Ajker Patrika

রাবির ভবনের ছাদ ধস নিয়ে ফের আলোচনায় রূপপুরের বালিশকাণ্ডের ঠিকাদার 

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২: ৩৩
রাবির ভবনের ছাদ ধস নিয়ে ফের আলোচনায় রূপপুরের বালিশকাণ্ডের ঠিকাদার 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন আবাসিক হলের ছাদ ধসে শ্রমিক আহতের ঘটনায় আবারও আলোচনায় এসেছে রূপপুরের বালিশ কাণ্ডের আলোচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। নির্মাণকাজ করার সময় শ্রমিকের জীবন বিপন্ন করায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অস্বাভাবিক মূল্যে পণ্য সরবরাহ করে আলোচনায় এসেছিল এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর প্রতিষ্ঠানটি এখন রাজশাহীতে ঘাঁটি গেড়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রুয়েট) কয়েকটি বড় বড় প্রকল্পের কাজ পেয়েছে বহুল বিতর্কিত এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কোনোকিছুর ধার না ধেরে প্রতিষ্ঠানটি নিম্নমানের কাজ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যে। 

রাবির প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, ৫১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় ১০ তলা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হল এবং ২০ তলা বিজ্ঞান ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছে মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন। হল নির্মাণের ব্যয় ৭০ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর বিজ্ঞান ভবনের ব্যয় ১৭১ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ করতে না পেরে ইতিমধ্যে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। 

গতকাল মঙ্গলবার শহীদ কামারুজ্জামান ভবনের সামনের অংশের তৃতীয় তলায় কাজ চলছিল। হঠাৎ শাটারিংসহ ছাদটি ধসে পড়ে। এতে পাঁচ শ্রমিক আহত হন। আগের দিন সোমবার এই ছাদের ঢালাই দেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর অনুপস্থিতিতেই কাজ চলছিল সাইটে। 

দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানিয়েছেন, তিনি রাজশাহীর বাইরে গিয়েছিলেন বলে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। তিনি ফেরার পর ঢালাই হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন। তারপরও তার অনুপস্থিতিতে কাজ চলছিল। 

ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাজ করে শ্রমিকের জীবন বিপন্ন করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের উপমহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম। 

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরই একজন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি দেখে এসেছেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমি নিজে দেখতে যাব। তারপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের অপরাধ বিবেচনা করে মামলা পর্যন্ত করতে পারি।’ 

এদিকে ছাদ ধসে পড়ার পর মঙ্গলবার রাতে জরুরি সভায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভা শেষে রাতে জনসংযোগ দপ্তর জানিয়েছে, ‘ছাদ ধসে পড়ার কারণ নির্ধারণ ও নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান আবাসিক হলের যেসব কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। 

তদন্ত কমিটিতে রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকারকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। অন্য দুইজন সদস্য হলেন-গণপূর্ত বিভাগ-১ রাজশাহীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রাবির প্রকৌশল বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইমরুল হাসান। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

এ ছাড়াও দুর্ঘটনা ঘটনা নিয়ে আজ বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার মধ্যে রাবির প্রধান প্রকৌশলী, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। 

জনসংযোগ দপ্তর আরও জানায়, আহত শ্রমিকদের খোরপোষসহ চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ কোনো কিশোর শ্রমিককে ভবন নির্মাণের কাজে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও ছিলেন। 

নির্দেশনা অনুযায়ী দুর্ঘটনার বিষয়ে উপউপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার প্রতিবেদন আমি দিয়েছি। নির্মাণপ্রতিষ্ঠান এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী প্রতিবেদন দিয়েছেন কি না তা জানি না।’ প্রতিবেদনে কি উল্লেখ করা হয়েছে সে বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি প্রধান প্রকৌশলী। 

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আজকেই আমাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা চলছে। আমি সভায় আছি। রিপোর্ট আসার কথা। কিন্তু এসেছে কি না তা আমি জানি না। রিপোর্ট এলে কি ধরনের তথ্য এসেছে সেটাও বলতে পারব না।’ 

রাবিতে শুরু থেকেই নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করেই কাজ করে যাচ্ছে বিতর্কিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন। এই প্রতিষ্ঠানটি যে ২০ তলা ভবন নির্মাণের কাজ করছে তার মালামাল পরিবহনের ট্রাকের নিচে ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি চাপা পড়েন মোটরসাইকেল আরোহী দুই শিক্ষার্থী। 

এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবীব। আহত হন মাহমুদ হাবীবের সহপাঠী রায়হান প্রামাণিক। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে থাকা পাঁচটি ট্রাকে আগুন দেন। এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসে রাতে ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। 

পরে এই নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইউনুস আলী নামের এক শ্রমিক মারা যান। গত বছরের ২৬ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। এর আগে নির্মাণাধীন ২০ তলা একাডেমিক ভবনে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সাগর নামে আরেক শ্রমিক মারা যান। ২০২২ সালের ৩১ মে এ ঘটনা ঘটে। 

 ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের পরিচালক খন্দকার শাহরীয়ার বলেন, ‘এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কাজের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ঘাটতি আছে। এ জন্য ট্রাকচাপায় আমাদের এক শিক্ষার্থী মারা গেল। আরেকজন গুরুতর আহত হলো। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনা আছে। এবার কয়েকজন শ্রমিক মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এল। মৃতদের ব্যাপারে তার পরিবারকে আমরা ক্ষতিপূরণ নিয়ে দিয়েছি, কিন্তু টাকা দিয়ে তো জীবনের মূল্য দেওয়া যায় না। আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আগেও দুইবার সতর্ক করেছি। তারপরও তারা সতর্ক হয়নি বলেই আবার দুর্ঘটনা ঘটল।’ 

দায় প্রশাসনেরও: 
ভবনের ছাদ ধস ও শ্রমিক হতাহতের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের, এ অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত বাম সংগঠন। আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সব ক্ষয়ক্ষতির দায় নিশ্চিতভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের পরিবারের জন্যে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করে প্রদান করতে হবে। ভবন ধস ও ধারাবাহিক ছাত্র-শ্রমিক হতাহতের ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন’ এর নামে মামলা এবং শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’ 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভবন ধস ও শ্রমিক হতাহতের ঘটনা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় নয়। একই ভবনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিক ইউনুস আলী, আরেক নির্মাণাধীন ২০ তলা অ্যাকাডেমিক ভবনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিক সাগর এবং নির্মাণসামগ্রী বহনকারী ট্রাকের চাপায় শিক্ষার্থী হিমেল ‘হত্যাকাণ্ডের মতো’ ধারাবাহিক ঘটনা ভবিষ্যতে আরও বড় ক্ষয়ক্ষতির আভাসই দিয়ে আসছিল। অথচ লাগাতার ‘হত্যাকাণ্ডের’ পরেও প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্বে অবহেলা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ভবনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বেপরোয়া দুর্নীতি, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে একটি ‘হত্যা কাঠামো’ সৃষ্টি হয়েছে।’ 

যে ভবনের ছাদ ধসেছে তা ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভবনটির ধসে পড়া অংশে একটি পিলার হেলে গেছে। এই ঘটনায় ভবনের বাকি কাঠামোর স্থায়িত্ব, রডসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর উপযুক্ততা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। অনিরাপদ কাঠামো ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ দুর্ঘটনা বয়ে আনবে। তাই নতুন করে কাজ শুরু করার আগে অবিলম্বে নিরপেক্ষ প্রকৌশল কর্তৃপক্ষ দিয়ে ভবনটির মান যাচাই করতে হবে। এই পরিবেশে শিক্ষার্থীরাও যে নিরাপদ নয়, হিমেল হত্যাকাণ্ড তার প্রমাণ। 

এমন অনিরাপদ পরিবেশ দীর্ঘায়িত হতে থাকলে আরও ভয়াবহ হতাহতের মুখোমুখি হবো আমরা। তাই নিজেদের এবং সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’ 

এই যৌথ বিবৃতি দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি রায়হান আলী, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক তারেক আশরাফ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক বাবলু চাকমা ও ছাত্র গণমঞ্চের সমন্বয়ক নাসিম সরকার। 

কাজে এ ধরনের গাফিলতির বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হায়াত মাহমুদকে মঙ্গলবার ও বুধবার কয়েকদফা ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তাই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত