Ajker Patrika

জাতীয়করণের নামে বিপুল টাকা লেনদেন

  • আমতলী-তালতলীতে মাদ্রাসাপ্রতি ১০ লাখ টাকা আদায়
  • দুই উপজেলার ১১৯টি নামসর্বস্ব মাদ্রাসার তালিকা জেলা শিক্ষা অফিসে
  • অনুদানবিহীন ১১৩ মাদ্রাসার অধিকাংশেরই অস্তিত্ব নেই।
মো. হোসাইন আলী কাজী, আমতলী (বরগুনা) 
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৫: ২৩
বরগুনার আমতলী উপজেলার চরখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ঘর তোলা হয় ২০১৮ সালে। কিন্তু সেখানে নেই কোনো শিক্ষা কার্যক্রম। এরপরও জাতীয়করণের জন্য মাদ্রাসাটির নাম পাঠানো হয়েছে জেলা শিক্ষা অফিসে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরগুনার আমতলী উপজেলার চরখালী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ঘর তোলা হয় ২০১৮ সালে। কিন্তু সেখানে নেই কোনো শিক্ষা কার্যক্রম। এরপরও জাতীয়করণের জন্য মাদ্রাসাটির নাম পাঠানো হয়েছে জেলা শিক্ষা অফিসে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কাগজে-কলমে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই। অধিকাংশ মাদ্রাসার কোনো স্থাপনা নেই। অভিযোগ রয়েছে নামসর্বস্ব এসব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণার পর থেকে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলায় দালালেরা মাদ্রাসাপ্রতি ১০ লাখ টাকা আদায় করছে। দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে চাকরি জাতীয়করণের লোভে মাদ্রাসার শিক্ষকেরা টাকা দিচ্ছেন। দ্রুত ওই দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি উঠেছে।

এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ১১৯টি নামসর্বস্ব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার তালিকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অলি আহাদ বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছেন।

ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর ৭৬টি আমতলীর ও ৪৩টি তালতলীর। এর মধ্যে দুই উপজেলায় অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র মাদ্রাসার সংখ্যা মাত্র ছয়টি। এ মাদ্রাসাগুলো হলো পূর্ব চিলা হাসানিয়া, মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া, উত্তর ঘোপখালী, মোহাম্মদপুর মাহমুদিয়া নাচনাপাড়া, কুতুবপুর ইসরাইলিয়া ও তালতলীর চামোপাড়া মজিদিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা ছয়টি অনুদান পেলেও গত দুই/এক বছরে কোনো শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় আসেনি বলে জানা যায়। শিক্ষকেরা কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী দেখিয়ে আসছেন। বাস্তবে কোনো শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষকেরা মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় এলেও উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করে খাতা বগলদাবা করে চলে যান।

স্থানীয়রা বলেন, ওই সব মাদ্রাসায় কোনো দিন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আসতে দেখিনি। জরাজীর্ণ ঘরগুলো সব সময়ই তালাবদ্ধ থাকে। এ ছাড়া অনুদানবিহীন ১১৩ মাদ্রাসার অধিকাংশেরই অস্তিত্ব নেই, শিক্ষার্থী তো দূরের কথা। ২০১৮ সালে কিছু মাদ্রাসার ঘর তুলে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এসব মাদ্রাসার নামে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে।

আমতলীর ৭৬টি মাদ্রাসায় ৯ হাজার ৭৫০ শিক্ষার্থী এবং তালতলীর ৪৩টি মাদ্রাসায় ৫ হাজার ৯৫০ শিক্ষার্থী দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে দুই-একটি ছাড়া কোনো মাদ্রাসায়ই শিক্ষার্থী নেই। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় কর্তৃপক্ষ আমতলীতে নামসর্বস্ব মাদ্রাসাসহ ৭৬টি এবং তালতলীতে ৪৩টি মাদ্রাসার তালিকা বরগুনা জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ করার ঘোষণা দিলে আনন্দে মেতে ওঠে আমতলী-তালতলীর একাধিক দালাল চক্র। তারা জাতীয়করণের নামে মাদ্রাসাপ্রতি ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দালালেরা ভয় দেখান এই বলে যে—দ্রুত টাকা দেন, নইলে মাদ্রাসা জাতীয়করণের তালিকায় নাম যাবে না। যাঁরা আগে টাকা দেবেন তাঁদেরটা আগের তালিকায় জাতীয়করণ হবে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে টাকা দিতে হবে। নইলে জাতীয়করণ হবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক শিক্ষক বলেন, প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা করে দালালেরা মাদ্রাসাপ্রতি ১০-১৫ লাখ টাকা চাচ্ছেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষক দালালদের টাকা দিয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী জালাল পিয়াদা ও আমতলী উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন এই দালালি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে জালাল পিয়াদারের মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।

আমতলী উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাওলানা আলাউদ্দিন টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাদ্রাসার তালিকা চেয়েছেন, তাই তালিকা দিয়েছি।’ শিক্ষার্থী নেই এমন মাদ্রাসার নাম দিলেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

গত সোমবার আমতলী উপজেলার অনুদানভুক্ত মাদ্রাসা কুতুবপুর ইসরাইলিয়া, মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া, মোহাম্মদপুর মাহমুদিয়া ও তালতলী উপজেলার একমাত্র চামোপাড়া মজিদিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ঘুরে দেখা গেছে, মাদ্রাসার ঘর আছে; কিন্তু কত দিন আগে এ মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থী এসেছে তা বলা মুশকিল।

কুতুবপুর ইসরাইলিয়া স্বতন্ত্র মাদ্রাসার দোচালা টিনের ঘরের কক্ষ খড়কুটায় ভরা দেখা যায়। কোনো বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ছিল না। এ মাদ্রাসার ইবতেদায়ি প্রধান গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এখনো বই পাইনি। তাই ক্লাস করতে পারছি না।’

মধ্য পাতাকাটা আমানদিয়া মাদ্রাসায় ভাঙাচোরা বেঞ্চ-টেবিল দেখা যায়। কক্ষ ময়লা-আবর্জনায় ভরা ছিল। এ মাদ্রাসার ইবতেদায়ি প্রধান মাওলানা আলাউদ্দিন দাবি করেন, তাঁরা গত বছর ক্লাস করেছেন। এ বছর বই না পাওয়ায় ক্লাস শুরু হয়নি। এখন রোজা ও ঈদের বন্ধ।

অনুদানবিহীন তালিকার ৪০ নম্বর গোজখালী তাছাউফ স্বতন্ত্র মাদ্রাসার কোনো ভবন নেই। স্থানীয় নুর জামাল, সফিকুল্লাহ ও আবিদ বলেন, ‘ভবন তো নেই, শিক্ষার্থীও নেই। কিন্তু কীভাবে তালিকায় নাম আসল তা আমরা জানি না?’

৭৬ নম্বর পশ্চিম কেওয়াবুনিয়া মুজাহিদিয়া, ১৪ নম্বর উত্তর কাউনিয়া, ৫৩ নম্বর কাউনিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব নেই। স্থানীয়রা বলেন, গত ২০ বছরে দেখিনি এই নামে কোনো মাদ্রাসার অস্তিত্ব আছে। তালতলীর ২৫ নম্বর পূর্ব গাবতলী এইউ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসারও কোনো অস্তিত্ব নেই। জাতীয়করণ ঘোষণার পরে মাদ্রাসার নাম তালিকায় দিয়েছেন।

আমতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অলি আহাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয় তালিকা চেয়েছে। তাই তালিকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু নামসর্বস্ব মাদ্রাসার নাম কেন তালিকায় পাঠিয়েছেন এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি। তবে টাকার বিনিময়ে তালিকা করা হয়েছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত