Ajker Patrika

ঝিনাইদহ হত্যাকাণ্ড

একই এলাকায় ৫ চরমপন্থী নেতাকে হত্যা করেছিলেন জাসদ গণবাহিনীর এই কালু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৭
ঝিনাইদহের শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর ত্রিবেণী শ্মশান খাল এলাকায় ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ৫ চরমপন্থী নেতাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহের শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর ত্রিবেণী শ্মশান খাল এলাকায় ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ৫ চরমপন্থী নেতাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর ত্রিবেণী শ্মশান খাল এলাকায় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা হানিফ আলীসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন স্থানীয় সন্ত্রাসী কালু। ২১ বছর আগে একই এলাকায় চরমপন্থী পাঁচ নেতাকে হত্যার দায়ে কালুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

চরমপন্থী নেতা কালু পরিচয় দিয়ে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনাবাসীর উদ্দেশে জানানো যাচ্ছে, পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিণাকুণ্ডু নিবাসী হানিফ তাঁর দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। এই অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো, অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।’

ঝিনাইদহ জজ আদালতের নথি অনুযায়ী, একই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বের জের ধরে ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর চরমপন্থী নেতা ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামের শহিদ খাঁ, ত্রিবেণী গ্রামের নেওয়াজ শাহ, ফারুক, নুর খান ও কুষ্টিয়ার ভবানীপুর এলাকার শরিফুল ওরফে কটাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করেন চরমপন্থী নেতা কালু। ওই মামলায় গত বছরের ২৯ অক্টোবর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

পুরোনো স্টাইলের হত্যাকাণ্ড নতুন করে ঘটিয়ে দায় স্বীকার করায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোরসহ বেশ কয়েকটি জেলায় আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে এই কালু।

১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সবচেয়ে অশান্ত ও চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল কুষ্টিয়া জেলা। চরমপন্থী সংগঠনের মধ্যে বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল), পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (লাল পতাকা), জাসদ গণবাহিনী ও শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলন ছিল উল্লেখযোগ্য। ২০০৪ সালের পরে র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চরমপন্থী সংগঠনের অনেক শীর্ষ নেতা নিহত হন। তখন জীবন বাঁচাতে বেশির ভাগ চরমপন্থী সংগঠনের নেতারা ভারতে পালিয়ে যান।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় কয়েকজন চরমপন্থী সংগঠনের নেতা পরিচালিত হলেও ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তাঁরাও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপর আবারও নতুন করে আলোচনায় এসেছে কুষ্টিয়ার আলী রেজা সিদ্দিকী ওরফে কালু। ৯০ দশক থেকেই তিনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জাসদ গণবাহিনীর সামরিক প্রধান ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় শতাধিক খুনের মামলা রয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ভাদালিয়ায় জেটি ইন্টারন্যাশনাল (জাপান টোব্যাকো) বাংলাদেশ লিমিটেডের মূল গেটের সামনে বোমা ও গুলি ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। ২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। ১৮ ফেব্রুয়ারি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সৈয়দ মাছউদ রুমী সেতুর নিচে বালু ঘাটে ম্যানেজারকে পায়ে গুলি করে ফিল্মি স্টাইলে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং খোকসার জিলাপীতলা ঘাটে আধিপত্য নিতে প্রায় ৪০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বালুর ঘাটের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সূত্রের দাবি, প্রত্যেকটি ঘটনা চরমপন্থী নেতা কালুর নির্দেশেই ঘটেছে। তিনি জানান দিতে চান, সব জায়গায় জাসদ গণবাহিনীর লোক ছড়িয়ে আছে।

ঝিনাইদহের শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর ত্রিবেণী শ্মশান খাল এলাকায় ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ৫ চরমপন্থী নেতাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহের শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর ত্রিবেণী শ্মশান খাল এলাকায় ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ৫ চরমপন্থী নেতাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কালু কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানাধীন আব্দালপুর গ্রামের বাসিন্দা। ১৯৯৮ সালে মিরপুর উপজেলার কলাবাড়িয়ায় পাঁচজনকে জবাই করে হত্যার অস্তিত্ব জানান দেন কালু।

১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে আলামপুর ইউনিয়নের দহকুলা গ্রামের তমছের ও মানা নামে দুজনকে প্রকাশ্যে নওয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গুলি করে হত্যা করেন। একই সালে ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে নিজ গ্রামের রায়হান ও মজিদ মিয়াকে দিনদুপুরে গুলি ও জবাই করে হত্যা করেন কালু। এরপর ১৯৯৯ সালে কুষ্টিয়া সদরের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শুকুর মালিথাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা করেন চরমপন্থী এই নেতা। ২০০২ সালে পূর্ব আব্দালপুরের তাছের নামে এক ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যা করেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ঠিকাদার জানান, ২০০৯ সালের ৮ আগস্ট তিনজনকে হত্যা করে কুষ্টিয়া গণপূর্ত কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ব্যাগের ভেতর তিনটি মাথা ঝুলিয়ে রেখে যান কালু।

২০১১ সালে ভারতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুরের চেয়ারম্যান আনুকে শ্বাসরোধের পর জবাই করে হত্যা করেন কালু। এরপর ২০১২ সালে ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আজিবার চেয়ারম্যানকে জবাই করে হত্যা করেন। একই সালে ইবি থানাধীন লক্ষ্মীপুর বাসস্ট্যান্ডে আব্দালপুর এলাকার রহমান ও হাসেম নামের দুজনকে গুলি ও জবাই করে হত্যা করেন কালু। এর পর থেকেই আতঙ্ক হিসেবে কালুর নাম কুষ্টিয়ার আশপাশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।

তবে দীর্ঘ সময় পর হত্যার মাধ্যমে আবার নতুন করে চরমপন্থী সংগঠনের জানান দেওয়ার ঘটনার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থাকে দায়ী করছে সচেতন সমাজ।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সতর্কতার সঙ্গে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। এসব ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে মাদারীপুরে মহাসড়ক অবরোধ

ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে মাদারীপুর মোস্তফাপুরের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার মোস্তফাপুরে জড়ো হন তাঁরা। পরে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

অবরোধ চলাকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় ব্যানার-ফ্যাস্টুন হাতে স্লোগান দেন বক্তারা। পরে সোয়া ৩টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ সময় মাদারীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, এনসিপির জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. হাসিবুল্লাহ, যুগ্ম সমন্বয়কারী রুবেল মৃধা, কার্যকরী সদস্য হাফেজ আব্দুর রহিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ, সাবেক সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম সানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা: ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার বিচার দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। আজ শুক্রবার বেলা ২টা থেকে নরসিংদী শহরের গুরুত্বপূর্ণ জেলখানা মোড় এলাকায় ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তাঁরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন।

অবরোধের ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দূরপাল্লার যাত্রী ও চালকেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন এনসিপির প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল এবং জামায়াতের প্রার্থী ইব্রাহিম ভূইয়া। এ ছাড়া নরসিংদী ছাত্র ঐক্য জোটের নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তারা হাদি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ বিভিন্ন দাবি জানান।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

বিকেল ৪টার দিকে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা তাঁর উদ্দেশে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ প্রতিবেদন পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহারের কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শনিবারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি পরীক্ষা স্থগিত

গাজীপুর প্রতিনিধি
শনিবারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি পরীক্ষা স্থগিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এলএলবি প্রথম পর্বের শনিবারের (২০ ডিসেম্বর) ইকুইটি, ট্রাস্ট, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার ও হিন্দু আইন বিষয়ের পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিতকৃত পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।

আজ শুক্রবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমানের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২০২৪ সালের এলএলবি প্রথম পর্বের অন্যান্য পরীক্ষার সময়সূচি অপরিবর্তিত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যু: ঝিনাইদহে আ.লীগের ২ নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ শহরে আজ শুক্রবার সকালে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহ শহরে আজ শুক্রবার সকালে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ শহরে আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়িতে ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা হয়।/

রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী শহরে টহল বাড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। আজ শুক্রবার সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে পুলিশ অবস্থান করছে।

জানা গেছে, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে শহরে বিক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ করেন। এরপর তাঁরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের বাড়িতে ও অফিসে ভাঙচুরসহ আসবাব আগুন ধরিয়ে দেন। এর আগে বাসার দ্বিতীয়তলায় ভাঙচুর করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরপর শহরের হাটের রাস্তায় সদর পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাসুমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সময় বিক্ষুব্ধরা সাবেক সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

এদিকে এসব ঘটনার পর থেকেই শহরে জোরদার করা হয় নিরাপত্তাব্যবস্থা। শহরের হামদহ, মনুমেন্ট, পোস্ট অফিস মোড়, স্মৃতিসৌধ এলাকাসহ অন্য স্থানে টহলে রয়েছে পুলিশ।

জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের কার্যালয়ে কর্মরত অসিম বলেন, ‘হঠাৎ রাতে একদল মানুষ এতে ভাঙচুর শুরু করে। বাসার নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক ফাইলপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’

ঝিনাইদহ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে সারা দেশের মতো আমাদেরও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পুলিশের টহল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত