Ajker Patrika

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ ১৯৫ কর্মচারী

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪, ০১: ৫০
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ ১৯৫ কর্মচারী

নিয়ম অনুযায়ী শূন্য পদে নিয়োগে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে সিলেকশন বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা নিতে হয়। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের আবেদন অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে পাঠানো হয়। সিন্ডিকেট চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। তবে সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কাই করেননি। বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দিয়েছেন প্রায় ২০০ কর্মচারী। এর মধ্যে শেষ কর্মদিবসেই নিয়োগ দিয়েছেন ৩২ জনকে। এই অবস্থায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত দাবি করেছেন শিক্ষকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই সমস্ত নিয়োগ সাবেক উপাচার্য বিধিবহির্ভূতভাবে দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের নির্দিষ্ট বিধি ও প্রক্রিয়া আছে। যদি তা অনুসরণ করা না হয়, তাহলে এসব নিয়োগ আইনানুগ হয়নি। এটা অবৈধ। তিনি অনৈতিক ও বেআইনি কাজ করেছেন। এই ব্যাপক অনিয়মের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত। আমরা তদন্তের কথা আগেও বলছি, এখনো বলছি।’

২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। ১৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরকে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলেছে, ২০১৯ সালে উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পরই শিরীণ আখতার বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কর্মচারী নিয়োগ শুরু করে দেন। অথচ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউজিসি দৈনিক মজুরি কিংবা অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ বন্ধ রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সেলের তথ্য অনুযায়ী, অধ্যাপক শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দৈনিক ভিত্তিতে ১৯৫ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ১১৩ জন, চতুর্থ শ্রেণির ৮২ জন। সর্বশেষ উপাচার্য হিসেবে শেষ কর্মদিবসে নিয়োগ দিয়েছেন ৩২ জন।

এর আগে ২০২২ সালে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনসংক্রান্ত পাঁচটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফাঁস হওয়া ফোনালাপ ছিল ড. শিরীণ আখতারের তৎকালীন ব্যক্তিগত সহকারী খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন ও হিসাব নিয়ামক দপ্তরের কর্মচারী আহমদ হোসেনের সঙ্গে দুজন প্রার্থীর। এর মধ্যে একটি ফোনালাপে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শোনা যায়। অপর একটি ফোনালাপে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর শীর্ষ ব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করতে উপাচার্যের টাকা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন কর্মচারী আহমদ হোসেন। এ ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি মামলা করার পরামর্শ দেয়। তবে অধ্যাপক শিরীণ আখতার মামলা করা থেকে বিরত থাকেন। এ ছাড়া একই বছর নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ে এক প্রার্থীর সঙ্গে এক কর্মচারীর আরও একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যক্তিগত খেয়ালখুশিমতো নিয়োগ দেশের প্রচলিত আইন ও মানবিকতা কোনো দিক থেকেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের কথা শোনা যাচ্ছে। এসব বিষয়ে দুদক ও ইউজিসি থেকে তদন্ত হওয়া উচিত। দেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয় চলে। রাষ্ট্রের টাকা এভাবে নয়ছয় করা সম্পূর্ণ অনৈতিক।

এ বিষয়ে জানতে বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক হাসিনা খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম তদন্তে একটি কমিটি কাজ করছে। তারা এই বিষয়গুলোও দেখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত