Ajker Patrika

বান্দরবানের ৩ উপজেলায় হামলার পরিকল্পনা কেএনএফের, এবার কি রোয়াংছড়ি

জমির উদ্দিন, বান্দরবান থেকে
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২: ১৫
বান্দরবানের ৩ উপজেলায় হামলার পরিকল্পনা কেএনএফের, এবার কি রোয়াংছড়ি

পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এবার টার্গেট বান্দরবানের রোয়াংছড়ি। এর আগে তারা জেলার রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি—এই তিন উপজেলায় হামলার ঘোষণা দিয়েছিল। এরই মধ্যে থানচিতে দুই দফা ও রুমায় এক দফা হামলা চালিয়েছে। দুটি ব্যাংক লুট ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে অপহরণ করেছে। ঘোষণা অনুযায়ী, তাদের পরবর্তী হামলা রোয়াংছড়িতে হওয়ার কথা।

‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি কেএনএ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ১২ মার্চ একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশের একটি বাহিনী বম সম্প্রদায়ের নিরীহ জনগণ লালমুয়ানওম বম (গিলগাল বা অবচলিত পাড়া) এবং রামনুয়াম বমকে (দুনিবার পাড়া) আটক করেছে। এর ফল খুব সুন্দরভাবে ফিডব্যাক দেওয়া হবে। নিরীহ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করা না হলে।’

‘বান্দরবনবাসী’ নামক আরেকটি পেজে গত ফেব্রুয়ারিতে আরও একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে এই তিন জায়গায় হামলার কারণ হিসেবে ‘তাদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ ও রুমায় এক মারমা যুবককে গুলি করার প্রতিবাদে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রুমায় কেএনএফের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে’ তুলে ধরা হয়। সংগঠনটির ইনফরমেশন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন ফ্লেমিংয়ের বরাতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে হামলার ঘটনা ঘটে। 

তবে এসব পেজ ও পেজে থাকা মেইলে আজকের পত্রিকা দুই দিন আগে প্রশ্ন লিখে পাঠায়। কিন্তু এসব পেজ ও মেইল থেকে কোনো ফিরতি বার্তা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া কেএনএফের প্রধান নাথান বমের উপদেষ্টা লাল অংলিয়ান বমের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আজকের পত্রিকা; একটি সোর্সের মাধ্যমে কিছু প্রশ্ন করে পাঠানো হয়। তবে তিনি এসব প্রশ্নের জবাব দেননি।

সম্প্রতি কেএনএফের হামলার বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন।

রোয়াংছড়িতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রোয়াংছড়ির দায়িত্বে থাকা বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. শাহ আলম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘রোয়াংছড়িতে এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি।’

গত মঙ্গলবার থেকে হামলা শুরু করে কেএনএফ। এর মধ্যে বান্দরবানের রুমা, থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংক, সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে থানচিতে আরেক দফা হামলা হয়। 

সর্বপ্রথম মঙ্গলবার রাতে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে কেএনএফের ১০০ জনের সশস্ত্র দল বান্দরবানের রুমার সোনালী ব্যাংক শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। ইউনিফর্ম পরা সশস্ত্র লোক দেখে ভয় পেয়ে যান সবাই। তাঁরা মনে করেছিলেন, আজই তাঁদের জীবনের শেষ দিন। ঘটনার সময় সোনালী ব্যাংকের পাশের মসজিদে ২০-২৫ জন মুসল্লি জামাতে নামাজ পড়ছিলেন। ওই মসজিদের ইমাম মো. নুরুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, তখন সবে এশার নামাজের তিন রাকাত শেষ। চতুর্থ রাকাতের জন্য দাঁড়ানোর সময় কেএনএফের সশস্ত্র পাঁচজন লোক তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ান। নামাজ শেষে তাঁরা বলেন, ‘নামাজ তো শেষ। এবার সবার মোবাইল জমা দেন।’

এই ব্যাংকের অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় কেএনএফ বা কুকি চিন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়। পরদিন বুধবার বেলা ১টার দিকে থানচি উপজেলার বাজারে কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এটির সঙ্গেও কেএনএফ জড়িত বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

সোনালী ব্যাংকে পুলিশের পাহারা। ছবি: আজকের পত্রিকারুমা উপজেলা বান্দরবান সদর থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরে। বান্দরবান থেকে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে গাড়িতে যেতে লাগে দুই ঘণ্টা। এই পথে রয়েছে পুলিশের চারটি ক্যাম্প, একটি আনসার, দুটি বিজিবি ও তিনটি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প। রুমায় যেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিনবার তল্লাশির মধ্যে পড়তে হয়। রুমার যে সোনালী ব্যাংক শাখায় কেএনএফ হামলা চালায়, সেটির পাশেই আছে আনসার ক্যাম্প। উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়। এই ব্যাংক থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ইডেনপাড়ায় কেএনএফের কার্যালয়। যদিও এটি বন্ধ পাওয়া গেছে। কার্যালয়ের পাশেই আবার কেএনএফের প্রধান নাথান বমের বাড়ি।

যেভাবে হামলা চালায় কেএনএফ
১০ জন স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছে আজকের পত্রিকা। এর মধ্যে একজন সোনালী ব্যাংক শাখার কর্মচারী নারায়ণ চন্দ্র নাথ। তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের এই ভবনটি একসময় উপজেলা অফিসারদের বাসভবন ছিল। এখন এটির দ্বিতীয় তলায় ব্যাংকের কার্যক্রম চলে। নিচে উপজেলা অফিসের কর্মকর্তারা থাকেন। ঘটনার দিন কোয়ার্টারের সবাই পাশের মসজিদে নামাজে চলে যান। ব্যাংকে চারজন আনসার সদস্য ছিলেন। কেএনএফের সদস্যরা ঢুকেই এই চারজন আনসার সদস্যের অস্ত্র জব্দ করে বসিয়ে রাখে। তারপর খুঁজতে থাকে ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে।

একই সঙ্গে কেএনএফের অন্য একটি দল সোনালী ব্যাংকের পাশের মসজিদ যান। আরেকটি দল পাশেই আনসার ক্যাম্পে হামলা চালায়। এ সময় সব আনসার সদস্যের অস্ত্র নিয়ে যায় তারা। মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এশার নামাজ পড়ার সময়ই সামরিক পোশাক পরা ও গালে কালি লাগানো সশস্ত্র পাঁচজন পাশে দাঁড়ায়। নামাজ শেষে বলে, কেউ নড়াচড়া করবা না। সবার মোবাইল দিয়ে দাও। আমাদের এক প্রকার জিম্মি করে ফেলে তারা। আমাদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে যায়।’

নুর ইসলাম বলেন, ‘এরপর তারা ব্যাংকের ম্যানেজারকে খুঁজছিল, কিন্তু পাচ্ছিল না। এ সময় মসজিদে উপস্থিত সবাইকে বলা হয়, এখানে ব্যাংকের ম্যানেজার কে? ওই সময় ব্যাংকের ম্যানেজার ছিলেন। তিনি নিজেকে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। পরে তারা ব্যাংকের পুলিশকে মারধর করে ম্যানেজারকে শনাক্ত করে। ম্যানেজারকে নিয়ে যাওয়ার সময়ও মারধর করে তারা।

এ সময় মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন মো. আবুল খায়ের। তিনি রুমা উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কেএনএফ আক্রমণ করার আগে প্রায় সব সিসিটিভি ভেঙে ফেলে। ব্যাংকের দুই পাশের সড়কে ব্যারিকেড দেয়। তারা সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে।

রুমা উপজেলার স্থানীয় ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তা অংটি মারমা বলেন, রুমায় তিনটি সরকারি ব্যাংক রয়েছে। সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। অস্ত্রধারীরা রুমায় সোনালী ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনো ব্যাংকে হামলা চালায়নি। অথচ যে ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, এর এক-দেড় শ গজ দূরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও চার-পাঁচ শ গজ দূরে রুমা বাজারে রয়েছে কৃষি ব্যাংক।

কেএনএফ কারা
কেএনএফ হলো বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন। বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সেখানে বম জনগোষ্ঠীর কিছুসংখ্যক লোক রয়েছে। যে কারণে সংগঠনটি পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিতি পায়।

রুমায় যাওয়ার পথে বান্দরবানের একটি পাহাড়। ছবি: আজকের পত্রিকাকেএনএফের ফেসবুক পেজে বলা হয়, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদমসহ নয়টি উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ হিসেবে গঠন করা হবে। পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে আতঙ্কে সে সময় ভারতের মিজোরামে পালিয়ে আশ্রয় নেয় পাঁচ শতাধিক বম নারী-পুরুষ।

সশস্ত্র সংগঠনটি অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয় বলে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‍্যাব। এরপর ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমায় অভিযান চালায় র‍্যাব ও সেনা সদস্যের যৌথ বাহিনী। পরবর্তী সময়ে এ অভিযান চালানো হয় থানচিতেও। 

কেএনএফের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের পর গত বছরের মে মাসে বান্দরবানে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। এরপর জুলাই ও আগস্টে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে দুইবার ভার্চুয়াল আলোচনা হয়। একই বছরের ৫ নভেম্বর রুমা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মুনলাই পাড়ায় প্রথমবারের মতো কেএনএফের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সরাসরি দুটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে প্রথমবারের মতো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শুরুর পর পাহাড়ে ‘বম পার্টি’র সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহিংসতা কিছুটা কমে এসেছে বলে মনে করছিলেন পাহাড়িরা। বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছিল, তাও তুলে নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যেই আবার ব্যাংকে হামলা ও ডাকাতির ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার আলোচনাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী চিংড়ি পলাশ যশোরে গ্রেপ্তার

­যশোর প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার পলাশ তালুকদার ওরফে চিংড়ি পলাশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার পলাশ তালুকদার ওরফে চিংড়ি পলাশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ পলাশ তালুকদার ওরফে চিংড়ি পলাশ (৩৪) যশোরে র‍্যাব-৬-এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাতে যশোর শহরের নাজিরশংকরপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার পলাশ গোবরচাকা এলাকার সুলতান তালুকদারের ছেলে।

র‍্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন, খুলনার অন্যতম ও পলাতক আসামি চিংড়ি পলাশ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থান করছেন। খবর পেয়ে একটি বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। র‍্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, চিংড়ি পলাশ দীর্ঘদিন ধরে খুলনা এবং আশপাশের জেলাগুলোর চিংড়িঘের মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সোনাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা রয়েছে আটটি। এ ছাড়া মাদক, চাঁদাবাজি, মারামারি ও বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর নৌ পুলিশ ও থানা-পুলিশের যৌথ অভিযানে স্ত্রীসহ মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পলাশ। চার মাস আগে জামিনে বেরিয়ে তিনি আবারও চাঁদাবাজি শুরু করেছেন অভিযোগ ওঠে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দশমিনায় ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দশমিনায় ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে

পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায় আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন।

জানা যায়, উপজেলায় ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আজ উপকেন্দ্রের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মাইক প্রচার করে গ্রাহকদের অবহিত করা হয়। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপজেলা বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৩৩/১১ কেভি লাইনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজের সময় যেকোনো সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হতে পারে, তাই সবাইকে সাবধান ও সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়।

উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম মো. জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, দশমিনা উপজেলায় ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করা হবে। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। তিনি আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ লাইন সচল হতে পারে। তাই গ্রাহকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে টানা তিন দিন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে তাপমাত্রা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
ভোরে কুয়াশায় ঢেকে গেছে রাস্তাঘাট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোরে কুয়াশায় ঢেকে গেছে রাস্তাঘাট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পঞ্চগড়ে টানা তিন দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই অবস্থান করছে। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অফিস জানায়, গত এক সপ্তাহে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ছিল সোমবার ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শুক্রবার ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর ও বালুশ্রমিকেরা। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় জেলার বিভিন্ন এলাকা। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় সড়কের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে। কাজের প্রয়োজনে যাঁরা বের হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই শীত নিবারণে ভারী কাপড় জড়িয়ে নিলেও ঠান্ডা হাওয়া শরীরে লাগতেই কাঁপন ধরে যাচ্ছে।

পঞ্চগড় করতোয়া নদীর বালুশ্রমিক খোকন বলেন, ‘এই ঠান্ডার মধ্যে পানিত নামলে হাত-পা হ্যাম হয়ে যায়। কিন্তু কী করমু ভাই, বালু না তুললে বাড়িত পোলা-মাইয়াদর খাওন কেমনে দিব? অন্য পেশায় তো যাইতে পারি না।’ তাঁর পাশে থাকা আরেক শ্রমিক রুহুল আমিন বলেন, ‘শীত পড়লেই আমাদের কষ্ট ডাবল হয়। বরফ পানির ভেতরে বালু তুলতে গেলে হাত-পায়ে ব্যথা ধরে। সরকার যদি এই সময়টায় গরিব মাইনসের লাইগা কিছু সুবিধা দিত, তাহলে একটু বাঁচতাম।’

এদিকে শীতের কারণে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালগুলোর রোগীর চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো. সাইমুজ্জামান বলেন, শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারিভাবে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণ চলছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও সহায়তা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ার চরআতাউর: সুপেয় পানির তীব্র সংকট, বাসিন্দাদের ভোগান্তি

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৬
চরআতাউরে গর্তের পানিতে ধোয়ার কাজ সারছেন এক নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
চরআতাউরে গর্তের পানিতে ধোয়ার কাজ সারছেন এক নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুকুর শুকিয়ে গেছে। গভীর নলকূপগুলোও বিকল। উপায় না দেখে ঘরের সামনে পুকুরে বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে। তারপর সেখানে জমা হওয়া পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। এদিকে নদীতে পানি থাকলেও তা লোনা। কেউ কেউ সেই লোনা পানি ব্যবহার করায় দেখা দিচ্ছে নানা রোগব্যাধি। ফলে বাসিন্দারা নিজেদের ব্যবহারের পানিসংকটের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়েও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরআতাউরে। এই চরে দুটি গুচ্ছগ্রাম ও একটি ব্যারাক হাউসে প্রায় চার শ লোকের বসবাস। তাদের সুবিধার্থে সরকারিভাবে দুটি বড় পুকুর খনন করা হয়। অস্বাভাবিক জোয়ারে পুকুরের পাড় ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে। তাতে পলি জমে জমে পুকুরগুলো সমতলের মতো হয়ে গেছে। ফলে এখন আর পানি জমে না এই পুকুরগুলোতে। এ ছাড়া এখানকার বাসিন্দাদের ব্যবহারের জন্য চারটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে তিনটি অনেক আগে থেকেই বিকল। একটি থেকে কোনোমতে খাওয়ার পানি সংগ্রহ করা যায়। কিন্তু দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য মানুষজনকে নদীর লোনা পানিসহ বিকল্প উৎস খুঁজতে হয়।

সরেজমিনে তরুবীথি গুচ্ছ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এক গৃহিণী ঘরের সামনের গর্তে জমে থাকা ঘোলা পানিতে থালাবাসন পরিষ্কার করছেন। অল্প পানিতে ভালোভাবে পরিষ্কার হয় কি না—প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কিছুই করার নেই। নদীর লোনা পানির চেয়ে অনেক ভালো গর্তের এই পানি। লোনা পানি ব্যবহারে শরীরে অ্যালার্জিসহ নানা রোগ দেখা দিয়েছে। এ জন্য ঘরের সামনে পুকুরের মধ্যে গর্ত তৈরি করে নিয়েছি। তা দিয়ে দৈনন্দিন গোসল, রান্নার কাজে ব্যবহারসহ বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে হয়।’

গুচ্ছগ্রামের উত্তর পাড়ে বসবাস করেন লিপি রানী দাস নামের একজন। তিনি বলেন, এখন শীত মৌসুম শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিছুদিন পর গর্তের পানি শুকিয়ে যাবে। তখন গরু-ছাগল ও নিজেদের প্রয়োজন মেটানো অনেক কঠিন হয়ে যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু লিপি, আফিয়া বা হাজেরা নয়। তরুবীথি ও ছায়াবীথি দুটি গুচ্ছ গ্রামের অনেকে নিজেদের প্রয়োজনে ঘরের সামনে গর্ত করে নিয়েছেন। সেই গর্তের পানি তাঁদের একমাত্র ভরসা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সেখানে নতুন একটি পুকুর খননের জন্য চিন্তা করতেছি। এ ছাড়া আগের পুকুরগুলো পুনরায় খনন করা যায় কি না তাও দেখতেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত