Ajker Patrika

বিশ্বের যে ১০টি জায়গায় বেশি হানা দেয় জলদস্যুরা 

আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৪, ১১: ৪৮
বিশ্বের যে ১০টি জায়গায় বেশি হানা দেয় জলদস্যুরা 

গত কয়েক বছরে জলদস্যুতার হুমকি ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বজুড়ে জলদস্যুদের আক্রমণ, জাহাজ লুট বা জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে হরহামেশাই প্রকাশ পায়। এমনকি মুক্তিপণ না পেয়ে জাহাজের নাবিকদের ক্ষতির ঘটনাও ঘটছে। এখন সাগরে জলদস্যুতা আর নির্দিষ্ট সামুদ্রিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বের আনাচে-কানাচে এই সমস্যা ছড়িয়ে পড়েছে। 

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নোঙর করা হয়েছে। তবে এই জলদস্যুরা এখনো মুক্তিপণ চায়নি। জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ ও ২৩ নাবিককে ফেরাতে জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। বিশ্বের বহু এলাকায় সামুদ্রিক জলদস্যুদের আতঙ্ক ও হুমকি ক্রমশ বাড়ছে। জলদস্যুতা প্রভাবিত ১০টি এলাকার তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো:—

মালাক্কা প্রণালি
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত মালাক্কা প্রণালি ঘিরে আছে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের এক প্রান্ত। সুয়েজখাল, মিসর আর ইউরোপের দিকে যাত্রাপথে এই প্রণালি পার হওয়ার সময় জলদস্যুরা জাহাজগুলো ধরে। তবে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর যৌথভাবে তাদের উপদ্রব কমিয়ে এনেছে। 

দক্ষিণ চীন সাগর
দক্ষিণ চীন সাগরের জলদস্যুরা মূলত মালয়েশীয় বা ইন্দোনেশীয়। মালয়েশিয়ার সমুদ্রসীমাতেই দুর্ধর্ষ এই দস্যুদের আক্রমণ বেশি হয়। এই জলদস্যুরা মালয়েশিয়া সরকারের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

এডেন উপসাগর
লোহিতসাগরে ঢোকার মুখে অবস্থিত এডেন উপসাগর। এই পথ দিয়ে সুয়েজখালের দিকে যাওয়া মালবাহী জাহাজ চলাচল করে বলে এটা ভৌগোলিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর কাছেই অবস্থিত বিশৃঙ্খল দেশ সোমালিয়া। এই বাণিজ্যপথে সোমালি জলদস্যুদের তাণ্ডব চলে। এটা অনেক দেশের সরকার ও বড় শিল্পগোষ্ঠীর জন্য বড় চিন্তার কারণ। 

গিনি উপসাগর
উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা আর দক্ষিণের অ্যাঙ্গোলার কাছে গিনি উপসাগরও জলদস্যুরা হানা দেয়। ইউরোপীয় দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের তেলের জাহাজগুলো এই পথ দিয়েই চলাচল করে। ওত পেতে থেকে জলদস্যুরা এসব জাহাজে হামলা করে। এখানে অজানা অনেক আক্রমণের ঘটনা ঘটে।

বেনিন
আফ্রিকার দেশ বেনিনের জলসীমায় জলদস্যুতের উপদ্রব ব্যাপক। এই এলাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জলপথগুলোর একটি। এখানকার জলদস্যুদের সহজে ধরা যায় না। আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা সংস্থা (আইএমও) এই অঞ্চলে জলদস্যুতা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিলেও এখনো ফলাফল দেখা যায়নি।

নাইজেরিয়া
নাইজেরিয়া আফ্রিকার পশ্চিমের দেশ। এখানে জলদস্যুরা খুবই সক্রিয়। মেরিন কার্গো চলাচলের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত এটি। নাইজেরিয়ান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেই এখানে। তাই জলদস্যুরা এখানে বেশ বেপরোয়া। জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখানকার জলদস্যু ও সোমালিয়ান দস্যুদের মধ্যে লড়াই চলতেই থাকে। জলদস্যুতার হুমকির কারণে পশ্চিম আফ্রিকার পুরো সাগরপথে পণ্য পরিবহনে জাহাজগুলোর উচ্চ বীমা দরকার হয়।

আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চল ও সোমালিয়ার জলদস্যুতার ঘটনাগুলোর মধ্যে বড় পার্থক হলো, পশ্চিম আফ্রিকার জলদস্যুরা সোমালিদের চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের কাজ করে।

সোমালিয়া
চরম দারিদ্র্য, গৃহযুদ্ধ, সরকারের ব্যর্থতা আর সোমালি জলসীমায় বিদ্যমান বিষাক্ত সামুদ্রিক বর্জ্যের কারণে সোমালিয়ায় ব্যাপক হারে জলদস্যুতা হয়। জলদস্যুতার বীমা পলিসিতে উচ্চহারের প্রিমিয়াম ছাড়াও নানা সমস্যা আছে। সোমালিয়ায় সামুদ্রিক জলদস্যুতা বিশ্বমহলের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়। কারণ, দারিদ্র্য মোকাবিলায় জলদস্যুতাকেই একমাত্র বিকল্প হিসেব বেছে নিয়েছে সোমালিরা।

ইন্দোনেশিয়া
দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার এই দেশে জলদস্যুর আক্রমণ খুব বেশি। আনাম্বাস, নাতুনা আর মেরুনডানগ দ্বীপে এদের উপদ্রব বেশি। এখানকার দস্যুরা দিনে নয়, রাতে আক্রমণ বেশি করে।

আরবসাগর
আরবসাগরে ওমান উপসাগরের এলাকাতেই জলদস্যুদের বেশি বিচরণ। এই এলাকা বারবার সামুদ্রিক জলদস্যুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তবু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সরকার এডেন উপসাগর ও সোমালি উপকূলের মতো এখানকার নিরাপত্তা নিয়ে ততটা উদ্বিগ্ন নয়। এ কারণে আরব সাগরে পণ্য পরিবহনে তাই মোটা অঙ্কের ইন্স্যুরেন্স করতে হয়।

ভারত মহাসাগর
ভারত মহাসাগরে জলসীমায় মূলত সোমালিয়ার জলদস্যুরা হানা দেয়। ভারতীয় জাহাজের পাশাপাশি অন্য দেশের জাহাজও তাদের হামলার শিকার হয়। ভারত মহাসাগর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া অন্যতম সামুদ্রিক পথ হওয়ায় এখানে জলদস্যুতার প্রভাব মারাত্মক। 

সামুদ্রিক জলদস্যুতার মতো অপরাধের শিগগির সমাধান দরকার। আইএমও কমিটি ও সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু সরকারের ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকায় সব ক্ষেত্রে সামাধান মিলছে না। এ কারণে জলদস্যুতা বাড়ছে। 

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে তেল দিয়ে ফেরার পথে রুশ জাহাজে আঘাত হানল ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ গোপন বহরের অন্তর্ভুক্ত ওই জাহাজটির নাম ‘কেনডিল’। ছবি: সংগৃহীত
রুশ গোপন বহরের অন্তর্ভুক্ত ওই জাহাজটির নাম ‘কেনডিল’। ছবি: সংগৃহীত

ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় একটি রুশ তেলবাহী ট্যাংকার ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। এই হামলাকে ‘অভূতপূর্ব বিশেষ অভিযান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কিয়েভ। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক নাটকীয় ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনীয় ড্রোনের আঘাতে ট্যাংকারটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ জানিয়েছে, হামলাটি ইউক্রেন থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল দূরে সংঘটিত হয়। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, নিরপেক্ষ জলসীমায় এটি প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের সরাসরি সামরিক আঘাত। এর আগে ইউক্রেন শুধু কৃষ্ণসাগরে রুশ জাহাজের ওপর ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস জানিয়েছে, আক্রান্ত জাহাজটির নাম ‘কেনডিল’। এটি রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা গোপন নৌবহরের অংশ বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। এসব জাহাজ সাধারণত নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রুশ তেল পরিবহনে ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ পশ্চিমা দেশগুলোর। হামলার সময় ট্যাংকারটি খালি ছিল এবং এতে কোনো তেল বা জ্বালানি বহন করা হচ্ছিল না বলে ইউক্রেন দাবি করেছে। এর ফলে পরিবেশগত কোনো ঝুঁকি তৈরি হয়নি। তবে বিস্ফোরণে ট্যাংকারটি ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ট্যাংকারটি চলতি মাসের শুরুতে ভারতের গুজরাট রাজ্যের সিক্কা বন্দরে তেল খালাস করে ফিরে যাচ্ছিল। ফেরার পথেই ভূমধ্যসাগরে হামলার চালানো হয়।

এই হামলাকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের একটি নতুন ও তাৎপর্যপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরপেক্ষ জলসীমায় এমন অভিযান ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আইন, নৌ নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক জ্বালানি পরিবহন নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, তবু হামলার ভিডিও প্রকাশ যুদ্ধের পরিধি ও কৌশল নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে যুব টিপরা ফেডারেশনের কর্মীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে যুব টিপরা ফেডারেশনের কর্মীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে টিপরা মথা পার্টির যুব সংগঠন যুব টিপরা ফেডারেশন (ওয়াইটিএফ)। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি বক্তব্যের প্রতিবাদে ওয়াইটিএফ আজ শুক্রবার এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সম্প্রতি এক সমাবেশে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ‘সেভেন সিস্টার্স’ হিসেবে পরিচিত পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত ওয়াইটিএফ কর্মী রাজপথে নেমে হাসনাত আবদুল্লাহর ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। এ সময় তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাঁরা সতর্ক করে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওপর যেন বাংলাদেশ ‘কুদৃষ্টি’ না দেয়।

বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ সরকারকে মনে করিয়ে দেন, ১৯৭১ সালে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ভারতের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

যুব টিপরা ফেডারেশনের সভাপতি সুরজ দেববর্মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে সংকটের সময়ে আমাদের দেশ তাদের পাশে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়েছিল। ভারতের অমূল্য অবদানেই আজকের বাংলাদেশের অস্তিত্ব তৈরি হয়েছে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে সুরজ দেববর্মা আক্রমণাত্মক মন্তব্য করে বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে তাদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার স্বপ্ন দেখে, তবে এই অঞ্চলের মানুষও সমুদ্রে যাওয়ার পথ চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক মানুষ বসবাস করেন, যাদের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পরিচয় ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে মিলে যায়। বাংলাদেশ যদি উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেয়, তবে আমরাও ভারতের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামকে যুক্ত করার দাবি তুলতে পারি।’

আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে গত বছরের ডিসেম্বরে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে আজকে বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর) এবং সিআরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় এক সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছিলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, তবে বাংলাদেশও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীদের আশ্রয় দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে (সেভেন সিস্টার্স) ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এইচ-১বি ভিসায় ব্যাপক জালিয়াতি ও ঘুষের অভিযোগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মাহভাশ সিদ্দিকি ২০০৫-২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেটে জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
মাহভাশ সিদ্দিকি ২০০৫-২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেটে জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কূটনীতিক মাহভাশ সিদ্দিকি এইচ-১বি ভিসা নিয়ে একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারতীয়রা এইচ-১বি ভিসা পেতে জালিয়াতি ও ঘুষ লেনদেন করছেন। তাঁর মতে, অযোগ্য প্রার্থীরা এই ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষ মার্কিন কর্মীদের কর্মসংস্থান দখল করছেন। এই দুর্নীতির তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি এইচ-১বি ভিসা কার্যক্রম অবিলম্বে স্থগিত রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন।

অ্যান্টি ইমিগ্রেশন থিংকট্যাংক সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজে (সিআইএস) লেখা এক নিবন্ধে মাহভাশ সিদ্দিকি ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের মার্কিন কনস্যুলেটে জুনিয়র অফিসার হিসেবে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।

এর আগে এক পডকাস্টে মাহভাশ সিদ্দিকি বলেন, চেন্নাইয়ে তিনি ১৫ জন জুনিয়র ভিসা কর্মকর্তার একজন ছিলেন। তিনি চেন্নাই কনস্যুলেটকে এইচ-১বি ভিসা জালিয়াতির ‘বিশ্ব রাজধানী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালে চেন্নাইয়ে বছরে ১ লাখ আবেদন পড়ত, এখন তা বছরে ৪ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

মাহভাশ সিদ্দিকি অভিযোগ করেন, অধিকাংশ আবেদনকারীর কম্পিউটার সায়েন্সের ডিগ্রি থাকলেও তাঁদের মৌলিক কোডিং জ্ঞান নেই। হায়দরাবাদের আমিরপেট এলাকায় জাল ডিগ্রি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও জাল ম্যারেজ সার্টিফিকেট বিক্রির একটি ‘শিল্প’ গড়ে উঠেছে বলে তিনি দাবি করেন।

মাহভাশ সিদ্দিকির মতে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র উভয় স্থানেই দুর্নীতিবাজ এইচআর কর্মকর্তারা জাল চাকরির চিঠি তৈরি করতে সহায়তা করেন। তিনি একে একটি ‘ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড সিস্টেম’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

মাহভাশ সিদ্দিকির দাবি অনুযায়ী, এই ভিসাব্যবস্থার অপব্যবহার মার্কিন কর্মীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। যেমন—ভারতীয়দের জালিয়াতির ফলে যোগ্য মার্কিন আইটি গ্র্যাজুয়েটদের সরিয়ে কম যোগ্য এইচ-১বি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

ভারতীয় লবিস্ট ও সিলিকন ভ্যালির শীর্ষ নির্বাহীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন মাহভাশ সিদ্দিকি। তাঁর দাবি, তাঁরা মার্কিন কর্মীদের অদক্ষ হিসেবে তুলে ধরতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, মার্কিন কংগ্রেস বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক সময়ই অবগত নয় এবং ভুল তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্ত হচ্ছে।

যদিও এইচ-১বি কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ দেওয়া, মাহভাশ সিদ্দিকির মতে, এটি কার্যত একটি দেশের আধিপত্যে পরিণত হয়ে অভিবাসনের শর্টকাটে রূপ নিয়েছে।

তবে কেবল আইটি সেক্টরেই নয়, বরং চিকিৎসাক্ষেত্রের ভিসা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মাহভাশ সিদ্দিকির দাবি, ভারতের অনেক মেডিকেল গ্র্যাজুয়েট কোটা বা ঘুষের মাধ্যমে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে জে-১ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন এবং মার্কিন চিকিৎসকদের তুলনায় নিম্নমানের দক্ষতা নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি মার্কিন সরকারকে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। সুপারিশ হিসেবে তিনি এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির আওতায় নতুন ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা, ডিগ্রি ও দক্ষতা যাচাই, পর্যাপ্ত আমেরিকান কর্মী থাকলে সেই সেক্টরে বিদেশি নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা ও জালিয়াতি ধরা পড়লে জরিমানা এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শান্তিতে মাচাদোর নোবেল পাওয়ার বিরুদ্ধে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩১
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নোবেল ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে সুইডেনে একটি ফৌজদারি অভিযোগ করেছেন। ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন। অ্যাসাঞ্জের দাবি, এই পুরস্কার দিয়ে নোবেল তহবিলের ‘চরম অপব্যবহার’ করা হয়েছে এবং সুইডিশ আইনের আওতায় এটি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সহায়তার শামিল।

অভিযোগে অ্যাসাঞ্জ বলেন, শান্তির প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত নোবেল পুরস্কারকে এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ‘যুদ্ধের হাতিয়ারে’ পরিণত করা হয়েছে। তিনি মাচাদোর হাতে পুরস্কারের অর্থ হিসেবে বরাদ্দ ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা) হস্তান্তর স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগপত্রে নোবেল ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট ৩০ জনের বিরুদ্ধে তহবিল অপব্যবহার, যুদ্ধাপরাধ ও আগ্রাসী অপরাধে অর্থায়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।

চলতি বছরের অক্টোবরে নোবেল কমিটি মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের বক্তব্য ছিল—মাচাদো ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরতন্ত্র থেকে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য কাজ করেছেন। তবে এই সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই বিতর্কের জন্ম দেয়। বিশেষ করে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রতি মাচাদোর প্রকাশ্য সমর্থন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। মাচাদো ক্ষমতায় গেলে ভেনেজুয়েলার দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের অঙ্গীকারও করেছেন।

অ্যাসাঞ্জ দাবি করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে সামরিক চাপ প্রয়োগের যে নীতিকে মাচাদো সমর্থন করেছেন, তা তাঁকে শান্তিতে নোবেল পাওয়ার যোগ্যতা থেকে ‘সম্পূর্ণভাবে বাদ’ দেয়। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, এই সামরিক অভিযানে ইতিমধ্যে বহু প্রাণহানি ঘটেছে এবং ভেনেজুয়েলায় আগ্রাসনের আশঙ্কা বাড়ছে।

আলফ্রেড নোবেলের উইলের কথা উল্লেখ করে অ্যাসাঞ্জ বলেন, ১৮৯৫ সালে আলফ্রেড নোবেল স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন—শান্তিতে নোবেল পুরস্কার সেই ব্যক্তিকে দিতে হবে, যিনি মানবজাতির কল্যাণে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন এবং জাতিগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন। উইকিলিকসের পক্ষ থেকেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, পুরস্কারের অর্থ মানবিক উদ্দেশ্যের বদলে আগ্রাসন ও যুদ্ধাপরাধে ব্যবহৃত হতে পারে।

নরওয়ের অসলোতে একটি কমিটি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দিলেও অ্যাসাঞ্জ যুক্তি দিয়েছেন—সুইডেনের স্টকহোমভিত্তিক নোবেল ফাউন্ডেশনকেই এই পুরস্কারের আর্থিক দায়ভার নিতে হবে। সুইডিশ পুলিশ জানিয়েছে, তারা অ্যাসাঞ্জের অভিযোগ গ্রহণ করেছে এবং বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত