Ajker Patrika

আজীবন বহিষ্কারের হুমকিও আটকাতে পারল না বিএনপির ২০ নেতা-কর্মীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৪ মে ২০২৩, ১৭: ২১
আজীবন বহিষ্কারের হুমকিও আটকাতে পারল না বিএনপির ২০ নেতা-কর্মীকে

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে। দলীয় নেতাদের এমন হুমকিই দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাসিকের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। তবে এই হুমকি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২০ জনকে আটকাতে পারেনি। তাঁরা সিটি নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে।

গতকাল মঙ্গলবার রাসিক নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন ছিল। এই সময়ের মধ্যে মেয়র পদে চারজন, ৩০টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৪ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ৪৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এই তালিকা ঘেঁটে ‘বিএনপির লোক’ হিসেবে পরিচিত ২০ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আগে বিএনপির রাজনীতি করলেও এখন নিষ্ক্রিয় এমন আরও কয়েকজন আছেন। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া ব্যক্তি আছেন অনেকেই। 

নগরীর রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজপাড়া এলাকায় হাবিবুর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ওই সময় পুলিশ সদস্য সিদ্ধার্থ হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়। লিলি হলের মোড়ে গাড়িতে পেট্রলবোমা মেরে চালককে হত্যার মামলারও আসামি তিনি। হাবিবুর এবার দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে কাউন্সিলর প্রার্থী হচ্ছেন। কথা বলার জন্য হাবিবুরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাই তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

এখন রাসিকের সংরক্ষিত নারী আসন-৩-এর কাউন্সিলর মুসলিমা বেগম বেলী মহানগর মহিলা দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। এবারও তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ভোটের জন্য তিনি দলই ছেড়ে দিয়েছেন। বেলী বলেন, ‘এলাকায় আমার জনপ্রিয়তা আছে। মানুষ আমাকে আবার চাচ্ছেন। কিন্তু দল নিষেধ করছে। তাই সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকেই পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগ করার এক-দেড় মাস হয়ে গেল। শুধু ভোট করার জন্যই দল থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।’ 

নগরীর প্রাণকেন্দ্র বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সভাপতি ছিলেন আবু বাক্কার কিনু। তিনি সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। আবু বাক্কার কিনুর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এখনো দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আড্ডা জমে। কিন্তু আবু বাক্কার নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেননি। এবারও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তিনি। 

নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে কবীর টুটুল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে এসেছেন হামিদুল ইসলাম সুজন। রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক মো. বদিউজ্জামান প্রার্থী হচ্ছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে আছেন বিএনপির মাসুদ রানা। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক যুবদল নেতা মো. টুটুল। বিএনপির আবদুস সোবহান লিটন এখন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এবারও তিনি প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের টানা কয়েকবারের কাউন্সিলর বেলাল আহমেদ যুবদলের থানা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি এবারও ভোটে অংশ নিচ্ছেন। বেলাল আহমেদ বলেন, ‘আমি অনেক দিন আগে পদে ছিলাম। এখন তো পদে নাই। ভোটে অংশ নিতেও সমস্যা নাই।’ 

নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম পচা যুবদলের সাবেক নেতা। তিনি এবারও ভোটে আসছেন। মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটো প্রার্থী হচ্ছেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ২৬ নম্বরের কাউন্সিলর আক্তারুজ্জামান কোয়েল বিএনপি পরিবারের সন্তান। মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আনোয়ারুল আমিন আযব ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আর ২৮ নম্বরের কাউন্সিলর আশরাফুল আলম বাচ্চু ছাত্রদল থেকে এসে বিএনপি করতেন। তাঁরা সবাই প্রার্থী হচ্ছেন। 

এ ছাড়া ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে যুবদল সদস্য সাইদুর রহমান সাঈদ এবং ২৮ নম্বরে বিএনপির আবদুস সাত্তার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। মহিলা দলের মাঠ কাঁপানো নেত্রী সামসুন নাহার সংরক্ষিত নারী আসন-৫-এর কাউন্সিলর। এবারও তিনি ভোট করছেন। এ ছাড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির মোসা. নূরবানু এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডে শাহনাজ বেগম শিখা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এই নির্বাচনে নগর বিএনপির সাবেক নেতা সাহিদ হাসান মেয়র পদে অংশগ্রহণের কথা ভাবছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি। 

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘যারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাঁরা বিএনপির লোক না। সেটাই বুঝে নিতে হবে। ভোটে অংশ নেওয়া কেউ পদে থাকলে অবশ্যই বহিষ্কার করা হবে। আর যদি কেউ পদে না থাকে, তাহলে বহিষ্কার করার কিছু নাই। তাঁরা আগামীতে পদ পাবেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুরে ভেসে উঠছে মরা মাছ, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বিবির পুকুরে ভাসছে মরা মাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিবির পুকুরে ভাসছে মরা মাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী বিবির পুকুরে ভেসে উঠেছে বিভিন্ন জাতের মরা মাছ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুকুরটিতে এই মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা বলছেন, প্রায়ই পুকুরটিতে মাছ মরে ভেসে ওঠে। এতে চারপাশে পচা-গলা মাছের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। পুকুরপাড় দিয়ে নাক চেপে চলাচল করতে হয়। পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, বাণিজ্যিকভাবে পুকুরটিতে মাছ চাষ করায় বিভিন্ন সময় মাছ মরার ঘটনা ঘটছে। এতে পুকুরের পানিতে দূষণ ঘটছে। দুর্গন্ধে চারপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

বিবির পুকুরের সঙ্গে অতীতে কীর্তনখোলা নদীর সংযোগ ছিল। বর্তমানে নদী থেকে পানিপ্রবাহ বন্ধ থাকাসহ ময়লা ফেলার কারণে পানি নষ্ট হয়ে গেছে। নীল রং ধারণ করা পানিতে একধরনের স্তর পড়ে গেছে।

জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) তত্ত্বাবধানে থাকা বিবির পুকুরটি ইজারা নিয়ে মাছচাষিরা বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করেন। বিভিন্ন সময় সেই মাছ মরে পচে ভেসে উঠে। এতে দুর্গন্ধে পুকুরপাড়ে আসা বিনোদনপ্রেমী ও পথচারীদের টেকা দায় হয়ে পড়ে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, পুকুরপাড়ে এসে মরা মাছের গন্ধে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। দ্রুত মরা মাছ অপসারণ করে পুকুরটির পানিদূষণ রোধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশালের সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্পটে বিবির পুকুরটির অবস্থান। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করায় নানা সময় মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হয়তো পুকুরের পানির মান খারাপ হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশনকে উচিত হবে, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশালের পরিদর্শক রকিব উদ্দিন বলেন, বিবির পুকুরের পানিতে অক্সিজেন কমে গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পানির মান দেখতে হবে। তিনি বলেন, তাঁরা বিভিন্ন পুকুর, জলাশয় এবং নদীর পানির মানমাত্রা পরীক্ষা করেন। বিবির পুকুরের পরিস্থিতি পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, মরা মাছ দ্রুত অপসারণের জন্য ইজারাদারকে বলা হচ্ছে। যদিও তাঁরা পুকুরের পানি দূষণ ঠেকাতে কিছু অংশ জাল দিয়ে আটকে দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বিবির পুকুর বরিশাল নগরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী জলাশয়। উনিশ শতকে জনসাধারণের জলকষ্ট দূর করতে জিন্নাত বিবি নামে এক মুসলিম নারীর উদ্যোগে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই পুকুরটি সদর রোডের পূর্ব পাশে অবস্থিত এবং এটি বরিশাল নগরের সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি এখন আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঋণমুক্তির স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন সিয়াম, নিভে গেলেন হাতবোমায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মগবাজার ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদার (২১)। ছবি: সংগৃহীত
মগবাজার ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সিয়াম মজুমদার (২১)। ছবি: সংগৃহীত

পরিবারের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য ছোটবেলা থেকেই চেষ্টা করেছেন সিয়াম মজুমদার (২১)। তাই চার বছর আগে ঋণগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে খুলনা থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। নিউ ইস্কাটনের একটি মোটরকার ডেকোরেশন দোকানে কাজ করে পরিবারকে সহায়তাও করতেন তিনি। ঋণ পরিশোধের পর দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাঁর।

কিন্তু গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে ছোড়া ককটেলের বিস্ফোরণে সিয়ামের সেই স্বপ্ন থেমে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ককটেলটি ওপর থেকে এসে তাঁর মাথায় লাগে।

সিয়ামের পরিবার জানায়, ঢাকায় এসে রিকশা চালানো শুরু করেন তাঁর বাবা আলী আকবর মজুমদার। মা সিজু বেগম বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ নেন। ছোট ভাই সেজান মজুমদারও ইস্কাটন এলাকায় একটি গাড়ি ডেকোরেশনের দোকানে কাজ করেন। পরিবারের সবাই মিলে চেষ্টা করছিলেন ঋণমুক্ত হওয়ার।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিউ ইস্কাটনের দুই হাজার গলির ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, শোকে ভেঙে পড়েছেন সিয়ামের মা সিজু বেগম। বিলাপ করতে করতে তিনি বলেন, ঢাকায় এসে তাঁদের সব শেষ হয়ে গেছে। ছেলের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।

ছোট ভাই সেজান মজুমদার বলেন, পরিবারের আর্থিক সংকট কাটিয়ে ভাই বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ এই মৃত্যু পুরো পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ছেলের মরদেহ নিতে গিয়ে বাবা আলী আকবর মজুমদার বলেন, ভাগ্য বদলাতে ঢাকায় এসে ছেলেকে হারাতে হবে—এমনটা জানলে তিনি কখনোই ঢাকায় আসতেন না।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ জানায়, গতকাল সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ১০ মিনিটে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া বিস্ফোরকদ্রব্যের আঘাতে সিয়াম মজুমদার নিহত হন। ঘটনার সময় তিনি মগবাজার-নিউ ইস্কাটন সড়কে কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

ঘটনাস্থলের চা-দোকানি মো. ফারুক আজ বিকেলে বলেন, চা বানানোর সময় বিকট শব্দ হয়। পরে দেখা যায়, সিয়াম মাটিতে পড়ে আছেন, মাথা থেকে রক্ত ঝরছে।

এ ঘটনায় সিয়ামের বাবা হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা বলেন, এখনো কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাস্টার্সের সনদ জাল: কলেজের সভাপতির পদ হারালেন সবুজ খাঁন

ভোলা প্রতিনিধি
মো. সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁন। ছবি: সংগৃহীত
মো. সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁন। ছবি: সংগৃহীত

‎মাস্টার্সের সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির পদ হারালেন মো. সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সবুজ খাঁনের সভাপতির পদ বাতিল করে নতুন সভাপতি মনোনয়নের নির্দেশ দিয়েছে।‎

‎মো. সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁন দক্ষিণ আইচা থানাধীন চরমানিকা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আলী মিয়ার ছেলে।‎

স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, সবুজ খাঁন চলতি বছরের ২০ এপ্রিল ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত মাস্টার্স ডিগ্রির সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে দক্ষিণ আইচা কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব েনন। তবে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে গত ১ নভেম্বর জনৈক ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সনদ যাচাই কার্যক্রম শুরু করে।‎

‎সূত্র আরও জানায়, যাচাই শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এ কে এম শামসুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবুজ খাঁনের দাখিল করা সনদে কোনো ক্রমিক নম্বর নেই, কোর্স কোডে অসংগতি রয়েছে এবং স্বাক্ষর ও তারিখেও গরমিল পাওয়া গেছে। এসব কারণে সনদ দুটিকে জাল হিসেবে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।‎

‎বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরে আসে। পরে গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে কলেজ পরিদর্শক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার স্বাক্ষরিত এক লিখিত নির্দেশনায় দক্ষিণ আইচা কলেজের অধ্যক্ষকে অবহিত করা হয়। সেই নির্দেশনায় বলা হয়, মো. সিরাজুল ইসলামের মাস্টার্স সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর সভাপতির দায়িত্ব আর বৈধ নয়। ফলে শূন্য ঘোষিত পদে অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য মাস্টার্স ডিগ্রিধারী যোগ্য তিনজন প্রার্থীর নাম শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।‎

‎এই আদেশ প্রকাশের পর কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।‎

‎কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির পদ থেকে সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁনের অব্যাহতিপত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেইলে পাওয়ার কথা স্বীকার করে দক্ষিণ আইচা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কলেজের সভাপতির সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সবুজ খাঁন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন একটি কথা শুনেছি। এখনো অফিশিয়ালি কোনো চিঠি পাইনি। তবে আমি এর প্রতিবাদ করব। প্রয়োজনে আইনি লড়াই করব।’ তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলেও জানান সবুজ খাঁন।

সবুজ খাঁন নিজেকে থানা বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও দলের কোনো সাংগঠনিক পদে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চেক ডিজঅনারের মামলা: ফরিদপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েদির মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক কয়েদি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রিজন সেলে স্থানান্তর করা হয়।

ওই কয়েদির নাম বিমল কুমার দাস (৬২)। কয়েদি নম্বর ২৫২৫। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার কদমতলী আমিরাবাদ গ্রামের গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি একটি চেক ডিজঅনার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, একটি চেক ডিজঅনার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন। তিনি মাদারীপুর কারাগারে ছিলেন। ওই হাজতি ডায়াবেটিসসহ বয়সের বিভিন্ন রোগে  ভুগছিলেন। মাদারীপুর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২৩ ডিসেম্বর তাঁকে মাদারীপুর কারাগার থেকে ফরিদপুর কারাগারে আনা হয়। ফরিদপুরে আসামাত্রই তাঁকে হাসপাতালের প্রিজন সেলে স্থানান্তর করা হয়।

জেল সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল শুক্রবার (আজ) সকালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত