Ajker Patrika

শুক্রবার দেশজুড়ে বিএনপির দোয়া কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১৭: ৫১
শুক্রবার দেশজুড়ে বিএনপির দোয়া কর্মসূচি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় আগামীকাল শুক্রবার সারা দেশে দোয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এদিন জুমার নামাজ শেষে সারা দেশের মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। 

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচির তথ্য জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

বিবৃতিতে দেশজুড়ে সব মুসল্লিকে নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীদের এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

ওই বিবৃতিতে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দলে যোগদান প্রক্রিয়া নিয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে। 

এতে বলা হয়েছে, ‘বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীর অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিএনপির ওয়ার্ড থেকে জাতীয় পর্যায় এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত কোনো স্তরেরই কমিটিতে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যোগদান করানো যাবে না। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা–কর্মীদের প্রতি দলের এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৩
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ফাইল ছবি
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টি (একাংশ) ও জেপির নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ১১৯ আসনে ১৩১ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনের বলরুমে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (জেপি) নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ ও জোটের প্রধান সমন্বয়ক গোলাম সারোয়ার মিলন।

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের ১১৯ আসনের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা:

১. জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও হেভিওয়েট প্রার্থী

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ: চট্টগ্রাম-৫ (চেয়ারম্যান, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট)

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু: পিরোজপুর-২ (চেয়ারম্যান, জেপি)

এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার: পটুয়াখালী-১ (মহাসচিব, জাতীয় পার্টি)

অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ: ঢাকা-১০ (সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, জাপা)

অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু: কিশোরগঞ্জ-৩ (নির্বাহী চেয়ারম্যান, জাপা)

শেখ শহিদুল ইসলাম: মাদারীপুর-৩ (মহাসচিব, জেপি)

গোলাম সারোয়ার মিলন: মানিকগঞ্জ-২ (প্রধান সমন্বয়ক, ফ্রন্ট)

শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর: ফরিদপুর-২ (সাবেক এমপি)

নাসরিন জাহান রতনা: বরিশাল-৬ (সাবেক এমপি)

শফিকুল ইসলাম সেন্টু: ঢাকা-১৩ (জাপা নেতা)

লিয়াকত হোসেন খোকা: নারায়ণগঞ্জ-৩ (সাবেক এমপি)

২. জাতীয় পার্টির (জাপা) অন্যান্য প্রার্থী

নুরুল ইসলাম মিলন: কুমিল্লা-৮ (সাবেক এমপি)

নুরুল ইসলাম ওমর: বগুড়া-৬ (সাবেক এমপি)

ইয়াহ ইয়া চৌধুরী: সিলেট-২ (সাবেক এমপি)

মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল: নীলফামারী-৩ (সাবেক এমপি)

পনির উদ্দিন আহম্মেদ: কুড়িগ্রাম-২ (সাবেক এমপি)

নাজমা আক্তার: ফেনী-১ (সাবেক এমপি)

সিরাজুল ইসলাম চৌধরী: চট্টগ্রাম-১২ (সাবেক এমপি)

মো. নজরুল ইসলাম: চট্টগ্রাম-৭ (সাবেক এমপি)

অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম চাকলাদার: টাঙ্গাইল-৫

ইঞ্জিনিয়ার মামুন অর রশীদ: জামালপুর-৪ (সাবেক এমপি)

সোলায়মান আলম শেঠ: চট্টগ্রাম-৯

তপু রায়হান: ঢাকা-১৭ (জহির রায়হানের পুত্র)

মো. জসিম উদ্দিন ভুইয়া: নেত্রকোনা-৩

সরদার শাহজাহান: পাবনা-১

মোবাবর হোসেন আজাদ: নোয়াখালী-৪

ফকরুল আহসান শাহজাদা: বরিশাল-৩

মো. বেলাল হোসেন: লক্ষীপুর-১

আমানত হোসেন আমানত: ঢাকা-১৬

জাহাঙ্গীর আলম পাঠান: ঢাকা-১৪

শাহ জামাল রানা: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩

মাতলুব হোসেন লিয়ন: সাতক্ষীরা-২

মো. ইলিইয়াস উদ্দিন: শেরপুর-১

মো. রেজাউর রাজী স্বপন চৌধুরী: ঠাকুরগাঁও-১

রাশেদুল ইসলাম: নীলফামারী-৪

নিগার সুলতানা রানী: লালমনিরহাট-২

শফিকুল ইসলাম বাদশাহ মিয়া: গাইবান্ধা-১

বরুন সরকার: রাজশাহী-১

অধ্যাপক কামরুজ্জামান: রাজশাহী-৩

তরিকুল ইসলাম স্বাধীন: পাবনা-৬

সুমন ঘোষ: মাগুরা-১

আলমগীর সিকদার: মাগুরা-২

এস এম আল যোবায়ের: বাগেরহাট-১

মাইনুল হাসান রাসেল: বরগুনা-১

মো. মহসিন হাওলাদার: পটুয়াখালী-২

মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার: পটুয়াখালী-৪

গাজী সোহেব কবির: বরিশাল-৪

এম এ কুদ্দুস খান: ঝালকাঠি-২

ডা: সেলিমা খান: ঝালকাঠি-১

সেকান্দার আলী মুকুল বাদশা: পিরোজপুর-৩

ইদি আমিন এপোলো: ঢাকা-৯

এস এম আমিনুল হক সেলিম: ঢাকা-১১

হাজী নাসির উদ্দিন সরকার: ঢাকা-১২

অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদ: শরীয়তপুর-১

জাহাঙ্গীর আহমেদ: ময়মনসিংহ-৪

জাফর আহমেদ রাজু: ফেনী-২

মো. শামসুল আলম: কক্সবাজার-১

অ্যাডভোকেট মো. তারেক: কক্সবাজার-৩

শেখ মোহাম্মদ আলী: ঢাকা-১৮

৩. জেপি ও অন্যান্য শরিক দলের প্রার্থী

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ: কক্সবাজার (জেপি)

মো. রুহুল আমিন: কুড়িগ্রাম-৪ (জেপি, সাবেক এমপি)

মাহিন হোসেন: ঝালকাঠি-২ (জেপি)

মো. আসাদুজ্জামান: ঠাকুরগাঁও-৩ (জনতা পার্টি)

শওকত মাহমুদ: কুমিল্লা-৫ (জনতা পার্টি)

গোলাম মোর্শেদ রনি: নারায়ণগঞ্জ-৪ (জাতীয় ইসলামী মহাজোট)

কে এম জাহাঙ্গীর: ঝিনাইদহ-২ (তৃণমূল বিএনপি)

দীপক কুমার পালিত: চট্টগ্রাম-৯ (তৃণমূল বিএনপি)

টি এম জহিরুল হক তুহিন: বরিশাল-৬ (তৃণমূল বিএনপি)

লায়ন আফরোজা বেগম: ঢাকা-১৮ (তৃণমূল বিএনপি)

শাহ জামিল আমিরুল: মেহেরপুর-২ (সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট)

মির্জা আজম: খুলনা-১ (বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি)

ডাক্তার মুনির হোসেন: চাঁদপুর-৩ (বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি)

এম আর করিম: টাঙ্গাইল-২ (এ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেটিক পার্টি)

আতাউর রহমান বিল্লাহ: গাইবান্ধা-৪ (ডেমোক্রেটিক পার্টি)

লস্কর হারুন অর রশীদ: ঢাকা-১০ (নাগরিক পার্টি)

খোকন চন্দ্র মজুমদার: ফেনী-৩ (লিবারেল গ্রীন পার্টি)

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল: বরিশাল-৪ (জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ)

নূর মো. মনির: শরীয়তপুর-১ (সার্বজনীন দল)

আবু নাসের অহেদ ফারুক: নোয়াখালী-১ (জাতীয় ইসলামী জোট)

আবু লায়েস মুন্না: শেরপুর-১ (সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট)

৪. যেসব আসনে দ্বৈত প্রার্থী (দুজন করে) দেওয়া হয়েছে

ফ্রন্ট ১১টি আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে:

১. ঢাকা-১০

২. বরিশাল-৬

৩. ঢাকা-১৭

৪. চট্টগ্রাম-৯

৫. শেরপুর-১

৬. শরীয়তপুর-১

৭. ঢাকা-১৮

৮. বরগুনা-১

৯. বরিশাল-৪

১০. ঝালকাঠি-২

১১. টাঙ্গাইল-৮

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্যে দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের মুখপাত্র এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, সারা দেশে মব সন্ত্রাস চলছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে, রাজনৈতিক নেতা ও দেশ বরেন্য সাংবাদিক কেউ মবের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে প্রথম আলো, ডেইলি স্টারে অগ্নিসংযোগ, নূরুল কবীরের মতো বরেণ্য সাংবাদিককে নাজেহাল, ময়মনসিংহে প্রকাশ্যে হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মেরে তাঁর মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়া, লক্ষ্মীপুর বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন দিয়ে তার শিশুকন্যাকে হত্যা, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ও ছায়ানটে ভাঙচুর হামলা, উদীচী, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় সরকারি হাইকমিশনারের বাসভবনে হামলার অপচেষ্টা, খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলির ঘটনা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রকম নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

হাওলাদার বলেন, ‘দেশ এখন অনিরাপদ ও অগ্নিগর্ভ। সাথে চলছে ভয়াবহ মব সন্ত্রাস। এ অবস্থায় সরকার কীভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন উপহার দেবে, তা আমাদের জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৯
জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বিএনপি চারটি আসন ছেড়ে দিয়েছে।

এসব আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তের জন্য আসন সমঝোতার কথা জানান তিনি।

যেসব আসনে ছাড় সমঝোতা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের আমির উবায়দুল্লাহ ফারুক সিলেট-৫, দলের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী নীলফামারী-১, জুনায়েদ আল হাবিব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, মনির হোসেন কাসেমী নারায়ণগঞ্জ-৪ প্রার্থী হবেন।

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক–বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দাদু খালেদা জিয়াকে নিয়ে জাইমার আবেগঘন পোস্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৭
জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাইমা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণা করলেন তাঁর নাতনি জাইমা রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা। তিনি আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন পোস্টে দাদু খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন ছিল, সে কথা তুলে ধরেন।

জাইমার পোস্টটি নিচে তুলে দেওয়া হলো—

দাদুকে নিয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলোর একটি হলো, পরিবারকে আগলে রাখা একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি কতটা মমতাময়ী ছিলেন! আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচন্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।

আমি সব সময়ই জানতাম, আমার দাদুর কাঁধে একটা দেশের দায়িত্ব। তবুও আমার স্মৃতিতে দাদু হলেন পরিবারকে আগলে রাখা একজন মমতাময়ী অভিভাবক। লাখো মানুষের কাছে তিনি ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আমার আর আমার কাজিনদের কাছে তিনি ছিলেন ‘দাদু’। আমাদের ‘দাদু’। তিনি সব সময় আমাদের খেয়াল রাখতেন, আমাদের জন্য সময় বের করতেন, আর যেসব মুহূর্ত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলোতে আমাদের সাহস দিতেন, উজ্জীবিত করতেন।

এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো থেকেই আমি নেতৃত্বের প্রথম শিক্ষা পাই। সেটি হলো, নম্রতা, আন্তরিকতা আর মন দিয়ে শোনার মানসিকতা।

বাংলাদেশের বাইরে কাটানো সতেরোটা বছর আমার জীবন অনেকভাবে বদলে দিয়েছে। কিন্তু আমি কখনোই আমার শিকড় ভুলে যাইনি। কারণ, আমাদের সত্তার যে ভিত্তি, আমাদের যে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ; সেটিই আমাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে, পরিচয় বহন করে। প্রবাসে থাকা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশির মতো আমিও নিজ দেশের বাইরে, ভিন্ন দেশে অনেকগুলো বছর কাটিয়েছি। লন্ডনের দিনগুলো আমাকে বাস্তববাদী করেছে, একটা বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। যদিও আমার হৃদয়-মন সব সময় বাংলাদেশেই ছিল।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাকে শৃঙ্খলা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান শিখিয়েছে। তবে মানুষের সঙ্গে কাজ করা আমাকে শিখিয়েছে আরও অনেক বেশি; শিখিয়েছে দায়িত্বশীল হতে, বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়াতে। আইন পেশায় কাজ করার সময় কাছ থেকে দেখা মানুষগুলোর গল্প, আর সেই গল্পগুলোর যৌক্তিক এবং আইনগত সমাধান খোঁজার দায়িত্ব আমাকে আলোড়িত করে। প্রত্যেক ক্লায়েন্ট, প্রতিটি মামলা, প্রতিটি মানুষের সমস্যা, কারও না কারও জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। যারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অবহেলার শিকার হয়েছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই বিশ্বাস দিতে হয় যে তাঁদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে, শোনা হচ্ছে, সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কারও জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিনে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা যে শিক্ষাটা দেয়, সেটা কোনো ক্লাসরুম দিতে পারে না। এই প্রতিটা ধাপ আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে, মানুষ হিসেবে কেমন হতে চাই।

আমি আমার ‘দাদা’কে কখনো দেখিনি। কিন্তু তাঁর সততা আর দেশপ্রেমের কথা সব সময় শুনে এসেছি। ‘দাদু’ আর ‘আব্বু’ সেই আদর্শটাই বয়ে নিয়ে চলেছেন। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের সময় এবং ৫ আগস্টের আগে-পরের সময়টাতে আমি যতটুকু পেরেছি, নেপথ্যে থেকে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি। অধিকাংশ সময় বলেছি কম, বরং শুনেছি বেশি। ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে তাঁদের বোঝা একটু হালকা করার চেষ্টা করেছি।

অনেকগুলো বছর পর দেশে ফিরছি। দেশে ফেরা মানে আবেগ আর অনুভূতির এক অনন্য সংমিশ্রণ। দেশে ফিরে ইনশা আল্লাহ, আমি ‘দাদু’র পাশে থাকতে চাই। এই সময়টাতে আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চাই। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চাই। নিজের চোখে, নিজের অভিজ্ঞতায় প্রিয় বাংলাদেশকে নতুন করে জানতে চাই; মানুষের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে চাই। যেভাবে এগুনো দরকার, আমি চাই বাংলাদেশ আবারো সেভাবে সামনে এগিয়ে যাক, গর্জে উঠুক।

আমি জানি, আমার পরিবারকে ঘিরে দেশের জনগণের কৌতূহল রয়েছে, প্রত্যাশা রয়েছে। সেটি কখনো আশার, কখনো প্রশ্নের। সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়ভারও রয়েছে। জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণের চাপ আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে অনুভব করি; পরিবারে, বন্ধুত্বে, সমাজে।

সংক্ষেপে, আমার নিজের ভাষায়, এই হলো আমার গল্প। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একটা নিজস্ব গল্প আছে। এই গল্পগুলোকে ধারণ করে আমরা সবাই হয়তো একসঙ্গে বাকি পথটা হাঁটতে পারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকা তাসনিম জারার নির্বাচনী তহবিলে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
তাসনিম জারা। ছবি: সংগৃহীত
তাসনিম জারা। ছবি: সংগৃহীত

সাত ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকার বেশি নির্বাচনী অনুদান পেয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। আজ মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে তিনি এ কথা জানান।

ফেসবুক পোস্টে তাসনিম জারা লিখেছেন, ‘মাত্র ৭ ঘণ্টায় আপনারা ১২ লাখ টাকারও বেশি পাঠিয়েছেন। এতটা অভূতপূর্বভাবে আপনারা পাশে দাঁড়াবেন, তা সত্যিই আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। আপনাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।’

তাসনিম জারা আরও জানান, তাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা। আর ৩৪ লাখ টাকা সংগ্রহ সম্পন্ন হলেই তহবিল সংগ্রহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তাসনিম জারা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা অবগত আছি, যে রাত (সোমবার) ২টার পর থেকে নির্ধারিত লিমিট অতিক্রম করার কারণে বিকাশে আর টাকা পাঠানো যাচ্ছে না। আপাতত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডোনেশান গ্রহণ করা যাচ্ছে।’

গতকাল সোমবার নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ শুরু করেন তাসনিম জারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সহায়তা চান তিনি।

তাসনিম জারা গতকাল রাতে আরেকটি পোস্টে লিখেছেন, ‘আপনাদের আগেই বলেছি, আমরা স্বচ্ছভাবে টাকা উত্তোলন ও খরচ করব। তাই আপনাদের সঙ্গে স্ক্রিনশট শেয়ার করছি। এ দুটি অ্যাকাউন্ট শূন্য থেকে শুরু হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আপনাদের সম্পূর্ণ হিসাব দেওয়া হবে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ঢাকা-৯ (খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা, মান্ডা) আসনের মনোনয়নপত্র কিনেছেন তাসনিম জারা। ঢাকা-৯ আসন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড তথা সবুজবাগ, খিলগাঁও, মুগদা ও মান্ডা থানা নিয়ে গঠিত।

এই আসনটিতে বিএনপি এখনো প্রার্থী না দিলেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দিয়েছে। এই আসনে জামায়াতের প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী কবির আহমদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত