Ajker Patrika

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহস জোগাচ্ছেন শিক্ষকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ফাইল ছবি
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ফাইল ছবি

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উত্তরা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন শিক্ষকেরা। স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ভয় ও আতঙ্কে থাকা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাহস জোগানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। পাশাপাশি স্কুল ক্যাম্পাসেও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাউন্সেলিং কার্যক্রম চলছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কথা হয় মাইলস্টোন স্কুলের ক্লাস ফাইভের টিউবরোজ শাখার শিক্ষক ফারজানা কাবেরীর সঙ্গে। সে সময় তিনি একজন শিক্ষার্থীর বাড়িতে ছিলেন। আজকের পত্রিকাকে এই শিক্ষক বলেন, ‘আমরা এলাকা ভাগ করে নিয়েছি। শিক্ষকেরা বাচ্চাদের বাসায় গিয়ে গিয়ে কথা বলছি। ওরা এখনো ট্রমাটাইজড। আমরা ওদের সাহস জোগানোর চেষ্টা করছি। আমাদের সঙ্গে কথা বলে ওরা কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হচ্ছে। অনেক অভিভাবকও কিছুটা আতঙ্কিত। আমরা তাঁদের সঙ্গেও কথা বলছি।’

শিক্ষক ও অভিভাবকেরা জানান, বিমান বিধ্বস্তের দিন যে শিশুরা স্কুলে ছিল, তারা তো বটেই, যারা সেদিন বাড়িতে ছিল, তারাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। টেলিভিশন ও মোবাইলে ভিডিওতে নিজেদের বন্ধু, সহপাঠীদের দগ্ধ অবস্থায় দেখে এবং স্কুল ভবন বিধ্বস্ত দেখে তারা ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিমানের শব্দ শুনেও তারা আতঙ্কিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বিমানবাহিনী ও বেসরকারি সংস্থা ব্র‍্যাক বিশেষ কাউন্সেলিং সেবা চালু করেছে। এই কাউন্সেলিং ইউনিটে প্রশিক্ষিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ কাউন্সেলররা (পরামর্শদাতা) সেবা দিচ্ছেন।

স্কোয়াড্রন লিডার ওয়ালিল্লাহিল বলেন, সোমবার থেকে বিমানবাহিনীর অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প শুরু হয়েছে। বেলা দুইটা পর্যন্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মিলিয়ে ১১৯ সেবা নিয়েছিল। আর দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১০ জনকে সেবা দেওয়া হয়।

মেয়েকে নিয়ে সেবা নিতে আসা সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘ওই দিনের পর থেকে প্লেনের শব্দ শুনলেও আমার মেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। কান্নাকাটি করছে। তাই এখানে নিয়ে এসেছি।’

স্কুলে কাউন্সেলিং সেবা চালু হলেও পাঠদান কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ছুটি বাড়িয়ে আগামী ২ আগস্ট (শনিবার) পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সেবায় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হটলাইন চালু

মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিক সেবা দিতে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান মঙ্গলবার জানান, মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বিশেষ কমিটি গঠন, আউটডোর সেল চালু, হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে বেড সংরক্ষণ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে আউটরিচ সেবা চালু এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টসের সঙ্গে সমন্বয়ে হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে। হটলাইন নম্বরগুলো হচ্ছে: সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা: ০১৮৩৫১৫৪৩৪১ / ০১৮৩৫১৫৫৫২১, বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা: ০১৮৩৫১৫৩২৬২ / ০১৮৩৫১৫৪৩৪০, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা: ০১৮৩৫১৫৩০০৫ / ০১৮৩৫১৫৬২৬২। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে একজন রোগী ভর্তি হয়ে সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এখনো চিকিৎসাধীন ৪৫

মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে এখনো ৪৫ জন বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৪ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত