Ajker Patrika

তুলে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর সাংবাদিক শামসকে আদালতে নিল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩, ১৩: ৩২
তুলে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর সাংবাদিক শামসকে আদালতে নিল পুলিশ

ভোরে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয়েছে। তবে বুধবার রাতে রমনা থানায় হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় শামসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। রমনা থানার এই মামলার প্রধান আসামি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১০টার দিকে সকালে তাঁকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক শামসকে আদালতে আনা হয়েছে। তাঁকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।’

তবে মামলা কোন আদালতে এবং কখন শুনানি হবে, সেটা এখনো নির্ধারিত হয়নি। এমনকি সংশ্লিষ্ট সাধারণ নিবন্ধন শাখায় মামলার কোনো কাগজপত্র দাখিল হয়নি।

প্রথম আলোর আইনজীবী প্রশান্ত কর্মকার জানান, রমনা থানার মামলায় শামসকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাঁরা জামিনের আবেদন করবেন।

এর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয় দিয়ে মামলার কথা বলে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সাভার প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গত বুধবার ভোর ৫টার দিকে আশুলিয়ায় আমবাগানের ওই বাসায় সিআইডির অভিযানের সময় সঙ্গে ছিলেন আশুলিয়া থানার (উপপরিদর্শক) এসআই রাজু মণ্ডল।

শামসকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে এসে দুপুরের পরে তেজগাঁও থানায় এই মামলা করেন মো. গোলাম কিবরিয়া। এজাহারকারী ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের নেতা। মামলায় শামসুজ্জামান শামস ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়। একই সঙ্গে উক্ত সংবাদ দৈনিক প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে। ওই সংবাদে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, সেই শিশুর নাম জাকির হোসেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম? বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়; যা দেশ-বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাঁদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের সোনালি গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণসহ বহির্বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে ৭১ টিভি চ্যানেলসহ তাদের অনলাইন পোর্টালেও প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে।

মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, যে শিশুর কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। নাম-পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পত্রিকায় বলা হয়, শিশুটির নাম জাকির হোসেন, কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই শিশুর নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ি সাভার থানার কুরগাঁওপাড়ায়। শিশুটির বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে মেজ সন্তান সবুজ।

প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর। কিন্তু সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝে মাঝে ফুল বিক্রি করে। শামসুজ্জামানের পাঠানো প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ-মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’ প্রকৃতপক্ষে ওই শিশু এ ধরনের কোনো কথা বলেনি।

এজাহারে ওই শিশুকে টাকা দিয়ে তার ছবি তোলা হয় জানিয়ে বলা হয়, ‘শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মিথ্যা সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি ক্ষুব্ধ। এমন পরিস্থিতিতে এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা অনুমতি ব্যতিরেকে মিথ্যা তথ্য-উপাত্তসহ মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর উপক্রম ও সহায়তার অপরাধ করেছে।’

এ ছাড়া একই ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে শামসুজ্জামান শামসকেও আসামি করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন আইনজীবী মশিউর মালেক। 

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপত্তা শঙ্কায় রাবি শিক্ষকের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

রাবি প্রতিনিধি  
সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে এক পোস্টে কাজী জাহিদ এ ঘোষণা দেন। পোস্টে তিনি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

পোস্টে রাবির সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদ লেখেন, ‘নিরাপত্তা না থাকায় ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া ও অন্যান্য একডেমিক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে দুঃখিত। আমার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব রয়েছে আমার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া এবং প্রয়োজনে আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে আটশত শিক্ষকের প্রতি ক্লাসরুমে প্রবেশ করলে তাদেরকে কলার ধরে টেনে প্রশাসন ভবনের সামনে এনে বেঁধে রাখার অব্যাহত হুমকি দেয়া হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সকল শিক্ষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’

কাজী জাহিদ আরও লেখেন, ‘যেই মুহূর্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, সেই মুহূর্ত থেকেই আমার উপরে ন্যস্ত দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করবো ইনশাল্লাহ।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কাজী জাহিদ বলেন, ‘এভাবে জেনারেল নোটিশের মতো সংখ্যা উল্লেখ করে হুমকি দেওয়ার পর আমরা কোনোভাবেই নিরাপদ অনুভব করছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী সাত শতাধিক শিক্ষক যদি ফ্যাসিস্ট হয়, তাহলে সেখানে তো আমারও নাম আছে!’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল শিক্ষকই তো রাজনীতি করে। বর্তমান প্রশাসনে থাকা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সেভাবেই আমাদেরও নাম আছে।’ নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানানোর পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি বলেও জানান কাজী জহিদ।

এর আগে গত শুক্রবার ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে যারা নমনীয়তা উৎপাদন করবে, আমরা তাদের জুতা খুলে মুখে মারব ইনশা আল্লাহ। রাবিতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি চাকরি করে, তাদের আগামী রোববার থেকে কলার ধরে টেনে টেনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেঁধে রাখব।’

এ ছাড়া গতকাল শনিবার আম্মার এক পোস্টে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ শীর্ষক কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষকেরা যদি এভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে, তাহলে সমস্যা সৃষ্টি হবে। অনেক শিক্ষকই এভাবে নিরাপত্তা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিষ মাখানো সরিষার বীজ খেয়ে শতাধিক কবুতর ও ঘুঘুর মৃত্যু, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

তালা (সাতক্ষীরা)  প্রতিনিধি
কবুতর। ছবি: সংগৃহীত
কবুতর। ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার তালায় ফসল রক্ষার নামে বিষ মাখানো সরিষার বীজ ছিটিয়ে পাখিনিধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিষ মাখানো বীজ খেয়ে শতাধিক কবুতর ও ঘুঘু পাখি মারা গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে উপজেলার হরিশ্চন্দ্রকাঠি গ্রামে একের পর এক কবুতর ও ঘুঘু পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা বন বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন অফিসার তন্ময় আচার্য্য।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তন্ময় আচার্য্য সাংবাদিকদের জানান, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপরাধমূলক ঘটনা। বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে বন্য প্রাণিনিধন আইনত দণ্ডনীয়। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ১৯ ডিসেম্বর হরিশ্চন্দ্রকাঠি বিলে সরিষা চাষের জন্য বীজ বপন করেন তালা মহিলা কলেজের প্রদর্শক আবদুল বারী। পাখির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার উদ্দেশ্যে বীজে বিষ মাখানো হয়। পরদিন ওই ক্ষেতে কবুতর ও ঘুঘু পাখির ব্যাপক বিচরণ লক্ষ করা যায়। এর পর থেকে একে একে পাখিগুলো অসুস্থ হয়ে মারা যেতে থাকে। এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে ১০০টির বেশি কবুতর এবং একটি ঘুঘু পাখির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রকাঠি গ্রামের বাসিন্দা জিন্নাত খাঁ ও হায়দার আলী বলেন, ‘আমাদের অনেক কবুতর মারা গেছে। এগুলো আমাদের শখ আর জীবিকার অংশ। এমন ক্ষতি আগে কখনো হয়নি।’

রহিমাবাদ গ্রামের আজিজ সরদার বলেন, ‘এক দিনেই আমার ২৪টি কবুতর মারা গেছে। পাখিরা তো জানে না বীজে বিষ মাখানো আছে। এ ক্ষতির বিচার চাই।’ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, ক্ষতিপূরণ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

তালা মহিলা কলেজের প্রদর্শক আবদুল বারীকে ফোন করলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল মজিদ বলেন, কাজটি ঠিক হয়নি।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটির বিষয়ে আমি শুনেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নড়বড়ে বাঁশে ঠেস দেওয়া ৪৮০ ভোল্টের খুঁটি

  • যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা
  • ছয় মাস আগে ধানখেতে উপড়ে পড়েছিল খুঁটিটি
  • বিদুৎ অফিস সমস্যা আমলে নেয়নি, দাবি গ্রামবাসীর
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১০
বিদ্যুতের খুঁটিটি বাশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুতের খুঁটিটি বাশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। সেখানে নড়বড়ে কয়েকটি বাঁশের ওপর কাত হয়ে পড়ে রয়েছে একটি বিদ্যুতের খুঁটি। খুঁটির আশপাশে মাঠে লোকজন নতুন ফসল বপনের কাজ করছেন। কেউ কেউ গরু-ছাগল চরাচ্ছেন। সেখানে বাঁশের ওপর কোনো রকমভাবে ভর দিয়ে রাখা খুঁটিটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। এতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

সম্প্রতি সরেজমিনে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরপুবাইল গ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা ৪৮০ ভোল্টেজের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) খুঁটিটি চোখে পড়ে। ছয় মাস ধরে খুঁটিটি এভাবে বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, একবার সোজা করে দেওয়ার পর ফের হেলে পড়লেও খুঁটিটি স্থায়ীভাবে মেরামত বা প্রতিস্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। স্কুলসংলগ্ন কৃষি এলাকায় এভাবে উচ্চ ভোল্টেজের খুঁটি ঝুলে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাসহ কৃষকেরা আতঙ্কে রয়েছেন।

জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের চরপুবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যাওয়া পিডিবির বিদ্যুতের তার সংযুক্ত খুঁটিটি ছয় মাস আগে একটি ধানখেতে উপড়ে পড়ে। এতে বিদ্যুতায়িত হয়ে খেতের পানিতে থাকা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী মারা যায়। পরে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে খুঁটিটি বাঁশের ওপর ঠেকিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করেন। এর পর থেকে বাঁশের ওপর ঠেকিয়ে রেখেই ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিদ্যুতের লাইন চালু রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত বাঁশগুলো নরম হয়ে পচন ধরেছে। এই অবস্থায়ই খুঁটির আশপাশে কৃষকেরা কাজ করেন। চরান গরু-ছাগল।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আল-আমিন বলেন, ‘খুঁটির নিচেই আমাদের খেত। কাজ করতে নামলেই ভয় লাগে—এই বুঝি খুঁটি ভেঙে পড়ল বা তার ছিঁড়ে পড়ল। এমন অবস্থায় দিনের পর দিন খেতে কাজ করা খুবই ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

আরেক বাসিন্দা মো. মামুন মিয়া বলেন, খুঁটি পড়ে যাওয়ার সময় মাছসহ সব জলজ প্রাণী মরে গিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, দ্রুত খুঁটিটি ঠিক করা হবে। কিন্তু ছয় মাস পার হলেও শুধু বাঁশে ঠেস দিয়েই খুঁটিটি রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবুল কাশেম বলেন, এর আগেও কয়েক দফা খুঁটিটি উপড়ে পড়েছে। গত দুই বছর ধরে এমন সমস্যা চলছে। তখনো এমন বাঁশ দিয়ে কাজ চালানো হয়। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি তারা আমলেই নিচ্ছে না।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ আবাসিক উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রেজাউল করিম বলেন, ‘বিষয়টি কেউ লিখিত কিংবা মৌখিকভাবেও জানায়নি। যেহেতু জেনেছি, আমি দ্রুত খুঁটিটি স্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডিসি অফিসে গিয়ে আটক ঝালকাঠির সাবেক মেয়র কারাগারে

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
আফজাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আফজাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আফজাল হোসেন রানাকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ রোববার ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে একটি বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, সকালে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিজের অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নের জন্য যান আফজাল হোসেন রানা। কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা তাঁকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান।

বেলা আনুমানিক ৩টার দিকে তাঁকে ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর সদর থানার একটি বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি তৌহিদুজ্জামান জানান, সদর থানায় দায়ের করা মামলায় আফজাল হোসেন রানাকে গ্রেপ্তারের জন্য থানা-পুলিশকে ডিবি পুলিশ সহায়তা করেছে।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, আফজাল হোসেন রানাকে একটি রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, আফজাল হোসেন রানা ঝালকাঠি পৌরসভার সাবেক মেয়র। তিনি ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পৃথক দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর বিরোধী অবস্থানে যাওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত