ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে গাজীপুরে তৈরি হয়েছে শঙ্কা ও সন্দেহ। তবে ইভিএম নিয়ে আস্থার কথা জানিয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা ও মেয়র পদপ্রার্থী জায়েদা খাতুন। আজকের পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইভিএমের প্রতি তাঁর ভরসার কথা জানিয়েছেন।
এর আগে কখনো এই সিটিতে ইভিএম ব্যবহার করা হয়নি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮৬ ভোটারের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করবে নির্বাচন কমিশন। ৪৮০টি কেন্দ্রের জন্য মোট ৫ হাজার ২৪৬টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ইভিএম নিয়ে কী ভাবছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি কখনো ইভিএম দেখিনি, ভোট দিইনি। আমি শুনেছি এটা নাকি ঠিক আছে। এর মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। এখন পর্যন্ত ইভিএম নিয়ে আমার কোনো শঙ্কা নেই। কেউ এ রকম কিছু বলেওনি। ইভিএমের প্রতি আমার আস্থা আছে। সরকার যেহেতু মেনে নিচ্ছে, তাহলে আমার না মানার কী আছে?’
ভোটের পরিবেশ নিয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের প্রতি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই। সবার কাছে আশা থাকবে যত বাধাই আসুক না কেন তাঁরা যেন ভোটটা দিয়ে যান।’
সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় আছে। কিছু দলীয় কর্মী আছেন যাঁরা সমস্যা করেন। একজন আরেকজনকে ভোট দিতে দেন না।’
প্রশাসনের কাছে দাবি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দাবি আছে, ভোট যেন নিরাপদ ভাবে হয়। কোনো কারচুপি যেন না হয়। যার যেখানে যতগুলো ভোট আছে, সেটা যেন গুনে বুঝিয়ে দিতে পারে প্রশাসন।’
গাজীপুরে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৮১টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ বলছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আপনারা জানেন, মিডিয়া দেখছে প্রতিদিন কারা কী করছে। এখানে আমার বলার কিছু নেই। আমার পক্ষ থেকে কি কেউ কিছু করেছে? কোনো অভিযোগ এসেছে? কোনো গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে? কোনো মানুষ মারামারি, কোনো দৌড়াদৌড়ি হয়েছে? এই ঘড়ি মার্কা কোনো বাধা দিয়েছে—সেটি কি জানতে পেরেছেন আপনারা? তাই আপনারা বুঝেছেন আমার বলার কিছু নেই।’
ভোটের পরিবেশ নিয়ে প্রার্থী থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে অনেকেই শঙ্কা জানিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা আসবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাধা তো আসবেই। একজনের তিনটা করে মার্কা থাকবে। সবাই সবার ভোটের দাবি জানাবে। সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা এলে যাঁর ভোট তাঁকেই দিতে হবে। কেউ যদি বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাহলে ভোট ভালো হবে ইনশা আল্লাহ।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টঙ্গী বনাম গাজীপুর একটা রেশ সব সময় থাকে, এবারও তেমন হবে কি না, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের মানুষ টঙ্গীতে আছে আবার টঙ্গীর মানুষও গাজীপুরে আছে। ভোট আমার একার না। ভোট তো সবার। তাই সবাই ভোট দেবে সব জায়গা থেকে।’
ভাসমান ভোটার আছে গাজীপুর সিটিতে। আর তার বেশির ভাগই নারী ভোটার। সে ক্ষেত্রে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি যদি নির্বাচনে জয়ী হতে পারি, তাহলে নারীদের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুবিধা ও কাজ করে দেব।’
ফলাফল যা-ই হোক, মেনে নেওয়ার প্রশ্নে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হলে অবশ্যই মেনে নেব। যদি ভোটকেন্দ্রে কোনো হামলা না হয়। বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে যদি তারা কিছু না করে, তাহলে ঠিক আছে। সুন্দর সুষ্ঠু ভোট হলে আমার কোনো অবজেকশন নেই।’
জায়েদা খাতুনের পক্ষে মুখ্য সমন্বয়কারীর ভূমিকায় আছেন তাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। তাই নির্বাচনে জয়ী হলে কীভাবে সিটি করপোরেশন চালাবেন, সেই প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি। তবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মা সবকিছু করবে। আমি পাশে থাকব। আর এটা জয়ের পরের ব্যাপার।’
গাজীপুর সিটি নির্বাচন সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
- গাজীপুর সিটি নির্বাচন: বিভিন্ন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
- গাজীপুর সিটি নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে মা-ছেলের ভিন্ন সুর
- নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বিদেশি বন্ধুদের জানাব: জাহাঙ্গীর আলম
- গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৪৮০ কেন্দ্রের ৩৫১টিই ঝুঁকিপূর্ণ
- বিএনপি পরিবারের সন্তান, তাই দলীয় ভোটগুলো আমি পাব: স্বতন্ত্র প্রার্থী রনি
- জাহাঙ্গীর নাটকে বড় ওস্তাদ: আজমত উল্লা
- ‘নৌকা ছাড়া কাউকে ভোটকেন্দ্রে আসতে দেবেন না’ বলে প্রার্থিতা হারালেন আ.লীগ নেতা
- ইভিএমে প্রথম ভোট দিলাম, ভালো লাগছে
- স্মার্টফোনে ভিডিও দেখে ইভিএমে ভোট দিলেন ৯৬ বছরের বৃদ্ধা
- এবার পূর্ণ মেয়াদে মেয়র চান গাজীপুরবাসী
- সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ হচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন
- ইসির নির্দেশে গাজীপুরে ২ জন আটক
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে