Ajker Patrika

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের আরও যেসব স্থানে ঈদ উদ্‌যাপন

আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ৫৯
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের আরও যেসব স্থানে ঈদ উদ্‌যাপন

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের আরও বেশ কিছু এলাকায় ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: 

বরিশাল: বরিশাল নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করছে। জেলার অর্ধশত মসজিদে আজ বুধবার সকালে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। 

বরিশাল নগরীর সাগরদী তাজকাঠী মিয়াবাড়ী এলাকায় এলাকার জাহাগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়ার ইমামতিতে অনুষ্ঠিত নামাজে কয়েকশ মুসল্লি অংশ নেন। আগাম ঈদ পালনকারীরা চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জাহাগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরিফের অনুসারী। 

বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হরিনাফুলিয়ার চৌধুরীবাড়ি শাহ্‌সুফি মমতাজিয়া জামে মসজিদের সভাপতি মমিন উদ্দিন কালু বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডে আগাম ঈদ পালন করছে প্রায় এক হাজার পরিবার।’ 

নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাজকাঠীর হাজি বাড়ির জাহাগিরিয়া শাহ্‌সুফি মমতাজিয়া জামে মসজিদ  কমিটির সভাপতি আমীর হোসেন বলেন, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাগরদী, তাজকাঠীসহ আশপাশের প্রায় ৫০০ পরিবার সোমবার ঈদ পালন করছে। একইভাবে নগরীসহ জেলার প্রায় অর্ধশত মসজিদে চন্দনাইশ দরবারের অনুসারীরা ঈদের নামাজ পড়েছে। 

এ ছাড়া জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার খানপুরা, কেদারপুর, মাধবপাশাসহ পাঁচ-ছয়টি গ্রামের ১ হাজারের বেশি পরিবারে আগাম ঈদ উদ্‌যাপন হচ্ছে। জেলার মুলাদি, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় এবং সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন, পতাং, লাহারহাট গ্রামের জাহাগিরিয়া সুফি দরবারের প্রায় দুই হাজার অনুসারী রয়েছেন। 

নোয়াখালীতে ঈদের জামাত। ছবি: আজকের পত্রিকানোয়াখালী: নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর এবং বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ গ্রাম, জিরতলী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের চারটি মসজিদে ঈদের জামাত হয়েছে। 

আজ সকাল ৯টায় বসন্তবাগ গ্রামের মুন্সিবাড়ি জামে মসজিদ, ফাজিলপুর গ্রামের পাটোয়ারি বাড়ি মসজিদ, নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের দায়রা বাড়ি কাছারি ঘর ও হরিনারায়ণপুর দায়রা শরীফ জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত হয়। ঈদের জামাতে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। 

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সাত গ্রামের শতাধিক পরিবার আজ সকাল সাড়ে ৯টায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। উপজেলার মুন্সিপাড়ায় এই ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল মাজেদ। 

স্থানীয়রা জানায়, কালীগঞ্জের তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। 

হাড়িশহরের মুন্সিপাড়ার ঈদগাহ মাঠের সভাপতি আব্দুল ছাত্তার বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে কয়েক বছর ধরে এই এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে কদর, শবে মেরাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। 

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে অনেক আগে থেকে কাকিনা-তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বোতলা ও পানি খাওয়ার ঘাট এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে আসছে কিছু মানুষ। নামাজের সময় মুসল্লিদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। 

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করা হয়েছে। এলাকায় একদিন আগে ঈদ উদ্‌যাপন করায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার ‘সহিহ হাদিস সম্প্রদায়ের’ লোকজন উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা গ্রামের মধ্যপাড়া আহলে হাদিস নতুন জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদের নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মশিউর রহমান। 

নামাজে আসা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাজিবপুর গ্রামের সাইদুল বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ পড়তেই আজ সকালে এখানে এসেছি। সবাই মিলে ঈদুল ফিতর আদায় করলাম। এভাবে আট বছর ধরে ঈদ করে আসছি।’ 

পিরোজপুর: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, নাজিরপুর ও কাউখালী উপজেলার ১০ গ্রামের ৮ শতাধিক পরিবার ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করছে। 

মঠবাড়িয়ার পূর্ব সাপলেজা, ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, খেতাচিড়া, বাদুরতলী ও চড়কগাছিয়া গ্রামের সাত শতাধিক পরিবার; কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি গ্রামের ৪০টি পরিবার; নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৭০টি পরিবার আজ ঈদের নামাজ আদায় করেছে। সকাল ১০টায় মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামের খোন্দকার বাড়িতে ঈদের জামাত হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের হাজী ওয়াহেদ আলী হাওলাদার বাড়িতে ঈদের জামায়াত হয়। সকাল ৮টায় কাউখালীর শিয়ালকাঠীর মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে ঈদের জামায়াত হয়। 

স্থানীয়রা জানায়, শরীয়তপুরের নাড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর গ্রামের মরহুম হজরত মাওলানা জান শরিফ ওরফে শাহে আহম্মদ আলীর অনুসারীরা মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের পূর্ব সাপলেজা, ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, খেতাছিড়া, বাদুরতলী ও চড়কগাছিয়া গ্রামের কয়েক শ পরিবার বহু বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছে। 

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ১৩ গ্রামের মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছে। আজ সকালে পৌরসভার বলারদিয়ার মাস্টারবাড়ি জামে মসজিদ মাঠ প্রাঙ্গণে ঈদুল ফিতরের জামাত হয়। বলারদিয়ার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিম উদ্দিন মাস্টার ঈদের নামাজে ইমামতি করেন। 

এ ব্যাপারে মাওলানা আজিম উদ্দিন মাস্টার বলেন, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে তাঁরা রোজা পালন করেন। এ কারণে তাদের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হলো। এভাবে প্রতি বছর তারা ঈদ আনন্দ উদ্‌যাপন করে থাকেন বলে জানান। 

গঙ্গাচড়া রংপুর ঈদের জামাত। ছবি: আজকের পত্রিকাগঙ্গাচড়া (রংপুর) : রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একটি গ্রামে ১২০ পরিবারের ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়। আজ বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের বাগপুর পূর্ব মৌলভীপাড়া জামে মসজিদে এই ঈদের জামাত হয়। 

স্থানীয়রা জানায়, ১৯৮৬ সালে এ গ্রামের মাওলানা আব্দুর রশীদ বাদশা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালনের প্রথা শুরু করেন। ২০২২ সালে তাঁর মৃত্যুর পর বড় ছেলে মাওলানা আব্দুল বাতেন এই প্রথা ধরে রেখেছেন। 

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি মাসুমুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের একটি গ্রামের ১২০টি পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করে। এ জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। 

দিনাজপুরের বিরামপুরে ঈদের জামাত। ছবি: আজকের পত্রিকাবিরামপুর (দিনাজপুর) : বিরামপরে ১৫টি গ্রামের মুসল্লিরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। জামাতে পুরুষ মুসল্লির পাশাপাশি নারীরাও অংশ গ্রহণ করে। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার জোতবানি ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি-মির্জাপুর মসজিদে এবং একই সময় আয়ড়া মাদ্রাসা মাঠে জামাত দুটি হয়। 

খয়ের বাড়ি জামে মসজিদে মো. দেলোয়ার হোসেন কাজী এবং আয়ড়া মাদ্রাসা মাঠে হাফেজ আব্দুল কাইয়ুম নামাজে ইমামতি করেন। বিশৃঙ্খলা এড়াতে বিরামপুর থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। 

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঈদের নামাজে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুটি জামায়াতে ২৪০ জন মুসল্লি অংশ নেন। 

পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সহিহ হাদিস সম্প্রদায়ের মুসল্লিরা ঈদ উদ্‌যাপন করেছে। আজ সকালে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা গ্রামের মধ্যপাড়া আহলে হাদিস নতুন জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন তারা। 

নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সবাই মিলে ঈদুল ফিতর আদায় করলাম। এভাবে আট বছর ধরে ঈদ করে আসছি।’ 

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ঈদের জামাত। ছবি: আজকের পত্রিকাভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিট পাইকেরছড়া ও পাইকডাঙ্গা গ্রামের ৫০টি পরিবার আজ ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করেছে। পাইকেরছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার এই তথ্য জানিয়েছেন। 

আজ সকাল ৮টায় ছিট পাইকেরছড়ায় এবং ৮টা ১৫ মিনিটে পাইকডাঙ্গায় ঈদুল ফিতরের জামাত হয়। ছিট পাইকেরছড়ার ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মোকছেদুল ইসলাম। পাইকডাঙ্গার ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আশরাফুল ইসলাম। 

পাইকেরছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, কয়েক বছর ধরে আহলে হাদিস অনুসারী ওই দুই গ্রামের মানুষ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদের নামাজ আদায় করে আসছেন। 

ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দুটি গ্রামের মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহ বিভাগ: অবৈধভাবে চলছে ৪৫৯ ইটভাটা

  • বিভাগের চার জেলায় বৈধ ইটভাটা মাত্র ৮৪টি।
  • ভাটাগুলোর বিষাক্ত ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ।
  • এসব ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি।
  • অবৈধভাবে চলা ভাটা বন্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বসতবাড়ির পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ একটি ইটভাটা। সম্প্রতি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বসতবাড়ির পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ একটি ইটভাটা। সম্প্রতি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ইটভাটা ৫৪৩টি। এগুলোর মধ্যে ৪৫৯টিই অবৈধ। বৈধ ৮৪টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কার্যক্রম চলছে অবৈধগুলোতেও। এগুলোর বিষাক্ত ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ।

গত বৃহস্পতিবার গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, কৃষিজমিতে গড়ে তোলা হয়েছে বিআরবি ইটভাটা। পাশেই বসতবাড়ি ও স্কুল। বিআরবি থেকে অল্প দূরত্বে শীলা নদী ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে সততা ইটভাটা। এসব ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি।

মাখল নিগুয়ারী গ্রামের বাসিন্দা আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘এক মাস আগে ভাটার কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আমাদের এলাকায় পাশাপাশি তিনটি ভাটা রয়েছে। একটিরও ছাড়পত্র নেই। তাহলে তারা কীভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে।’ একই গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ভাটায় ব্যবহৃত অবৈধ লরির নিচে পড়ে তিন বছর আগে এক শিশু নিহত হয়। ভাটা এই এলাকায় আতঙ্কের নাম। এগুলোর মালিকেরা বিভিন্ন কৌশলে কৃষকদের জমি থেকে মাটি নিচ্ছেন। এতে কৃষক সাময়িকভাবে লাভবান হলেও দীর্ঘ মেয়াদে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাঁদের ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে।

মাখল নিগুয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে ভাটা থেকে ইট বহনকারী লরি। এতে ধুলোবালিতে শ্রেণিকক্ষে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয় শিশুদের। শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, স্কুল এলাকায় তিনটি ভাটা। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

লাইসেন্স নবায়ন না হলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইট উৎপাদনের কথা জানান বিআরবি ইট ভাটার ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, একসময় তাঁদের বৈধ লাইসেন্স ছিল, কিন্তু ২০১৯ সালের পর নবায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা এভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রশাসন ভেঙে দিলে তাঁদের কিছু করার নেই। সততা ইটভাটার পরিচালক জুয়েল খান বলেন, জীবনের সবটুকু উপার্জন ভাটায় বিনিয়োগ করেছেন। এখন প্রশাসন ভেঙে দিলে রাস্তায় বসতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েই যত দিন সম্ভব ভাটা চালিয়ে যাবেন।

অবৈধভাবে চলা ভাটাগুলো বন্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা। তিনি বলেন, বিভাগের চার জেলায় ৫৪৩টি ভাটার মধ্যে ৪৫৯টি অবৈধ। ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে অবৈধ কয়েকটি ভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সংখ্যা বেশি হওয়ায় অভিযান চালিয়ে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানিকগঞ্জের ৩ আসন: বিএনপির ঘাঁটিতে ভাগ বসাতে চায় জামায়াত

  • আওয়ামী লীগ অনুপস্থিত থাকায় শক্ত অবস্থানে বিএনপি।
  • সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক চালাচ্ছেন দুই দলের প্রার্থীরা।
মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের সংসদীয় আসনগুলোয় বরাবরই বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে আসছেন। তবে ২০০৮ সালে দৃশ্যপট বদলে আসনগুলো আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটি এবার অনুপস্থিত থাকায় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও শক্ত অবস্থানে বিএনপি। বসে নেই তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ জামায়াতও। দলটি বিএনপির ঘাঁটিতে ভাগ বসাতে মরিয়া। দুই দলই নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচার চালাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসনগুলো পুনরুদ্ধারে দলীয় নেতা-কর্মী নিয়ে সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করছেন বিএনপির প্রার্থী। জামায়াতসহ অন্য দলের প্রার্থীরাও ভোটার টানতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

জানা গেছে, দল গঠনের পর ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জের চারটি আসনের সব কটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা জয় পান। পঞ্চম থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সব কটি আসনই ধরে রেখেছিলেন বিএনপির প্রার্থীরা। তবে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হন। পরে বিতর্কিত দশম, একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনেও একই ধারা বজায় থাকে। এবার ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ না থাকায় ভিন্ন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে সব আসনে জয় পেতে চেষ্টায় আছেন বিএনপির প্রার্থীরা।

বিএনপির কয়েক মাস আগে তিনটি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে জামায়াত। এর পর থেকে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন দলটির প্রার্থীরা। এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থীরাও ভোটের মাঠে রয়েছেন।

মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়)

বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের নির্বাচনী আসন ছিল এটি। বিএনপি প্রথম ধাপে এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও দ্বিতীয় ধাপে ঘোষণা করেছে। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ১ নম্বর সদস্য এস এ জিন্নাহ কবিরকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ আসনে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তোজাম্মেল হক এবং জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আমিনূল হক দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হয়েছেন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) ঢাকা মহানগরের (উত্তর) সদস্য চিকিৎসক আবু বকর সিদ্দিক। এ ছাড়া এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ওমর ফারুকও প্রচারণা শুরু করছেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঘিওর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুহাম্মদ হেদায়েতুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনিও ইতিমধ্যে ভোটের প্রচারণা শুরু করেছেন।

মানিকগঞ্জ-২ (হরিরামপুর, সিংগাইর ও জেলা সদরের দুটি ইউনিয়ন)

এ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্তকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাবা শামসুল ইসলাম খান এই আসনে চারবার সংসদ সদস্য এবং ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির আমলে শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তিনি সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক করে আসছেন।

এ আসনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মো. জাহিদুর রহমানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এ ছাড়া খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা শেখ মুহাম্মদ সালাউদ্দিনও ভোটের মাঠে আছেন। সিপিবির জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবুল ইসলাম শিকদার নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।

মানিকগঞ্জ-৩ (সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ পৌরসভা ও সদরের সাতটি ইউনিয়ন)

জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী আসন হচ্ছে মানিকগঞ্জ-৩। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা। তিনি সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত হারুণার রশিদ খানের বড় মেয়ে।

এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা উত্তরের সহকারী পরিচালক দেলওয়ার হোসেন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সদস্যসচিব নাহিদ মনির এনসিপির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও তিনিসহ এ আসনে জাতীয় পার্টি, সিপিবিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় তেমন দেখা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি সম্মিলিত নারী প্রয়াসের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নারী প্রয়াস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সম্মিলিত নারী প্রয়াস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সব দলের জন্য সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরির দাবি জানিয়েছেন সম্মিলিত নারী প্রয়াস সংগঠনের সভানেত্রী এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীমা তাসনিম।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ, চাই সুষ্ঠু নির্বাচন, চাই যোগ্য নেতৃত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের আয়োজন করে সম্মিলিত নারী প্রয়াস।

সরকারের কাছে দাবি তুলে শামীমা তাসনিম বলেন, ‘সব দলের রাজনৈতিক সুযোগ রেখে সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেটাকে আমরা বলছি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে হবে এবং সেটি ভয়ভীতি যেন না দেখানো হয়। মানে ভোট দিতে যে আমি যাব, যেন সুস্থ অবস্থায় ফেরত আসতে পারি।’

অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচনের কথা বলতে গিয়ে ড. শামীমা তাসনিম বলেন, বাংলাদেশে অতীতে যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে আমলা নিয়োগ এবং পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অতীতে ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।

কথায় ও কাজে সৎ এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন, যিনি দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতির প্রশ্রয় দেবেন না, যিনি বাংলাদেশকে একমাত্র স্থায়ী ঠিকানা মনে করবেন এবং বিদেশে কোনো ‘সেকেন্ড হোম’ রাখবেন না, আধিপত্যবিরোধী হবেন—এমন নেতৃত্ব আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সম্মিলিত নারী প্রয়াস সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার নিয়ামা ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সেক্রেটারি ড. ফেরদৌস আরা খানম, সহকারী সম্পাদক মাহসিনা মমতাজ মারিয়া, লেকচারার ড. জেবুন্নেসা, ড. মেহের আফরোজ লুৎফা, জান্নাতুন নাইম প্রমি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি: রাকসু জিএস আম্মার

রাবি প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩০
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) শিক্ষক নেটওয়ার্কের ‘ক্যাম্পাসে ছাত্র প্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত তৎপরতা বন্ধ হোক’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় এই আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই বিবৃতির মন্তব্যে আম্মার লেখেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমি কমেন্ট করেছি, ডিলিট করি নাই। তাঁরা (শিক্ষক নেটওয়ার্ক) আমার কাজকে যদি অপতৎপরতা হিসেবে দেখের, তাহলে আমিও তাঁদের বিবৃতি সন্দেহের চোখে দেখি। তাঁরা আমাকে একটি আহ্বান জানিয়েছেন, আমিও তাঁদের আহ্বান জানিয়েছি। তাঁরা এটাকে স্বাধীনতা হিসেবে দেখলে, আমিও আমার স্বাধীনতা প্রকাশ করছি।’

শিক্ষক নেটওয়ার্কের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে নানা ধরনের মবপ্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ডিনদের পদত্যাগ করানো, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হয়রানি তৎপরতা চলমান আছে। রাকসুর জিএস প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি না চেয়ে বরং ছয়জন ডিনের পদত্যাগ দাবি করেন। কেবল তা-ই নয়, নিজেই যেন “প্রশাসন” হয়ে অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাষায় ডিনদের বিরুদ্ধে হুমকি দেন, এমনকি এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে নিজে পদত্যাগপত্র লিখে এনে বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে ডিনদের খুঁজতে থাকেন, সম্ভবত লাঞ্ছিত করার উদ্দেশ্যে। মোট ১২ জন ডিনের প্রত্যেকেই গত আওয়ামী শাসনামলে নির্বাচিত হলেও, বাকি ছয়জন হয়তো রাকসু জিএসের বিবেচনায় “রাজনৈতিক বিবেচনায় উত্তীর্ণ”, ফলে তাঁদের পদত্যাগের দাবি ওঠেনি, তাঁদের নিয়ে অবমাননাকর কিছু বলাও হয়নি। এই উদ্ভূত অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে “প্রগতিশীল শিক্ষক” হিসেবে পরিচিত ছয়জন ডিন দায়িত্ব পালতে অপারগতা প্রকাশ করেন।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে রাকসুর জিএস ভব্যতার সব সীমা ছাড়িয়ে বারবার ঘোষণা করতে থাকেন, লীগপন্থী শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে ঢুকলে কলার ধরে টেনে এনে প্রশাসন ভবনের সামনে বেঁধে রাখা হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যা করছেন, তা রাকসুর এখতিয়ারবহির্ভূত এবং তাঁদের আচরণও আগ্রাসী ও সন্ত্রাসীদের মতো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা এর জবাবদিহি প্রত্যাশা করি। কেননা, রাকসুর নেতৃবৃন্দের এ রকম আচরণ কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেনি; এটা সরাসরি বিদ্যায়তনিক স্বাধীনতার ওপরে হামলা। এর “স্পাইরাল ইফেক্ট” পড়েছে সারা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।’

সার্বিক বিষয়ে রাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্য সৌভিক রেজা বলেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে। যদি ভিন্ন মতাদর্শের হওয়ার কারণে চাকরি চলে যেত বা পদচ্যুত করানো হতো তাহলে তো শিক্ষক নেটওয়ার্কের অনেকেরই আওয়ামী আমলে চাকরি চলে যেত। ৭৩-এর অধ্যাদেশ আমাদেরকে একটা রক্ষাকবজ দিয়েছে, যে কারণে আমরা শিক্ষকেরা সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার পরও আমাদের চাকরি চলে যায়নি।’

সৌভিক রেজা আরও বলেন, ‘ভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষক কর্মকর্তাদের গাছে বেঁধে রাখা, চাকরিচ্যুত কিংবা জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো একজন শিক্ষার্থীর এখতিয়ারের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও এ ক্ষমতা রাখেন না। তবে শিক্ষকেরা কিন্তু আইনের ঊর্ধ্বে নন। আইনানুযায়ী তাঁদের শাস্তি দেওয়া যেতে পারে, তবে মব সৃষ্টি করে নয়। কেউ যদি সরাসরি হামলা বা দালালি করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু একজন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি এভাবে কাউকে পদত্যাগে বাধ্য করতে পারেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত