Ajker Patrika

পানি কমলেও দুর্ভোগে তিস্তাপারের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৪৪
কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দী পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী পানিবন্দী পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। সবশেষ আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুরের কাউনিয়ায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

অপর দিকে একই সময়ে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে; যা গতকাল রোববার রাতে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

রংপুর

রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে কমছে। নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা তিস্তার তীরবর্তী উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া উপজেলার রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে ২৯ দশমিক ৪৪ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

একই সময়ে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কমে ভাটির দিকে নেমে যাওয়া কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

কাউনিয়া উপজেলা টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভোরের পর থেকে পানি বাড়ছে নদীতে। ইতিমধ্যে তাঁর ইউনিয়নের হরিচরণশর্মা, চরগনাই, হয়বৎখাঁ গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ির বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ক্রমে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। অনেকে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দুপুরের দিকে তীরবর্তী তিনটি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

চরগনাই গ্রামের আব্দুল বাতেন বলেন, ‘নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের খেত। পানিবন্দী হওয়ার আতঙ্কে রয়েছি।’ তিনিসহ অনেকেই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

চর হয়বৎখাঁ গ্রামের সোবহান আলী বলেন, ‘গভীর রাত থেকে পানি যে হারে বাড়তেছে, তাতে পানি বাড়ি ঘরে ঢুকে গেলে গবাদিপশু আর বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ে যাব। তাই সকালের দিকে গবাদিপশু আর বাচ্চাদের উঁচু স্থানে আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে দিয়েছি।’

জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মহিদুল হক বলেন, ‘আজ তিস্তা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। আমরা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তালিকা করে প্লাবিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

লালমনিরহাট

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে টানা ১২ ঘণ্টা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে তিস্তাপাড়ের লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়েছে পড়ে। যার মুক্তি মেলে টানা ২৪ ঘণ্টা পরে। পানি কমে গেলেও বেড়ে যায় দুর্ভোগ।

বন্যার পানির চাপে বেশ কয়েকটি সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। হাতীবান্ধার দোয়ানী গড্ডিমারী ও পাটগ্রামের দহগ্রাম সড়ক ভেঙে যায়। স্থানীয় জনতা ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বালুর বস্তা ফেলে সড়কগুলো রক্ষার প্রাণপণ চেষ্টা করেন।

গেল ২৪ ঘণ্টায় পানিবন্দী পরিবারগুলো সীমাহীন কষ্টে পড়ে। নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষের। বিশেষ করে, শিশু, বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বড্ড বিপাকে পড়েন বন্যাকবলিতরা। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। গবাদিপশু-পাখি নিয়ে বেশ বিপদে পড়েছেন খামারিরা। কেউ কেউ এসব পশুকে পাশে সড়কে বা উঁচু এলাকায় তাঁবুর নিচে রেখেছেন। উঁচু স্থানে মাচা বানিয়ে কেউ কেউ সারা দিনের রান্না একবারে সেরে নিয়েছেন। টিউবয়েল ও টয়লেট ডুবে যাওয়ায় শৌচকাজে বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছেন এসব এলাকার নারীরা। ডুবে গেছে মৎস্য খামার, মধ্যবয়সী আমন ধানসহ নানান জাতের সবজির খেত।

উজানের ঢল কমে যাওয়ায় আজ পানি বিপৎসীমার নিচে নামলে মুক্তি পেতে থাকে পানিবন্দী পরিবারগুলো। বন্যাদুর্গত এলাকার প্রতিটি বাড়িঘরে ডুকে পড়েছে আবর্জনা, কচরিপানা আর পোকামাকড়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক পরিবারের আসবাবপত্র ভিজে গেছে বন্যার পানিতে।

গৃহবধূ সাহানা বেগম বলেন, ‘ঘরের পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু মেরামত না করে ঘরের ভেতরে থাকা দুষ্কর। আবর্জনা, কচুরিপানা ও কাদায় একাকার। পোকামাকড়ের আতঙ্কে রয়েছি। আজ পানি না থাকলেও নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে। সন্তানদের নিয়ে গতকাল রাত বসে থেকে কাটিয়েছি। আমাদের কষ্টের শেষ নেই। আমরা তিস্তা নদীর স্থায়ী বাঁধ চাই।’

কৃষক খলিল মিয়া বলেন, ‘মধ্যবয়সী আমন ধানের খেতে টানা প্রায় ৩০ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে ডুবে আছে। জানি না খেতের কী হলো। আবাদ নষ্ট হলে তো না খেয়ে মরতে হবে।’

মৎস্যচাষি ডলার বলেন, ‘পুকুরের চারদিকে নেট জাল দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারিনি। বন্যার স্রোতে সব ভেসে গেছে। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. শাইখুল আরেফিন বলেন, মধ্যবয়সী আমন খেতে দুই-তিন দিন ডুবে থাকলেও তেমন ক্ষতি হবে না। অস্থায়ী বন্যা আমনে ক্ষতি নয়, বরং উপকার। তবে পানি দ্রুত নেমে না গেলে ক্ষতি হতে পারে। পানি কমে গেছে, এখন আমনে তেমন ক্ষতি হবে না। পানি কমে গেলে খেতে জমে থাকা কচুরিপানাসহ আবর্জনা সরিয়ে দিতে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, রাতে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বন্যার সৃষ্টি হলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্য কমে গেছে। ফলে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘বন্যাকবলিত ব্যক্তিদের জন্য জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ঢেউটিন মজুত রয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করে তা বিতরণ করব।’

পাটগ্রামের নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর সেতু ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাটগ্রামের নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর সেতু ভেঙে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাটগ্রাম

উজানে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়। গতকাল রোববার বেলা ২টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায় এবং তিস্তা নদীরক্ষা বাঁধ না থাকায় পানি হু হু করে দহগ্রামে ঢুকে বন্যা দেখা দেয়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।

এ সময় পানির তোড়ে আঞ্চলিক পাকা রাস্তা প্রায় ৭ কিলোমিটার, একটি সেতু ও দুটি কালভার্ট ভেঙে যায়। প্রায় ১০ হেক্টর আমন ধান, বাদামসহ অন্যান্য সবজি খেত পানিতে তলিয়ে যায় এবং চাষাবাদের জমি ভেঙে আবাদ ক্ষতির মুখে পড়েছে।

আজ বিকেলে দহগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তার পানিতে এই ইউনিয়নের ১, ৪, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিস্তা চরাঞ্চলসহ কলোনিপাড়া, মুন্সিপাড়া, ক্লিনিকপাড়া, কাদেরের চর, মহিমপাড়া, চরপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া, গুচ্ছগ্রাম, বড়বাড়ি, নতুনহাট, হাঁড়িপাড়া এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। পানির তীব্র স্রোতে কলোনিপাড়া, মহিমপাড়া ও স্বাধীন বাংলা চত্বর এলাকার পাকা সড়ক ভেঙে যায়।

দহগ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৃষ্টিয়ারপাড় এলাকার সাকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর দুই দিকের সংযোগ সড়ক, কলোনিপাড়ার দুটি কালভার্ট এবং ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্গেরবাড়ী হতে নতুনহাট এলাকায় সাকোয়া নদীর ওপর নির্মিত সেতু ভেঙে গেছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে একাকার হওয়ায় এসব এলাকার প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষের চলাফেরায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব এলাকার পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

দহগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কলোনিপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘প্রতিবছর ভারত পানি ছেড়ে দেয়, এতে আমাদের এই রাস্তা ভেঙে যায়। জমি-জায়গা, রাস্তাঘাট নষ্ট হয়। তিস্তা মহাপরিকল্পনা চালু করলে আমাদের উপকার হবে, না হলে আমাদের ক্ষতি হতেই থাকবে।’

এ বিষয়ে ইউএনও উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু দেখেছি। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সংস্কার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, জনদুর্ভোগ কমে যাবে।’

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারী

নীলফামারীতে তিস্তার রুদ্রমূর্তি ৯ ঘণ্টা পর শান্ত হয়েছে। আজ বেলা ৩টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ ও সন্ধ্যা ৬টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এর আগে গতকাল রাত ১১টায় ওই পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাত ১২টার পর কমতে শুরু করলে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে এসব গ্রামের অন্তত ১০ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আজ পানি কমায় স্বস্তি ফেরে এসব মানুষের মধ্যে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘ওই রাতে এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আজ পানি নেমে গেলেও ইউনিয়নের ১ হাজার ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া চরের খেতে থাকা আধা পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়নের খোকার চরে তিন স্থানে এবং যৌথ বাঁধের কাছে তিন স্থানে সড়ক ভেঙে গেছে।’

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে প্রবল বেগে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। এতে ইউনিয়নের সাড়ে আট শ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। সকালে পানি নেমে গেলেও পরিবারগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে। পানির সঙ্গে আসা বালু ও পলি পড়ে এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

একই উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামের স্কুলশিক্ষক বিপুল চন্দ্র রায় বলেন, রাতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের মানুষের। এ সময় তলিয়ে যায় এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকার আমন খেত। আজ পানি কমায় এসব খেত জেগে উঠলেও বানের পানিতে ভেসে আসা বালি ও পলি পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, তিস্তার ক্ষণিকের ওই বন্যায় উপজেলার ৬০ হেক্টর আমন খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়। দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গতকাল রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর পর থেকে পানি কমতে শুরু করলে আজ সকাল ৬টায় ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টায় আরও কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার, বেলা ৩টায় ২০ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলা কালিগঞ্জ নামের স্থানে জিরো পয়েন্টে নদীর ডান তীর বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। সেখানে বাঁশের পাইলিং ও বালির বস্তা ফেলে রাতেই বাঁধটি রক্ষা করতে সক্ষম হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। গতকাল রাত ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কমতে শুরু করে। আজ সকাল থেকে পানি কমে সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট (৪৪) খুলে রাখা হয়েছে।

অমিতাভ চৌধুরী আরও বলেন, তিস্তার জিরো পয়েন্টের কাছে কালিগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীর প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে বাঁশের পাইলিং ও বালুর বস্তা দিয়ে সেটি ঠেকানো গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত