Ajker Patrika

যানবাহনশূন্য বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট

মাদারীপুর ও গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ জুন ২০২২, ২০: ০০
যানবাহনশূন্য বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় যানবাহনশূন্য হয়ে পড়েছে বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। এর আগে গত ২৬ মে থেকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে বাংলাবাজার ফেরিঘাট বন্ধ রাখে বিআইডব্লিউটিসি। গত দুই দিনে এই নৌরুটে গুটিকয়েক লঞ্চ ও স্পিডবোট চলেছে। অপরদিকে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় প্রায় যানবাহনশূন্য হয়ে পড়েছে দৌলতদিয়া ঘাট।

বরিশাল থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আসা মোটরসাইকেল আরোহী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের টাকায় আমাদের সেতু হলেও তার সুফল পাচ্ছি না। সকাল ৬টায় জাজিরা টোল প্লাজায় এসে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো লাভ হয়নি। অবশেষে দৌলতদিয়া হয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে কঠোর নিয়মনীতি মেনে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেলসহ যাবতীয় যানবাহন চালানোর অনুরোধ রইল।’

বাংলাবাজার ঘাটের স্পিডবোট মালিক সমিতির পরিচালক রাসেল মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর আমাদের সি-বোট বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। কেউ ঘাটে আসছে না। গেল দুই দিনে ১৫ থেকে ২০টি সি-বোট চলাচল করেছে। এতে তেলের টাকাও উঠছে না। ফলে সি-বোট চালু রাখার কথা বললেও কার্যত আমাদের বন্ধ রাখতে হবে। কারণ, মানুষ না হলে আমরা কীভাবে চালাব? সরকারিভাবে চালানোর কথা থাকলেও আমরা বন্ধ করে রাখতে বাধ্য থাকব।’ 

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ঘাটের লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আতাহার ব্যাপারী বলেন, ‘আমাদের দিকে আর কেউ তাকায় না। সেতু চালু হয়েছে, এতে আমরা খুশি। কিন্তু যাত্রী না এলে লঞ্চ কীভাবে চলবে। দুই দিন কোনো যাত্রীই ছিল না। ৫ থেকে ৭টি লঞ্চ আসা-যাওয়া করলেও তেলের টাকাই উঠবে না। তাই বাধ্য হয়েই লঞ্চ বন্ধ রাখতে হবে। এ রুটে প্রায় ৮৭টি লঞ্চ রয়েছে। এভাবে লঞ্চ বন্ধ থাকলে আমাদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাবে।’ 

যানবাহন শূন্য অবস্থায় রয়েছে বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন বলেন, ‘গত ২৬ মের পর থেকে বাংলাবাজার ঘাটে ফেরি সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দি ঘাটে দুটি ফেরি চালু করা হয়। এ ছাড়া সব ঘাটেই লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল করছে। মাঝিরকান্দি ঘাট দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার হচ্ছে। তবে দুটো ফেরি চালু থাকায় কিছুটা সময় লাগছে।’ 

ঘাটের ব্যবস্থাপক আরও বলেন, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে আগে ৮৭টি লঞ্চ, দেড় শতাধিক স্পিডবোট ও ১৭টি ফেরি নিয়মিত চলাচল করত। তবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে এক মাস ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প রুট হিসেবে শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দি ঘাট দিয়ে ৩ থেকে ৫টি ফেরি চলাচল করত। 

অপরদিকে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে এক দিনে ৫ থেকে ৬ হাজার যানবাহন পারাপার করত। ওই সব যানবাহন পারাপারে ব্যবহৃত হতো ছোট-বড় ১৭ থেকে ১৯টি ফেরি। তবে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর অর্ধেকে নেমে এসেছে এ ঘাট ব্যবহার করা যানবাহনের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া ঘাটে ১৮টি ফেরিতে প্রায় ২০০ ট্রিপের মাধ্যমে ৪৫২টি বাস, পণ্যবাহী বড় ট্রাক ১ হাজার ১২৯টি ও পণ্যবাহী ছোট ট্রাক ১ হাজার ১৩০টিসহ মোট ২ হাজার ৭০০ যানবাহন পারাপার হয়েছে। 

জানা যায়, পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার গণপরিবহন যা আসছে, তা লাইনে দাঁড়িয়ে না থেকেই পছন্দমতো ঘাটে গিয়ে ফেরিতে উঠতে পারছে। প্রতিটি ঘাটেই একাধিক ফেরি যানবাহন নিতে অপেক্ষায় থাকছে। অনেক সময় ফেরি ফাঁকা রেখেই পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

পাটুরিয়া থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে ইউটিলিটি ফেরি ‘রজনীগন্ধা’ দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ঘাটে এসে ভেড়ে। একই ঘাটে এর আগে আরও দুটি ফেরি আসায় রজনীগন্ধাকে অপেক্ষায় থাকতে হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর অর্ধেকের বেশি জায়গা খালি রেখে ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

যানবাহন শূন্য অবস্থায় রয়েছে বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। গ্রিন লাইন পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক নুরুজ্জামান মিয়া জানান, এই রুটে তাঁদের কোম্পানির বাসের সংখ্যা এমনিতেই কম। এরপরও সরাসরি যাতায়াতের সুবিধার্থে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তাঁর মতো অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। 

সোহাগ পরিবহনে কর্মরত দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক সুজন আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের এই ঘাট দিয়ে গাড়ির সংখ্যা অর্ধেকের বেশি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে সাড়ে ৩ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। কিন্তু দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হতে সময় লাগত ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা। আর যানজট থাকলে সময় আরও বেড়ে যেত। বর্তমানে পরিবহনের ট্রিপ কমে যাওয়ায় ঘাট এখন যানবাহনশূন্য।’ 

গোপালগঞ্জ থেকে আসা যাত্রীবাহী পরিবহন কমফোর্টের চালক মিজানুর রহমান জানান, তাঁদের পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়ার জন্য এখনো কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া এই পরিবহনের অনেক যাত্রী সাভার বা নবীনগর এলাকার। একটু সময় বেশি লাগলেও আপাতত এ রুট দিয়েই তাঁদের যাতায়াত করতে হবে। 

বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা ইসলাম পরিবহনের চালক বলেন, ‘আমাদের গাড়িগুলো রুট পারমিট পেলে পদ্মা সেতু দিয়েই বেশি চলাচল করবে। তবে ৪ থেকে ৫টি ট্রিপ এ ঘাট দিয়েও চলাচল করতে পারে। কারণ, সাভার, নবীনগরের যাত্রীদের জন্য এখান দিয়ে কিছু গাড়ি চলবে। অপরদিকে, আগে ঘাটে এসে ৩ থেকে ১০ ঘণ্টা দীর্ঘ সিরিয়ালে আটকে থাকতে হতো। কিন্তু আজ একেবারেই গাড়ির কোনো লাইন নেই। ঘাটে আসামাত্রই সরাসরি ফেরিতে গিয়ে উঠতে পারছি। এমন থাকলে দূরপাল্লার গণপরিবহন এ ঘাট দিয়েও পারাপার হবে, এতে যাত্রীদের ভোগান্তিও থাকবে না।’ 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনো কিছু দূরপাল্লার বাসের রুট পারমিট হয়নি। ফলে এখনো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে রুট পারমিট পেলে বাসের সংখ্যা আরও অর্ধেকে নেমে যাবে। আরও এক সপ্তাহ পর পদ্মা সেতুর প্রভাবের চিত্রটি পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। বর্তমানে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৯টি ফেরি চলাচল করছে।’

ফেরিঘাট সম্পর্কিত পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানে পাওয়া অস্ত্রসামগ্রী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরে নতুন ভোটারদের নিয়ে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চাঁদপুরে শতাধিক নতুন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচনী অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁদপুর জেলা কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি হয়।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও বেলুন উড়িয়ে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান মিয়া। নতুন ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসন ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ হয়েছে। সুজনের সহযোগিতায় এই আয়োজন অবশ্যই অংশগ্রহণকারীদের অনেক সমৃদ্ধ করবে এবং সচেতন নাগরিক তৈরি হবে।’

পরে কলেজের অডিটরিয়ামে ৫০টি এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নের মাধ্যমে ৩০ মিনিটের পরীক্ষা হয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্য থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তিনজন জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য ও বিজয়ীদের হাতে সনদ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুজন চাঁদপুরের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন।

সুজন চাঁদপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রহিব বাদশা, শিক্ষক ওমর ফারুক, সংগঠক সালাউদ্দিন, কর আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংবাদিক আলম পলাশ, জাকির হোসেন, শোভন আল-ইমরান, মোরশেদ আলম রোকন, মো. মাসুদ আলম, শরীফুল ইসলামসহ সুজন জেলা কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত