Ajker Patrika

গণমাধ্যম ও সংস্কৃতি অঙ্গনে হামলা পরিকল্পিত মতাদর্শিক সন্ত্রাস: আনু মুহাম্মদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫১
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর সাম্প্রতিক ধারাবাহিক হামলাকে ‘পরিকল্পিত মতাদর্শিক সন্ত্রাস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অর্থনীতিবিদ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তাঁর মতে, এসব হামলা বিচ্ছিন্ন বা আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়; বরং একটি সুসংগঠিত ধর্মীয় ও ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গন, মুক্তচিন্তার পরিসর ও গণমাধ্যমকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব মন্তব্য করেন তিনি। ছায়ানট, উদীচী, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, নিউ এজ এবং সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশের শুরুতে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বৈষম্যহীন, মানবিক বাংলাদেশের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, সেই প্রত্যাশার পক্ষে যারা কথা বলেন, তারাই কেন আজ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন?’

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘হামলাকারীরা হঠাৎ আবির্ভূত হয়নি। যারা আক্রমণ করেছে, যারা উসকানি দিয়েছে—তারা বহুদিন ধরে সক্রিয়। এদের পেছনে ধর্মীয় উগ্রবাদী ও লুটেরা গোষ্ঠীর মেলবন্ধন জড়িত।’

আনু মুহাম্মদ জানান, কয়েক মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আক্রমণের আহ্বান এবং উসকানি প্রকাশ্যে দেওয়া হচ্ছিল।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘মব ভায়োলেন্স’-এর ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘পুলিশসহ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সামনেই অগ্নিসংযোগ হয়, ব্যাপক লুটপাট হয়। এই তৎপরতা সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থা সব জানে। আজকে যারা দেশে-বিদেশে মবে উসকানি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার নিষ্ক্রিয় কেন? যেখানে জনগণের স্বার্থ জড়িত, সেখানে সরকারের এই অথর্ব অবস্থান দেখতে পাই।’

সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, সারা দেশে সাংস্কৃতিক তৎপরতা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত এক বছরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, সংস্কৃতিবিরোধী ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাবিরোধী একটি পরিবেশ পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে।

সমাবেশে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজার রহমান লাল্টু। তিনি শরিফ ওসমান হাদি, দীপু চন্দ্র দাস ও আয়শা আক্তার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার; উদীচী, ছায়ানট, প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ দেশজুড়ে সংঘটিত সব মব ও সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত ও বিচার; সহিংসতায় উসকানিদাতাদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা; মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও প্রতিষ্ঠানকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ; জনগণের নিরাপত্তায় ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান তিনি।

সমাবেশ শেষে শাহবাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তাঁরা। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য, নীলক্ষেত ও কাটাবন হয়ে পুনরায় শাহবাগ অতিক্রম করে প্রেসক্লাব এলাকায় উদীচী কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মহাসচিব বিএনপিতে, জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এলডিপির কর্নেল অলি

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

তারেক রহমানের জন্য উড়োজাহাজে এ-১ আসন নির্ধারণ

এলাকার খবর
Loading...