Ajker Patrika

এজলাসে আওয়ামী লীগ নেতা আমুর আইনজীবীকে মারধর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ৫৩
আদালত প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু। ছবি: আজকের পত্রিকা
আদালত প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাস কক্ষেই স্বপন রায় চৌধুরী নামে এক আইনজীবীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর রিমান্ড শুনানিকালে তাঁর আইনজীবীকে মারধর করা হয়।

রিমান্ড শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা আমুকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

আজ বেলা ১১টার পর আমুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে আমুর পক্ষে তাঁর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুনানিতে আমির হোসেন আমুকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘আমু শেখ হাসিনার বাপকে বিপথে নিয়েছিলেন। সেই ভাবেই শেখ হাসিনাকে বিপথে নিয়ে গেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।’

ফারুকী আরও বলেন, ‘আমু ১৪ দল নিয়ে মিটিং করেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যেকোনো মূল্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে হবে। তাঁরা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই বাংলাদেশে যেন কোনো শেখ হাসিনা বা ফ্যাসিস্ট আর তৈরি না হয়। আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। এদের বিচার হলে এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট দল আসবে না।’

পরে আমির হোসেন আমুর পক্ষে শুনানির সময় আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্যটি রাজনৈতিক।’

তখনই উত্তেজিত হয়ে আদালতে উপস্থিত অন্য আইনজীবীরা আমুর আইনজীবীকে মারধর শুরু করেন। মারধর করতে করতে তাঁকে আদালত থেকে বের করে দেন। এ সময় তিনি আদালতের দরজার সামনে পড়ে যান। একপর্যায়ে তাঁকে ‘লাথি’ মারা হয়। এরপর কয়েকজন আইনজীবী তাঁকে তুলে আদালত থেকে বের করে দেন।

আমুর পক্ষে অন্য আইনজীবীরা বক্তব্য দিতে গেলে তাঁদেরও বারবার থামিয়ে দেন আদালতে উপস্থিত উৎসুক আইনজীবীরা।

একপর্যায়ে আইনজীবীদের উদ্দেশে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আইনজীবীরা ভাই ভাই, মিলেমিশে থাকা উচিত। এখনকার পরিবেশ কিন্তু সব সময় থাকবে না।’

আমু এ কথা বলার পর ফের উত্তেজিত হয়ে ওঠেন আদালতে উপস্থিত উৎসুক আইনজীবীরা। পরে পিপি ওমর ফারুক ফারুকীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পরে আদালত আদেশে আমির হোসেন আমুকে ছয় দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর আগে গতকাল বুধবার দিনগত রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর পশ্চিম ধানমন্ডির এক আত্মীয়র বাসা থেকে আমির হোসেন আমুকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউমার্কেট থানার নীলক্ষেত এলাকায় গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। এ ঘটনায় তাঁর শ্যালক আব্দুর রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

এই মামলায় আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, এজাহারনামীয় আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মন্ত্রী পরিষদের অন্য সদস্যদের উসকানিতে পুলিশ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঘটনা স্থলে আন্দোলন দমানোর উদ্দেশ্যে হামলা করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এ সময় অনেকেই গুরুতর আহত হন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আমির হোসেন আমুকে আটকের পর তিনি ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে স্বীকার করেন। তাঁর জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্যপ্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। হত্যার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন, মূল অপরাধী চক্র শনাক্তকরণ, এ মামলার এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিদের অবস্থান নির্ণয়পূর্বক গ্রেপ্তার ও ধৃত করতে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করার জন্য আমুকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

মারধরের শিকার আইনজীবীর বক্তব্য:

অ্যাডভোকেট স্বপন রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তাঁকে আদালতের এজলাস কক্ষেই মারধর করা হয়। মহানগর পিপি ছিলেন, বিচারকও ছিলেন। বিচারকের উপস্থিতিতেই তাঁর ওপর অনেক অত্যাচার চালানো হয়। ১০-১২ জন আইনজীবী তাঁকে মারধর করেন। লাথি মারেন। কিন্তু বিচারক কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘এ দেশে কোনো ন্যায়বিচার নেই। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত।’

স্বপন রায় বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছি। আইনজীবীরা কোর্টে গিয়ে নিরাপদে নেই। বাংলাদেশ নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছে। এই অত্যাচারের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের কাছে বিচার চাই।’

আইনজীবীকে মারধরের বিষয়ে মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমির হোসেন আমুর পক্ষে তো ভিন্ন আইনজীবীরা তিনটি ওকালতনামা দাখিল করেছেন। তাঁর পক্ষের আইনজীবীরা মামলা শুনানি করা নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করেছেন। তাঁরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন জামায়াতের আমির হামজা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্থলবন্দর প্রকল্প: রামগড়ে তিন পাহাড় কেটে বন্দরের জমি ভরাট

  • পাহাড়ের মাটি নিয়ে স্থলবন্দরের ১০ একর জমি ভরাটের অভিযোগ।
  • বালুর বদলে মাটি ব্যবহার করায় শতকোটির প্রকল্পের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা।
  • প্রশাসনের নাকের ডগায় পাহাড় গায়েব হয়ে গেলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেই।
আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম 
স্থলবন্দর নির্মাণে প্রকল্প এলাকার ভরাটকাজে বালুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে পাহাড় কেটে আনা লাল মাটি। এতে অন্তত তিনটি পাহাড় নিশ্চিহ্ন হয়েছে খাগড়াছড়ির রামগড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্থলবন্দর নির্মাণে প্রকল্প এলাকার ভরাটকাজে বালুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে পাহাড় কেটে আনা লাল মাটি। এতে অন্তত তিনটি পাহাড় নিশ্চিহ্ন হয়েছে খাগড়াছড়ির রামগড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর প্রকল্পের জন্য অন্তত তিনটি পাহাড় সাবাড় করা হয়েছে। স্থলবন্দর প্রকল্প এলাকা ভরাটে এসব পাহাড়ের লাল মাটি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যবহার করায় শতকোটি টাকার এ প্রকল্পের মান ও স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রামগড় পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বলিটিলা মসজিদের সামনের একটি পাহাড়, একই ওয়ার্ডের পাশে আরেকটি এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি পাহাড় সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়েছে। রাতে রাতে কেটে এসব পাহাড়ের মাটি গাড়িতে করে নিয়ে ৩ কিলোমিটার দূরে রামগড় স্থলবন্দরের প্রায় ১০ একর জমি ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে পাহাড় গায়েব হয়ে গেলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী, বন্দরের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করার কথা থাকলেও বাস্তবে পাহাড়ি লাল মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বালুর তুলনায় পাহাড়ি মাটির কমপ্যাকশন (ঘনত্ব) অনেক কম হয়। ফলে কিছুদিন পরই জমি দেবে যাওয়া বা ফাটল ধরার আশঙ্কা থাকে। এতে পুরো অবকাঠামোর মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

স্থলবন্দর প্রকল্প সূত্র জানায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালে রামগড়ের মহামুনি এলাকায় অধিগ্রহণ করা ১০ একর জমিতে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি), কাস্টমস অফিস, প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, পোর্ট বিল্ডিং, ট্রান্সশিপমেন্ট শেড, ওয়্যারহাউস, ইয়ার্ড ও আবাসিক ভবন নির্মাণে ১৬১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথমে মনিকো লিমিটেডকে কাজ দেওয়া হয়। তবে ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি কাজ শুরু হলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ বাধা দেয়। এক বছরের বেশি সময় কাজ বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল হয়।

পরে ভারতীয় পক্ষের সম্মতির পর প্রকল্প আবার চালু হলে এমএসসিএল অ্যান্ড এমএসডিবিএল জেবি ও মনিকো লিমিটেডকে নতুন করে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে মনিকো লিমিটেড বন্দরের ১০ একর জমি ভরাটসহ ওয়্যারহাউস, ইয়ার্ড, রিটেইনিং ওয়াল, বাউন্ডারি ওয়াল ও দুটি ওয়েব্রিজ স্কেল নির্মাণের জন্য প্রায় ৮৯ কোটি টাকার কাজ পায়। নিয়ম অনুযায়ী, প্রায় ২২ ফুট উচ্চতায় বালু দিয়ে ভরাট করার কথা থাকলেও বাস্তবে পাহাড় কেটে আনা মাটি দিয়েই পুরো এলাকা ভরাট করা হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনিকো লিমিটেডের স্থানীয় ব্যবস্থাপক মো. হাফিজুর রহমান। তিনি দাবি করেন, সহনীয় মাত্রার বালু এই পাহাড়ি মাটিতে রয়েছে।

বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যবহার করায় মান খারাপ হবে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় উপঠিকাদার মাটি সরবরাহ করেছেন। তাঁরা কোথা থেকে আনছেন, তা আমাদের জানার বিষয় নয়।’

পাহাড় কাটায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রামগড় পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চৌধুরীপাড়া এলাকা। মৃত হোসেন আহম্মদের বাড়িসংলগ্ন পাহাড়টি সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড় কেটে নেওয়ায় ভূমিধস ও পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি বেড়েছে। এর পাশে ২০০৪ সালে পাহাড় ধসে মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে হানিফ, স্ত্রী ও মেয়ে একই পরিবারের ৩ জন মারা যান।

সরেজমিনে দেখা যায়, দ্রুততার সঙ্গে বন্দরের ইয়ার্ডের কাজ শেষ করা হচ্ছে। সিসি ঢালাই করে পাহাড়ের লাল মাটি তলিয়ে ফেলা হচ্ছে।

পাহাড় কাটা প্রসঙ্গে রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী শামীম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কিছুদিন আগে আমি রামগড়ে যোগদান করেছি। তবে পাহাড় কাটার ঘটনায় বেশ কিছু মামলা করা হয়েছে।’

২০১০ সালে রামগড়কে স্থলবন্দর ঘোষণা করে সরকার। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো। এর ধারাবাহিকতায় রামগড় বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০২১ সালে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বন্দরের সম্ভাবনা আরও বাড়ে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রামগড় স্থলবন্দর চালু হলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপন হবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাত্র ৩ ঘণ্টায় পণ্য পৌঁছাবে ত্রিপুরার সাব্রুমে। ইমিগ্রেশন চালু হলে যাত্রী পারাপার ও চিকিৎসা-ভ্রমণও সহজ হবে।

রামগড় স্থলবন্দর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. সামসুল আলম বলেন, ‘আমি এ প্রকল্পে নতুন যোগদান করেছি। সবকিছু আমার জানা নেই। তবে সহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বিস্তারিত বলতে পারবেন।’

চেষ্টা করেও রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন জামায়াতের আমির হামজা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভোলায় বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ, আহত ১২

ভোলা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভোলায় জামায়াত ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার ভেলুমিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত মো. আবুল বাশার ও আশিক ইলাহিকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ সময় জামায়াত-সমর্থিত বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দৌলতখান উপজেলায় বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মো. কামাল হোসাইন অভিযোগ করেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে এসে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় জামায়াত-সমর্থিত কর্মীদের তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার সময় জামায়াতের কর্মী মো. আবুল বাশার ও আশিক ইলাহি গুরুতর আহত হন। তাঁদের ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে ভেলুমিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউনুস খান কমান্ডার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি নৌবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউই কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন জামায়াতের আমির হামজা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভালুকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ভালুকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা

আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের ভালুকা থানায় মামলা হয়েছে। ভালুকা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজল ইসলাম বাদী হয়ে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিশেষ ক্ষমতা আইনে এই মামলা করেন।

ভালুকা মডেল থানার এসআই আবু তাহের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়।

মামলা ও থানা সূত্রে জানা গেছে, ১৩ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে ভালুকা উপজেলার নিশিন্দা বিএসবি কারখানাসংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও মশাল মিছিলের প্রস্তুতির খবর পায় পুলিশ। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এজাহারে নাম থাকা ৪৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে মশাল মিছিল করে উসকানিমূলক স্লোগান দেয় এবং এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন জামায়াতের আমির হামজা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমির হামজার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের বিবৃতি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আমির হামজা । ছবি: সংগৃহীত
আমির হামজা । ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমির হামজার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বিবৃতির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এই বিবৃতি পোস্ট করা হয়।

কমরেড বদরুদ্দীন উমরের বক্তব্যকে খণ্ডিতভাবে উদ্ধৃত করে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমির হামজা রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে।

এর আগে সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মুফতি আমির হামজা সাংবাদিকদের বক্তব্য দেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেখানে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১৯৭১ সালের যে ভূমিকা, এত দিন পর্যন্ত মিথ্যা রচনা, আপনারা বদরুদ্দীন উমরের ইতিহাস পড়বেন। তাঁর লিখিত বইয়ে আমরা পড়েছি—মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেসব কল্পকাহিনী লেখা, এগুলো ১০০ ভাগের ৯০ ভাগ মিথ্যা। জামায়াত ইসলামী ওই সময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তারা ছিল ভারতের বিরুদ্ধে। এখন আমরা এটা জেনেছি। এত দিন আমাদের এই সত্য জানতে দেওয়া হয়নি।’

এই বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে ফয়জুল হাকিম বলেছেন, ১৯৭১ সালে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বাধীন সামরিক শাসনের অধীনস্থ মালেক মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য ছিল জামায়াতে ইসলামী। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ছিল—পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালিনিধন ও গণহত্যার প্রধান সহযোগী হওয়া; সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া।

অন্য দিকে ১৯৭১-এ পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনী ও তার এ দেশীয় সহযোগী রাজাকার-আলবদর-আলশামসের বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে সশস্ত্র স্বাধীনতাসংগ্রাম ও জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে পূর্ব বাংলার মুক্তিকামী জনগণ, ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তা ও সেনারা, আওয়ামী লীগ ও কমিউনিস্ট বিপ্লবী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গ্রুপের সদস্য-সমর্থকেরা।

বিবৃতিতে ফয়জুল হাকিম বলেন, ২০২৪-এ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন উচ্ছেদ করেছে। একই সঙ্গে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগের মিথ্যা বয়ান উচ্ছেদ হতে চলেছে। এই সুযোগে জামায়াতে ইসলামী দেশের নতুন প্রজন্মের কাছে নিজেদের অতীত গণবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা, বিশেষত ১৯৭১-এর গণহত্যায় সহযোগী ভূমিকাকে আড়াল করতে মাঠে নেমেছে।

বিবৃতিতে ফয়জুল হাকিম আরও বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের ভূমিকা, গোপন বিপ্লবী ও সংসদীয় কমিউনিস্ট পার্টিসমূহের ভূমিকা, তৎকালীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা প্রভৃতি নিয়ে কমিউনিস্ট বিপ্লবী ও ইতিহাসবিদ বদরুদ্দীন উমর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সমালোচনা করেছেন। সাম্প্রতিককালে পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের উদ্যোগে রচিত ‘ইতিহাস’ সম্পর্কে কঠোর সমালোচনা করে উমর বলেছেন যে—এর ৯০ ভাগই মিথ্যা।

বিবৃতিতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক বলেন, ‘কমরেড বদরুদ্দীন উমরের এই বক্তব্যকে খণ্ডিতভাবে উদ্ধৃত করে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমির হামজা যে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। জনগণকে ইতিহাস ভুলে যাওয়ার কথা বলে মুফতি আমির হামজা মূলত জামায়াতে ইসলামীর অতীত গণবিরোধী ভূমিকা জনগণের কাছে আড়াল করতে চাইছেন। এ হচ্ছে প্রকৃতই অসৎ ও মিথ্যাবাদী লোকের বৈশিষ্ট্য।’

এ বিষয়ে জানার জন্য মুফতি আমির হামজার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যা বললেন জামায়াতের আমির হামজা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত