Ajker Patrika

বেইলি রোডে আগুন, তারপর...

তোফাজ্জল হোসেন রুবেল ও রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে আগুনে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর ওই রোডের ১৩টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে আগুনে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর ওই রোডের ১৩টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে আগুনে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর ওই রোডের ১৩টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর নগরীর আরও কিছু স্থানে রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায় সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে পুরো রাজধানীকে নিরাপদ করার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের কোনো রূপরেখা নেই। পোড়া ভবনটির কী হবে, তা-ও বলতে পারছে না কেউ। ওই ঘটনায় করা পাঁচটি তদন্ত কমিটির মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। অন্য কমিটিগুলোও কিছু সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তবে কোনো সুপারিশ বাস্তবায়িত হবে কি না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সন্দিহান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। তদন্ত কমিটিও কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। অভিযান এখন যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’

গত ২৮ মার্চ বিকেলে বেইলি রোডে গিয়ে দেখা যায়, আটতলা গ্রিন কোজি কটেজের নিচে পড়ে আছে ভাঙা কাচের টুকরা। সামনের ফুটপাত ঘেঁষে ব্যারিকেড দেওয়া। ফুটপাত দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে মানুষ। মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম নামের এক পথচারী বলেন, ভবনটির সামনের অংশ পরিষ্কার না করেই ফুটপাত খুলে দিয়েছে। ঝুঁকি ভেবেও চলতে হচ্ছে। সড়ক দিয়ে তো আর হাঁটা যায় না।

সামনে দাঁড়িয়ে পোড়া চিহ্ন দেখছিলেন চার নারী ও এক শিশু। কিছুক্ষণ পর ভবনটি দেখছিলেন মাঝবয়সী আরেক ব্যক্তি। কাছে গিয়ে জানা গেল, তাঁর নাম মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘এক মাস হয়ে গেল এখনো ভবনটি পড়ে আছে। মানুষের শোক শেষ হয়ে গেলে আবার আগের মতোই চলবে হয়তো।’

বাইরে থেকে ভবনটি দেখেই এখনো বোঝা যায়, আগুন কতটা ভয়াবহ ছিল। কয়েকটি তলায় পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া আসবাব। আগুন নেভাতে ব্যবহৃত পানি জমে আছে বেসমেন্টে। নিচতলায় লাগানো ‘ক্রাইম সিন’ লেখা ফিতা। নিচতলায় বসা কয়েকজন পুলিশ সদস্য। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রমনা থানার সহকারী উপপরিদর্শক আহসান হাবিব বলেন, ‘আমরা ২৪ ঘণ্টা ভবনের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্ব পালন করছি। ভেতরে কারও ঢোকার সুযোগ নেই। ভবনটিতে যাঁরা ব্যবসা করতেন, তাঁরাও কেউ আসেন না। কিছুই সরানো হয়নি।’

গত ২৯ ফেব্রুয়ারির আগুনে আহত আরও ১৫ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবাই বাড়ি ফিরে গেছেন। নিহতদের পরিবার ও আহত অনেককেই আর্থিক সহযোগিতা করেছে জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এসেছে, তাদের আমরা সহযোগিতা করেছি। নিহতদের ১৩টি পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ১০ হাজার এবং ২ জনকে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।’

আহত রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘বাসায় এসে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছি। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় জেলা প্রশাসন থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিল। অফিস থেকেও ওষুধের টাকা দিয়েছিল।’

স্বামীর সঙ্গে ওই ভবনে গিয়ে আহত হয়েছিলেন উম্মে হাবিবা সুমাইয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনো ইনহেলার ব্যবহার করতে হচ্ছে। শ্বাসনালিতে ক্ষত রয়েছে।’

বেইলি রোডের একাধিক দোকানি জানান, গ্রিন কোজি কটেজসহ বেইলি রোডের রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রতিবছর রমজানে দুপুরের পর থেকেই ইফতারি কেনার জন্য ব্যাপক ভিড় থাকত। আগুনের পর বেইলি রোডের রেস্টুরেন্টগুলোতে বেচাকেনায়ও ভাটা পড়েছে।

গ্রিন কোজি কটেজের পাশের ভবনেই পিৎজা হাট। কর্মী মুনিয়া বলেন, আগে দিনে এক-দেড় লাখ টাকা বিক্রি হতো, এবার ৬০ হাজারের বেশি হচ্ছে না। রোজার শুরুতে অবস্থা আরও খারাপ ছিল।

আগুনের ঘটনায় শুধু কলকারখানা অধিদপ্তরের কমিটি তদন্ত শেষ করেছে। কমিটির সদস্যসচিব ও উপমহাপরিদর্শক মো. আকিদ-উল-হাসান বলেন, দোতলার একটি কফিশপের ইলেকট্রিক কেটলি থেকে আগুনটা লাগে। তারা নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পাশেই সিলিন্ডার থাকায় সেখানে আগুন লেগে রান্নাঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, সিঁড়ির পাশে প্রতিটি তলায় সিলিন্ডার ছিল। ফলে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন থাকায় আগুন বা ধোঁয়া বাইরে যেতে পারেনি। ধোঁয়ার কারণেই অনেকে মারা যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরাপত্তা, লাইসেন্স, শ্রমিকদের বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এমনকি একটি মামলাও করা হয়েছিল। তারপরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনায় ২০-২৫ দিন আগে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তদন্তকাজ এগোচ্ছে। আলামত সংগ্রহের পর আমাদের ফরেনসিকে পরীক্ষা চলছে। রিপোর্ট এখনো পাইনি।’

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। চায়ের কেটলি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সেখানে গ্যাসের উপস্থিতির ফলে আগুন ছড়িয়ে যায়। ভবন থেকে বেরোনোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ভেন্টিলেশন ছিল খুবই কম। ধোঁয়ার কারণেই অনেকে মারা যায়। ভবনের ধরন পাল্টানো হয়েছে। বাণিজ্যিক অফিস ভবনকে রেস্তোরাঁ করা হয়েছে। অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনাও ছিল না।

রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘শিগগির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। এর বেশি বলতে পারছি না।’

আগুনের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে কমিটি করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কমিটিকে চার মাসের মধ্যে কারণ অনুসন্ধানসহ এর জন্য কারা দায়ী তা খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, রাজধানীতে একটি স্থাপনার অনুমোদন এবং সেখানে রেস্তোরাঁ করতে কমপক্ষে ১০টি সরকারি সংস্থার অনুমতি লাগে। সংস্থাগুলো হলো রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, ডিপিডিসি, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা ওয়াসা এবং এনবিআর। গ্রিন কোজি কটেজেও অধিকাংশ সংস্থারই অনুমোদন ছিল।

রাজউকের তদন্তকাজে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব সংস্থার কাছে তদন্তের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তারা জবাব দেয়নি। কীভাবে রেস্তোরাঁটি অনুমোদন পেয়েছিল, তা-ও জানায়নি। ভবনমালিক, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁমালিকদের চিঠি দিয়েও পাওয়া যায়নি। এই অবস্থায় কিছু সুপারিশ দিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) আরিফুল হক বলেন, ‘আমাদের একটি কমিটি কাজ করছে। তারা রাজস্ব বিভাগ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করেছে। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগুনের ঘটনায় অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের যেমন দায় আছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলতে দেওয়ায় বর্তমান কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, স্থাপনাটির এখন যে অবস্থা, তাতে ব্যবহারের আগে সামগ্রিক কারিগরি দিক মূল্যায়ন করে দেখা উচিত। যদি কাঠামোগত ক্ষতি না হয়ে থাকে, তাহলে পুনরায় তা মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা যাবে। তিনি বলেন, আগুনের পর কিছু বিচ্ছিন্ন অভিযান চলেছে। কিন্তু এসব অভিযানে সফলতা আসবে না। পুরো রাজধানীকে নিরাপদ করার জন্য সমন্বিতভাবে কী কী অভিযান চলতে পারে, তার একটি গাইডলাইন তৈরি করা উচিত টাস্কফোর্স বানিয়ে। কিন্তু তেমন কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত