Ajker Patrika

আগাম বোরো ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত চাষিরা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
আগাম বোরো ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত চাষিরা

জয়পুরহাটে চলছে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ। জয়পুরহাট সদর উপজেলাসহ পাঁচবিবি, কালাই ক্ষেতলাল এবং আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে শ্রমিকেরা এখন আগাম জাতের বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলায় এবার ৬৯ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ হাজার ৪২৫ হেক্টর। 

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কায়ছার ইকবাল জানান, সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির প্রভাবে জয়পুরহাট সদর উপজেলার প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর বোরো ধান খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ফসল উৎপাদনের ক্ষতি ধরা হয়েছে ৯০০ মেট্রিক টন। আর এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত কী পরিমাণ আগাম জাতের বোরো ধান কাটা-মাড়াই করা হয়েছে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আগামী দুদিন দিনের মধ্যেই তা নির্ধারণ করা হবে। তবে গত কয়েক দিন আগের কালবৈশাখী ঝড়বৃষ্টির প্রভাবে পুরো জেলার প্রায় ২ হাজার ১৩ হেক্টর বোরো ধান খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ফসল উৎপাদনের ক্ষতি ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৬৪ মেট্রিক টন। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা।

সরেজমিনে জেলার ধান চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি কালবৈশাখীর বয়ে যাওয়া ঝড়বৃষ্টির কারণে তাঁদের পাকা এবং আধা পাকা ধানের গাছ জমিতে নুয়ে পড়েছে। কিছু কিছু নিচু জমিতে এখনো পানি জমে আছে। তাই ধান কেটে নিতে হচ্ছে চড়া দামে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে-প্রতি বিঘা ধান কাটা যেত ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এখন সেই ধান কাটতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। এখন প্রতি বিঘা ধান কেটে নিতে হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। 

এ বিষয়ে শ্রমিকেরা জানান, যে সময়ে আগে তাঁরা ৩ বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করতে পারতেন। এখন সে সময়ে দেড় বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করতে পারছেন। 

জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমরগ্রামের কৃষক কাউছার রহমান জানান, তাঁর ৮ বিঘা জমির মধ্যে ৫ বিঘা জমিই বর্গা রেখেছেন। ৩ বিঘা জমিতে আগাম জাতের বোরো ধান জিরাশাইল চাষ করেছেন। এক সপ্তাহ আগে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর কারণে পাকা ধানগাছ জমিতে নুয়ে পড়েছে। ৫ হাজার টাকা বিঘা দরে সে ধানগুলো কেটে দিচ্ছেন শ্রমিকেরা।

নীলফামারী জেলার ডোমার থেকে আসা শ্রমিক দলের সর্দার মোসলেম উদ্দিন জানান, জমির ধান নুয়ে পড়ায় এবং জমিতে পানি জমে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে ধান কাটা যাচ্ছে না। তাই ৫ হাজার টাকা বিঘা দরে ধান কাটতে হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচি ঘোষণা রাকসুর জিএস আম্মারের

রাবি প্রতিনিধি  
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে সালাহউদ্দিন আম্মার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেন।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টায় রাকসু ভবনের সামনে থেকে কর্মসূচি শুরু হবে। আওয়ামীপন্থী ছয়জন ডিনের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। রাবি প্রশাসন দেড় বছর সময় পেয়েছে, এখন সময় বিপ্লবীদের।’ তিনি লেখেন, ‘শহীদ হাদির রক্ত আরো একবার শেখালো লীগের প্রতি নমনীয়তা আমাদের জন্য কতটা বিভৎস হতে পারে।’ আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সকাল ১০টায় রাকসু ভবনের সামনে উপস্থিত থাকার জন্যও অনুরোধ করেন তিনি

এ ছাড়া ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন রাকসু জিএস। অভিযুক্তদের নাম, কর্মস্থল, বর্তমান পদবি, ঠিকানা এবং ফ্যাসিজমের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণাদি সরাসরি তার ফেসবুক ইনবক্স অথবা নির্দিষ্ট একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠানোর অনুরোধ জানান তিনি।

আম্মারের দেওয়া ফেসবুক পোস্ট। ছবি: সংগৃহীত
আম্মারের দেওয়া ফেসবুক পোস্ট। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক পোস্টে তিনি আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগে এক কর্মদিবসের আলটিমেটাম দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাসন রাজার ১৭১তম জন্মদিন আজ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩২
হাসন রাজা। ফাইল ছবি
হাসন রাজা। ফাইল ছবি

মরমি কবি হাসন রাজার ১৭১তম জন্মদিন আজ। আধ্যাত্মিক এই সাধকের জন্ম ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের সন্নিকটে সুরমা নদীর তীরবর্তী লক্ষণছিরি (লক্ষণশ্রী) পরগনার তেঘরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রতাপশালী জমিদার দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ও হুরমত জাহানের দ্বিতীয় ছেলে তিনি। জন্মের পর তাঁর নাম দেওয়া হয়েছিল অহিদুর রাজা। এক ফারসি ভাষাভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শে তাঁর নাম হয় হাসন রাজা। দেখতে সুদর্শন হাসন জমিদার পরিবারের সন্তান হওয়ায় অল্প বয়সেই জমিদারির দায়িত্ব নেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষণশ্রীসহ সিলেটের একাংশজুড়ে তাঁর জমিদারি ছিল।

হাসন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ না করলেও ছিলেন স্বশিক্ষিত। সরল ভাষায় সহস্রাধিক মরমি গান রচনা করেছেন হাসন। তিনি গানের মাধ্যমে অগণিত মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন।

তাঁর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে আছে- ‘লোকে বলে বলেরে, ঘর বাড়ি ভালা নাই আমার’; ‘নেশা লাগিলরে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিলরে’; ‘গুড্ডি উড়াইলো মোরে, মৌলার হাতের ডুরি’; ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে, আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’; ‘আমি যাইমুরে যাইমু, আল্লার সঙ্গে।’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও হাসন রাজা রচিত গানের প্রশংসা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধিকবার তাঁর বক্তব্যে হাসন রাজার গানের অংশবিশেষ উদ্ধৃত করে হাসনের দর্শনচিন্তার কথা তুলে ধরেন। হাসন রাজার সৃষ্টিকর্ম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সমাদৃত।

বহু গানের রচয়িতা আধ্যাত্মিক সাধক হাসন রাজা ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। হাসনের জন্মভিটায় প্রতিষ্ঠিত ‘হাসন রাজা মিউজিয়াম’ একটি পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন তাঁর ভক্ত ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাটের চিতলমারী: অবৈধ বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট

  • মধুমতী নদী থেকে বালু উত্তোলন
  • ঝুঁকিতে চিতলমারীর একাধিক গ্রাম
  • অভিযোগ স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে
বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি
ড্রেজার মেশিন দিয়ে মধুমতী নদী থেকে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে হাজার হাজার ফুট বালু। প্রতিকার চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড্রেজার মেশিন দিয়ে মধুমতী নদী থেকে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে হাজার হাজার ফুট বালু। প্রতিকার চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের চিতলমারীতে মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বিপুল বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট বালু উত্তোলন করায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। সংশ্লিষ্ট হওয়ায় বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের দপ্তরেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

বালুমহাল ইজারায় একটি নির্দিষ্ট সীমানা বা এলাকা নির্ধারণ করা থাকে। নাজিরপুর উপজেলার বালুমহালের বা বালু উত্তোলনের সীমানা ২৪ দশমিক ২১ একর। কিন্তু চিতলমারীর অতুলনগর, কুনিয়া ও শৈলদাহ গ্রামসংলগ্ন মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এই কাজে যুক্ত পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শৈলদাহ এলাকার প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন কলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. কামাল শেখ ওরফে কামাল মেম্বার। মূল ইজারাদারের কাছ থেকে কয়েকজনকে নিয়ে এই কাজ নিয়েছেন তিনি। তবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমানা থেকে বালু উত্তোলন করছি।’ যাঁর নামে সরকারি ইজারা আনা হয়েছে, তাঁর নাম অবশ্য জানাতে পারেননি কামাল মেম্বার। তিনি দাবি করেন, ওই ব্যক্তির নাম তাঁর মনে নেই।

চিতলমারীর শৈলদাহ এলাকার মো. ফরিদ শেখ, বিপুল বৈদ্য, আল-আমিন খান ও তুহিন শেখ জানান, কলাতলা ইউনিয়নের মধুমতী নদীর অতুলনগর, কুনিয়া ও শৈলদাহ এলাকায় ৩-৪টি বলগেট ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রলার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ফসলি জমি, গাছপালা ও রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে উপজেলার মানচিত্র। হুমকির মুখে পড়েছে কয়েক শ একর জমি ও বসতবাড়ি। এ ছাড়া প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাটিভাঙ্গা সেতুও এখন ঝুঁকির মুখে।

পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন চিতলমারী উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফজলুল হক বলেন, এভাবে বালু উত্তোলনে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলার মানচিত্র ছোট হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট একাধিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

চিতলমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘পিরোজপুর থেকে ওরা বালুমহাল ইজারা নিয়েছে। রাতের আঁধারে এসে চিতলমারীর সীমানা থেকে বালু উত্তোলন করে। আমরা বেশ কয়েকবার অভিযানে গিয়েছি। কিন্তু অভিযানের খবর শুনে ওরা আগে থেকেই চলে যায়। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে, ওরা যাতে সীমানায় না আসে সে জন্য কাজ করছি। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন “জিরো টলারেন্স” নীতিতে কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পটুয়াখালীর দুমকী: পানির স্তর নেমে গেছে তীব্র সংকটে মানুষ

  • উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটির বাসিন্দারা চরম পানিসংকটে ভুগছে
  • প্রায় দুই বছর ধরে এ সংকট দেখা দিয়েছে; গভীর নলকূপে পানি মিলছে না
দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫২
পটুয়াখালীর দুমকী: পানির স্তর নেমে গেছে তীব্র সংকটে মানুষ

পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটির বাসিন্দারা চরম পানিসংকটে ভুগছে। তারা জানিয়েছে, প্রায় দুই বছর ধরে এ সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো মৌসুমে গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করতে পারছে না এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের আলগীসহ কয়েকটি গ্রাম, লেবুখালী ইউনিয়নের লেবুখালীসহ উত্তর এলাকা, আংগারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম আংগারিয়াসহ পশ্চিম এলাকা, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের দুমকী, শ্রীরামপুর, উত্তর দুমকী এলাকায় দুই বছর ধরে শুকনো মৌসুমে হস্তচালিত গভীর নলকূপে পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এসব এলাকার ভুক্তভোগী লোকজন জানায়, এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযোগ জানালে কর্তৃপক্ষের লোকজন গিয়ে দেখে জানিয়েছেন পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে গভীর নলকূপে পানি উঠছে না।

এ বিষয়ে কথা হয় শাহজাহান খান নামের এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে। শাহজাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুকনো মৌসুমে এলাকার খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির সংকট দেখা দেয়। অন্যদিকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের পীরতলা জামলা ও আংগারিয়া খালটিতে ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাওয়ায় পানির প্রবাহ ব্যাহত ও খালের পানি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় লোকজন পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এ অবস্থায় শুকনো মৌসুমে টিউবওয়েলের পানির অভাবে অনেকে ব্যবহার অনুপযোগী পানি পান করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

জামাল হোসেন নামের এক শিক্ষক বলেন, শুকনো মৌসুম এলেই কলেজশিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা পানির সমস্যায় ভোগেন। এ সময় উপায় না পেয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হয়।

পশ্চিম আংগারিয়ার বাসিন্দা রিনা বেগম বলেন, গভীর নলকূপ বসিয়েও পানির সংকটে ভুগতে হচ্ছে। শুকনো মৌসুম শুরু হলেই পানি পাওয়া যায় না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব এলাকায় ৮০০ থেকে ১ হাজার ফুট গভীরে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শুকনো মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

দুমকী উপজেলায় সরকারিভাবে ১ হাজার ৫৩০টি টিউবওয়েল এবং বেসরকারিভাবে ১ হাজার টিউবওয়েল বসানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা গেছে। এ ছাড়া এলাকাবাসী ব্যক্তিগত খরচে নিজ নিজ বাসায় টিউবওয়েল বসিয়ে মোটর যুক্ত করেও পানি তুলতে পারছে না।

পানিসংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নিপা আক্তার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে হস্তচালিত নলকূপের পরিবর্তে সাবমারসিবল পাম্প বসানোর জন্য এলাকাবাসীর স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত