Ajker Patrika

নওগাঁর মান্দা

বিলের মাঝে ৩ কোটির সেতু

জিল্লুর রহমান, মান্দা (নওগাঁ)
সেতু নির্মাণ করা হলেও নেই সংযোগ সড়ক। সম্প্রতি নওগাঁর মান্দা উপজেলার শংকরপুর গ্রামের বিলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেতু নির্মাণ করা হলেও নেই সংযোগ সড়ক। সম্প্রতি নওগাঁর মান্দা উপজেলার শংকরপুর গ্রামের বিলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বর্ষা মৌসুমে বিলে থই থই পানি। তখন পাড়ি দিতে হয় নৌকায়। এরপর হেঁটে কাদা-পানি মাড়িয়ে চলাচল কিছুদিন। আর খরা মৌসুমে বিলের মাঝখানে জেগে ওঠা ভাঙাচোরা রাস্তা। এভাবেই দুর্ভোগ সঙ্গে নিয়ে বছরের পর বছর চলাচল করছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিলের ভেতর দিয়ে টেকসই রাস্তার পাশাপাশি একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এলজিইডি দপ্তর রাস্তা ছাড়াই খামখেয়ালিভাবে বিলের মাঝখানে একটি সেতু নির্মাণ করে। কিন্তু সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রত্যন্ত এ জনপদে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বলে দাবি তাঁদের।

উপজেলা এলজিইডি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৬ টাকা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফা দর বাড়িয়ে কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে।

সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার শংকরপুর গ্রামের বিলে গিয়ে দেখা গেছে, বিলের ভেতর দিয়ে আধা ভাঙা রাস্তায় কেউ হেঁটে, কেউ বাইসাইকেলে, কেউবা মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করছেন। অনেকে যাতায়াত করছেন চার্জার ভ্যানে। যাতায়াতের সুবিধার্থে স্থানীয় লোকজন বিলের রাস্তায় মাটি কেটে কিছুটা উপযোগী করে তুলেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৫-৬ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন এ রাস্তা দিয়ে। দুর্ভোগ সঙ্গী করে যেতে হয় উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড়চৌবাড়িয়া হাটে। এ ছাড়া নওগাঁর নিয়ামতপুর ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার সঙ্গে স্বল্প সময় ও সহজে এ জনপদের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বিলের ভেতরের এই রাস্তা।

পলাশবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ কুমার প্রামাণিক বলেন, বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করে শংকরপুর বিলের মাঝখানে সেতু তৈরি করা হয়েছে। শুরুতে মনে হয়েছিল সেতুর পাশাপাশি রাস্তা নির্মাণ করা হবে। তাহলে আর দুর্ভোগ থাকবে না। এখন দেখছি ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। রাস্তা না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না এটি।

রুয়াই গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর হোসেন বলেন, শংকরপুর বিলের মাঝখানের এ রাস্তা দিয়ে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শংকরপুর, পলাশবাড়ী, জয়পুর, ভাতহন্ডা, জ্যোতিষমাইল, রুয়াইসহ ১৫ গ্রামের ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন।

স্থানীয় শংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা এনতাজ আলী প্রামাণিক বলেন, চৌবাড়িয়া এই অঞ্চলের একটি প্রসিদ্ধ হাট। শত দুর্ভোগ সহ্য করে সপ্তাহের শুক্রবার গবাদিপশু বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে হয় চৌবাড়িয়া হাটে।

মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, সেতুটির নির্মাণ শেষ হলেও পুরো কাজ এখনো শেষ হয়নি। সংযোগ রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি সংগ্রহের কাজ চলছে। মাটি পেলেই রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার পথে দিল্লির বাধা চীনের উত্থান: ভারতীয় সেনাপ্রধান

আসামির জবানবন্দি: মাগুরার শিশুটির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধর্ষণ করা হয়

ইউএনওর ফেসবুক পেজ হ্যাক করে পোস্ট, ‘করলাম না এই প্রশাসনের চাকরি’

রেমিট্যান্সের নামে ৭৩০ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছেন একজন, কার কথা বললেন এনবিআর চেয়ারম্যান

অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে খাওয়ার খরচ চায় পুলিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত