Ajker Patrika

মন্ত্রীর হুমকিতেও দাম বাড়েনি গরুর চামড়ার, ছাগলেরটি ফ্রিতেও নেয় না

আপডেট : ৩০ জুন ২০২৩, ১২: ০০
মন্ত্রীর হুমকিতেও দাম বাড়েনি গরুর চামড়ার, ছাগলেরটি ফ্রিতেও নেয় না

কোরবানির পশুর চামড়া বছর কয়েক ধরে যেন ফেলনা বস্তুতে পরিণত হয়েছে! গত বছর দাম না পেয়ে অনেকে ক্ষোভে চামড়া পুঁতে ফেলেছেন। এ বছর সরকার প্রতি বর্গফুটে ৫ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ঠকালে সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির উদ্যোগ নেবে বলে চামড়া সিন্ডিকেটের প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। 

কিন্তু দাম নির্ধারণ এবং চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের হুমকি-ধমকির কোনো প্রভাব পড়েনি। গতবারের মতোই এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার দাম যৎসামান্য। দিনের শুরুতে কিছুটা দাম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমে এসেছে। ছাগলের চামড়ার ক্রেতাই নেই! 

অথচ চামড়াজাত পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। এক দশক আগের তুলনায় দেশে অন্তত তিন গুণ বেড়েছে চামড়ার জুতা ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসের দাম। 

আমাদের বগুড়া প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৌসুমি এবং নিয়মিত ব্যবসায়ীরা গত বছরের দামেই চামড়া কিনছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) দুপুর পর্যন্ত অনেক চামড়া অবিক্রীত ছিল। দুপুর ১২টা দিকে গরুর যে চামড়া ৭০০ টাকা দাম বলা হতো, দুপুরের পর সেটি ৫০০ টাকার বেশি দাম বলেনি কেউ। মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছর বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া কিনে লোকসান হয়েছে। তাই এবার ভেবেচিন্তে কিনছেন। 

এর প্রমাণ মিলল শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গ্রাম ঘুরে চামড়া কিনে তাঁদের কাছে আনেন। কিন্তু বেলা দেড়টা পর্যন্ত সেখানে খুব একটা চামড়া পৌঁছায়নি। 

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান এলাকা থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা মামুনুর রশিদ নামের এক মৌসুমি ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুরো বাজারের ব্যবসায়ীরাই সিন্ডিকেট করে দাম কম দিচ্ছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা আসল টাকাই তুলতে পারবেন না। 

চামড়া ব্যবসায়ী জসমত উল্লাহ বলছেন, গত বছরের চেয়ে এবার লবণের দাম বেশি, এ ছাড়া আড়ত থেকে নগদ টাকা পাওয়া যায়নি, এ কারণে বেশি দামে চামড়া কেনা সম্ভব হচ্ছে না। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গরুর চামড়া ফড়িয়া ডেকে ৫০০ টাকায় গছিয়ে দিতে হয়েছে। আর ছাগলের চামড়া ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকার বেশি কেউ বেচতে পারেননি। গরুর চামড়া ৬০০ টাকার ওপরে কেউ দাম বলে না। ভেড়ার চামড়া বিনা মূল্যেও নিতে চাননি ফড়িয়ারা। 

তবে বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আড়তে সরকারনির্ধারিত মূল্যেই চামড়া কেনা হবে। এতে ভালো মানের চামড়ার দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত হওয়ার কথা।’ তবে নগদ টাকার সংকটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

একই পরিস্থিতি দেশের অন্যান্য জেলায়ও। ফেনীর পরশুরাম উপজেলা প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ভুট্টো আড়াই লাখ টাকার গরুর চামড়া মাত্র দেড় শ টাকায় বিক্রি করেছেন। দেড় লাখ টাকার একটি গরুর চামড়ার দামও দেড় শ টাকার বেশি বলেনি ফড়িয়ারা। 

উপজেলা বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল গফুর বলেন, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চামড়া অনেক দরকষাকষি করে মাত্র দেড় শ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। 

এরকম আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনীতে এক শ–দেড় শ টাকার বেশি দামে কেউ চামড়া বেচতে পারেননি। 

পরশুরাম বাজারের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন আকারের আড়াই শ চামড়া কিনেছেন সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা দরে। বেশির ভাগের দাম পড়েছে ১০০ টাকা। 

এদিকে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় গরুর চামড়া আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। আর ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ৩০ টাকায়। 

ক্ষুব্ধ কোরবানিদাতারা বলেছেন, এত কম টাকায় চামড়া বিক্রয় করার চেয়ে মাটিতে পুঁতে রাখা ভালো! 

মৌসুমি ব্যবসায়ী মোহা. জুয়েল রানা বলেন, ঝুঁকি নিয়ে চামড়া কিনছেন তাঁরা। বিক্রি করতে পারবেন কি না জানেন না। ব্যবসায়ী মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, গরুর চামড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে কিনেছেন। 

চামড়া নিয়ে বিপাকে আখাউড়ার মানুষময়মনসিংহে বিনা মূল্যেও ছাগলের চামড়া নিচ্ছেন না ফড়িয়ারা। আর লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা দরে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কামরুজ্জামান দুটি ষাঁড় গরু ও দুটি গাভির চামড়া মোট ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছেন! 

মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলেন, গরুর চামড়া ৩০০-৬০০ টাকা এবং ছাড়লের চামড়া ২০-৪০ টাকা দরে কিনেছেন তাঁরা। সুদাংশু নামে এক ফড়িয়া ব্যবসায়ী বলেন, একটা খাসির চামড়া ১০ টাকা করে কিনে লবণ লাগাতে হয় ৩০ টাকার। বাজারে সেই চামড়া তুললে ১০ টাকাও দাম বলে না। তাই এবার খাসির চামড়া কিনছেন না। 

গত কয়েকবারের মতো এবারও কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ। মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও বিপদে। কারণ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে চাইছেন না। দাম না পাওয়ায় জেলার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিনা মূল্যে চামড়া দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পৌরসভার জামিয়া দারুল উলুম মূহিউস সুন্নাহ মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মাকসুদুল আলম জানান, বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছেন, কিন্তু বিক্রি করতে পারছেন না।

গরুর চামড়ার দাম কম, বিনা মূল্যে কেউ নিচ্ছে না ছাগলের চামড়া—এমন পরিস্থিতি ঠাকুরগাঁওয়ে। জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে দেড় লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া ৪৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের শরীফ উদ্দীন। সহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী ২৫টি ছাগলের চামড়া বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে কিনেছেন মোট ৩২০ টাকায়। কিন্তু বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে পারছেন না। রাতের মধ্যে বিক্রি না হলে ফেলে দিয়ে যাবেন।

মৌসুমি ব্যবসায়ী শাহাজাহান আলী বলেন, একটা গরুর চামড়ায় কমপক্ষে ২০০ টাকার লবণ খরচ। যাঁরা লবণ লাগাবেন তাঁদের মজুরি আছে। সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা তাঁরা জানেন না। প্রতিবার বাইরের ব্যবসায়ীরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবার কোনো সাড়াশব্দ নেই!

প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন বগুড়া, পরশুরাম (ফেনী), গাংনী (মেহেরপুর), ময়মনসিংহ, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ও বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’

শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’

সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’

করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।

গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’

দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত