Ajker Patrika

সব আসামিই জামিনে

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২৯
সব আসামিই জামিনে

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর নির্মাণাধীন অবস্থায় নগরীর এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) গার্ডার ধসে পড়ে। এতে ১৩ জন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়ার মামলায় ২০১৪ সালে  অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর সাত বছরেও  বিচারকাজ শেষ হয়নি। ফ্লাইওভার ট্র্যাজেডি হিসেবে আখ্যায়িত চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় আসামিরাও সবাই বাইরে।

২০১৪ সালে ১৮ জুন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটিতে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। অভিযুক্তরা সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। তখনই নির্মাণের তদারকির সঙ্গে যুক্ত চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কর্মকর্তাদের নাম প্রভাব খাটিয়ে মামলার এজাহার থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা আদালতে চার্জ গঠন থেকে শুরু করে কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। পরে সবাই জামিনে বেরিয়ে যান। সম্ভবত গত বছর লকডাউনের আগে মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা আদালত থেকে অন্য আদালতে স্থানান্তরিত হয়। তবে কোন আদালতে মামলাটি নেওয়া হয়েছে তা এখন মনে নেই। মামলাটি অনেক পুরোনো। তাই ঠিকমতো মনে করতে পারছি না।’ এমনকি এর ফাইল কোথায় আছে তা-ও বলতে পারেননি।

তবে গতকাল বিকেলে পিপির জুনিয়র আইনজীবী সাব্বির আহমেদ জানান, মামলাটিতে (দায়রা নম্বর ১০০০/১৪) রাষ্ট্রপক্ষ এ পর্যন্ত ১৮ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছেন। ২০২০ সালে মামলাটি চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়। মামলাটির পরবর্তী তারিখ ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি।

চট্টগ্রাম চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ হোসেন নথি দেখে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ মামলা ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর আমাদের আদালতে বদলি হয়ে আসে। এ মামলায় মোট ২৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া শেষ হয়েছে। মামলার সব আসামিই জামিনে রয়েছেন।’ এ মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলাটি কোন আদালতে আছে তা বলতে পারছি না। সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে এ মামলার কোনো বিচার কার্যক্রম চলেনি।’

এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মামলাটি অনেক পুরোনো। অনেক ফাইল ঘেঁটে খুঁজে বের করে দেখতে হবে মামলাটি এখন কোথায় আছে। এর জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন। আমাদের নথিব্যবস্থা তো কম্পিউটারাইজড নয়।’

চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার জানামতে, এ ধরনের কোনো মামলা সিএমএম কোর্টগুলোতে স্থানান্তর করা হয়নি।’

 ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্মাণাধীন ওই ফ্লাইওভারের ১২ ও ১৩ নম্বর গার্ডার ধসে পড়ে। এতে ১৩ জন নিহত হন। তবে বেসরকারি হিসেবে এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম বাদী হয়ে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। একই বছরের ২২ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচারের জন্য পাঠান মহানগর দায়রা জজ আদালতে। ২০১৪ সালের ৩ জুন অভিযোগপত্রের ওপর নারাজি দেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। ১৮ জুন নারাজি আবেদন খারিজ করে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। ১৬ জুলাই এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী তখন বলেছিলেন, ‘আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করার আগে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির মতামত নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার কোনো মতামত নেননি। এমনকি অভিযোগপত্রে কোনো ত্রুটি আছে কি না, আদালতে উপস্থাপনের আগে খতিয়ে দেখেনি পুলিশের প্রসিকিউশন শাখাও।’

অনুসন্ধানে দেখা যায়, অভিযোগপত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার অ্যান্ড পারিশা ট্রেড সিস্টেমসের তৎকালীন প্রকল্প ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, একই প্রতিষ্ঠানের মনজুরুল ইসলাম, আবদুল জলিল, আমিনুর রহমান, আবদুল হাই, মোশাররফ হোসেন, শাহজাহান আলী ও রফিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে মামলার এজাহারে থাকা আসামি সিডিএর প্রকল্প পরিচালক এ এ এম হাবিবুর রহমান, আবদুর রাজ্জাক, এম এ মতিন, তানজিব হোসেন, সালাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, হোসাইন আহমেদ, শাহ জাহান, আবদুল হান্নান, আবছার হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, বাবুল কুমার বিশ্বাস, অরুণ কুমার বিশ্বাস, আবদুল খালেক মিয়া, বায়েজীদ মীর কামাল, মেজবাহুল কবির, সাইদুর রহমান, সোহেল হাছান, তৌহিদুর রহমান ও তারেক মাহমুদকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর অভিযোগ, সিডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান তদন্ত চলাকালীন এই মামলায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুদানে হামলা: নিহত শান্তিরক্ষী শামীমের বাড়িতে কান্নার রোল

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
শামীম রেজা। ছবি: সংগৃহীত
শামীম রেজা। ছবি: সংগৃহীত

সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শামীম রেজার রাজবাড়ীর বাড়িতে মাতম চলছে। প্রতিবেশীরা তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কান্না বাঁধ মানছে না।

নিহত শামীম রেজা কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামের আলমগীর ফকিরের ছেলে।

শোকে আচ্ছন্ন শামীমের পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শোকে আচ্ছন্ন শামীমের পরিবার। ছবি: আজকের পত্রিকা

শামীমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্না-আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশীরা শামীমের বাবা, ভাইকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শামীমের মা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

শামীমের চাচা আনিস জানান, তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম সবার বড়। ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন তিনি। গত ৭ নভেম্বর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে সুদানে গিয়েছিলেন।

শামীমের ছোট ভাই সোহান ফকির বলেন, ‘গতকাল টেলিভিশনে সুদানের ঘটনার খবর দেখার পর থেকেই আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। রাত ১২টার পর আমরা নিশ্চিত হই ভাই আর নেই। গত শুক্রবার সে বাড়িতে ভিডিও কলে কথা বলেছিল।’

বাবা আলমগীর ফকির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘শুক্রবারও কথা বলেছি। শামীম তখন বলল, আব্বু তুমি ভালো থেকো আমি ডিউটিতে যাব। আমার ছেলেকে এনে দাও তোমরা। ’

স্থানীয় মাসুদ, শাহজাহান, মাহবুব বিশ্বাস বলেন, ‘এই মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শামীমের পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। শামীম ছিল তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর পরিবার এখন কীভাবে চলবে? আমরা এলাকাবাসী দাবি জানাই, শামীমের লাশ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনে। সেই সঙ্গে শামীমের ছোট ভাই সোহানকে যেন একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় সরকার।’

কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘নিহত শামীমের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। মরদেহ আসার বিষয়ে এখন পর্যন্ত যেটা জানতে পেরেছি, আগামী ১৭ তারিখে আসবে। তবে এখনো নিশ্চিত না। আশা করি, আগামীকাল সঠিক তথ্য জানতে পারব।’

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শামীমসহ ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে অডিটরিয়ামের ওয়াশরুম থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে শহীদ এম মনসুর আলী আধুনিক অডিটরিয়ামের ওয়াশরুম থেকে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে অডিটরিয়ামের দ্বিতীয় তলার একটি ওয়াশরুম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, বিকেলে শহীদ অডিটরিয়ামের দ্বিতীয় তলা থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন সেখানে যান। এ সময় ওয়াশরুমের ভেতরে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশের ভাষ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট অডিটরিয়ামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে ওই ভবনে মানুষের তেমন চলাচল ছিল না।

এদিকে লাশ উদ্ধারের পর মমতা খাতুন নামে এক নারী ঘটনাস্থলে এসে দাবি করেন, উদ্ধার হওয়া লাশটি তাঁর বাবার। তিনি জানান, তাঁর বাবা প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। এরপর আর তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. এনায়েতুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। লাশটির পরিচয় শনাক্তে চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় পুলিশ কনস্টেবল থেকে খোয়া গেছে ১০ রাউন্ড গুলি

বগুড়া প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া সদর থানায় পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবলের কাছ থেকে শটগানের ১০ রাউন্ড গুলি খোয়া গেছে।

গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ভোররাত ৪টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোয়া যাওয়া গুলি পাওয়া যায়নি।

বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বগুড়া সদর থানা-পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোররাত ৪টা পর্যন্ত থানা পাহারার (সেন্ট্রি) দায়িত্বে ছিলেন কনস্টেবল অসিত কুমার। রাত আড়াইটার দিকে তিনি থানা থেকে বের হয়ে সাতমাথায় চা পান করতে যান। এ সময় তাঁর কাছে থাকা শটগানের ১০ রাউন্ড গুলি খোয়া যায়।

ভোররাত ৪টায় কনস্টেবল নুরুজ্জামান দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার সময় অসিত কুমার ১০ রাউন্ড গুলি খোয়া যাওয়ার ঘটনাটি প্রকাশ করেন। আজ সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও খোয়া যাওয়া গুলির হদিস পাওয়া যায়নি।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার হোসেন বলেন, সদর থানা থেকে খোয়া যাওয়া গুলি এখনো পাওয়া যায়নি। সদর থানা থেকে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তার গান, ভিডিও ভাইরাল

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত
সাতক্ষীরায় জামায়াত প্রার্থীর সভায় পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীর সভায় এক পুলিশ কর্মকর্তার গান (জামায়াতের গুণগান-সংবলিত) পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

অভিযুক্ত মো. মহিবুল্লাহ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক এএসআই, সশস্ত্র)। তিনি বাগেরহাট পুলিশ লাইনসে কর্মরত। এর আগে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে ছিলেন তিনি।

তিন মিনিট ১১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাতক্ষীরা–২ (সদর-দেবহাটা) আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের একটি নির্বাচনী পথসভায় পুলিশের পোশাক পরিহিত মো. মহিবুল্লাহ গান পরিবেশন করেন। মাঝে মাঝে নারায়ে তাকবির স্লোগান দিয়ে দর্শকদের উজ্জীবিত করেন।

সূত্রে জানা গেছে, পথসভাটি ৭ ডিসেম্বরের। সাতক্ষীরা শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটিয়া আমতলা মোড়ে ওই পথসভা হয়। সভায় ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির মো. জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। সভার মাঝপথে মো. মহিবুল্লাহ এই গান পরিবেশন করেন।

আরও জানা গেছে, পুলিশের ওই এএসআই সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে কর্মরত থাকাকালে আগরদাড়ির একটি মাহফিলে ইসলামি গান পরিবেশন করেছিলেন। তাঁর সংগীতে মুগ্ধ হয়ে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক তাঁকে পুরস্কৃত করেন। বাগেরহাটে বদলি হয়ে গেলেও তিনি খোঁজ নিয়ে ওই পথসভায় আসেন।

জানতে চাইলে এএসআই মো. মহিবুল্লাহ বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দিইনি। মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক আমাকে পুরস্কৃত করেছিলেন, সে কারণে আমি ইসলামি একটি সংগীত পরিবেশন করেছি’ বলেই লাইনটি কেটে দেন। পরে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা শহর জামায়াতের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম বলেন, ‘পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি স্টেজে উঠে সংগীত পরিবেশন করতে চান। আমরা নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি সংগীত পরিবেশন করেছেন।’

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুকিত হাসান খাঁন জানান, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বর্তমানে সাতক্ষীরায় কর্মরত নন। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের পোশাক পরে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। এমন কিছু ঘটে থাকলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত