ে। সঙ্গে তিনটা বুলডোজার। মন্ত্রী আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো ‘ধ্বংসযজ্ঞ’। তিন দিক থেকে তিনটি বুলডোজার চোখের পলকে গুঁড়িয়ে দিল পুরো মার্কেট। এক ঘণ্টার মধ্যে উন্মুক্ত মাঠ আবার আলো-বাতাসের মুখ দেখল।
উচ্ছেদ অভিযান শেষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে ডেকে বললেন, ফলোআপটা ভালো কইরা কইরো। আমি বললাম, জি, আচ্ছা। ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মোটরসাইকেল টান দিলাম অফিসের উদ্দেশে।
এখনো উত্তরার দিকে গেলে সেই জমিটার দিকে তাকাই। জমিটা ফাঁকাই আছে। শুধু সিটি করপোরেশন আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য একটি দোতলা টিনের ঘর বানিয়েছে। সরকারি জমি দখল এখনো হয়, উচ্ছেদও হয়। কিন্তু সবই হয় লোকদেখানো। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখি, যথা পূর্বং তথা পরম্।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন
২৯ এপ্রিল ২০২৩
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন
২৯ এপ্রিল ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন
২৯ এপ্রিল ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অপরাধবিষয়ক রিপোর্টারদের কাছে মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে যাওয়া-আসাটা ডালভাতের মতো। কাজে- অকাজে প্রায়ই যেতে হয়। অনেকে সেখানে দীর্ঘ সময়ও কাটান। কিন্তু পুলিশ-সাংবাদিকের বাইরেও কিছু লোক মিন্টো রোডের আশপাশে ঘুরঘুর করেন। সে রকমই একজন ছিলেন মোকাররম হোসেন
২৯ এপ্রিল ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে