Ajker Patrika

সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম এখনো কাগজে-কলমে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম এখনো কাগজে-কলমে

কুষ্টিয়ার বাজারে আলু ও পেঁয়াজ নিয়ে জনসাধারণের ভোগান্তি কমছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিলেও মূল্য নির্ধারণের প্রায় এক মাসেও কুষ্টিয়ার বাজারে ওই দামে মিলছে না পণ্য। লাগামছাড়া দামে পণ্য কিনতে দিশেহারা সাধারণ ক্রেতারা। 

ব্যবসায়ীদের দাবি, আড়ত থেকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। তাই লোকসানে বিক্রি সম্ভব নয়। 

আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়ার পৌর বাজার, বড় বাজার ও সাপ্তাহিক রাজার হাট ঘুরে আগের দৃশ্যই দেখা গেছে। তবে এখনো বেশির ভাগ ক্রেতা ও বিক্রেতা তিনটি কৃষিপণ্যের বেঁধে দেওয়া দামের বিষয়েও জানেন না। 

চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। 

এ ঘোষণার পর থেকে বাজারে এই দাম কার্যকর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কুষ্টিয়ার বাজারে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ। তবে বাজারে ডিমের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। 

আজ সকালে কুষ্টিয়ার পৌর বাজারে ঘুরে দেখা যায়, আলু প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা। তবে সরকার নির্ধারিত ১২ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ডিম। একই চিত্র বড়বাজার ও রাজার হাটেও। 

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতাদের অজুহাতের শেষ নেই। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা বাড়তি দামে মোকাম থেকে পণ্য ক্রয় করছেন। 

তবে অধিকাংশ বিক্রেতারা বলছেন, বাজারের দাম কমাতে হলে আগে মোকাম এবং পাইকারিদের দাম কমাতে হবে। 

আলু বিক্রেতা ঝন্টু বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত আলু বিক্রির দাম রয়েছে ৩৬ টাকা। কিন্তু আমরা মহাজনের থেকে ৩৬ টাকার বেশি দামে কিনে এনেছি। তাহলে সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা করে বিক্রি কীভাবে করব। তাই মানভেদে আলু ৪৫ টাকার বেশি বিক্রি করতে হচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা কমে কিনতে পারলে তাহলে কমে বিক্রি করতাম। আমরা যদি কম দামে কিনতে পারি তাহলে তো বেশি দামে বিক্রি করার কোনো মানে হয় না।’ 

মনিরুল নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের খুচরা বাজারে যে কোনো পণ্যের দাম আড়তের সঙ্গে মিলিয়ে বিক্রি করতে হয়। আড়ত যদি রাতারাতি দাম কমিয়ে দেয়, তাহলে আমরাও কমে বিক্রি করতে পারি। আবার আরত যদি রাতারাতি দাম বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আমাদেরও বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। দামটা আসলে সরাসরি আড়তের সঙ্গে নির্ধারিত।’ 

পৌর বাজারের আলুর আড়তদার উচ্চাশা ভান্ডারের মালিক মাসুদুর রহমান তোতা বলেন, পৌর বাজারের আলুর আড়ত থেকে দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ বস্তা আলুর চাহিদা রয়েছে। যা শহরের বিভিন্ন বাজারে যায়। তা ছাড়া সাপ্তাহিক হাটের দিন তা ৫০০ বস্তা ছাড়িয়ে যায়। দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা আলু কুষ্টিয়ার চাহিদা পূরণ করে। 

কুষ্টিয়ার পৌরবাজারে আলুর আড়ৎ। ছবি: আজকের পত্রিকাএখন পর্যন্ত হিমাগারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু মজুত রয়েছে। সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর হিমাগারে রাখা মজুতদাররা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী আলু সরবরাহ করছে না। 

সাপ্তাহিক রাজার হাটের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আইনাল শেখ। পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন ও আদার পসরা সাজিয়ে বসে ছিলেন তিনি। 

দেশি পেঁয়াজের দাম জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, ৭০ টাকা কেজি হলে নিতে পারবেন। তবে প্রকারভেদে কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে। আলাপকালে বলেন, সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের কথা তিনি জানলেও তাঁর কিছু করার নেই। 

দোকানটির পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেই দেখা গেল মধ্যবয়স্ক এক ব্যক্তি আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলেন ৩৫ টাকায়। পরে তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তাঁর নাম নিশীত দত্ত। ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। 

হাফিজ আল আসাদ নামের আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘সরকার থেকে আলুর দাম নির্ধারণ করেছে ৩৫ টাকা। কিন্তু বাজারে গেলে ৪৫ টাকার নিচে কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এখন তো সিন্ডিকেটের কাছে সরকারও অসহায় বলে মনে হচ্ছে।’ 

শাহিন আলী নামের আরেক ক্রেতা জানান, ‘সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী তিনটি পণ্যের দাম কমার কথা শুনে আমরা কিছুটা আনন্দিত হয়। এতে বাজারে স্বস্তি আসবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখি আগের দাম ও বর্তমান দাম একই রয়েছে। বরং অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও লাগাম ছাড়া।’ 

সরকারের নির্ধারিত মূল্য দ্রুত কার্যকর করতে সংশ্লিষ্টদের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও জানান এই ক্রেতা। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারের নির্ধারিত দাম কার্যকর ও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে আগামীকাল শুক্রবার থেকে সম্মিলিত অভিযান চলবে। তা ছাড়া যেসব এলাকায় আলুর হিমাগার রয়েছে সেসব এলাকায় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদেরও তদারকির জন্য বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত