Ajker Patrika

‘চাউল-ডাল ঘরে রেখে শুধু জীবন নিয়ে স্কুলোত এসেছি’

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ (রংপুর)
‘চাউল-ডাল ঘরে রেখে শুধু জীবন নিয়ে স্কুলোত এসেছি’

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের চাম্পাতলী এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭৪টি ঘর এখন পানির নিচে। গত শনি ও রোববারের টানা দুদিনের ভারী বর্ষণে চিকলী নদীর পানি ওই ঘরগুলোর জানালা পর্যন্ত উঠেছে। সেখানকার দেড় শতাধিক মানুষ পাশের দুটি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

এলাকারবাসীরা জানান, তৎকালীন ইউএনও মেহেদী হাসান তিন বছর আগে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে চিকলী নদীর নিম্নাঞ্চলে সরকারি জায়গায় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঘরগুলো নির্মাণ করে দেন। যে জায়গায় ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে, দশ বছর আগে সেটি নদী ছিল। প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করতেই সেখানে মূলত ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

সরেজমিন দেখা গেছে, টানা দুদিনের বৃষ্টিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭৪টি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা ঘরে থাকা কোনো জিনিসপত্র ছাড়াই পাশের দুটি বিদ্যালয় চম্পাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুবেলা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুল হাকিম মিয়া (৭০)। তিনি স্ত্রীসহ তিন সন্তান নিয়ে ওই আশ্রয় প্রকল্পের ঘরে বাস করে আসছেন। তিনি বলেন, ‘বাবা, চাউল ডাল যাবতীয় জিনিস ঘরে রেখে শুধু জীবন নিয়ে স্কুলোত এসেছি।’

আব্দুল হাকিম মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার ঘর করি দিল কিন্তু নদীর জায়গাত কেন? আর কি জায়গা ছিল না?’

ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে বাস করে আরেকজন শান্তি বালা (৪০)। তিনি স্বামীসহ তিন সন্তান নিয়ে সেখানে থাকেন।

শান্তি বালা বলেন, ‘নদীর পানি হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়েছে। আমি বাড়ির কোনো জিনিসপত্র ঘর থেকে বের করতে পারিনি। ঘরে সব রেখে জীবন নিয়ে বেঁচে এসেছি। এখন সেগুলো কি অবস্থা জানি না। মনে হচ্ছে নদীতে ভেসে গেছে।’

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকাশান্তি বালা আরও বলেন, ‘সরকার থাকি প্রথম দিন সন্ধ্যায় মুড়ি পাইছি। এখন এক বেলা ভাত, আরেক বেলা খিচুড়ি পাচ্ছি। এসব খেয়ে সন্তান নিয়ে স্কুলে বেঁচে আছি। 

ওই এলাকার হবিবুর রহমান বলেন, ‘নদীরপাশে প্রকল্প নেওয়ার উদ্দেশ্যই হলো প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করা। তাহলে কেন সেখানে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলো?’

দামোদরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আবু বক্কর সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় আসার আগেই সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নদীর মধ্যে ওই ঘরগুলো নির্মাণ করা ঠিক হয়নি। সেখানকার মানুষকে স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তারা কষ্টে আছেন। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে দুই বেলা খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’

ওই ঘর নির্মাণের সদস্যসচিব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায়। নদীর ওপরে নিচু জায়গায় ঘর নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ওই জায়গায় ঘর নির্মাণের পক্ষে ছিলাম না। কিন্তু তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ঘর নির্মাণ করেছেন।’

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়ায় তিন দিন পাঠদান বন্ধ আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চম্পাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসন যত দিন পর্যন্ত প্রকল্পের বাসিন্দাদের এখানে আশ্রয়ের জন্য রাখবেন, তত দিন বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকবে।

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের আগে ওই স্থানে আবাসন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়। বর্তমান বন্যায় ঘরগুলোর অর্ধেক পানি উঠেছে। আমরা সেখানকার মানুষকে সরিয়ে পাশের চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয় ও চম্পাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল ডাল দিয়েছি। দুবেলা খাবারেরও ব্যবস্থা করেছি, সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎আরমানিটোলায় বহুতল ভবনে আগুন‎, ৪০ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৯
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

‎রাজধানীর আরমানিটোলার বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠতলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে আজ সকালে খুদে বার্তায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়।

‎‎ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়া যায়। খবর পাওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে, অর্থাৎ সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস
বাবুবাজার এলাকায় হাজী টাওয়ার নামের ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ফায়ার সার্ভিস

হাজী টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সদরঘাট ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি, সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে ৫টি এবং সূত্রাপুর ফায়ার স্টেশন থেকে ২টিসহ মোট ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে। পরে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।‎

তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্দোষ আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করার দাবি বিএনপি নেতার

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪১
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল দুপুরে নেছারাবাদে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেছারাবাদে নির্দোষ ও নিরপরাধ আওয়ামী লীগ সমর্থকসহ সাধারণ জনগণকে হয়রানি না করার জন্য পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মো. মইনুল হাসান। গতকাল সোমবার দুপুরে নেছারাবাদ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই দাবি জানান। জেলা প্রশাসকের সফর উপলক্ষে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. আবু সাঈদ। সভাপতিত্ব করেন নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত দত্ত। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নেছারাবাদ-কাউখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহবুবা, নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।

সভায় স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল হাসান বলেন, ‘নেছারাবাদ উপজেলায় যেন কোনো নির্দোষ ও নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা না হয়। গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন বা হয়রানি বন্ধ করতে হবে।’ প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমনও ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছেন।’ পাশাপাশি ধর্মকে অপব্যবহার করে নেছারাবাদে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি যেন না হয়, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে একই সভায় বক্তব্য দেন জামায়াত নেতা মো. গোলাম আযম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অতীতে ডিবি পুলিশের মাধ্যমে নির্দোষ কিছু মানুষকে ধরে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান তিনি।

নেছারাবাদ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হান মাহমুদের সঞ্চালনায় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন, নেছারাবাদ সেনাক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন আল আরাফ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন জয় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফকিরহাটে ভৈরব নদ: খননেও মেলেনি সুফল বাধা ওয়াসার পাইপ

  • ২০২০ সালে নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পাউবো।
  • পাঁচ বছরের মধ্যে নদটির বিভিন্ন অংশে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে।
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ভৈরব নদের মাঝামাঝি স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাগেরহাটের ফকিরহাটে ভৈরব নদের মাঝামাঝি স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদ খননের পরও সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার ফকিরহাট বাজারসংলগ্ন এলাকা দিয়ে নেওয়া খুলনা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে নৌচলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক নাব্যতাসংকট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফকিরহাট বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের একটি সেতুর নিচে ভৈরব নদের মাঝ বরাবর বড় পানির পাইপ রয়েছে। পাইপটি রক্ষায় নদীর ভেতর আড়াআড়িভাবে লোহার খাম্বা বসিয়ে বেড়া দেওয়ায় নদীটিতে বাঁধ তৈরি হয়েছে। ফলে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে নদীগর্ভে দ্রুত পলি জমছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌচলাচল।

স্থানীয়রা বলেন, ফকিরহাট, মোল্লাহাট এবং আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নৌপথ সচল রাখতে ২০২০ সালে ভৈরব নদের সাড়ে ১৭ কিমি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে খননের সুফল কাজে আসেনি। মোল্লাহাটের মধুমতী নদী থেকে খুলনা শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা ওয়াসার পাইপলাইনের কারণে নদীটিতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায় ফকিরহাট এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায়।

ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুকুন্দ পাল বলেন, নৌচলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। নৌপথ চালু থাকলে খুলনা, মোংলা বন্দর, বাগেরহাট ও বরিশালের সঙ্গে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহন সম্ভব হতো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আইরিন বলেন, ওয়াসার পাইপটি ফকিরহাটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরমান সিদ্দিক বলেন, ওই স্থানে পাইপলাইনের মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি চীন থেকে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যন্ত্রপাতি এলে পাইপলাইনটি নৌযান চলাচলের উপযোগী করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিচার পেতে জীবনের ঝুঁকি

মো. হোসাইন আলী কাজী
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৩
বিএডিসির জরাজীর্ণ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএডিসির জরাজীর্ণ ভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আইনের আশ্রয় নিতে এসে ভয় নিয়ে ঢুকতে হচ্ছে আদালতে। অর্ধশত বছরের পুরোনো দুটি পরিত্যক্ত ভবনের মাঝ দিয়েই বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল প্রবেশপথ। জরাজীর্ণ ভবন দুটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবন দুটি দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ ও কৃষি উপকরণ সংরক্ষণের জন্য দুটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করে। প্রায় ১৫ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ভবন দুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেগুলো অপসারণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

পরিত্যক্ত ওই ভবন দুটির মাঝখান দিয়েই আদালতের প্রধান প্রবেশদ্বার নির্মিত। প্রতিদিন বিচারকাজে অংশ নিতে হাজারো মানুষ ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচ দিয়ে আদালতে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবন দুটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এতে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

গত রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবন দুটির বিভিন্ন অংশ থেকে ইট, পাথর ও বিম খসে পড়ছে। দেয়ালজুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ভেতরের অবস্থা এমন যে দিনের বেলায়ও সেখানে ঢুকতে ভয় পান মানুষ। ভবন দুটি ভুতুড়ে অবস্থায় পরিণত হওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।

বিচারপ্রার্থী আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আদালতের সামনে এভাবে দুটি পরিত্যক্ত ভবন থাকা যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা আমাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা প্রয়োজন।’

আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আবুবকর বলেন, আদালতের প্রবেশপথের দুই পাশে পরিত্যক্ত দুটি ভবন পড়ে আছে। ভবন ধসে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।

জেলা বার সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি অপসারণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছে। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত ভবন দুটি অপসারণ করা জরুরি।

জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন দুটি বহু আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এখনো সেগুলো অপসারণ করা হয়নি, তা আমারও বোধগম্য নয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পরিত্যক্ত ভবন দুটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপসারণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

সখীপুরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, দুই স্কুলছাত্রসহ নিহত ৩

‘ছাত্রদল আপনার মতো আম্মারকে ৩০ মিনিটে বের করে দিতে সক্ষম’, ভিডিও ভাইরাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত