Ajker Patrika

ছদ্মবেশী গৃহকর্মী অজ্ঞান করে লুটে নেয় টাকা ও গয়না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছদ্মবেশী গৃহকর্মী অজ্ঞান করে লুটে নেয় টাকা ও গয়না

একেক সময় একেক ছদ্মনাম ব্যবহার করে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে টাকা ও গয়না লুটে নিতেন বিলকিস নামের এক নারী। গত ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি নুরজাহান নাম ব্যবহার করে গৃহকর্মী হিসেবে হাতিরঝিল থানার দিলু রোড এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার আলীর বাসায় কাজ নেন। নিয়োগের ৩ দিনের মাথায় তিনি মনোয়ার আলীর স্ত্রীকে অজ্ঞান করে টাকা ও গয়না লুটে নেন। 

মনোয়ার আলী পরে জানতে পারেন, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সোয়া ১১টার মধ্যে স্ত্রী রেজিনা রহমানকে (৫৫) বাসায় একা পেয়ে বাসায় থাকা সাড়ে ৪ লাখ টাকা, একটি স্বর্ণের বালা, একটি স্বর্ণের চামচ নিয়ে পালিয়ে যান নুরজাহান ও তাঁর এক সহযোগী। ভুক্তভোগী মনোয়ার আলী হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। 

ওই মামলার দায়িত্ব থানা–পুলিশ থেকে পিটিআইএর ওপর ন্যস্ত হওয়ার পর খোঁজ মেলে ছদ্মবেশী নুরজাহানের। বেরিয়ে আসে তাঁর আসল নাম বিলকিস।

বিলকিসকে গ্রেপ্তারের পর পিবিআই জানায়, পেশাদার চক্রের সদস্য তিনি। একেক বাসায় একেক নামে গৃহকর্মীর কাজ নিতেন তিনি। এরপর সুযোগ বুঝে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করে পালিয়ে যেতেন। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও ৬০ ফিট এলাকার পিবিআই (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম। 

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গৃহপরিচারিকা সেজে বাসায় কাজ নিয়ে সুযোগ বুঝে কৌশলে গৃহকর্ত্রীকে অজ্ঞান করে বাসার নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্য নূরজাহান। তিনি মোসা. বিলকিস বেগম, কনা, রুজিনা ও নুরজাহান (৪০) নামে একাধিক বাসায় চুরি বা লুট করেছে। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ দল। তাঁর স্বামীর বাড়ি ময়মনসিংহে ধোবাউড়ায় হলেও এখনো তিনি স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেন বাবার বাড়ি জামালপুর মেলান্দহ রুকনাই গ্রামকে। 

বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পাশের বাসার দারোয়ান গোলাম মোস্তফার সহযোগিতায় ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী মনোয়ারের নিউ ইস্কাটনের বাসায় কাজ নেয় নুরজাহান। মামলার বাদী সরল বিশ্বাসে ধূর্ত নুরজাহানকে তাঁর বাসায় কাজ করার জন্য প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দেন। এর তিন দিন পরই চুরির ঘটনা ঘটে। 

মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর হাতিরঝিল থানার এসআই রহমত উল্লাহ রনির ওপর তদন্তভার অর্পিত হয়। তিনি তদন্ত শেষে মামলার ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। হাতিরঝিল থানা-পুলিশ কর্তৃক দাখিলকৃত চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে বাদীর না-রাজির আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। 

এরপর সে মামলা তদন্ত করছিল ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। পিটিআইএর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, বিভিন্ন বাসা–বাড়িতে কাজের মহিলা সেজে কৌশলে বাসার লোকজনকে অজ্ঞান করে সুযোগ বুঝে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্যদের শনাক্তকরণসহ গ্রেপ্তারে একটি টিম গঠন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল গ্রেপ্তার হন নুরজাহান। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর বলেন, নুরজাহান ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ নেওয়ার সময় ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করতেন। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরজাহান নিউ ইস্কাটনের ওই বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা এবং হাতিয়ে নেওয়া স্বর্ণালংকার ডিএমপি ঢাকার খিলক্ষেত থানা এলাকা এবং জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানা এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করার কথা স্বীকার করেছেন। 

পিবিআই (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) প্রধান বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন বাসায় একই কৌশলে ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথাও স্বীকার করেছে। পিবিআই অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে নুরজাহানের নামে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানা, ভাটারা থানা, উত্তরা পশ্চিম থানায় মোট চারটি চুরির মামলা রয়েছে। 

শেরে বাংলা নগর থানার উল্লেখিত মামলায় আসামি বিলকিস নামে সোহেলের বাসা থেকে ৪০ হাজার টাকা, ভাটারা থানায় মামলায় রুজিনা (৩৮) নামে অজ্ঞাত ঠিকানা ব্যবহারে ভুক্তভোগী সিদ্দিকুর রহমানের বাসা হতে নগদ ১০ লাখ টাকা ও আনুমানিক তিন ভরি ওজনের বিভিন্ন প্রকারের স্বর্ণালংকার লুট করেন। উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় কনা ভুক্তভোগী মুশফিক ইসলামের বাসা থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা ও সোয়া ৫ লাখ মূল্যের স্বর্ণালংকার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ তিন থানার মামলার ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সংশ্লিষ্ট থানা–পুলিশ। যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। 

পেশাদার এ প্রতারক নারীর পেছনে আরও কেউ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর বলেন, পিবিআই ঢাকা মেট্রোতে (উত্তর) তদন্তাধীন হাতিরঝিল থানার মামলায় লুণ্ঠিত নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারসহ তাঁর সঙ্গে আরও কারও যোগসাজশ রয়েছে কিনা তা জানতে রিমান্ড চেয়ে তাঁকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত