Ajker Patrika

দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল হাদিসুরের 

বরগুনা প্রতিনিধি
দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল হাদিসুরের 

‘হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে ভাইয়ার সঙ্গে আমি যখন কথা বলছিলাম তখন বুধবার রাত সাড়ে আটটা, সম্ভবত কথা বলার জন্যই ভাইয়া জাহাজের ওপরে উঠেছিলেন। ভাইয়া আমার পড়াশোনার খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। মায়ের শরীরটা ভালো যাচ্ছিলনা, মায়ের চিকিৎসার খোঁজ নিচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ বিকট শব্দ। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমার ধারণা ওই সময়ই জাহাজে রকেট আছড়ে পড়ে আগুন লেগে যায়। পরে সংবাদমাধ্যমে জানতে পারি ওই জাহাজে থাকা আমার ভাই হাদিসুর রহমান নিহত হয়েছেন।’

কথাগুলো বলছিলেন হাদিসুর রহমানের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স। নিহত হাদিসুরের সঙ্গে সবশেষ কথা হচ্ছিল ছোট ভাই প্রিন্সের।  

বরগুনা জেলার বেতাগী কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাকের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে হাদিসুর দ্বিতীয়। বেতাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে মাধ্যমিক ও বেতাগী সরকারি কলেজ থেকে ২০১০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। এরপর চলে যান চট্টগ্রাম। ২০১১ সালে চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হন এবং ২০১৩ সালে মেরিন একাডেমি থেকে প্রকৌশলী হওয়ার পর চাকরিতে যোগ দেন হাদিসুর। ৯ ডিসেম্বর ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিনি ঢাকা বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। এ সময় তার ভাই তারিকুল ইসলাম তারিক বিমানবন্দরে বিদায় জানিয়ে আসেন।  

হাদিসুরের বাবা আবদুর রাজ্জাক স্থানীয় নাদেরিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। ২০১৫ সালে তিনি শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর নেন। সামান্য বেতনে চাকরি, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করাতে যেটুকু জমি-জমা ছিল সব বন্ধক ও বিক্রি করেছেন। সম্বল বলতে বড় ছেলে হাদিসুরের চাকরি ও শুধুমাত্র পুরোনো কাঠের ঘর ছাড়া কিছুই নেই। চাকরিতে যোগদানের পর পরিবার ও দুই ভাইয়ের পড়াশোনা সব মিলিয়ে আর বিয়ের কথা ভাবেননি। ভাই তারিকুল ইসলাম তরিক পটুয়াখালী কলেজ থেকে স্নাতক (সম্মান) শেষ করে স্নাতোকোত্তর করছেন। ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স সাত কলেজের অধীনে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। অসুস্থ মা বাবার চিকিৎসা ও দুই ভাইয়ের পড়াশোনার সব খরচই চালাতেন হাদিসুর। কথা ছিল এবার বাড়িতে ফিরলে নতুন ঘর নির্মাণ ও বিয়ে করার। পরিবারের সবাই খোঁজখবর করছিলেন। 

হাদিসুরের বাড়িতে মা-বোন-ভাইয়ের আহাজারিআজ বৃহস্পতিবার সকালে বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা হাদিসুরের বাড়িতে গিয়ে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যায়। হাদিসুরের বাবা আবদুর রাজ্জাক বলছেন, ‘মোর পোলাডারে মোর দারে এট্টু আইন্না দেন, মুই ওর মুকটা একফির দেহি?’ মেঝেতে বসে বিলাপ করছেন নিহত হাদিসুর রহমানের মা রাশিদা বেগম। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বাবার বাড়িতে ছুটে এসেছেন একমাত্র বোন সানজিদা আক্তার। বুধবার সকাল আটটার মা রাশিদা বেগমের সঙ্গে সবশেষ কথা হয়। এ সময় বারবার মায়ের শরীরের খোঁজ নিচ্ছিলেন ছেলে হাদিসুর রহমান। তার মা বলছিলেন, ‘মা তুমি বেশি করে খাও আমি দেখব তুমি কতগুলা ভাত খাইতেছ তুমি’। 

কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাশিদা বেগম। কান্না থামিয়ে বলেন, ‘মুই আর কিছছু চাই না, মোর পোলাডার মুকটা শ্যাষবারের মতন একটু দ্যাকতে দেন। মোর বাকি দুইডা পোলা আছে, ওগো পড়ালেহা এহন কেডা চালাইবে। মোর শরীররডা ভালোন, ওর বাফেরও অসুখ। জমিজমা টাহা পয়সা বেবাক পোলার পিছে খুয়াইয়া চাকরির পর পোলার কামাই খাইয়া বাইচ্চা আছি। দুইডা পোলার লেহাপড়ার সব খরচা মোর বড় পোলায় দেত। ও মইরা গ্যাছে, এহন মোগেও মরণ ছাড়া উপায় নাই।’ 

হাদিসুরের ভাই তারিকুল ইসলাম তরিক ‘ভাইয়া তুমি কোম্মে চইল্যা গ্যালা’ কখনো চিৎকার, কখনো ফুপিয়ে আবার কখনো আনমনে বিলাপ করে আহাজারি করছিলেন। তারিক বলেন, ‘ও তো মোগো খালি ভাই না, মোগো অভিভাবক ছিল। এমন একটা দিন যায় নাই যে মোগো খোঁজ খবর নেয় নাই। আমি, ছোট ভাই প্রিন্স ও মা-বাবার খোঁজ নিতেন নিয়মিত। মারা যাওয়ার আগের দিন বুধবার সকালেও আমার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। মাকে ডাক্তার দেখাইতে কইছিল, আমি মাকে নিয়া পটুয়াখালী ডাক্তার দেখাইয়া আসছি। মা সুস্থ হইলো আর মোর ভাইয়া মোগো ছাইড়া চইল্যা গ্যালো।’
 
একমাত্র বোন সানজিদার বিয়ে হয়েছে জেলা আমতলী উপজেলায়। খবর পেয়ে বাবার বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সানজিদা বলেন, ‘তিনডা ভাইর আমি একটা বুইন। প্রতিদিনই ও আমার খোঁজ খবর নিত। বিয়ার কথা বলছিলাম, বলছিল, আপা এইবার সেপ্টেম্বর মাসে বাড়িতে আইসা ঘর উডাইয়া বিয়া করমু। আহারে আমার ভাই...।’   

নিহত হাদিসুর রহমান বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। ফোরকার বলেন, ‘রাতে হাদিসুরের নিহত হওয়ার বিষয়টি জাহাজের সহকর্মীদের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছি। হাদিসুরের মরদেহ আনার বিষয়ে বরগুনার দুজন সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করেছি। তবে তারা নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারেননি।’

ফোরকান বলেন, ‘হাদিসুর মারা যাওয়া পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। ওর ছোট দুইভায়ের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি।’
 
 আত্মীয় স্বজনদের  হাদিসুরের বিষয়ে বলছেন তার বাবাবরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নিহত হাদিসুরের মরদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এই মুহূর্তে ইউক্রেনে যে অবস্থা চলছে, নিশ্চিত করে আমরা বলতে পারছি না তাঁর মরদেহ কবে নাগাদ আনা সম্ভব হবে।’ 

গত ২১ ফেব্রুয়ারি ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ নামের জাহাজটি তুর্কি বন্দর এরেগলি ছেড়ে যায়। দুই দিন পর ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বন্দর অলিভিয়ায় পৌঁছায়। রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ইউক্রেনের পরিস্থিতির অবনতি হলে শিপিং করপোরেশনের নির্দেশে পণ্য লোড করার পরিকল্পনা বাতিল করে সেখানেই জাহাজটিকে অবস্থান করতে বলা হয়। 

বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে যুদ্ধবিমান থেকে রকেট হামলায় বাল্কটির ডেকে আগুন ধরে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন জাহাজের ক্রু ও নাবিকেরা। কিন্তু ওই হামলায় মারা যান জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মারা গেছেন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (৭০) মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। তিনি ধানমন্ডির বাসায় থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষ শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ শ্রীনগর উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে অসুস্থ ছিলেন।

উল্লেখ্য, সুকুমার রঞ্জন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুলা প্রতীক) ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে নিহত দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে শোকের মাতম এখনো থামেনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে পুরো পরিবার যেন শোকে কাতর।

প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাসহ নানা আশ্বাস। এ ছাড়া দিপুর পরিবারের জন্য বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজ সোমবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান নিহত দিপু দাসের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার ও একটি সেলাই মেশিন পরিবারটিকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দিপুর স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সহযোগিতাসহ সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় নিহতে দিপুর ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকায় দিপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহ নগরী ও তারাকান্দায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আজ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর ব্যানারে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দিপু দাসের ছোট ভাই অপু দাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা আল নুর মো. আয়াস, হৃদয় খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল খোকন, কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।

একই দাবিতে দিপু দাসের নিজ উপজেলা তারাকান্দায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ফ্রন্ট ও দিপু দাসের পরিবার। আজ সকালে তারাকান্দা বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তারাকান্দা উপজেলা সভাপতি বিজন কুমার ভৌমিক রতন, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শর্মা সরকার কাঞ্চনসহ দিপুর পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কারখানার মালিকসহ প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং দিপু দাসের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা রহমতপুর এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) থেকে পৃথক করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করা, সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদ শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষণ, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের পর ছয় মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘৯ মাস আগে আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন শুধু আশ্বাস দিয়েছিল, বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেনে না নেবে, তত দিন ক্যাম্পাস লকডাউন, প্রশাসনিক ভবন বন্ধসহ এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তবে এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যায় জামাতা গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় শাশুড়িকে খালে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি জামাতা মো. জামাল সিকদারকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ঢাকার সাভারে আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। আজ সোমবার সকালে তাঁকে তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তিতাস থানা-পুলিশ দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।

গত ১০ অক্টোবর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে সুফিয়া খাতুন নামে (৭০) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁর জামাতা জামাল তাঁকে বসতবাড়ির কাছে খালে চুবিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে তিতাস থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে ছিলেন জামাল।

জানা গেছে, জামাল সুফিয়া বেগমের ভাই দিলু সিকদারের ছেলে। তাঁর সঙ্গে সুফিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমের বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির পাশেই জামালের বাড়ি।

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যার প্রধান আসামি জামাল উদ্দিন শিকদারকে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করে আজ সকালে থানায় আনা হয়। পরে দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত