Ajker Patrika

দাফনের ৩৬ দিন পর ছাত্র আন্দোলনে নিহত শাকিল-সবুজের লাশ উত্তোলন

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ৫২
দাফনের ৩৬ দিন পর ছাত্র আন্দোলনে নিহত শাকিল-সবুজের লাশ উত্তোলন

ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত জাকির হোসেন শাকিল ও মো. সবুজের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সোনাগাজী ও লক্ষ্মীপুর থেকে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ৩৬ দিন পর তাঁদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। 

গতকাল বিকেল ৫টার দিকে সোনাগাজী উপজেলার মান্দারী গ্রাম থেকে শাকিলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এম ইরফান উপস্থিত ছিলেন। 

এদিন বেলা ১টার দিকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী এলাকা থেকে মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত অটোরিকশাচালক মো. সবুজের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আবদুল্লাহ-বিন-শফিক এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কমল কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) আদালত ময়নাতদন্তের জন্য সবুজের মরদেহ উত্তোলনের আদেশে দেন। 

এর আগে গত ১৩ আগস্ট মহিপালে নিহত শিক্ষার্থী জাকির হোসেন শাকিলের মা কোহিনূর আক্তার বাদী হয়ে ৭১ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত শাকিল সোনাগাজী উপজেলার কুঠিরহাট মান্দারী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। 

একই ঘটনায় গত ১২ আগস্ট নিহত অটোরিকশাচালক মো. সবুজের ভাই মো. ইউসুফ বাদী হয়ে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত সবুজ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার দক্ষিণ টুমচর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। কর্মসূত্রে তিনি ফেনীর বিজয় সিং এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। 

এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের জন্য তাঁদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ফের দাফন করা হবে। 

গত ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। একই সময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বেলা ২টার দিকে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মহিপাল ফ্লাইওভারের দিকে এগোতে থাকলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। 

এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণে চারপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সেখানে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। 

সংঘর্ষের একপর্যায়ে মহিপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেদিন সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবারও সেই ১৪ ভারতীয়কে পুশ ইনের চেষ্টা, দৌলতপুর সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
ভারতীয় ১৪ নাগরিক শূন্য লাইনে অবস্থান করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভারতীয় ১৪ নাগরিক শূন্য লাইনে অবস্থান করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ফের ১৪ ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কঠোর অবস্থান ও সতর্ক পাহারার কারণে রোববার ভোরে এই নতুন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ভোরে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির অধীন চল্লিশপাড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় ওই নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালায় বিএসএফ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে একই ব্যক্তিদের পুশ ইনের চেষ্টা করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হলে পতাকা বৈঠকের পর পরিচয় নিশ্চিত হলে তাঁরা পুনরায় ভারতে ফেরত যান।

এরপরও বিএসএফ দৌলতপুর সীমান্ত ব্যবহার করে নতুন করে পুশ ইনের চেষ্টা চালায়। বিজিবির কঠোর তৎপরতায় এবারও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বর্তমানে ভুক্তভোগী ভারতীয় ওই নাগরিকেরা সীমান্তের শূন্য (জিরো) লাইনের আশপাশে অবস্থান করছেন।

শূন্য লাইনে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০)। শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা ভারতের ওডিশা রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা ও মুসলিম নাগরিক। ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের আটক করে কারাগারে পাঠায় এবং আধার কার্ড ও রেশন কার্ড জব্দ করে। পরে ওডিশার একটি কারাগারে তাঁরা এক মাস পাঁচ দিন আটক ছিলেন। দুই দিন আগে তাঁদের কলকাতায় নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে নদীয়া জেলার গেঁদে সীমান্তে এনে মধ্যরাতের পর কাঁটাতারের গেট খুলে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করা হয়। তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা বাংলা ভাষা বুঝতে পারেন না।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মালবাহী জাহাজের সঙ্গে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কা, আহত ৫

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৫
ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা থেকে বরিশালের মুলাদী যাওয়ার পথে নোঙর করা মালবাহী জাহাজের সঙ্গে ধাক্কায় দুর্ঘটনায় পড়েছে যাত্রীবাহী লঞ্চ। ঘন কুয়াশার কারণে এমভি মহারাজ-৭ নামের লঞ্চটির বাঁ পাশের দোতলার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে জিহাদ হোসেন নামের এক শিশুসহ কমপক্ষে পাঁচ যাত্রী আহত হয়েছে। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়ন এলাকায় পদ্মা নদীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

লঞ্চের যাত্রী আবু বকর ছিদ্দিক জানান, সকাল ৯টার দিকে লঞ্চটি পদ্মা নদী দিয়ে কোদালপুর লঞ্চঘাট এলাকা পার হচ্ছিল। নদীর তীরের কাছাকাছি একটি মালবাহী জাহাজ নোঙর করা ছিল। ঘন কুয়াশা থাকায় লঞ্চচালক সেটি দেখতে না পাওয়ায় ধাক্কা লাগে। এতে লঞ্চের দোতলার পাশের প্রায় ৩০ ফুট অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দুর্ঘটনায় জিহাদ হোসেনের মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগে। এ ছাড়া আবুল কালাম, রহমতউল্লাহ, রাসেদ সরদারসহ পাঁচ যাত্রী আহত হয়। পরে দোতলায় থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে নিচতলায় নিরাপদ স্থানে চলে যায়। দুর্ঘটনার পর কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে লঞ্চটি মুলাদীর দিকে যাত্রা শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জীবননগরে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে বিদেশি পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার

জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৫
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: সংগৃহীত
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলিসহ গাজী জাহিদ হাসান (৩৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার গাজী জাহিদ হাসান পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং তিনি মো. নুরুল ইসলামের ছেলে।

আজ রোববার ভোর ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ অয়নের (৩৬ এডি) নেতৃত্বে জীবননগর মডেল মসজিদের পাশে গাজী জাহিদ হাসানের মালিকানাধীন সাইকেলের শোরুমে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে অস্ত্র ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা মালপত্রের মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি স্মার্টফোন, ১১টি সিমকার্ড এবং একটি ব্যাটন।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাস বলেন, এই ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই যুবক গুরুতর আহত

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনায় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় দুই যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার রাতে নগরীর লবণচরা থানাধীন আশিবিঘা ঢালাই সড়কে এই ঘটনা ঘটে।

আহত দুজন হলেন মো. রনি ও সজিব। তাঁদের দুজনকেই গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশিবিঘা ঢালাই সড়কে রনি ও সজিবের ওপর ৮-১০ জনের একটি সশস্ত্র দল অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় রনির কপালের মাঝখানে এবং বাঁ হাত ও ডান হাতের বাহুতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে।

এ সময় দুর্বৃত্তরা রনির সঙ্গে থাকা বন্ধু সজিবকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তাঁর মাথা ফেটে যায়। তাঁদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় আহত দুজনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

লবণচরা থানার ওসি (তদন্ত) মো. ইউসুফ আলী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই ঘটনায় এখনো আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত