Ajker Patrika

শিশু আয়ানের মৃত্যু: হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করল বিশেষজ্ঞ কমিটি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আয়ান আহমেদ। ফাইল ছবি
আয়ান আহমেদ। ফাইল ছবি

খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় সাঁতারকূলে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি। আজ রোববার হাইকোর্টে জমা দেওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করা হয়। এর আগে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে প্রতিবেদন জমা দেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। মঙ্গলবার এই বিষয়ে শুনানি হবে।’

এ সময় শিশু আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ ও তাঁর আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে তদন্ত কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সুশংকর কুমার মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১২ তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। আমরা ৬ জানুয়ারি জমা দিয়েছি। আমাদের যতটুকু দায়িত্ব ছিল তা আমরা করেছি।’

২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সুন্নতে খতনা করানোর জন্য শিশু আয়ানকে সাঁতারকূল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান অভিভাবকেরা। সেখানে খতনা করার পর মারা যায় আয়ান।

ওই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। পরে আয়ানের পরিবারকে ৫ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদেশ অনুসারে আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে সে সময় ওই প্রতিবেদনকে একধরনের আইওয়াশ বলে মন্তব্য করেছিলেন হাইকোর্ট। পরে গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট নতুন করে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন প্রতিবেদন দিতে। ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ বি এম মাকসুদুল আলমকে।

নতুন করে হাইকোর্টে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর জন্য সাঁতারকূলে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দায়ী। কেননা এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি একটি নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান। এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না থাকায় এটি বৈধভাবে চিকিৎসা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে না। সেখানে অস্ত্রোপচার করার পরিবেশ যেমন ছিল না, তেমনি অস্ত্রোপচার পরবর্তী জরুরি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল না।

তদন্ত কমিটির সুপারিশে বলা হয়, সাঁতারকূলে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর জন্য দায়ী হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা উচিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া চিকিৎসা কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং শিশু আয়ানের মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ডাক্তার তাসনুভা মাহজাবীন ও অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সৈয়দ সাব্বির আহম্মদের বিরুদ্ধে বিএমডিসির আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলো।

সুপারিশে বলা হয়, চিকিৎসা-সংক্রান্ত লিখিত সম্মতিপত্রটি বাংলায় বড় বড় অক্ষরে স্পষ্ট ও বোধগম্যভাবে লিখতে হবে। যাতে রোগীর মা-বাবা বা অভিভাবকেরা সেটি সহজে পড়তে পারেন এবং চিকিৎসা ও তার পরবর্তী ফলাফল সম্পর্কে জেনেবুঝে লিখিত সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে পারেন।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সারা দেশের জন্য একই ধরনের সম্মতিপত্র প্রস্তুত করার জন্য সুপারিশ করা হলো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া যেসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক চিকিৎসা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, সেগুলো খুঁজে বের করে অবিলম্বে চিকিৎসা কর্মকাণ্ড বন্ধ করা এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হচ্ছে।

দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সাতটি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

সেগুলো হলো বাংলাদেশের সব মানুষের সুস্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যমান আইনগুলোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিদ্যমান আইনের সংস্কার করা। রেফারেল পদ্ধতির মাধ্যমে নিচ থেকে উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে।

একজন জেনারেল ফিজিশিয়ানকে দেখানোর পরে তিনি যদি কোনো রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে রেফার করেন, তাহলে তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এতে চিকিৎসা পদ্ধতি সহজ হবে এবং রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোয় রোগীর চাপ কমবে।

এতে আরও বলা হয়, অপরিকল্পিত, মানহীন (ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ) বন্ধ করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

একমাত্র বিএমডিসি কর্তৃক নিবন্ধিত ব্যক্তির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের সব নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য বৈশ্বিকভাবে অনুসারিত জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ও তা যথাযথভাবে ব্যবহার করা। চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ব্যক্তিকে তাঁদের যোগ্যতা অনুসারে ক্ষেত্রমতো প্রণোদনা প্রদান ও ভালো প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা উৎসাহিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

জাবি প্রতিনিধি 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা ও তাঁর স্বজনদের নামে থাকা চারটি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজিজুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শেখ পরিবারের নামে থাকা চারটি হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এসব হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখ হয়েছে ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হল’, শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘নবাব সলিমুল্লাহ হল’। এ ছাড়া শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই চব্বিশ জাগরণী হল’ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ফেলানী খাতুন হল’ নাম রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে রত্না বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক আটকা, দুর্ভোগে যাত্রীরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকাল ৯টার দিকে রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পাথরবোঝাই ট্রাক আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ওই পথে সব ধরনের যান চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক যাত্রী ও ওই পথে চলাচলকারীরা। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজের ওপর ওঠামাত্রই ব্রিজের দুটি পাটাতন ভেঙে যায়। মুহূর্তেই ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ধসে পড়ে এবং পুরো ট্রাকটি ব্রিজে আটকে যায়।

এতে দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টমটম, প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন। বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবসায়ীরা।

দুর্ঘটনার পর ব্রিজের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার জন্য যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ভাঙা অংশ অতিক্রম করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাকটি ব্রিজে উঠতেই জোরে শব্দ হয়। একটু পরই দেখি পাটাতন নিচে ধসে গেছে। ভাগ্য ভালো যে ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়ে যায়নি। তবে এখন তো ও পথে চলাচলকারীরা আটকা পড়ে আছে।’

যাত্রীরা জানান, রত্না বেইলি ব্রিজটি বহুদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—এমন আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। এদিকে যাত্রীদের দাবি, এখানে যেন বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যাতে প্রতিদিনের এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করার কাজ চলছে। পাথরবোঝাই ট্রাকটিতে বেশি লোড থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীর থেকে আব্দুর রশিদ (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

আব্দুর রশিদ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ছিলেন অটোরিকশাচালক; তবে নিয়মিত আড়িয়াল খাঁ নদে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা ছিল তাঁর নেশা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার দিকে ভাওয়ালেরচর এলাকায় নদীর পাড়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। লাশের পাশেই মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি ছিল। পরে স্বজনেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন। আব্দুর রশিদের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তিনি দুষ্কৃতকারীর হামলার শিকার হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির ভাই কাজল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত অটোরিকশা চালিয়ে তারপর নদীর পাড়ে বসে মাছ শিকার করে বাড়ি ফিরত ভাই। কিন্তু গতকাল রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। সকালে খবর পেয়ে নদীর পাড়ে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই।’

নিহত ব্যক্তির ছেলে হৃদয় বলেন, ‘রাতে বাড়ি না ফেরায় কল দিলে ফোন বন্ধ পাই। সকালে খবর শুনে নদীর পাড়ে এসে বাবার মরদেহ, মোবাইল ও অটোরিকশা পড়ে থাকতে দেখি।’

বেলাব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি পিবিআইকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬৭ বছর পর রামেক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অবশেষে ৬৮ বছরে পা দিতে চলা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে এলেও ভর্তির সুযোগ ছিল না। গুরুতর রোগীদের কিছু ক্ষেত্রে মেডিসিন বিভাগে রাখা হলেও, পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ডের অভাবে এতদিন অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হতো।

হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর এই প্রথম ২৫ শয্যার একটি সুসজ্জিত মনোরোগ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই নতুন ওয়ার্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বিন্যাস রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭ টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এ ছাড়া রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

এই ওয়ার্ডটি চালুর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল কলেজের স্বীকৃতি বজায় রাখা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চ মাসেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। পরিদর্শনকালে মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমে যাওয়ার এবং অ্যাক্রিডিটেশনে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে করে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বা পড়াশোনা করার সুযোগ কমে যেত। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এমন একটি ওয়ার্ড জরুরি ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ শুনে সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ দ্রুত এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন এবং গত বুধবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটি সত্যিই অবাক হওয়ার মতো বিষয়। আমরা প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগেগত ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে একজনও সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয়নি, যেখানে আগে প্রায় প্রতিদিনই এই রোগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত