Ajker Patrika

জুলুম-নির্যাতন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে, ডিবি হেফাজত থেকে বেরিয়ে ফেসবুকে সারজিস

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৪, ১৯: ১৯
জুলুম-নির্যাতন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে, ডিবি হেফাজত থেকে বেরিয়ে ফেসবুকে সারজিস

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ছয় সমন্বয়কের স্বজনদের উপস্থিতিতে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় এবং নিজেদের গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। বের হয়ে ফেসবুকে নিজের আইডিতে এক স্ট্যাটাসে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। 

আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি তুলে দেওয়া হলো—

‘কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। আপনারা কথা রাখেননি। 

আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আঘাত করেছেন। সারা দেশে আমার স্কুল-কলেজের ভাইবোনদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন। যাকে ইচ্ছা তাঁকে জেলে পাঠিয়েছেন। আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন! মাশরুর তার উদাহরণ। 
 
যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে। এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাঁদের খোঁজ পায়নি। এমনতো হওয়া উচিত ছিল না! 

কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতু ভবনে হামলার জন্য গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন। সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী। 
 
রিকশা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন। কী ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে? 

৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কীভাবে নিবৃত্ত করবেন?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাস।পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি। এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের ওপর নয়, পুলিশের ওপর নয়। এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার ওপর। যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার ওপর। ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নেব। 

এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবিলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। যত দিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে; গণগ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে; তত দিন এ লড়াই চলবে।’ 

সারজিস আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...