Ajker Patrika

থানচিতে যৌথ অভিযানের মধ্যেই থানা লক্ষ্য করে কেএনএফের গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম এবং বান্দরবান ও থানচি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০: ২১
থানচিতে যৌথ অভিযানের মধ্যেই থানা লক্ষ্য করে কেএনএফের গুলি

বান্দরবানে ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযান চলছে। এর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে থানচি থানা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও বিজিবি পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ৩০ মিনিট এই গোলাগুলি চলে।

এ ব্যাপারে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা আজ বৃহস্পতিবার রাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘থানার পাশের পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা থানাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। এ সময় থানা থেকেও তাদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালানো হয়েছে। এসব গুলিতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বেশির ভাগ গুলি ছিল ফাঁকা। ওই এলাকায় যৌথ অভিযান চলছে।’ পরবর্তী পদক্ষেপ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় একাধিক মামলা হবে।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, থানচি বাজার এলাকায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ গুলি শুরু হয়। এরপর যে যেভাবে পেরেছে, নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে। মুহূর্তে খালি হয়ে যায় থানচি বাজার। থেমে থেমে এক ঘণ্টার মতো গুলির শব্দ শোনা যায়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি সূত্র বলেছে, থানার চারপাশে আগে থেকেই টহলে ছিলেন বিজিবি সদস্যরা। সন্ত্রাসীদের গুলির পরেই পুলিশের সঙ্গে বিজিবি সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালান।

এদিকে গত মঙ্গলবার রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় উদ্ধার হয়েছেন। তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় কেএনএফের সঙ্গে শান্তি আলোচনা স্থগিত করেছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।

থানচি থানায় সন্ত্রাসী হামলার পর পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে। ছবি: সংগৃহীত কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
আজ সচিবালয়ে নিজ কক্ষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ব্যাংক লুটের ঘটনাটি সরকার হালকাভাবে নিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, এই ঘটনায় জড়িতদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনার। কেন হঠাৎ করে তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, তা জানা নেই। তবে যে উদ্দেশ্যেই এসব করুক না কেন, কাউকে ছাড় দেব না। হামলার কারণ বের করা হবে।’

হামলার পেছনে ভূরাজনৈতিক কিছু আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। অনেক কিছু হতে পারে। হঠাৎ করে আক্রমণ ও ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা আমাদের কাছে নতুন কিছু মনে হচ্ছে। তবে তথ্য না জেনে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’

শান্তি আলোচনা স্থগিত
পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক ক্য শৈ হ্লা বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে ২০২৩ সালের ২৯ মে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নেতাদের উপস্থিতিতে অরুণ সারকী টাউন হলে মতবিনিময় সভা হয়। ওই বছরের ৯ জুন স্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে ১৮ সদস্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটি কেএনএফের সঙ্গে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ৫ মার্চ দুই দফায় সরাসরি সংলাপ করেছে। সব ধরনের সশস্ত্র কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা ও অন্যান্য বিষয়সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারকও হয় কেএনএফের সঙ্গে। তবে তারা চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে সশস্ত্র কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। সর্বশেষ তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেএনএফের সঙ্গে শান্তি আলোচনা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। 

তিন উপজেলায় সোনালী ব্যাংক বন্ধ
ব্যাংক ডাকাতির পর নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল বুধবার বিকেলে বান্দরবান সদর উপজেলা বাদে জেলার বাকি ছয় উপজেলায় সব ব্যাংকের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। তবে গতকাল আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক সচল হয়। এ ছাড়া জেলার অন্য সব ব্যাংকের কার্যক্রমও চালু হয়। অবশ্য বন্ধ ছিল রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম।

বান্দরবান সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওসমান গণি গতকাল বলেন, প্রথম অবস্থায় থানচি শাখা থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা শোনা গেলেও পরে গণনা করে দেখা যায়, ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯২ টাকা নিয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচিতে সোনালী ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

পার্বত্যে নিরাপত্তা জোরদার
তিন ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় পার্বত্য তিন জেলায়ই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা আজ দুপুরে থানচিতে গিয়ে বলেন, তিন পার্বত্য অঞ্চলের কয়েকটি উপজেলা বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা একই ধরনের এবং একই চক্রের মনে হচ্ছে। ব্যাংকে ডাকাতির এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। তিনি বলেন, অন্তত তিনটি মামলার মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতা আনা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিরুনি অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের ধরতে যৌথ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) ও মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি]

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশু হাসপাতাল: বেশির ভাগ মেশিন নষ্ট, সেবাবঞ্চিত নবজাতক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালে অচল ফটো থেরাপি মেশিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালে অচল ফটো থেরাপি মেশিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ ২৫ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি শিশু হাসপাতালে নবজাতকের জন্ডিস চিকিৎসায় মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে। হাসপাতালের চারটি ফটোথেরাপি মেশিনের মধ্যে তিনটি গত এক বছর অচল। ফলে সেগুলোর স্থান হয়েছে স্টোর রুমে। মাত্র একটি মেশিনের সাহায্যে হাসপাতালটিতে কোনো রকমে নবজাতকের সেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিনা মূল্যের এই সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা হতদরিদ্র পরিবারের লোকজনকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনই কোনো না কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মেশিন-সংকটের কারণে। অনেকে বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে থেরাপি নিচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় ২০০৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় হাসপাতালটির। এক বছর পর নির্মাণকাজ শেষ হয়। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার পর ২০২০ সালে করোনার সময় চালু হয় হাসপাতালটি। এরপর সরকারি বরাদ্দের দুটি এবং অনুদানের দুটিসহ মোট চারটি ফটোথেরাপি মেশিনে চলছিল নবজাতকদের জন্ডিসের চিকিৎসা। প্রতিদিন চারটি, কখনো একটি মেশিনে দুটি করে শিশু রেখেও সেবা দেওয়া হতো। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাটে এক বছর আগে তিনটি মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও নেওয়া হয়নি সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নষ্ট মেশিনগুলো হাসপাতালের দুটি স্টোর রুমে ফেলে রাখা হয়েছে। সেগুলো এখন একেবারেই মেরামতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

কম ওজন নিয়ে ভর্তি এক শিশুর অভিভাবক অর্থি আহমেদ বলেন, হাসপাতালে মাত্র একটি ফটোথেরাপি মেশিনের কারণে অনেক নবজাতক সেবাবঞ্চিত হচ্ছে।

হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. আলী হাসান ফরিদ জামিল বলেন, ‘৮০-৯০ ভাগ নবজাতকের জন্ডিসের শঙ্কা থাকে। মাত্রা বেশি হলে ফটোথেরাপি দিতে হয়। সঠিক চিকিৎসা না পেলে মস্তিষ্ক দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, প্রতিবন্ধী হওয়ার শঙ্কা থাকে। কিন্তু তিনটি মেশিন নষ্ট থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। প্রতিদিন চার-পাঁচজনকে ফেরত দিতে হচ্ছে।’

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান জানান, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারে আগুনের কারণে মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শিশুদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে নতুন মেশিনের ব্যবস্থা করতে জোরালো চেষ্টা চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড় ১ ও ২ আসন: তরুণদের টানার চেষ্টায় প্রার্থীরা

  • প্রবীণদের পাশাপাশি তরুণ প্রার্থীরাও মাঠে সরব
  • তরুণ ভোটার ২ লাখ ৩২ হাজার ৬৪৮
  • ‘কিংমেকারের’ ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তরুণদের
ফাহিম হাসান, পঞ্চগড়
ফরহাদ হোসেন আজাদ, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, সারজিস আলম, সফিউল্লাহ সুফি, ইকবাল হোসাইন ও শিশির আসাদ।
ফরহাদ হোসেন আজাদ, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, সারজিস আলম, সফিউল্লাহ সুফি, ইকবাল হোসাইন ও শিশির আসাদ।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে পঞ্চগড়ে বইছে ভোটের হাওয়া। জেলার পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত দুটি সংসদীয় আসনে প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তৎপরতা বেড়েছে দৃশ্যমানভাবে। কর্মী-সমর্থকদের ব্যস্ততা, গণসংযোগ ও ব্যানার-ফেস্টুনে এখন সরব পুরো জেলা। তরুণ ভোটারদের ঘিরে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী নির্বাচনে পঞ্চগড়ের দুটি আসনেই ভোটযুদ্ধ বেশ জমজমাট হতে যাচ্ছে। প্রবীণ রাজনীতিকদের পাশাপাশি তরুণ প্রার্থীরাও মাঠে আছেন। এই দুই আসনে তরুণ ভোটারদেরই ‘কিংমেকারের’ ভূমিকায় দেখা যাবে।

পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা নিয়ে গঠিত পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির। তিনি এর আগেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন। এবারও মাঠে সরব নওশাদ। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির ইকবাল হোসাইন গ্রামেগঞ্জে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও ভোটের প্রচারে সক্রিয় রয়েছেন।

এ ছাড়া জাসদ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দলটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলন থেকে সাজেদুর রহমান সাজু, গণঅধিকার পরিষদ থেকে মাহাফুজার রহমান এবং খেলাফতে মজলিস থেকে মীর মোর্শেদ তুহিনও প্রচার চালাচ্ছেন।

বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত পঞ্চগড়-২ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী সফিউল্লাহ সুফি, জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আল আমিন, গণঅধিকার পরিষদের নেতা আসাদুজ্জামান নুর আসাদ, ইসলামী আন্দোলনের কামরুল হাসান প্রধান, এনসিপির শিশির আসাদ, খেলাফতে মজলিসের আবুল কাশেম এবং কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা সভাপতি আশরাফুল ইসলামও নির্বাচনী প্রস্তুতিতে রয়েছেন। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের শীর্ষ নেতা ও গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমুও এ আসন থেকে প্রার্থী হতে চান।

‘কিংমেকার’ তরুণ ভোটার

পঞ্চগড়ের সর্বশেষ হালনাগাদ করা ভোটার তালিকা অনুযায়ী, জেলায় মোট ভোটার ৮ লাখ ৭১ হাজার ৫২৫ জন। এর মধ্যে ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সী ভোটার ৬৪ হাজার ৫৫৩ জন, ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৮৭ হাজার ৪৪৮ জন এবং ২৬ থেকে ২৯ বছর বয়সী ৮০ হাজার ৬৪৭ জন। সব মিলিয়ে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটার ২ লাখ ৩২ হাজার ৬৪৮ জন, যা মোট ভোটারের প্রায় ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

এই তরুণ ভোটাররাই আসন্ন নির্বাচনে ‘কিংমেকার’। বিশেষ করে যাঁরা প্রথমবার ভোট দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের সিদ্ধান্তই ঘুরিয়ে দিতে পারে নির্বাচনের ফল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত ১৫ বছরে এই বয়সসীমার বড় একটি অংশ ভোট দিতে পারেননি বা দেননি। এবার তাঁরাই হতে পারেন সবচেয়ে প্রভাবশালী ভোটারগোষ্ঠী। তাই রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে নামছে তরুণদের মন জয়ের কৌশল নিয়ে; উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে।

বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী দলের ৩১ দফা এবং ১৮০ দিনের কর্মসূচির মূল অংশগুলো আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরছি। যেন ভোটাররা বুঝে ভোট দিতে পারে, কারা বাস্তব উন্নয়ন করতে সক্ষম।’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘প্রার্থীর ক্লিন ইমেজ থাকা জরুরি। জনগণের জন্য কাজ করার মানসিকতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচিত হলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের উন্নয়ন নিশ্চিত করব। নেতারা জনগণের কাছে যাবেন, জনগণ নয়।’

জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘আমরা জনগণের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়েই মাঠে নেমেছি। জনগণের পাশে থেকে ন্যায়ের সমাজ প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ।  ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আলেম ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি, এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে।’

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত শানে তাওহীদ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘১৭ অক্টোবর ড. ইউনূস সরকার ঘোষিত লালন তিরোধান দিবস বাতিল করতে হবে। দেশে এখন লালনের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এখন তার পূজা করা হয়। বাউলদের ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ না করলে ৬৪ জেলায় একসঙ্গে আন্দোলন ও সমাবেশ করা হবে।’

মানিকগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা সাঈদ নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস শেখ সালাহউদ্দিনসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূলদের পাশে জীবননগরের ইউএনও

চুয়াডাঙ্গা (জীবননগর) প্রতিনিধি 
গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে ইউএনও। ছবি: আজকের পত্রিকা
গভীর রাতে কম্বল নিয়ে ছিন্নমূল শীতার্তদের পাশে ইউএনও। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গায় এবার শীত শুরু হয়েছে আগেভাগেই। কনকনে শীতে কাঁপছে জেলার মানুষ। এই শীতের রাতে জবুথবু হয়ে ঘুমিয়ে থাকেন ছিন্নমূল মানুষ। কেউ চাদর, আবার কেউ গামছা-লুঙ্গি কিংবা ছেঁড়া কাঁথা গায়ে জড়িয়ে ঘুমান। শীতের তীব্রতা বাড়ায় এসব ছিন্নমূল মানুষের কথা চিন্তা করে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পথে পথে ঘুরে কম্বল বিতরণ করছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমীন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার থেকে জীবননগর পৌর শহরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি।

ইউএনও আল আমীন বলেন, ‘ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব কম্বল ছিন্নমূল দুস্থ ও অসহায় মানুষ খুঁজে খুঁজে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘আমরা যাঁরা আর্থিকভাবে সচ্ছল, তাঁরা শীত নিবারণের জন্য অনেক কিছুই কিনতে পারি। আমরা যখন বাসাবাড়িতে দামি কম্বল মুড়িয়ে আরামে ঘুমাতে যাই, তখনো অনেক মানুষ কনকনে শীতে বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনে শুয়ে-বসে রাত কাটায়। এসব অসহায় মানুষের শীতবস্ত্র দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।’

আল আমীন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের উচিত এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমি চাই, সমাজের সকল বিত্তবান মানুষ এই শীতে সবার পাশে যেন দাঁড়ায়।’

রাতে ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সৈয়দ আব্দুল জব্বার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

বিয়ে করলেন হান্নান মাসউদ, কনে কে

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত