Ajker Patrika

সাহ্‌রিতে ভালো খাবারের জন্য ইবি শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি

পল্লব আহমেদ সিয়াম, ইবি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ৪৪
সাহ্‌রিতে ভালো খাবারের জন্য ইবি শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) রমজান উপলক্ষে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও খোলা আছে আবাসিক হলগুলো। প্রায় ১৫টি বিভাগের পরীক্ষা চলমান থাকায় অনেক শিক্ষার্থী হলে ও আশপাশের মেসগুলোতে অবস্থান করছেন।

ক্যাম্পাস বন্ধ হলে আশপাশের মেসগুলোতে রান্না বন্ধ হয়ে যায়। এতে হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মেসের শিক্ষার্থীরাও ক্যানটিনে খাওয়াদাওয়া করেন। রমজানে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে মানসম্মত সাহ্‌রির। অন্য মাসগুলোতে হলে খাবার নিয়ে নানা অভিযোগ থাকলেও সবার আশা থাকে রমজান মাস উপলক্ষে তাঁরা হলে ভালো খাবার পাবেন। কিন্তু রমজান উপলক্ষে খাবারের দাম বাড়ালেও বাড়েনি খাবারের মান। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘ক্যানটিনগুলোতে ন্যূনতম তদারকি নেই হল প্রশাসনের। হল প্রশাসন খাবারের মেন্যু ঠিক করে দিলেও ক্যানটিন ম্যানেজাররা এসব মানে না। আমরা কী খাচ্ছি, হল কীভাবে চলছে—এসব বিষয়ে তাঁদের ন্যূনতম দায়িত্ববোধ নেই। এসব খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাচ্ছি না আমরা।’ 

হলগুলোতে দেখা গেছে, রাতের খাবারের মূল্য আগের মতো থাকলেও সাহ্‌রিতে রাতের একই খাবার পরিবেশন করে, কিন্তু রাতের তুলনায় সাহ্‌রিতে যোগ হয় আরও ৫ অথবা ১০ টাকা। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলে খাবারের নিয়মিত দামের চেয়েও ১২ টাকা বৃদ্ধি করে ৫০ টাকা দামে সাহ্‌রি দেওয়া হচ্ছে। সাদ্দাম হলে ২৮ টাকার খাবার দাম বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে এবং ৩৮ টাকার খাবার ৬০ টাকা হয়েছে। একই অবস্থা অন্য হলগুলোতে। 

এ বিষয়ে শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ক্যানটিনগুলোতে নিম্নমানের চাল রান্না হয়। ডালের মধ্যে শুধু পানি। এ খাবার খেয়ে পুষ্টির চাহিদা মেটে না। ৩৮ টাকার খাবার ৫০ টাকায় বিক্রি করা হলেও গুণগত মান বাড়েনি। 

এদিকে সাহ্‌রির সময়ে হলগুলোতে দেখা যায়, ভালো খাবারের সন্ধানে এক হল থেকে আরেক হলের দিকে ছোটাছুটি করছেন শিক্ষার্থীরা। সাদ্দাম হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা যাচ্ছেন লালন শাহ হলের দিকে, আবার শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা যাচ্ছেন সাদ্দাম হোসেন হলে। কিছু হলে খাবারের মান কিছুটা ভালো হলেও সেটা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে নব্বই টাকার মধ্যে। যা সাধারণ দামের তুলনায় অনেক বেশি। 

খাবারের দামের বিষয়ে জিয়াউর রহমান হলের ক্যানটিন ম্যানেজার রফিক বলেন, ‘বাজারে সবকিছুর দাম কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। রমজানে খাবারের মান ভালো করা হয়েছে। এ জন্যই দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।’ 

অন্যদিকে এসব খাবার থেকে ন্যূনতম পুষ্টি পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা—এমনটাই বলছেন ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার কিলো ক্যালরি প্রয়োজন। তবে হলের শিক্ষার্থীরা দৈনিক যে খাবার গ্রহণ করেন তা থেকে তাঁরা প্রায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার কিলো ক্যালরি পান। এর থেকে উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদারকি করতে হবে। খাবারের সবদিক বিবেচনা করে মেন্যু ঠিক করে দিতে হবে।’ 

অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ আরও বলেন, ‘আমি প্রভাষক থাকা অবস্থায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের যে রকম রেসপন্স পেয়েছি, এখন সেভাবে রেসপন্স পাই না। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় শিক্ষার্থীরা হলের খাবার থেকে প্রয়োজনমতো পুষ্টি পাচ্ছে না।’ 

একজন সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় ও পরিমাণমতো ছয়টি উপাদানযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হয়, যা পুষ্টিচাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ায়। আমিষ, শর্করা, স্নেহ পদার্থ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও পানি গ্রহণ করলে দেহের ক্ষয়পূরণ, বুদ্ধিসাধন, শক্তি উৎপাদনসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জিত হয়। 

শিক্ষার্থীরা বলেছেন, প্রয়োজনীয় খাবার খেতে তাঁদের দৈনিক খরচ হবে কমপক্ষে ২০০ টাকা। এই খরচ বহন করা তাঁদের জন্য সহজ নয়। যতটুকু না খেলে নয়, ততটুকুতেই তাঁরা সন্তুষ্ট থাকেন। দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতির বাজারে মাস শেষ করার জন্য খরচ কমানোর চেষ্টায় থাকেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, যারা হল ডাইনিংয়ে কাজ করছেন, তাঁদের অতিরিক্ত খেয়াল রাখা উচিত। আরও সচেতন হলে নির্ধারিত টাকায় ভালো মানের খাবার পরিবেশন করা যাবে। হল প্রশাসন এ বিষয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত