Ajker Patrika

ব্যবসায়ীর ওপর হামলা-লুটপাট, এক মাসেও মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

রংপুর ও বদরগঞ্জ প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের বদরগঞ্জে এক ঢেউটিন ব্যবসায়ীর দোকানে ঢুকে হামলা, ভাঙচুর ও কুপিয়ে আহত করে টাকা লুটের ঘটনার এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ থানায় মামলা নেয়নি। উল্টে ওই ব্যবসায়ীকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমন অভিযোগ তুলে আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ব্যবসায়ী। তাঁর নাম জাহিদুল ইসলাম। তিনি বদরগঞ্জ পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ঢেউটিনের ব্যবসা করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল অভিযোগ করেন, তিনি শহীদ মিনার এলাকায় ইশতিয়াক আহমেদ বাবু নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ১৮ মে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে একটি দোকান ও তিনটি গোডাউন ঘর ভাড়া নেন। ভাড়ার মেয়াদ আছে ২০২৮ সাল পর্যন্ত। ওই সময় থেকে দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে তিনি টিনের ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছিলেন। এরই মধ্যে দোকান ভাড়ার জামানত বাবদ ইশতিয়াক দুই দফায় আরও ১৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা নেন। এরপর জামানতের টাকা ফেরত না দিয়ে ইশতিয়াক ও তাঁর ভগ্নিপতি মনিরুজ্জামান ওই ব্যবসায়ীকে দোকান ঘর ছেড়ে দিতে বলেন।

জাহিদুল বলেন, ‘৩১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা দোকানের জামানত দেওয়া আছে। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে দোকানের চুক্তির মেয়াদ আছে ২০২৮ পর্যন্ত। আমার জামানতের টাকা ফেরত না দিয়ে ইশতিয়াক আমাকে দোকান ছাড়তে চাপ দেন। এ নিয়ে কয়েকবার সালিস বৈঠকও হয়। পরে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার লোক পাঠিয়ে আমাকে দোকান ও গোডাউন ঘর ছাড়তে বলেন। তাঁর কথা না শোনায় গত ২ এপ্রিল দুপুরে ইশতিয়াক ও মনিরুজ্জামান কিছু লোকজন নিয়ে দোকানে এসে সন্ধ্যার মধ্যে দোকান ছাড়ার জন্য আমাকে হুমকি দিয়ে যান। বিষয়টি আমি বদরগঞ্জ থানার ওসিকে অবহিত করি। নিজের ও দোকানের নিরাপত্তার কথা ভেবে এদিন সন্ধ্যার পরে থানায় গেলে সেখান থেকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমার সঙ্গে দোকানে আসেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির আরেক বহিষ্কৃত নেতা হুমায়ুন কবীরসহ সাঙ্গপাঙ্গদের লাঠি, ছোরা, বল্লমসহ আমার টিনের দোকানে পাঠিয়ে দেন। তাঁদের সঙ্গে দোকানমালিক ইশতিয়াক আহম্মেদ বাবু ও তাঁর শ্যালক মনিরুজ্জামানও ছিলেন। এ সময় তাঁরা জোরপূর্বক আমার দোকানে ঢুকে পুলিশের উপস্থিতিতেই আমাকেসহ দোকানের কর্মচারীদের এলোপাতাড়ি মারপিট করেন। একপর্যায়ে একজন সন্ত্রাসী আমার ডান পায়ের ঊরুতে ছুরিকাঘাত করেন। এতে আমার পা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পরে সন্ত্রাসীরা আমার দোকানে ভাঙচুরসহ ক্যাশ বাক্সে থাকা সারা দিনে টিন বিক্রির প্রায় চার লাখ টাকা লুটিয়ে নেন। এ সময় আমার ও কর্মচারীদের আর্তচিৎকারে আশপাশে থাকা লোকজন ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ঘটনার সময়ে উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যরা তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বদরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।’

জাহিদুল অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা ওই সময়ে আকস্মিকভাবে পুলিশের উপস্থিতিতে আমার দোকানে হামলা, মারপিট ও লুটপাট করায় আমি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সারোয়ার জাহান মানিক ও আরেক ব্যবসায়ী কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিককে জানাই। পরদিন ৩ এপ্রিল তাঁদের পরামর্শে আমি হামলা ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিই। কিন্তু পুলিশ আমার এজাহার থানায় মামলা আকারে গ্রহণ করেনি। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী নেতারা গত ৫ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিলে মোহাম্মদ আলী সরকারের নির্দেশে তাঁর বাসা থেকে ইশতিয়াক বাবু, তাঁর ভগ্নিপতি মনিরুজ্জামান ও হুমায়ুন কবীর ওরফে ডিশ মানিক এবং লাভলু মিয়া প্রকাশ্যে হাতে লাঠি, ছোরা, বল্লমসহ সন্ত্রাসী বাহিনী সঙ্গে নিয়ে এসে প্রতিবাদ সমাবেশের ব্যানার, ফেস্টুন, টেবিল, চেয়ার এবং মাইক ভেঙে চুরমার করেন। এ সময় তাঁরা মানববন্ধন করতে আসা অনেক ব্যবসায়ীকে মারপিট করে আহত করেন। পরে সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে থাকা বিএনপি নেতা কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের বদরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থিত কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন এবং তাঁকে ধাওয়া করেন। পরে লাভলু আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকেলে মারা যান।’

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘বদরগঞ্জ থানা-পুলিশ যদি ৩ এপ্রিল আমার ওপর হামলা ও দোকান ভাঙচুরের মামলা নিত, তাহলে ৫ এপ্রিল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটত না। এর দায় থানা-পুলিশ ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার এড়াতে পারেন না।’ তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তাঁর মামলা না নিলেও ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় তাঁর নামে দুটি মামলা হয়েছে।

তবে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘ওই দোকানে হামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। লাভলু বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁকে ৫ এপ্রিল প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এটা কে করেছে বদরগঞ্জবাসী তা দেখেছে।’

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন রিসিভ করেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল আমিন। তিনি বলেন, ‘ওসি বাইরে আছেন। ওই ব্যবসায়ীর দোকানে হামলার ঘটনায় থানায় কেন মামলা নেওয়া হয়নি তা ওসি বলতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত