Ajker Patrika

রয়টার্সের প্রতিবেদন /ইরান ও রাশিয়ার ‘নিষিদ্ধ’ তেল-বাণিজ্যের নেপথ্যে নিউজিল্যান্ডের বিমা সংস্থা, মালিক ব্রিটিশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৫৮
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল বাণিজ্য করতে ইরান ও রাশিয়াকে সহায়তা করছে পশ্চিমের কোম্পানিই। ছবি: এএফপি
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল বাণিজ্য করতে ইরান ও রাশিয়াকে সহায়তা করছে পশ্চিমের কোম্পানিই। ছবি: এএফপি

পশ্চিমা বিশ্বের কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান ও রাশিয়ার তেল রপ্তানি থেমে নেই। এমনকি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার তেল-বাণিজ্যে আয় বৃদ্ধির খবরও এসেছে। আর এই কাজে সহায়তা করছে যেসব প্রতিষ্ঠান, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম নিউজিল্যান্ডভিত্তিক ছোট বিমা প্রতিষ্ঠান মেরিটাইম মিউচুয়াল। এটির মালিকানা আবার এক ব্রিটিশ পরিবারের। কোম্পানিটি এখন আন্তর্জাতিক তদন্তের মুখে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা ছায়া বহরের ট্যাংকারগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিমা পরিষেবা দিয়ে আসছে। এই জাহাজগুলো অবস্থান সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়, জাল নথিপত্র এবং নাম ব্যবহার করে গোপনে তেল-বাণিজ্য চালিয়ে যায়।

মেরিটাইম মিউচুয়ালের মূল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মেরিটাইম মিউচুয়াল ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন, অকল্যান্ডে একটি কার্যালয় থেকে এটি পরিচালিত হয়। সংস্থাটি গত দুই দশকে ফেরি থেকে শুরু করে পণ্যবাহী জাহাজ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার জাহাজকে বিমা সুবিধা দিয়েছে। তবে রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত প্রায় এক-ষষ্ঠাংশ ছায়া বহরের ট্যাংকারকে এই সুবিধা দিয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে ইরান ও রাশিয়ার তেল পরিবহনকারী জাহাজ।

দৃষ্টান্ত হিসেবে রয়টার্স উল্লেখ করেছে, গত বড়দিনের সময়, ইয়ুগ (Yug) নামে একটি ট্যাংকার চীনের কিংদাও বন্দর থেকে ২ কোটি ব্যারেল ইরানি তেল খালাস করে যাত্রা শুরু করে। একই সময়ে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল বহনকারী একটি জাহাজ বরফের মধ্য দিয়ে ভারতে যাচ্ছিল। তিনটি ভিন্ন ট্যাংকারের মালিক ভিন্ন হলেও এগুলোর বিমাকারী ছিল নিউজিল্যান্ডের সংস্থাটি।

এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) হিসাব অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর থেকে মেরিটাইম মিউচুয়ালের কাভারেজপ্রাপ্ত জাহাজগুলো কমপক্ষে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলারের ইরানি তেল এবং ১ হাজার ৬৭০ কোটি ডলারের রুশ জ্বালানি পণ্য পরিবহন করেছে। সে হিসাবে মোট বাণিজ্য হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি।

মেরিটাইম মিউচুয়ালের মূল পরিষেবা হলো সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণ (পিঅ্যান্ডআই) বিমা। এই বিমা জাহাজের কোনো দুর্ঘটনা, পরিবেশগত ক্ষতি বা তৃতীয় পক্ষের কারণে ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার কাভার করে। সাবেক মার্কিন ট্রেজারি নিষেধাজ্ঞাবিদ ডেভিড ট্যানেনবাউমের মতে, এই বিমা ছাড়া ছায়া বহরের জাহাজগুলো ‘পানিতে নিথর’ হয়ে থাকত। কারণ, রাশিয়া বা ইরানের বন্দরেও বিমাবিহীন জাহাজ প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।

এ সংস্থাটি পরিচালনা করে ৭৫ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক পল র‍্যাঙ্কিন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কোম্পানির ওয়েবসাইটে তাঁর দুই কন্যা (ক্লেয়ার ও সারাহ) এবং এক জামাতা (স্টিভেন জয়েস) সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই, ২০১৬ সাল থেকে মেরিটাইম মিউচুয়াল ইরানি ব্যবসা আকৃষ্ট করার চেষ্টা শুরু করে। তারা ‘নিউজিল্যান্ড পিঅ্যান্ডআই ক্লাব’ নামে একটি সমিতি খোলে। ইরানে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিপাকে পড়া গ্রাহকদের নিয়ে এই সমিতি গঠন করা হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে তারা ইরানি শিপিং ফার্ম ‘শিরাজ মেরিন’কে ইরানে এই সমিতির স্বার্থ প্রচার এবং সদস্যদের পরিচিত করার কর্তৃত্ব দেয়।

ইরান ও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর এই কোম্পানির রাজস্বে বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে তাদের বিমা বিক্রি গড়ে বছরে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়লেও, ২০১৯ সাল থেকে (ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর) তা গড়ে বছরে ৪১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়ে গত বছর ১০ কোটি ৮৫ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালে রুশ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার প্রথম বছরে এই প্রবৃদ্ধি ৬০ শতাংশে পৌঁছায়।

নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সহায়তা এবং অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগে নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে বিমা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। রুশ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগের অংশ হিসেবে, ১৬ অক্টোবর নিউজিল্যান্ড পুলিশ মেরিটাইম মিউচুয়ালের অকল্যান্ড ও ক্রাইস্টচার্চের কার্যালয় এবং অকল্যান্ডের একটি বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে নথি ও রেকর্ড জব্দ করে। পুলিশের আর্থিক অপরাধ বিভাগ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, যদিও এখনো কোনো ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

এই তদন্তে নিউজিল্যান্ড সরকার অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে।

এর মধ্যে মেরিটাইম মিউচুয়াল তাদের বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণের ঝুঁকি কমানোর জন্য পুনর্বিমা পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছে। যেহেতু পুনর্বিমা সংস্থাগুলোও নিষেধাজ্ঞার নিয়ম মানতে বাধ্য, তাই মেরিটাইম মিউচুয়াল যদি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে থাকে, তবে তাদের সহযোগী বৈশ্বিক সংস্থাগুলোও ঝুঁকিতে পড়বে।

ম্যারিটাইম মিউচুয়ালের পুনর্বিমা প্রদানকারী প্রধান সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে লন্ডনভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিমা বাজার লয়েডস অব লন্ডনের সদস্যরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: জার্মানির মিউনিখ রি গ্রুপ (বিশ্বের বৃহত্তম পুনর্বিমা সংস্থা) ; জার্মানির আরেক প্রতিষ্ঠান হ্যানোভার রি; ব্রিটেনের এমএস অ্যামলিন এবং অ্যাট্রিয়াম।

এ ছাড়া ব্রিটিশ-আমেরিকান বিমা কোম্পানি এওন (Aon) এবং আমেরিকার লকটনও সংস্থাটির ব্রোকার হিসেবে কাজ করেছে।

রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মেরিটাইম মিউচুয়াল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারী কোনো কার্যকলাপে জড়িত থাকার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, তাদের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনে ‘শূন্য সহনশীলতা নীতি’ রয়েছে।

তবে ২১ অক্টোবর সংস্থাটি ঘোষণা করে, তারা শিপিং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দ্বারা চিহ্নিত কোনো ‘ছায়া বহরের’ জাহাজ বা রুশ তেল বহনকারী জাহাজের জন্য কাভারেজ দেবে না।

মেরিটাইম মিউচুয়াল এর আগে জানিয়েছিল, তারা ২০১২ সাল থেকে ৯২টি জাহাজের কাভারেজ বাতিল করেছে। কারণ, সেগুলোকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’

শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’

সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’

করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।

গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’

দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচারী আমলে সাংবাদিক দমন-পীড়নের পুনরাবৃত্তি

ফুল, প্রশংসা আর ডলারে ভাসছেন বন্ডাই বিচের ‘নায়ক’ আল-আহমেদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত