Ajker Patrika

বরিশাল জিলা স্কুল: ঝুঁকির অজুহাতে ৬৫ গাছ কাটার আয়োজন

  • গাছ কাটার জন্য ৩ সেপ্টেম্বর নিলাম আহ্বান করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক
  • তালিকার অর্ধেকের বেশি গাছ অযৌক্তিকভাবে কাটা পড়ছে, দাবি শিক্ষকদের
  • অবসরের এক মাস আগে প্রধান শিক্ষকের গাছ কাটা ভালো চোখে দেখছেন না পরিবেশবাদীরা
খান রফিক, বরিশাল 
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৫১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে বরিশাল জিলা স্কুলের ৭০টি গাছ কাটার আয়োজন করছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৬৫টি গাছ কাটার জন্য ৩ সেপ্টেম্বর নিলাম আহ্বান করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নিলাম কমিটির সদস্যসচিব অনিতা রানী হালদার। তিনি দাবি করেছেন, ঝড়ে পড়া, ভবন নির্মাণ এবং স্কুল ভবন লাগোয়া হওয়ায় ৬৫টি গাছকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে নিলাম ডেকেছেন।

তবে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, ঝড় ও উন্নয়নের অজুহাতে তালিকার অর্ধেকের বেশি গাছ অযৌক্তিকভাবে কাটা পড়ছে। এতে একদিকে বিদ্যালয়ের সবুজায়নের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনি অত্যধিক তাপে পাঠদান বাধাগ্রস্ত হবে। এদিকে অবসরের এক মাস আগে প্রধান শিক্ষক অনিতা রানীর গাছ কাটার এমন কর্মকাণ্ড ভালো চোখে দেখছেন না পরিবেশবাদীরা।

গতকাল রোববার স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, স্কুলের পশ্চিমাংশে সবুজায়নে ঘেরা। মেহগনি, রেইনট্রি, নিম, আম, তুলা, অর্জুন, কড়ইসহ বিভিন্ন গাছ যেন গোটা বিদ্যালয়টিকে ছায়া দিচ্ছে। তবে প্রধান শিক্ষকের পরিত্যক্ত ভবনে একটি রেইনট্রি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পাশের পুকুরে ঘূর্ণিঝড় রিমালে পড়ে যাওয়া ২-৩টি গাছ পড়ে আছে। এ ছাড়া স্কুল ভবন লাগোয়া ৪-৫টি ঝুঁকিপূর্ণ গাছ রয়েছে। তবে গাছ পড়লে ভবনের ক্ষতি হবে এমন কোনো গাছ ভবনের পাশে দেখা যায়নি। এদিকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা যে ঘরে থাকেন, তার আশপাশের কিছু ফলদ ও বনজ গাছ রয়েছে, সেগুলোও কাটার আওতায় আনা হয়েছে। নতুন ৬ তলা ভবনের জন্য কয়েকটি গাছ কাটা পড়তে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জিলা স্কুলের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের আশপাশে যে ফলদ, বনজ ও ওষধি গাছ হয়েছে, তা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। কোনো প্রধান শিক্ষক এত গাছ কাটেনি। স্কুল ভবনের পাশে এমন কোনো গাছ নেই, যেটা উপড়ে পড়লে ভবন হেলে পড়বে। বিশেষ করে ৪৭টি মেহগনি ও ৫টি আমগাছ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এতে গরমে ক্লাস করানো যাবে না। সবুজায়ন বিনষ্ট হবে। প্রায় ২০টি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুসারী কয়েকজন শিক্ষক, ঠিকাদার ও বন বিভাগের যোগসাজশে অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি গাছ কাটার আয়োজন চলছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ার আগে গাছ কাটার মহোৎসব নেমেছেন তিনি।

জানতে চাইলে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন নির্মাণের জন্য ৭-৮টি গাছ কাটা পড়তে পারে। কিন্তু বাকি গাছের বিষয়ে কিছু জানি না।’

বরিশাল জিলা স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে ঝালকাঠিতে কর্মরত) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বাসভবনের একটি রেইনট্রি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু গাছ ঝড়ে পড়ে গেছে। ভবন নির্মাণে ২-৩টি কাটা লাগতে পারে। সব মিলিয়ে আমি

যখন ছিলাম, তখন ৮-১০টি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু ৬৫-৭০টি গাছ দুই বছরের মধ্যে কাটার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, নতুন ভবন করার জন্য যদি গাছ কাটতে হয়, সেগুলো কাটুক। যেসব গাছ পড়ে গেছে, সেগুলো অপসারণ করুক। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকা কোনো গাছে হাত দেওয়া যাবে না। ঝুঁকির অজুহাত দিয়ে গাছে হাত দিলে সবুজায়ন ও পরিবেশ নষ্ট হবে। তিনি অবসরের আগমুহূর্তে এমন পরিবেশবিরোধী কাজ করতে পারেন না।

জানতে চাইলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও নিলাম কমিটির সদস্যসচিব অনিতা রানী হালদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৬৫টির মধ্যে সবগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। বন বিভাগ এসে তালিকা করেছে। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ৩টি, গেটের সঙ্গে হেলে পড়া ২টি, প্রধান শিক্ষকের বাসভবনে ৩টি, পুকুরে পড়ে আছে ৩-৪টি। এ রকম ৬৫টি গাছই ঝুঁকিপূর্ণ। স্কুল ভবন লাগোয়া হওয়ায় ৪৭টি মেহগনি গাছও কাটতে হবে।’

এ বিষয়ে সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান সাকিব বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৭০টি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে চিঠি দিয়েছে। তারা কারণ দেখিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালে পড়ে গেছে এবং স্কুল ভবনের লাগোয়া গাছ রয়েছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের তালিকা অনুযায়ী ৫টি গাছ কাটায় আপত্তি তুলে ৬৫টির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত