Ajker Patrika

বান্দরবানের ৩ উপজেলায় হামলার পরিকল্পনা কেএনএফের, এবার কি রোয়াংছড়ি

জমির উদ্দিন, বান্দরবান থেকে
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২: ১৫
বান্দরবানের ৩ উপজেলায় হামলার পরিকল্পনা কেএনএফের, এবার কি রোয়াংছড়ি

পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এবার টার্গেট বান্দরবানের রোয়াংছড়ি। এর আগে তারা জেলার রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি—এই তিন উপজেলায় হামলার ঘোষণা দিয়েছিল। এরই মধ্যে থানচিতে দুই দফা ও রুমায় এক দফা হামলা চালিয়েছে। দুটি ব্যাংক লুট ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে অপহরণ করেছে। ঘোষণা অনুযায়ী, তাদের পরবর্তী হামলা রোয়াংছড়িতে হওয়ার কথা।

‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি কেএনএ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ১২ মার্চ একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশের একটি বাহিনী বম সম্প্রদায়ের নিরীহ জনগণ লালমুয়ানওম বম (গিলগাল বা অবচলিত পাড়া) এবং রামনুয়াম বমকে (দুনিবার পাড়া) আটক করেছে। এর ফল খুব সুন্দরভাবে ফিডব্যাক দেওয়া হবে। নিরীহ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করা না হলে।’

‘বান্দরবনবাসী’ নামক আরেকটি পেজে গত ফেব্রুয়ারিতে আরও একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে এই তিন জায়গায় হামলার কারণ হিসেবে ‘তাদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ ও রুমায় এক মারমা যুবককে গুলি করার প্রতিবাদে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রুমায় কেএনএফের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে’ তুলে ধরা হয়। সংগঠনটির ইনফরমেশন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন ফ্লেমিংয়ের বরাতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে হামলার ঘটনা ঘটে। 

তবে এসব পেজ ও পেজে থাকা মেইলে আজকের পত্রিকা দুই দিন আগে প্রশ্ন লিখে পাঠায়। কিন্তু এসব পেজ ও মেইল থেকে কোনো ফিরতি বার্তা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কেএনএফের প্রধান নাথান বমের উপদেষ্টা লাল অংলিয়ান বমের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আজকের পত্রিকা; একটি সোর্সের মাধ্যমে কিছু প্রশ্ন করে পাঠানো হয়। তবে তিনি এসব প্রশ্নের জবাব দেননি।

সম্প্রতি কেএনএফের হামলার বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন।

রোয়াংছড়িতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রোয়াংছড়ির দায়িত্বে থাকা বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. শাহ আলম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘রোয়াংছড়িতে এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি।’

গত মঙ্গলবার থেকে হামলা শুরু করে কেএনএফ। এর মধ্যে বান্দরবানের রুমা, থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংক, সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে থানচিতে আরেক দফা হামলা হয়। 

সর্বপ্রথম মঙ্গলবার রাতে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে কেএনএফের ১০০ জনের সশস্ত্র দল বান্দরবানের রুমার সোনালী ব্যাংক শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। ইউনিফর্ম পরা সশস্ত্র লোক দেখে ভয় পেয়ে যান সবাই। তাঁরা মনে করেছিলেন, আজই তাঁদের জীবনের শেষ দিন। ঘটনার সময় সোনালী ব্যাংকের পাশের মসজিদে ২০-২৫ জন মুসল্লি জামাতে নামাজ পড়ছিলেন। ওই মসজিদের ইমাম মো. নুরুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, তখন সবে এশার নামাজের তিন রাকাত শেষ। চতুর্থ রাকাতের জন্য দাঁড়ানোর সময় কেএনএফের সশস্ত্র পাঁচজন লোক তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ান। নামাজ শেষে তাঁরা বলেন, ‘নামাজ তো শেষ। এবার সবার মোবাইল জমা দেন।’

এই ব্যাংকের অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় কেএনএফ বা কুকি চিন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়। পরদিন বুধবার বেলা ১টার দিকে থানচি উপজেলার বাজারে কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এটির সঙ্গেও কেএনএফ জড়িত বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

সোনালী ব্যাংকে পুলিশের পাহারা। ছবি: আজকের পত্রিকারুমা উপজেলা বান্দরবান সদর থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরে। বান্দরবান থেকে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে গাড়িতে যেতে লাগে দুই ঘণ্টা। এই পথে রয়েছে পুলিশের চারটি ক্যাম্প, একটি আনসার, দুটি বিজিবি ও তিনটি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প। রুমায় যেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিনবার তল্লাশির মধ্যে পড়তে হয়। রুমার যে সোনালী ব্যাংক শাখায় কেএনএফ হামলা চালায়, সেটির পাশেই আছে আনসার ক্যাম্প। উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়। এই ব্যাংক থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ইডেনপাড়ায় কেএনএফের কার্যালয়। যদিও এটি বন্ধ পাওয়া গেছে। কার্যালয়ের পাশেই আবার কেএনএফের প্রধান নাথান বমের বাড়ি।

যেভাবে হামলা চালায় কেএনএফ
১০ জন স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছে আজকের পত্রিকা। এর মধ্যে একজন সোনালী ব্যাংক শাখার কর্মচারী নারায়ণ চন্দ্র নাথ। তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের এই ভবনটি একসময় উপজেলা অফিসারদের বাসভবন ছিল। এখন এটির দ্বিতীয় তলায় ব্যাংকের কার্যক্রম চলে। নিচে উপজেলা অফিসের কর্মকর্তারা থাকেন। ঘটনার দিন কোয়ার্টারের সবাই পাশের মসজিদে নামাজে চলে যান। ব্যাংকে চারজন আনসার সদস্য ছিলেন। কেএনএফের সদস্যরা ঢুকেই এই চারজন আনসার সদস্যের অস্ত্র জব্দ করে বসিয়ে রাখে। তারপর খুঁজতে থাকে ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে।

একই সঙ্গে কেএনএফের অন্য একটি দল সোনালী ব্যাংকের পাশের মসজিদ যান। আরেকটি দল পাশেই আনসার ক্যাম্পে হামলা চালায়। এ সময় সব আনসার সদস্যের অস্ত্র নিয়ে যায় তারা। মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এশার নামাজ পড়ার সময়ই সামরিক পোশাক পরা ও গালে কালি লাগানো সশস্ত্র পাঁচজন পাশে দাঁড়ায়। নামাজ শেষে বলে, কেউ নড়াচড়া করবা না। সবার মোবাইল দিয়ে দাও। আমাদের এক প্রকার জিম্মি করে ফেলে তারা। আমাদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে যায়।’

নুর ইসলাম বলেন, ‘এরপর তারা ব্যাংকের ম্যানেজারকে খুঁজছিল, কিন্তু পাচ্ছিল না। এ সময় মসজিদে উপস্থিত সবাইকে বলা হয়, এখানে ব্যাংকের ম্যানেজার কে? ওই সময় ব্যাংকের ম্যানেজার ছিলেন। তিনি নিজেকে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। পরে তারা ব্যাংকের পুলিশকে মারধর করে ম্যানেজারকে শনাক্ত করে। ম্যানেজারকে নিয়ে যাওয়ার সময়ও মারধর করে তারা।

এ সময় মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন মো. আবুল খায়ের। তিনি রুমা উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কেএনএফ আক্রমণ করার আগে প্রায় সব সিসিটিভি ভেঙে ফেলে। ব্যাংকের দুই পাশের সড়কে ব্যারিকেড দেয়। তারা সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে।

রুমা উপজেলার স্থানীয় ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তা অংটি মারমা বলেন, রুমায় তিনটি সরকারি ব্যাংক রয়েছে। সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। অস্ত্রধারীরা রুমায় সোনালী ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনো ব্যাংকে হামলা চালায়নি। অথচ যে ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, এর এক-দেড় শ গজ দূরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও চার-পাঁচ শ গজ দূরে রুমা বাজারে রয়েছে কৃষি ব্যাংক।

কেএনএফ কারা
কেএনএফ হলো বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন। বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সেখানে বম জনগোষ্ঠীর কিছুসংখ্যক লোক রয়েছে। যে কারণে সংগঠনটি পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিতি পায়।

রুমায় যাওয়ার পথে বান্দরবানের একটি পাহাড়। ছবি: আজকের পত্রিকাকেএনএফের ফেসবুক পেজে বলা হয়, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদমসহ নয়টি উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ হিসেবে গঠন করা হবে। পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে আতঙ্কে সে সময় ভারতের মিজোরামে পালিয়ে আশ্রয় নেয় পাঁচ শতাধিক বম নারী-পুরুষ।

সশস্ত্র সংগঠনটি অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয় বলে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‍্যাব। এরপর ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমায় অভিযান চালায় র‍্যাব ও সেনা সদস্যের যৌথ বাহিনী। পরবর্তী সময়ে এ অভিযান চালানো হয় থানচিতেও। 

কেএনএফের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের পর গত বছরের মে মাসে বান্দরবানে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। এরপর জুলাই ও আগস্টে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে দুইবার ভার্চুয়াল আলোচনা হয়। একই বছরের ৫ নভেম্বর রুমা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মুনলাই পাড়ায় প্রথমবারের মতো কেএনএফের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সরাসরি দুটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে প্রথমবারের মতো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শুরুর পর পাহাড়ে ‘বম পার্টি’র সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহিংসতা কিছুটা কমে এসেছে বলে মনে করছিলেন পাহাড়িরা। বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছিল, তাও তুলে নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যেই আবার ব্যাংকে হামলা ও ডাকাতির ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার আলোচনাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিদের নিয়ে ব্রাইটার টুমরোর আনন্দ ভ্রমণ, শীতবস্ত্র উপহার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কড়াইল বস্তির ৫৪ জন বিশেষ শিশু ও ব্যক্তিকে শীত উপহার দিয়েছে ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশন (বিটিএফ) নামের একটি সংগঠন। আজ শুক্রবার সকালে দুটি বাস এবং একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে ৫৪ জন বিশেষ শিশু ও ব্যক্তিকে নিয়ে সাফারি পার্কের উদ্দেশে রওনা হয় সংগঠনটি। সেখানে তাদের নির্মল আনন্দ ও বিনোদন প্রদানের পাশাপাশি শীতবস্ত্র উপহার দেওয়া হয়।

সাফারি পার্কে পৌঁছার পর স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মকর্তারা তাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন। এরপর সকালের নাশতা প্রদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘শিশুদের স্বপ্নের পৃথিবী’ শীর্ষক এ কর্মসূচি। সাফারি পার্কে প্রবেশের পর সেখানকার নীরব স্পট হয়ে ওঠে প্রাণচঞ্চল ও আনন্দমুখর।

অনুষ্ঠান সম্পর্কে সংগঠনের উপদেষ্টা, কবি ও সাংবাদিক জুনান নাশিত বলেন, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত এ ধরনের কিছু অবহেলিত মানুষের নির্মল আনন্দ ও বিনোদন প্রদানের পাশাপাশি তাদের শীতের কষ্ট লাঘব করাই এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য। মাত্র কয়েক দিন আগে বস্তিটিতে আগুন লেগে বেশ কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই তাদের নিয়েই বিটিএফ এ বছরের কর্মসূচি হাতে নেয়।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জয়শ্রী জামান বলেন, ‘বিশ্বে ৭৫ শতাংশ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে দরিদ্র ও অনুন্নত দেশগুলোয়। অনুন্নত দেশে দারিদ্র্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতা আত্মহত্যার বড় কারণ। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিনোদন খুব প্রয়োজন, যা থেকে অনেকে বঞ্চিত। আমরা তাদের কথা ভেবে প্রতিবছর এই আয়োজন করে থাকি।’

স্পেশাল শিশু ও ব্যক্তি, তাদের অভিভাবক এবং বিটিএফের কর্মকর্তা-স্বেচ্ছাসেবীসহ প্রায় ১০০ জনের অংশগ্রহণে এই উপহার প্রদান ও আনন্দভ্রমণ সম্পন্ন হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোট চুরির এমপি হতে চাই না: অ্যাটর্নি জেনারেল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘আমি ভোট ডাকাতের এমপি হতে চাই না, ভোট চুরির এমপি হতে চাই না। এই সমাজকে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমি এমপি হতে চাই।’

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঝিনাইদহের শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ বাজারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি দুর্নীতি বা আলিশান বাড়ি করার জন্য এমপি হতে চাইনি। আল্লাহ আমাকে বাড়ি-গাড়ি দিয়েছেন, সন্তান দিয়েছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করে একটি সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমি স্বপ্ন দেখেছি।’

আসাদুজ্জামান বলেন, বিগত ১৭ বছর পর আপনারা দেশের মানুষ ভোট দিতে যাবেন। আপনারা এত দিন ভোট দিতে পারেননি। ভোট আপনার সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার কেড়ে রাখা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘আমি শৈলকুপার শিক্ষক প্রতিনিধিদের বলেছি, প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে আপনি শুধু নিশ্চিত করবেন, প্রতিটা ভোটার যাতে তাঁর ভোট প্রয়োগ করতে পারেন।’ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমার শৈলকুপার প্রতিটি ঘরে ঘরে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস অফিসার তৈরি হবে। ভালো ব্যবসায়ী, সৎ মানুষ তৈরি হবে। এ রকম একটি শৈলকুপার স্বপ্ন দেখে আমি আগামী দিনে আপনাদের সামনে আসছি। আপনাদের পাশে থাকব। দেখা হবে রাজপথে, কথা হবে ধানের শীষের মিছিলে। উন্নয়নের মিছিলে, গণতন্ত্রের মিছিলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মিছিলে। একটি স্বপ্নের শৈলকুপার মিছিলে আপনাদের সঙ্গে আমার দেখা হবে।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা জানি, আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়। আমরা জানি না আমাদের বেহেশত হবে না দোজখ হবে, সেটা নির্ধারিত হবে কিয়ামতের দিন। অথচ একটি রাজনৈতিক দলের মহিলা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে। আসলে এটা শিরক করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। সুয়ান আল তালুকদার (২৪) নামের এক যুবককে আসামি করে ১৮ ডিসেম্বর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নেত্রী।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন উল ইসলাম মামলার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।’

অভিযুক্ত আসামি সুয়ান আল তালুকদার বরিশাল নগরের কাউনিয়া থানাধীন মনষা বাড়ি তালুকদার ভিলার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর তালুকদারের ছেলে। বিভিন্ন আন্দোলনে বরিশালে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন সুয়ান। সুয়ান নিজেকে জুলাই আন্দোলনের পক্ষের শক্তি দাবি করেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কমিটির একজন নেত্রী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁর সঙ্গে সুয়ানের পরিচয় হয়। যেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক। পরবর্তীকালে অভিযুক্ত যুবক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাদীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

গত ১১ অক্টোবর নগরের সদর রোডের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় বাদীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। কিন্তু বিবাহের জন্য চাপ দিলে সুয়ান বাদীকে ঘোরাতে থাকেন। পরবর্তীকালে বিয়ের কথা বলে ১৭ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় বাদীকে নবগ্রাম রোডে নিয়ে যান সুয়ান এবং জানান তিনি বিয়ে করবেন না।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত সুয়ান হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর মোটরসাইকেলের হেলমেট দিয়ে বাদীর মাথায় আঘাত করেন। তবে বাদী মাথা সরিয়ে নিলে সেই আঘাত মুখে লাগে এবং রক্তাক্ত জখম হয়।

১৮ ডিসেম্বর মামলার বাদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে সুয়ানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন; যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুয়ানও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বক্তব্য লিখিত আকারে তুলে ধরেন। ১৮ ডিসেম্বর সুয়ানের বিরুদ্ধে বাদীর করা মামলা আমলে নেয় পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সুয়ান আল তালুকদারকে ফোন দেওয়া হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চলন্ত ফেরি থেকে মাঝনদীতে পড়ল ট্রাকসহ ৫ যান

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জে ধলেশ্বরী নদী পার হওয়ার সময় ফেরি থেকে পড়ে গেছে ট্রাকসহ পাঁচটি যানবাহন। এতে এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে মাঝনদীতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান বক্তাবলী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. রকিবুজ্জামান।

মো. রকিবুজ্জামান বলেন, ‘বক্তাবলীর পূর্বপাশের ঘাট থেকে যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে ফেরিটি ছাড়ে। মাঝনদীতে হঠাৎ একটি ট্রাক চালু হয়ে যায়।’

এ সময় ট্রাকটি ছাড়াও সামনে থাকা একটা মোটরসাইকেল, দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি ভ্যানগাড়ি পানিতে পড়ে যায়। এ ঘটনার পর ট্রাকের চালক সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ভ্যানের চালক নিখোঁজ বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত