Ajker Patrika

বিমানবন্দরে আগুন: কার্গো গুদামে ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য

  • গুদামে মজুত মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিকের তালিকা হয়েছিল গত মে মাসে।
  • দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন বেশি ছড়িয়েছে, নিয়ন্ত্রণেও সময় লেগেছে।
  • অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ছিল ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যও।
  • ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের আলাদা স্থান নির্ধারণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি।
মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ২১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো (পণ্য) কমপ্লেক্সে বিভিন্ন আমদানি পণ্যের পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রব্যও মজুত ছিল। স্তূপাকারে ছিল দীর্ঘ দিন ধরে বাজেয়াপ্ত পুরোনো ও নষ্ট মালামাল। ঢাকা কাস্টমস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের সূত্র বলেছে, দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়েছে। রাসায়নিক পণ্য থাকায় ক্ষতির পরিমাণও বেড়েছে।

আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে গত শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে সূত্রপাত হওয়া আগুন প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর গতকাল রোববার পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবি কাজ করে।

সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে কী পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য আছে, তা নিরূপণে গত মে মাসে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে ঢাকা কাস্টমস। প্রতিবেদন তৈরিতে ছিলেন কাস্টমসের পাঁচ কর্মকর্তা, নেতৃত্বে ছিলেন এআরও ফরিদ উদ্দিন। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে রাসায়নিক পণ্যের মধ্যে ছিল জিংক ক্লোরাইড (যা ধুলা বা ধোঁয়ার সঙ্গে নিশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা করতে পারে), কেমিক্যাল পাউডার, অতি দাহ্য এভারক্লিয়ার, উচ্চমাত্রার বিষাক্ত কীটনাশক ক্লোরপাইরিফস, জৈব রঞ্জক রিঅ্যাকটিভ ডাইসসহ বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য। এ ছাড়া ছিল বেশ কয়েক ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য।

সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে আমদানি করা অন্যান্য পণ্যের সঙ্গেই ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যও রাখা হয়। তবে ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে এসব পণ্যের জন্য পৃথক স্থান নির্ধারণ করার কথা ছিল। কিন্তু পরে তা করা হয়নি। সবশেষ গত ডিসেম্বরেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও আলোর মুখ দেখেনি।

উড়োজাহাজ থেকে পণ্য নামানো থেকে শুরু করে আমদানিকারকের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের। পণ্য নামানো, স্ক্যানিং, ওজন, হ্যান্ডলিং, স্টোরেজ, বিলিং ও ডকুমেন্টেশন—সবই বিমান বাংলাদেশের কাজ। আমদানিকারক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য খালাস না করলে প্রতিদিনের জন্য আলাদা ফিও নেয় তারা।

ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণের বিষয়ে বিমান বাংলাদেশও অবগত। তবে এ বিষয়ে বিমানের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিমান বাংলাদেশের একাধিক সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে কোনো পণ্য আসার সঙ্গে সঙ্গে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে মালপত্র বুঝে নিতে হয়। কেউ পণ্য না নিলে ২১ কার্যদিবস পর তা বাজেয়াপ্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। এরপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তা নিলাম করে। কার্গো কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে যেসব মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে, সেগুলো নিলাম করে ধ্বংস করা কাস্টমসের আওতাধীন। বিমান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দফায় দফায় তাগাদা দেওয়ার পরও কাস্টমস এসব পণ্য নিলাম করেনি।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) অবকাঠামো, নিরাপত্তা ও কার্গো টার্মিনাল ব্যবস্থাপনা তদারকি করে। এ জন্য বিমানবন্দর ব্যবহার, নিরাপত্তা যাচাই, স্ক্যানিং ও পার্কিং চার্জ নেয় বেবিচক।

ঢাকা কাস্টম হাউসের উপকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠকে ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। তবে এরপর কী হয়েছে তা জানা নেই।

কাস্টমস সূত্র জানায়, এসব সামগ্রী বিপজ্জনক ও আগুন লাগার ঝুঁকি রয়েছে বলে ঢাকা কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে বেবিচককে একাধিকবার জানানো হয়েছিল। এগুলো দ্রুত সরানো না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানানো হলেও দীর্ঘদিন সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বেবিচকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ বক্তব্য দেননি।

রপ্তানিকারকেরা দীর্ঘদিন ধরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লজিস্টিক অদক্ষতা ও অপর্যাপ্ত অবকাঠামো নিয়ে অভিযোগ করছেন। সীমিত স্থান ও অপর্যাপ্ত গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থার কারণে পণ্যবাহী বড় উড়োজাহাজের পরিচালনাও সীমিত। রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা এবং অব্যবস্থাপনাই এই বিপর্যয়ের পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে।

গত শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে মালামাল খালাস বন্ধ ছিল। ফলে কমপ্লেক্সের গুদামে মজুত থাকা বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, গার্মেন্টস পণ্য ও ওষুধশিল্পের কাঁচামাল পুড়ে গেছে।

আমদানি ও রপ্তানিকারকদের দাবি, এই আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার কামরুল ইসলাম জানান, ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাহাড়ে ভুট্টা চাষে ভালো ফলন পেলেন কৃষক জয়নাল

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই ( রাঙামাটি)
৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জয়নাল আবেদীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
৩৩ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক জয়নাল আবেদীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কৃষক জয়নাল আবেদীন এ বছর ৩৩ শতক জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাওয়ায় তিনি লাভের আশা করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভুট্টা চাষ করেছেন তিনি।

উপজেলার ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রেশম বাগান ব্লকের বারঘোনিয়া তঞ্চঙ্গাপাড়ায় জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন কৃষক জয়নাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ৩৩ শতক কৃষি জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টার বীজ, সার ও সাইনবোর্ড পেয়েছেন। এ ছাড়াও একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে লালশাক, ফরাস শিম ও টমেটো চাষ করেছেন। বর্তমানে জমিতে ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ভুট্টা বিক্রির আশা করছেন তিনি।

এদিন কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব রেশমবাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় কৃষক জয়নাল আবেদীনের ভুট্টা চাষ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে ভুট্টা চাষ কম হলেও রেশম বাগান তঞ্চঙ্গাপাড়ায় এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলায় চারটি ভুট্টা প্রদর্শনীর মধ্যে একটি কৃষক জয়নাল আবেদীনকে দিয়েছিলাম। ভুট্টা চাষে উনার ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। আশা করছি, উনি ভালো লাভ করতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাকচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

জামালপুর প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুর পৌর এলাকার বেলটিয়ায় টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের চর জালালের পাড়া গ্রামের শফিকুলের ছেলে বাবু ওরফে দিপু এবং জালাল উদ্দিনের ছেলে রাসেল হোসেন। আহত হয়েছেন একই এলাকার শ্যামল মিয়া। হতাহত তিনজনই চাচা-ভাতিজা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে কেন্দুয়ার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে জেলা শহরের যাচ্ছিলেন তিনজন। বেলটিয়া এলাকায় পৌঁছালে টাঙ্গাইলগামী একটি মরিচবোঝাই ট্রাক তাঁদের মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এতে সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনজন। তাঁদেরকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দিপু ও রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত শ্যামলকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জামাল উদ্দিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে দুজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। একজন আহত ছিলেন। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জামালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘লাশের ময়নাতদন্ত চলছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলমান। আমরা ট্রাকটি আটক করেছি, কিন্তু চালক পালিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তরমুজ ‘বিপ্লবে’ সারসংকট

  • হিজলা ও মেহেদীগঞ্জে গত বছরের তুলনায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে এবার তরমুজের চাষ হচ্ছে।
  • লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হওয়ায় সারসংকট দেখা দিয়েছে।
  • ডিলাররা বস্তাপ্রতি সারের দাম সাড়ে তিন শ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন।
  • পটুয়াখালী ও ভোলা থেকে মৌসুমি চাষিরা এসে এই সংকট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ।
খান রফিক, বরিশাল 
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৫
বরিশালের হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়জালিয়া এলাকায় তরমুজ খেত। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশালের হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়জালিয়া এলাকায় তরমুজ খেত। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত চরে রসালো ফল তরমুজ চাষে ‘বিপ্লব’ ঘটেছে। গত বছর উপজেলা দুটিতে ২০৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর তা সাড়ে তিন গুণ বেড়ে ৭০০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এর ফলে দুই উপজেলায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারের সংকট দেখা দিয়েছে। সুযোগ নিচ্ছেন সারের পরিবেশকেরা (ডিলার)। তাঁরা বিভিন্ন ধরনের সারের মূল্য বস্তাপ্রতি সাড়ে তিন শ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন বলে কৃষকেরা অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি বাড়তি টাকা দিয়েও সময়মতো সার মিলছে না।

কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভিন্ন উপজেলা থেকে মৌসুমি চাষিরা এই দুই উপজেলায় ঢুকে ব্যাপক তরমুজ চাষ শুরু করায় কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সারের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের তরমুজচাষি আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি গলাচিপা থেকে এসে তরমুজ চাষের জন্য চরের প্রায় ৩০ একর জমি ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছেন না। তাঁর দরকার ১০০ বস্তা, অথচ স্থানীয় ডিলাররা দিচ্ছেন ১০ বস্তা। তার ওপর দামও বেশি।

আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রতি বস্তা ইউরিয়া ১ হাজার ৪০০ টাকা, টিএসপি ১ হাজার ৩৫০, ড্যাব ১ হাজার ৪০০ দরে কিনেছি; যা সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি।’

আরেক তরমুজচাষি কেনান হোসেন বলেন, ‘হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ সীমান্তের বাউসিয়ার চরে ৩০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী থেকে এসে নতুন এ জমিতে চাষ করতে গিয়ে সারসংকটের মুখে পড়তে হয়েছে। প্রতি বস্তা ড্যাপ সার সরকারনির্ধারিত ১ হাজার ৫০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। টিএসপি ১ হাজার ৩৫০ টাকার স্থলে ১ হাজার ৬৮০ এবং ইউরিয়া ১ হাজার ৩৫০ টাকার স্থলে ১ হাজার ৩৮০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার ১০০ বস্তা সার লাগবে, কিন্তু ডিলার দিয়েছে ৫০ বস্তা। এখন তরমুজের চারা বড় হওয়ার সময়। পর্যাপ্ত সার না দিলে তরমুজের ফলন ভালো হবে না।’

জানা গেছে, জেলার হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়জালিয়া, মেমানিয়া এবং মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর, আলিমাবাদ, জাঙ্গালিয়া, চরগোপালপুর, দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়নে ব্যাপক তরমুজের চাষ শুরু হয়েছে।

জানতে চাইলে হিজলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হাবিব আল জনি বলেন, ‘সরকারনির্ধারিত প্রতি বস্তা ইউরিয়ার খুচরা মূল্য ১ হাজার ৩৫০, টিএসপির বস্তা ১ হাজার ৩৫০, ড্যাপ ১ হাজার ৫০ টাকা। ডিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে সারের মূল্য বেশি নিলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আহসানুল হাবিব আল জনি বলেন, ‘গত বছর হিজলায় মাত্র ৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর আবাদ হচ্ছে ২০০ হেক্টর জমিতে। এর কারণ হলো অন্য উপজেলা থেকে মৌসুমি চাষিরা এসে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন।’

এদিকে মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়নের তরমুজচাষি সোহাগ জমাদ্দার বলেন, ‘এবার তিন একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। কিন্তু সারের দাম বেশি। চাহিদামতো পাওয়াও যাচ্ছে না।’

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর বসু বলেন, ‘গত বছর মেহেন্দীগঞ্জে ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল। এবার ৩০০ হেক্টর বেড়ে মোট ৫০০ হেক্টরে আবাদ হচ্ছে। এখানে ভোলা ও পটুয়াখালীর চাষিরা এসে তরমুজ চাষ করছেন। যে কারণে এ বছর চাহিদার চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টন সার বেশি লাগতে পারে। মৌসুমি চাষিরা যখন সার বেশি চান, তখন হয়তো ডিলার সেই সুযোগ নিচ্ছেন। তবু আমরা সারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তদারকি করব।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশালের উপপরিচালক মোসাম্মৎ মরিয়ম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে নতুন নতুন এলাকায় এবার তরমুজ আবাদ হচ্ছে। এ জন্য আমরা অতিরিক্ত সার চেয়েছি। তবে ডিলাররা অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগ বুঝে বেশি টাকা নিচ্ছেন কি না জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত