নওগাঁর মান্দায় গাছের ডাল দিয়ে দশম শ্রেণির ৫৪ শিক্ষার্থীকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে। ক্লাসে পড়া দিতে না পারার কারণে শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছেন বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবক মহলেও।
গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার চকগোপাল উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে মোবাইল ফোনে অভিযোগ পেয়ে বিকেলেই তাৎক্ষণিক তদন্তে যান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ শাহ্ আলম ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পবিত্র কুমার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেখ শাহ্ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাৎক্ষণিক তদন্তে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে তিনি মারধর করেছেন বলে জেনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
সেখ শাহ আলম আরও বলেন, গণহারে শিক্ষার্থীদের মারধর করে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী চরম অপরাধ করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্যাতনের শিকার এক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে জানায়, ‘টিফিনের আগে গণিতের ক্লাস নিতে যান প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী। পড়া দিতে না পারায় ক্লাসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ডাল দিয়ে বেদম মারধর করেন। এতে আমার পিঠের কয়েকখানে ক্ষত হয়ে রক্ত বের হয়েছে। ছুটির পর বাড়িতে এসে জানাই।’
ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক (নানি) শাহিদা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার নাতিকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে ইদ্রিস মাস্টার। একজন সুস্থ মানুষ বাচ্চাদের এভাবে পেটাতে পারে না। আমি ইদ্রিস মাস্টারের শাস্তির দাবি করছি।’
এ ছাড়া ওই ক্লাসের বেশ কিছু শিক্ষার্থীও মারধরের বিষয়ে অভিযোগ করেছে।
অপর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্লাসে পড়া না পারায় দুই মাস আগে আমার ছেলে ফজলে রাব্বীকেও একইভাবে পেটান ইদ্রিস মাস্টার। আমি ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিলে তিনি বাড়ি এসে হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চান। এ জন্য আর অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ইদ্রিস মাস্টার বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের প্রায়ই নির্যাতন করেন। তাঁর শাস্তি হওয়া দরকার।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া পারে না। ক্লাসে শুধু হইচই করে। তাই তাদের মারধর করা হয়েছে।’ মারধর করা ঠিক হয়নি বলেও স্বীকার করেন তিনি।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে