Ajker Patrika

মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এআই দিয়ে পাঠদানের প্রদর্শনী করল এক্সামবাইনারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫০
মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এআই দিয়ে পাঠদানের প্রদর্শনী করল এক্সামবাইনারি

রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্কুল পর্যায়ে দেশের প্রথম এআই প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা প্রদর্শনী। গতকাল রোববার (১৬ নভেম্বর) প্রদর্শনীটির আয়োজন করে আধুনিক এআই প্রযুক্তিভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম এক্সামবাইনারি লিমিটেড। তথ্যভিত্তিক শিক্ষণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে সম্পূর্ণ এআই প্রযুক্তি নির্ভর ইন্টারফেসের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এ প্ল্যাটফর্ম।

প্রত্যক শিক্ষার্থীর জন্য এআই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যক্তি বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত এ আয়োজন অংশ নেন শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক। স্কুল পর্যায়ে শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার তুলে ধরার লক্ষ্যে অনুষ্ঠানে ‘এক্সামবাইনারি ফিউচার-রেডি অ্যাডাপ্টিভ লার্নিং উইথ এআই’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়। কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষার্থীদের শেখার ধরনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে তা নিয়ে সেমিনারে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে এক্সামবাইনারি প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) রাকিব সালেহ এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা সারজাহ ইয়াসমিন তাদের উদ্ভাবিত মাস্টারি লুপ ও উইকনেস ম্যাপিং প্রযুক্তি সবার সামনে উপস্থাপন করেন। প্ল্যাটফর্মটিতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দুর্বলতার জায়গাগুলো খুঁজে বের করে, সে অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক উন্নয়নের সুযোগ পাবেন। সেমিনারে দেখানো হয় কীভাবে অত্যাধুনিক এ প্ল্যাটফর্মে এআই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেকচার প্ল্যান, ওয়ার্কশিট ও প্রোগ্রেস রিপোর্ট তৈরি করে দিবে। শিক্ষকদের কাজের চাপ কমিয়ে শিক্ষার মান বৃদ্ধি করাই এক্সামবাইনারির অন্যতম লক্ষ্য। পাশাপাশি, এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মা-বাবারা জানতে পারবনে তাদের সন্তানেরা অ্যাকাডেমিক লক্ষ্য অর্জনে কতোটুকু এগোল বা তাদের বর্তমান অবস্থা কী।

এ বিষয়ে এক্সামবাইনারি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিটিও রাকিব সালেহ বলেন, এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক ব্যক্তি বিশেষায়িত শিক্ষা দেশের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করে তুলবে। তারা একবিংশ শতাব্দীর লার্নিং প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে নিজেদের অ্যাকাডেমিক যাত্রাকে আরও অর্থবহ করে তোলার সুযোগ পাবেন। আর এ লক্ষ্যেই যাত্রা শুরু করে এক্সামবাইনারি। আমার চাই, দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী তাদের সম্ভাবনা অনুযায়ী বিকশিত হোক। পাশাপাশি, শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও যেন প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের এ যাত্রায় সক্রিয় সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে পারেন।

এক্সামবাইনারি লিমিটেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা সারজাহ ইয়াসমিন বলেন, এক্সামবাইনারির যাত্রা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। আমাদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের কৌশল সম্পর্কে জানতে পারবেন, বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং বৈজ্ঞানিক ও তথ্যভিত্তিক পদ্ধতিতে ধারাবাহিক উন্নয়ন করতে পারবেন। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বমানের শিক্ষা সবার জন্য সহজলভ্য কররে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীই নয়, পাশাপাশি শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও এক্সামবাইনারি প্ল্যাটফর্ম থেকে উপকৃত হবেন।

শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্য অল-ইন-ওয়ান স্যলুশন এক্সামবাইনারি। প্ল্যাটফর্মটিতে মক ইন্টারভিউ দেয়া যাবে এবং বাস্তব সমস্যার ভিত্তিতে সমাধান নিয়ে কাজ করা যাবে। এছাড়াও, প্ল্যাটফর্মটিতে রয়েছে টেস্ট ফিচার, যেখানে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও দুর্বলতার জায়গা চিহ্নিত করে দেয়া হবে।

এক্সামবাইনারি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা অ্যাডাপ্টিভ অ্যালগরিদমের মাধ্যমে শিখতে পারবেন। প্ল্যাটফর্মটিতে তাদের জন্য রয়েছে প্র্যাকটিস সেশনের ব্যবস্থা এবং তা ট্র্যাক রাখার সুযোগ। এসব সুবিধার ফলে শিক্ষার্থীরা আরও দ্রুত ও কার্যকরীভাবে অ্যাকাডেমিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন। শিক্ষকেরা এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এনসিটিবি কারিকুলাম অথবা বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী হোমওয়ার্ক ও লেকচার পরিকল্পনা করতে পারবেন।

অন্যদিকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বিত শিক্ষার্থী তথ্য ব্যবস্থা তৈরি করতে পারবে, থাকবে রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট টুলস, স্বয়ংক্রিয় প্রশাসনিক কাজের ধারা। সার্বিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম হবে আরও দক্ষ এবং শিক্ষা প্রতিহঠানের উন্নয়নে আরও কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে। আর অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা নিয়ে তাৎক্ষণিক নোটিফিকেশন পাবেন, প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন, পারফরমেন্স অ্যানালিটিকস পাবেন ও লাইভ প্রোগ্রেস ট্র্যাকিং করতে পারবেন। এর মাধ্যমে অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাযাত্রাকে আরও সমন্বিত ও ফলপ্রসূ করে তুলতে পারবেন।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের ছয়টি প্রতিষ্ঠানে সফলভাবে পাইলট প্রকল্প সম্পন্ন করেছে এক্সামবাইনারি এবং বাংলাদেশে প্রথমবারের মত চালু করেছে মাস্টারি-বেইজড এআই লার্নিং আর্কিটেকচার। বর্তমানে, প্ল্যাটফর্মটিতে সক্রিয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ হাজার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় মাইক্রোবাসের ধাক্কায় নারী নিহত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় আলতা বেগম (৬৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। এ সময় অটোভ্যানচালকসহ আটজন আহত হন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার বকচর এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আলতা বেগম উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের পুনতাইড় গ্রামের মৃত আজহার আলীর স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাতে উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের চেরাগাড়ী গ্রামের বিয়ে বাড়ি থেকে একটি অটোভ্যানে আলতা বেগমসহ আট যাত্রী বাড়ি ফিরছিলেন। অটোভ্যানটি গোবিন্দগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বকচর এলাকায় পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস যাত্রীবাহী অটোভ্যানকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই আলতা বেগম নিহত হন। এ সময় চালকসহ আটজন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার পর মাইক্রোবাসটি দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত নারীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মরা গাছ ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থানচি বাজারের বাসিন্দারা

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৮
ঝুঁকিপূর্ণ এই গাছটির নিচে ও আশপাশে বসতঘর ও দোকানপাট রয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝুঁকিপূর্ণ এই গাছটির নিচে ও আশপাশে বসতঘর ও দোকানপাট রয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি বাজার এলাকায় একটি বৃহদাকার মরা গাছ দীর্ঘদিন ধরে অপসারণ না করায় স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঝুঁকিপূর্ণ গাছটির নিচে ও আশপাশে বসতঘর ও দোকানপাট থাকায় যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মৃত গাছটির নিচে প্রায় ২০টি পরিবার বসবাস করছে। এসব পরিবার ১৯৮০-এর দশক থেকে উপজেলা প্রশাসনের জায়গায় বাঁশ, কাঠ ও ঢেউটিন দিয়ে নির্মিত টিনশেড ঘরে বসবাস করে আসছে। ঘরগুলোর মাঝখানে একটি ছোট ঝিরি বা নালা রয়েছে। গাছটির দক্ষিণ পাশে আরও প্রায় ২০টি ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, গাছটি পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে এবং এর গায়ে লতাগুল্ম ও আগাছা জন্মেছে। সামান্য ঝড়বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাছটি ভেঙে পড়লে নিচে থাকা ঘরবাড়ি ও দোকান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে জানমালের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

গাছের নিচে বসবাসকারী বাসিন্দা দিল মোহাম্মদ দিলু, পলাশ ধর, মিল্টন দাশ ও শান্ত দাশ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। অথচ ঝুঁকিপূর্ণ এই গাছটি অপসারণে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

দোকান ব্যবসায়ী খেমংথুই মাস্টার ও পলাশ দাশ বলেন, সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত মৃত গাছটি কেটে ফেলার জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে থানচি বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এত দিন বিষয়টি খেয়াল করিনি। আপনারা আমার নজরে এনেছেন। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উপলক্ষে বর্তমানে সরকারি কার্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে। ছুটি শেষে অফিস খোলার পর প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হবে এবং গাছটি অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সচেতন মহলের মতে, জননিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত প্রশাসনের নজরে বিষয়টি এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্ধকারকে দোষারোপ নয়, মোমবাতি হয়ে উঠতে হবে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
বদিউল আলম মজুমদার। ফাইল ছবি
বদিউল আলম মজুমদার। ফাইল ছবি

অন্ধকারকে দোষারোপ না করে মোমবাতি হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

গতকাল শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘কোন পথে সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।

সুজন সম্পাদক বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে অতীতের ১৫-১৬ বছরের অন্যায় অসংগতি থেকে মুক্ত করতে। এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার পর সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে তাদের। যেই লক্ষ্য নিয়ে তারা ক্ষমতার আসনে বসেছিল, তা অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে সত্য। কিন্তু তাদের গালিগালাজ করলে সমস্যার সমাধান হবে না। অন্ধকারকে দোষারোপ না করে আমরা যদি মোমবাতি হয়ে এগিয়ে আসি, তাহলেই অনেক সমস্যা দূর করা যেতে পারে।’

ঐকমত্য কমিশনের বিষয়ে সুজন সম্পাদক বলেন, ‘এই সরকারের ছয়টি সংস্কার কমিশন যখন তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তখন আমরা সুপারিশগুলো নিয়ে ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা করেছি। আমরা ১৬৬টি প্রস্তাবনা বেছে নিয়েছিলাম। অনেক সিদ্ধান্ত নির্বাহী আদেশে বা অধ্যাদেশ জারি করে বাস্তবায়ন করা যেত, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।’

সুজন সম্পাদক আরও বলেন, ‘৮৪টি বিষয়ে ৩০টি রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য পেয়েছি। এর মধ্যে কিছু নির্বাহী আদেশে আবার কিছু গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। গণভোট আয়োজিত হতে চললেও সরকার সেভাবে প্রচার চালাচ্ছে না। আমরা সুজনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি মানুষ যেন জেনে-বুঝে গণভোটে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’

নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ির প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি, মনোনয়ন-বাণিজ্য হচ্ছে। এগুলো আমরা সবই জানি। আমরা আওয়াজ ওঠালে হয়তো পরিবর্তন হবে না, কিন্তু তাই বলে তো চুপ থাকব না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এই সব স্থানে স্বচ্ছতা আনার।’

মতবিনিময়ে অংশ নেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বিসহ অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলা: ২১৩ ভাটার ১৯৬টিই অবৈধ

  • কৃষিজমিতে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ
  • প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে এসব ভাটা, দাবি স্থানীয়দের
  • পর্যায়ক্রমে সব ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে: কর্মকর্তা
দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১৩
অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একটি ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠ। সম্প্রতি কুষ্টিয়ার একটি উপজেলায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একটি ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠ। সম্প্রতি কুষ্টিয়ার একটি উপজেলায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলায় মোট ইটভাটা ২১৩টি। এর মধ্যে ছাড়পত্র নিয়ে চালানো হচ্ছে মাত্র ১৭টি। বাকি ১৯৬টিই চলছে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যেসব ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই, সেগুলোর মালিকেরা প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ভাটা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া কৃষিজমিতে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোয় প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, যা জনজীবন ও কৃষির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বৈধ ইটভাটার মধ্যে ভেড়ামারা উপজেলায় ৩টি, দৌলতপুরে ১টি, কুমারখালীতে ৯টি এবং খোকসা উপজেলায় ৪টি রয়েছে। এসব ইটভাটার মধ্যে ২টি অটো ব্রিকস এবং বাকি ১৫টি জিগ-জ্যাগ। কুষ্টিয়া সদর এবং মিরপুর উপজেলায় বৈধ কোনো ইটভাটা নেই। অবৈধ ১৯৬টি ইটভাটার মধ্যে ১টি অটো, ৪২টি জিগ-জ্যাগ, ২৯টি ড্রাম চিমনি ও ১২৪টি উচ্চতর পাকা ফিক্সড চিমনি।

এদিকে অবৈধ ২১টি ইটভাটার মালিক হাইকোর্টে রিটের কারণে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে না বলে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয়দের দাবি, সরকারি আইনে কৃষিজমি নষ্ট করে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু তা সত্ত্বেও কমপক্ষে প্রতিটি ইটভাটার জন্য তিন-চার একর কৃষিজমি নষ্ট করে ভাটা স্থাপন করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। আইনের ফাঁকফোকর ডিঙিয়ে জেলায় গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ইটভাটা। প্রতিবছরের মতো এবারও চলতি মৌসুমের শুরুতেই কৃষিজমি ও নদীর পলি মাটি কেটে ইটভাটাগুলোতে প্রস্তুত করা হচ্ছে নতুন ইট। এতে কৃষিজমি হ্রাস ও উদ্বেগজনকভাবে কমছে খাদ্যশস্য উৎপাদন।

জানা গেছে, ভাটার লাইসেন্স পেতে প্রস্তাবিত আবেদনের সঙ্গে ইট তৈরিতে মাটির উৎস উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে হলফনামা দাখিলের বাধ্যতামূলক শর্ত থাকলেও ভাটার মালিকদের অধিকাংশই তা মানছেন না। ফলে বেআইনিভাবে কৃষিজমি ও নদী তীরের পলি মাটি কেটে প্রস্তুত করা হচ্ছে ইট।

কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইটভাটার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিজমি। এ ছাড়া কাঠ পুড়িয়ে উজাড় করা হচ্ছে ফলদ-বনজ সম্পদ। ইটভাটার নির্গত ধোঁয়া-ছাই ফসলের ক্ষতি, পরিবেশদূষণসহ জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করছে চরমভাবে।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বৈধ ভাটামালিক বলেন, ‘ইটভাটা মালিক সমিতির শক্তিশালী সিন্ডিকেটের প্রভাব, অর্থবিত্ত ও তদবিরে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা অবৈধ ভাটা উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না। এ ছাড়া কতিপয় ভাটার মালিক উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সৃষ্টি করেছেন আইনি প্রতিবন্ধকতা। প্রতিবছর কিছুসংখ্যক ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলেও পরে অদৃশ্য কারণে তা আর বেশি দূর এগোয় না।

কুষ্টিয়া ইটভাটা মালিক সমিতি একাংশের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলী বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণে ৭৩ ইটভাটা রয়েছে। ৮ থেকে ৯টা বাদে সবাই কয়লা ব্যবহার করে।’

পরিবেশের ছাড়পত্র আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কারও পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। যদি তা-ই হয়, তাহলে সবাই অবৈধ। আমরা নিয়মিত সরকারকে রাজস্ব দিচ্ছি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল থেকেই বন্ধ রয়েছে।’

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপপরিচালক মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোতেও অভিযান চালানো হবে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে সব ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত