Ajker Patrika

শিক্ষকের এমন নিষ্ঠুর বয়ানে আমরা হতবাক: চুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
শিক্ষকের এমন নিষ্ঠুর বয়ানে আমরা হতবাক: চুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে একটি বাসের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই ছাত্র নিহত হয়। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছেন। 

চুয়েটের মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (হিসাববিজ্ঞান) ড. সুমন দে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ২য় বর্ষের (২১ ব্যাচ) পানি কৌশল বিভাগের ক্লাস প্রতিনিধি শিক্ষককে মুঠোফোনে ক্লাস বর্জনের বিষয়টি অবগত করলে তিনি (ড. সুমন দে) বলেন, ‘সিভিলের পোলা মরসে, তোমরা কেন ক্লাস করবা না? নিজের সন্তানতুল্য ছাত্রদের মৃত্যুতে একজন শিক্ষকের এমন নিষ্ঠুর বয়ানে আমরা (চুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী) হতবাক। 

চুয়েটের সাবেক ১৩৭ জন শিক্ষার্থী এক যৌথ বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বলেন, ভুলে গেলে চলবে না যে একেকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর পেছনে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং পারিবারিক বিনিয়োগই শুধু জড়িত নয় বরং অনেক মানুষের স্বপ্ন পূরণের দায়ভার নিয়েই শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসে। 

এই কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুধু কিছু সম্ভাবনাময় প্রাণ ঝরে গেল তা নয় বরং একটি পরিবারের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তারও মৃত্যু ঘটল। এই সামষ্টিক ক্ষতির পরিমাণ কোনো অর্থমূল্যেই নিরূপণ করা সম্ভব নয়। 

দুইজন শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে রাস্তায় নেমে এলে একজন শিক্ষকের বিতর্কিত মন্তব্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তা প্রশমনের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে। নিজের সন্তানতুল্য ছাত্রদের মৃত্যুতে একজন সম্মানিত শিক্ষকের এমন নিষ্ঠুর বয়ানে আমরা হতবাক! আমরা অবিলম্বে তার প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনার দৃষ্টান্ত দেখতে চাই। 

এর আগেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাসবাণী শোনানো হয়েছিল কিন্তু দাবি শতভাগ কখনোই পূরণ হয়নি। চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমরা কোনো আশ্বাসকে আর বিশ্বাস করি না। 

এইবারের যে সংগ্রাম, সেটি হোক শতভাগ দাবি আদায়ের সংগ্রাম। আমরা, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবর্তের সাবেক শিক্ষার্থীরা বর্তমান শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন পূর্ণ সংহতি জানাই এবং পাশাপাশি দেশবাসীকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মাঠে নেমে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাই। 
  
আজ বুধবার পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, বাংলাদেশের সড়কগুলোয় মৃত্যুর দীর্ঘ মিছিল দেখে এখন আর এগুলোকে দুর্ঘটনা বলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এসব মৃত্যুকে ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’ বলে মনে করি। 

চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়কটি হাটহাজারি, দক্ষিণ রাউজান, রাঙ্গুনিয়া এবং কাপ্তাই উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াত এবং অর্থনীতি ও পর্যটনের লাইফলাইন হলেও এই সড়কটি সব সময়ই প্রশাসনের সুদৃষ্টি থেকে বঞ্চিত। দেশের শীর্ষস্থানীয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্র এবং রাউজান তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের মত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই অঞ্চলে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও এই সড়কটির দুরবস্থা এবং নৈরাজ্য আমাদের বঞ্চিত, ব্যথিত ও হতাশ করে তোলে। 

এর আগেও ২০১৬ সালে ১০ আবর্তের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাইমিন সিয়াম, ১৫ আবর্তের শিক্ষার্থী তাহমিদ এর মৃত্যু হয় এই সড়কে। সিয়ামের মৃত্যুর পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ৮ দফা দাবিনামা উত্থাপন করে আন্দোলন সংঘটিত করে এবং বেশ কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়। যদিও সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায় নি। কিছুদিন পরেই নৈরাজ্য ফিরে আসে এবং ক্রমাগত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে থাকে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীই নয় বরং অনেক এলাকাবাসীও এই হত্যাকাণ্ডের শিকার। এই নৈরাজ্যের পেছনে মূল অনুঘটক হচ্ছে সরু রাস্তা, ফিটনেস এবং লাইসেন্সবিহীন যানবাহন, সড়কে রাজনৈতিক চাঁদাবাজি এবং পরিবহনসংকট। 

বিবৃতিদানকারী সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে- জোবায়ের জ্যোতি, অটল ভৌমিক, সোহানুর রহমান সৈকত, সুজিত রঞ্জন দাশ, অনিরুদ্ধ দাশ, মনীষী রায়, মিনহাজুল ইসলাম রিয়াম, ওমর ফারুক, শেখ নাহিয়ান, মাহবুব সোবহান চৌধুরী, মাউল কাজিম আখতার, কৌশিক চন্দ্র, আহসান হাবিব আকাশ, মীর তাইমুর জুবায়ের, মুয়িদ উদ্দীন চৌধুরী, মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, শিশির কুমার দাস, সুনান মাশরুর মিকদাত, রাহাত ইকবাল, ফাতেমা ইসলাম তানিয়া, সৌরেন পাল, মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, মিঠুন চন্দ্র নাথ, অনিন্দ্য নন্দী, আশেকুল ইসলাম, পিয়াল দাশ গুপ্ত, এস এ সুজন, সেলিম আহমেদ, সঞ্জয় হালদার, আসিফ ইফতি, ফাহমিদা লিজা পিয়া, তুর্জয় ধর দীপ্ত, সিরাজুল ইসলাম সৈকত, আতিকুজ্জামান উল্লাস, 

পাভেল আহমেদ, কেফায়েত ইসলাম, মোহাম্মদ জাহেদ মুরাদ সানি, মোহাম্মদ ফাহিম শাহরিয়ার সাকিব, শহীদুল ইসলাম, সীমান্ত পাল, মোহাম্মদ আহসানুল ইউসূফ ইমন, শিবলি নোমান, মাহির ফয়সাল রাহাত, সুদীপ্ত ভৌমিক, পারিজাত দেবনাথ, মোহাম্মদ ওয়াসাফ সাদাত, আল আমীন, শারাহ মেহজাবীন, প্রবাল সিংহ, নাওমি সুবায়ের, মিনহাজুল আবেদীন, মো. আরিফুল ইসলাম, সালেহা ফাতেমা, রাফিউল্লাহ আরিফিন, অঙ্কুর দাশ অভি, রিকু মোহরের, প্রীতক কুণ্ডু, রিয়াদ হাসান লিখন, ঐশি সরকার দিবা,

দীপ্তনীল রায়, আরিফুল ইসলাম, মো. মোস্তাকিম মুকিত, ইমরান কবির, মো. কামরুল আনাম জয়, জাহিন দিয়ান কাব্য, জেড এম মাহিন, এস এম রিয়াজুল আলম, রাকিবুল ইসলাম, মৃত্যুঞ্জয় কর পিয়াল, মোহাম্মদ সাঈদ আনোয়ার, মির্জা আসিফ হায়দার, অংথাইচিং মারমা, আরিফ মাহমুদ শিকদার, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল উদয়, আননূর আফসীন সিদ্দিকী, এস এম রাকিবুল ইসলাম, জয়ন্ত দাশ, রিজভী আহমেদ, মাহবুব সানি, তাসনিম আলম নিশাত, পীযূষ বিশ্বাস, সুবির সরকার, মুহতাসীন রিয়াসাদ, মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ, মঞ্জুরুল আলম প্রান্ত, আবিদ উর রহমান, ঋত্বিক চৌধুরী, মো. রাফিউল হোসেন, ইফতিখার আজিম, মো. ফারহান শাহরিয়ার, রায়হান আল মারুফ চৌধুরী, 

মো. রিফাত আমীন, দেবজ্যোতি দাস, নয়ন চৌধুরী, মো. তৌহিদুল ইসলাম নাঈম, নাজমুল হাসান হৃদয়, মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মো. আব্দুল্লাহ শিকদার, তানভীর মাহমুদ, তৌহিদ ধ্রুব, জনি নাথ, মো. আরিফুল হক, আকিব বিন নাসিম, মো. বায়েজিদ-বিন-ইসলাম, মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, দীপন মুখার্জি, অপু দেবনাথ, মোহাইমিন শোভন, অর্ঘ্য বিশ্বাস, সাদমান সৌমিক ইভান, সাজিদ উজ্জামান জিশান, ফাইরুজ হুমায়রা ফারিন, শারদ চৌধুরী, রেদোয়ান হোসেন, মো. সাজ্জাদ উল ইসলাম, মো. আসিফ ইকবাল, ফাহাদ বিন ফারুক, মুহাইমিনুল ইসলাম সার্থক, রোমান শেখ, মোহাম্মদ আশিকুল আলম, রাফাত হোসেন, রাতুল ইসলাম, জেবিন ফৌজিয়া, মঈনুদ্দীন শিপন, শেখ ফারাহ আদৃতা, আবরার আহমেদ চৌধুরী, তানজিদ নাহিয়ান, হাসিবুল হাসান, দাউদ ইব্রাহীম, জিসান হায়াত, ধ্রুব নাগ, জামিলুর রেজা মজুমদার, কিশোর রায়, মঈন উদ্দীন আহমেদ বাবর, জারীন তাসনিম বিদিতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত