Ajker Patrika

স্রোতে গা ভাসালে চাকরি হারাতাম না: শরীফ উদ্দিন

তাসনীম হাসান ও জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২: ১৮
স্রোতে গা ভাসালে চাকরি হারাতাম না: শরীফ উদ্দিন

স্রোতের অনুকূলে গা ভাসালে চাকরি হারাতেন না বলে দাবি করেছেন সদ্য চাকরিচ্যুত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। আজ বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে তিনি এ কথা বলেন। 

চাকরি হারানোর পর পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বলতে গেলে এখন একপ্রকার লুকিয়ে আছি। কখন আবার গুম হয়ে যাই।’ 

শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখায়নি দুদক। পরে সারা দেশে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে দুদক সচিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘শরীফ দুদকের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি বিভাগীয় মামলা আছে। ভাবমূর্তি রক্ষায় শরীফকে চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে।’ তবে শরীফ বুঝতে পারছেন না কীভাবে তিনি ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। 

শরীফ বলেছেন, উল্টো তিনি দুদকের ভাবমূর্তি বাড়ানোর কাজই করেছেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সক্রিয় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কাজ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পে জালিয়াতি করে টাকা নষ্ট ও অপচয় করা এবং আত্মসাৎকারীদের ধরেছি। আমি তো বুঝতে পারছি না, কীভাবে ভাবমূর্তি নষ্ট করেছি!’ 

শরীফ রাষ্ট্রের হর্তাকর্তাদের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘দেশকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমার দেশপ্রেমের চেতনাকে নষ্ট করে দিয়েন না। আমি দেশের জন্য কাজ করতে চাই।’ 

হঠাৎ চাকরিচ্যুতির পেছনে কিছু সন্দেহের কথা বলেছেন শরীফ। শরীফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে কর্মরত থাকার সময় চাঞ্চল্যকর এবং স্পর্শকাতর মামলা তদন্ত এবং অভিযোগের অনুসন্ধান করেছি। তার প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালী চক্রের রোষানলে পড়ি। একপর্যায়ে স্রোতের অনুকূলে গা না ভাসানোর কারণে তাঁরা আমাকে গত ৩০ জানুয়ারি বাসায় এসে হুমকিও দেয়। বিষয়টি আমি মাননীয় কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। ওই সময় হুমকিদাতারা বলেছিলেন, আমাকে এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরিচ্যুত করবেন। তবে আমার সৌভাগ্য এক সপ্তাহ নয়, তাঁরা ১৬ দিনের মাথায় আমার চাকরিটা খেল!’ 

অসাংবিধানিকভাবে চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে উল্লেখ করে শরীফ বলেন, ‘কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মতো কোনো কাজ করিনি। বরং আমি দেশের কল্যাণে কাজ করেছি। রোহিঙ্গা এনআইডি, ভূমি জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসের সংযোগ বাণিজ্য ও মেডিকেলের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে দেশের অনেক বড় বড় কাজ করেছি। প্রায় ৫০ কোটি টাকার ওপর অবৈধ টাকা জব্দ করেছি। এতে তো কমিশনের ভাবমূর্তিই বাড়ার কথা। আমি গড্ডলিকাপ্রবাহে গা ভাসাইনি। এ কারণে দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালীদের ইন্ধনে হয়তো আমাকে বদলি ও চাকরিচ্যুত করা হলো।’ 

চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। কমিশনের নিকট আবেদন জানাচ্ছি, চাকরিটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত